শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

নবীজি যে তিন আমলের নির্দেশ দিয়েছেন

আপডেট : ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৪৩ পিএম

নবীজি হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার উম্মতকে যেসব মূল্যবান উপহার দিয়েছেন, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সহজ ও অতুলনীয় ফজিলতের আমলসমূহ। সেগুলোর মধ্যে তিনটি আমল এমন রয়েছে, যা তিনি নিজে নিয়মিত করেছেন এবং উম্মতকে বারবার তা করার নির্দেশ দিয়েছেন। এই তিনটি আমল হলো আয়াতুল কুরসি, তিন কুল বা কোরআনের শেষ তিন সুরা তথা ইখলাস, ফালাক ও নাস এবং তিন তাসবিহ। এ আমলগুলো মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যম, যা আত্মিক শক্তি এবং দৈনন্দিন জীবনের রক্ষাকবচও বটে।

আয়াতুল কুরসি : আয়াতুল কুরসি এমন একটি আয়াত, যার ফজিলত সম্পর্কে অসংখ্য হাদিস রয়েছে। হজরত আবু উমামা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে, তার জন্য জান্নাতে প্রবেশের পথে একমাত্র বাধা হবে মৃত্যু।’ (তাবারানি) আয়াতুল কুরসি পাঠকারীর জন্য ফেরেশতা পাহারাদার নিযুক্ত হন এবং শয়তান তার ধারে-কাছে আসতে পারে না। দিনের শুরুতে ও শেষে অর্থাৎ ফজর ও মাগরিবের সময় আয়াতুল কুরসি পাঠ করা হলে মহান আল্লাহ তাকে নিজ হেফাজতে নিয়ে নেন। রাতের ঘুমের আগে এটা পাঠ করলে রাতভর নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।

শেষ তিন সুরা : কোরআনের শেষ তিন সুরা নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার জীবনের শেষ অবধি নিয়মিত পাঠ করতেন। এগুলোকে তিনি বলেছেন রক্ষা ও নিরাপত্তার দোয়া। হাদিসে এসেছে, তিনি ঘুমানোর আগে উভয় হাত একত্র করে এই তিনটি সুরা পড়তেন, ফুঁ দিতেন এবং সমস্ত শরীরে হাত বুলিয়ে নিতেন। তিনি এ কাজ তিনবার করতেন। (সহিহ বুখারি) প্রতিদিন ফজর ও মাগরিবের পর এ তিনটি সুরা তিনবার করে এবং অন্য নামাজের পর একবার করে পাঠ করা ভালো। আর যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যা নিয়মিত এ সুরাগুলো পাঠ করে, তার জন্য মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশেষ কয়েকটি নেয়ামত ঘোষণা করা হয়েছে। যথা আল্লাহর সন্তুষ্টি, গুনাহ থেকে মুক্তি, দারিদ্র্য থেকে রক্ষা, বালা-মুসিবত থেকে হেফাজত, জাদুটোনা ও শয়তানের আক্রমণ থেকে মুক্তি, সব অনিষ্ট থেকে নিরাপত্তা এবং জান্নাত লাভ।

তিন তাসবিহ : প্রিয়নবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পর উম্মতকে তিনটি বিশেষ জিকির করার নির্দেশ দিয়েছেন। এই তিনটি জিকির হলো, সুবহানাল্লাহ ৩৩ বার, আলহামদুলিল্লাহ ৩৩ বার, আল্লাহু আকবার ৩৪ বার। হাদিসে এসেছে, এ তাসবিহগুলো এমন আমল, যা আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে, অন্তরকে প্রশান্ত করে এবং বান্দাকে আল্লাহর আরও নিকটবর্তী করে তোলে। শুধু নামাজের পরই নয়, বরং সকাল-সন্ধ্যা ও ঘুমানোর আগে এই তাসবিহগুলো পড়ার কথা বলেছেন নবীজি (সা.)।

এই তিনটি আমল মুসলমানদের জীবনে প্রতিষ্ঠা করা গেলে ইমান হবে শক্তিশালী, অন্তর হবে আলোকিত এবং জীবনে আসবে বরকত। আমলগুলো ছোট হলেও এগুলোর ফজিলত বিশাল। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে এ মহামূল্যবান সুন্নাতগুলো আঁকড়ে ধরার তৌফিক দান করুন। আমিন।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত