ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় অবৈধ মাটির ব্যবসা নিয়ে প্রতিবেদন করায় আওয়ামী লীগ ও যুবদলের নেতার নেতৃত্বে সাংবাদিক মাইনুদ্দিন রুবেলের ওপর সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাত পৌনে ৮টার দিকে উপজেলা পরিষদের সামনে এ হামলা হয়। মাইনুদ্দিন বিজয়নগর উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের ভিটিদাউদপুর গ্রামের বাসিন্দা। ২০ বছর ধরে তিনি জেলা শহরের দক্ষিণ মৌড়াইলে একটি ভাড়া বাসায় থাকেন। তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম ও দেশ রূপান্তরের ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংবাদদাতা হিসেবে কাজ করছেন। উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব থেকে বহিষ্কৃৃত নেতা মোখলেছুর রহমান ওরফে লিটন মুন্সি, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সম্পাদক কাইয়ুম মিয়াসহ ৩০-৪০ সন্ত্রাসী এই হামলা চালিয়েছে। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে অংশ নেওয়ায় দল থেকে মোখলেছুরকে বহিষ্কার করা হয়। তিনি উপজেলার পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যানও।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সম্পাদক কাইয়ুম মিয়া গত ৫ আগস্টের পর থেকে উপজেলার সর্বত্রই অবৈধভাবে মাটি কেটে ট্রাক্টরে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে আসছেন। পাশাপাশি উপজেলার পুকুরসহ ফসলি জমি অবৈধভাবে ভরাট করে আসছেন। তার এই কাজ দেখাশোনা করেন ছেলে মো. মুন্না, রাসেল মিয়া ও মোবারক হোসেন, চাচাতো ভাই রুবেল মিয়া ও ইছাপুরা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আনিছ মিয়া। এসব কাজে সহায়তা করছেন বহিষ্কৃত যুবদল নেতা মোখলেছুর। অবৈধভাবে মাটি কাটার ঘটনা এবং সদ্য বিদায়ী বিজয়নগর থানার ওসি রওশন আলীর বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে প্রতিবেদন করায় সাংবাদিক মাইনুদ্দিনের ওপর ক্ষুব্ধ হন কাইয়ুম ও মোখলেছুর। সাংবাদিক মাইনুদ্দিনের প্রতিবেদনের পর বিজয়নগর থানার ওসি রওশন আলীকে সম্প্রতি পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
গতকাল রাত পৌনে ৮টার দিকে ব্যক্তিগত কাজে বিজয়নগর থানার উদ্দেশে রওনা হন মাইনুদ্দিন। সে সময় বিজয়নগর উপজেলা পরিষদের সামনে আগে থেকে ওত পেতে ছিলেন মোখলেছুর, কাইয়ুম ও তার লোকজন। উপজেলা পরিষদের সামনে অজিত মিয়ার দোকানের সামনে পৌঁছলে তারা সাংবাদিক মাইনুদ্দিনের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে মারধর করেন। তাদের হামলায় মাইনুদ্দিন মাথার ডানপাশে আঘাত পান। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। তার মাথার ডানপাশে ছয়টি সেলাই লেগেছে। চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন।
আহত সাংবাদিক মাইনুদ্দিন রুবেল বলেন, ‘মাটি কাটার নিউজ করায় কাইয়ুম, তার ছেলেরা ও ভাইয়েরা আমার ওপর ক্ষুব্ধ হন। তারা পরিকল্পিতভাবে হামলা করেছে। কাইয়ুম নিজে আমাকে মেরেছে। তারা আমাকে হত্যা করতে চেয়েছে। আমি এই ঘটনার বিচার চাই। সাংবাদিকতা করা কি অন্যায়।’