কোপা দেল রে ফাইনালের আগে রেফারি পরিবর্তনের কথা বলেছিল রিয়াল মাদ্রিদ। চাপ প্রয়োগ করতে ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনও করেনি লসব্লাঙ্কোসরা। তবে শেষ পর্যন্ত বদল হয়নি রেফারি, রিয়ালও ম্যাচ খেলে। সেভিয়াতে ফাইনালে নির্ধারিত সময়ে গোল হলো চারটি, ২-২ সমতা থাকায় খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। ১১৬ মিনিটে জুলেস কুন্দে গোল করেন। বাকি সময়ে ব্যবধান ধরে রেখে বার্সা ম্যাচটা জিতেছে ৩-২ গোলে। তবে শেষের যোগ করা সময়ে রিয়ালের ৩ খেলোয়াড় দেখেছেন লাল কার্ড। তাই বলাই যায়, শিরোপা বার্সার লাল কার্ড রিয়ালের।
শুরুর একাদশে কিলিয়ান এমবাপ্পেকে রাখেননি কার্লো আনচেলত্তি। প্রথমার্ধের ২৮ মিনিটে প্রতি-আক্রমণে বল পেয়ে ইয়ামাল সুযোগ বুঝে কাট-ব্যাক করেন পেদ্রিকে। পেদ্রি গতির শটে বল পাঠান জালে। ৩৫ মিনিটে জালে বল পাঠান জুড বেলিংহ্যাম কিন্তু তিনিই অফসাইডে থাকায় গোল মেলেনি। প্রথমার্ধে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় বার্সেলোনা। দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নামেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। বদলে যায় ম্যাচের গতিপথ। ৭০ মিনিটে ফ্রি-কিকে গোল শোধ দেন এমবাপ্পে। তার শট পোস্টে লেগে জালে জড়ায়। সাত মিনিট পর ম্যাচে এগিয়ে যায় রিয়াল। কর্নার থেকে আর্দা গুলেরের ক্রসে হেডে গোল করেন চুয়ামেনি। ৮৪ মিনিটে বিপদ ডেকে আনেন রিয়াল গোলকিপার। মাঝমাঠ থেকে আসা বল ধরে রুডিগারকে পরাস্ত করে এগিয়ে যান ফেরান তোরেস। বিপদ দেখে ছুটে আসেন কোর্তোয়া, কিন্তু বলের নাগাল পাননি। ফাঁকা জালে বল পাঠান স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড তোরেস।
যোগ করা সময়ের শেষ মিনিটে পেনাল্টি পায় বার্সেলোনা। প্রতিবাদ জানায় রিয়ালের খেলোয়াড়রা। ভিএআর মনিটরে দেখে সিদ্ধান্ত বদলান রেফারি, ডাইভ দেওয়ায় উল্টো হলুদ কার্ড দেখেন রাফিনহা। অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে রক্ষণে বেশি নজর দেয় দুই দল। ১০৭ মিনিটে জালে বল পাঠান তোরেস। তবে তিনি নিজেই অফসাইডে থাকায় মেলেনি গোল। ১১৬ মিনিটে নিজেদের ডি বক্সের একটু বাইরে থেকে ব্রাহিম দিয়াসকে বল বাড়ান লুকা মদ্রিচ। দ্রুতগতিতে ছুটে এসে বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে গোল করেন কুন্দে।
বার্সেলোনা কোচ হানসি ফ্লিক বলেন, ‘রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ক্লাসিকোর মতো ম্যাচে শিরোপা জেতা বিশেষ কিছু। এখন আমাদের অবশ্যই উদযাপন করতে হবে। ট্রেবল জেতার সুযোগ রয়েছে, আমাদের কঠোর পরিশ্রম চালিয়ে যেতে হবে।’
লাল কার্ডের কারণ
ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজার মিনিট দেড়েক আগে (১২৩ মিনিট) এমবাপ্পে ফ্রি কিক না পাওয়ায় বেঞ্চ থেকে রেফারির প্রতি তেড়ে যান রিয়াল ডিফেন্ডার রুডিগার। সতীর্থরা তাকে টেনে ধরে থামান। পরে রিয়ালের বেঞ্চ থেকে কিছু একটা ছুড়ে মারা হয় মাঠের রেফারি রিকার্দো দে বুর্গোস বেনগোচেয়ার দিকে। রুডিগার নাকি অন্য কেউ ছুড়ে মেরেছেন, তা অবশ্য পরিষ্কার নয়। এ সময় রুডিগারকে লাল কার্ড দেখান রেফারি বেনগোচেয়া। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী রেফারি ম্যাচ রিপোর্টে উল্লেখ করেন, সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করে মাঠের কয়েক মিটার পর্যন্ত প্রবেশ করা, মতবিরোধের অঙ্গভঙ্গি করার জন্য লাল কার্ড দেখানো হয়েছে ভাসকেসকে। আর আক্রমণাত্মক মনোভাব নিয়ে রেফারির দিকে এগিয়ে যাওয়ার লাল কার্ড দেখেন বেলিংহ্যাম। তাদের দুই থেকে তিন ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ করা হতে পারে। আর স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের (আরএফইএফ) আচরণবিধি অনুযায়ী, ১০১ ধারায় শাস্তি পেলে চার থেকে ১২ ম্যাচ নিষিদ্ধ হতে পারেন রুডিগার। এই ধারায় রেফারির প্রতি ‘হালকা সহিংসতার’ কথা বলা হয়েছে। যদি তার আচরণ আরও গুরুতর বলে বিবেচিত হয়ে ১০৪ ধারায় শাস্তি দেওয়া হয়, তাহলে তিন থেকে ছয় মাস নিষিদ্ধ হতে পারেন।