দিনাজপুর জেলার বিরল উপজেলার কৃষক এনতাজুল মাচায় উন্নত জাতের দেশি পটোল চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। প্রথমবারেই দেশি জাতের পটোল মাচায় চাষ করে যথেষ্ট সাড়া ফেলেছেন এই কৃষি উদ্যোক্তা। তার সফলতা দেখে উৎসাহিত হচ্ছেন অনেক কৃষক। পটোল চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করতে কাজ করছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ। মোকলেছপুর গ্রামের এনতাজুল হক গত বছর ২৫ শতাংশ জমিতে দেশি পটোল চাষ করে প্রচুর লাভবান হয়েছেন। এ বছর তিনি গত বছরের তুলনায় তিনগুণ জমিতে পটোল চাষ করেন। ৭৫ শতক জমিতে দেশি জাতের পটোল চাষ করে গত বছরের চেয়ে এবারের ফলন আরও বেশি ভালো হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর দেড় থেকে দুই লাখ টাকা আয় করতে পারবেন বলে আশা করছেন এনতাজুল। বিরল উপজেলা কৃষি বিভাগের মাঠ কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন জানান, গত বছর ২৫ শতাংশ জমিতে এনতাজুল মাচায় দেশি জাতের পটোল চাষ করেন। তিনি পটোল চাষের খরচ বাদে প্রায় ৭০ হাজার টাকা লাভ করেন। এই অভিজ্ঞতা থেকে এনতাজুল এ বছর ৭৫ শতাংশ জমিতে উচ্চ ফলনশীল দেশি জাতের পটোল মাচায় চাষ করেছেন। অন্য ফসলের চেয়ে পটোলে বেশি লাভ হওয়ায় ভবিষ্যতে তিনি আরও বেশি জমিতে দেশি পটোলের চাষ করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পটোল চাষি এনতাজুল বলেন, আমি বিরল উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায় আধুনিক চাষ পদ্ধতি অনুসরণ করে দেশি জাতের পটোল চাষ করে আশাতীত ফল পেয়েছি। এরই মধ্যে বিক্রি করা শুরু করেছি। দেশি জাতের পটোল খেতে সুস্বাদু। এর চামড়া পাতলা, আকারে মাঝারি এবং ছোট সাইজের হয়। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সারোয়ার হোসেন জানান, গত ১০ বছর জেলার হাটবাজারগুলোতে হাইব্রিড পটোল দেখা গেছে। হাইব্রিড পটোল আকারে বড় ও খোসা মোটা হয়। কিন্তু খেতে খুব সুস্বাদু নয়। হাইব্রিড পটোল শুরু থেকেই ভেতরে বিচি বড় থাকে ও খাবার সময় খসখসে লাগে। বিষয়টি লক্ষ করে কৃষি বিভাগ নতুনভাবে গবেষণা করে দেশি পটোল চাষে আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দেয়। ফলে গত দুই বছর ধরে উন্নত জাতের দেশি পটোল চাষে কৃষি বিভাগ সফল হয়েছে। জেলার সমগ্র হাটবাজারগুলোতে নতুন জাতের দেশি পটোল গ্রাহকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কৃষি বিভাগের উদ্ভাবন করা উন্নত জাতের দেশি পটোল চাষে কৃষকরা বেশি লাভ করতে পারেন। এই দেশি জাতের পটোল শুধু এই জেলাতে নয়, প্রতিদিন দিনাজপুরের বিভিন্ন উপজেলা থেকে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় পাইকাররা নিয়ে যাচ্ছেন।