বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫, ১০ আষাঢ় ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

বিশ্বে ফসল উৎপাদন কমছে

আপডেট : ১৩ মে ২০২৫, ১২:১২ এএম

উষ্ণতা ও খরার কারণে ধীরে ধীরে বিশ্বে ফসলের উৎপাদন কমে যাচ্ছে বলে উঠে এসেছে সাম্প্রতিক এক গবেষণায়। যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন এক গবেষণা বলছে, তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি শুকনো আবহাওয়া বৈশ্বিক ফসল উৎপাদনের ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলছে। বিশেষ করে গম, যব ও ভুট্টার মতো গুরুত্বপূর্ণ শস্যের বেলায়। গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেস’-এ। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রায় প্রতিটি বড় কৃষি অঞ্চলে ৫০ বছর আগে যে তাপ ও শুষ্কতা ছিল, বর্তমানে এসব অঞ্চলে তাপ ও শুষ্কতা সে সময়ের চেয়ে বেশি। এসব পরিবর্তন নীরবে গোটা বিশ্বের খাদ্য উৎপাদনে প্রভাব ফেলছে, যার ফলে কমে যাচ্ছে উৎপাদিত ফসলের পরিমাণ।

এ গবেষণার নেতৃত্ব দিয়েছেন স্ট্যানফোর্ডের খাদ্য নিরাপত্তা ও পরিবেশবিষয়ক কেন্দ্রের পরিচালক ডেভিড লোবেল। গবেষণায় উঠে এসেছে, জলবায়ু পরিবর্তন না ঘটলে বিশ্ব জুড়ে এসব গুরুত্বপূর্ণ শস্যের উৎপাদন বর্তমানে যে পরিমাণ হচ্ছে, তার চেয়ে ৪ থেকে ১৩ শতাংশ বেশি হতো। লোবেল বলেছেন, তাকে প্রায়ই প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়, ফসলের ক্ষতি কি ধারণার চেয়েও দ্রুত ঘটছে? এ কৌতূহল থেকেই বিশ্ব জুড়ে মাঠপর্যায়ের পরিস্থিতি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যালোচনা করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি ও তার গবেষণা দল। তাদের গবেষণা বলছে, কিছু জলবায়ু মডেল বৈশ্বিক উষ্ণতার সামগ্রিক চিত্রের সঠিক পূর্বাভাস দিতে পারলেও গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় বাদ থেকে গেছে সেখানে। আর সেটি হচ্ছে শুষ্কতার মাত্রা, বিশেষ করে ইউরোপ ও চীনের মতো মৃদু অঞ্চলে। স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষণায় ডেটা বিশ্লেষক ও এ গবেষণার সহলেখক স্টেফানিয়া ডি টমাসো বলেছেন, গবেষণার এসব অপ্রত্যাশিত ফল বোঝা গুরুত্বপূর্ণ। জলবায়ু মডেলগুলোর এসব ত্রুটি সংশোধন করা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সঠিকভাবে পূর্বাভাস দেওয়া এবং আরও স্মার্ট কৃষি কৌশল পরিকল্পনা করার জন্য অনেক জরুরি। লোবেল বলেন, প্রধান শস্যের ওপর জলবায়ুর প্রভাবের পূর্বাভাস দেওয়ার ক্ষেত্রে অসাধারণ কাজ করেছে জলবায়ু বিজ্ঞান। তবে এখনো কিছু অঞ্চল রয়েছে, বিশেষ করে কফি, কোকো, কমলা এবং জলপাইয়ের মতো বিশেষ ফসলের ক্ষেত্রে। এসব শস্য খাদ্য নিরাপত্তার জন্য ততটা গুরুত্বপূর্ণ না হলেও এগুলো ভোক্তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং সরবরাহের চ্যালেঞ্জের কারণে এসব পণ্যের দাম বাড়ছে।

গবেষকরা বলছেন, নীতিনির্ধারক ও কৃষকদের জন্য একটি সতর্কবার্তা হিসেবে কাজ করছে এ গবেষণা, যা উষ্ণায়িত পৃথিবীতে বৈশ্বিক খাদ্য সরবরাহ রক্ষায় উন্নত জলবায়ু মডেল ও লাগসই বিভিন্ন অভিযোজন কৌশলের জরুরি প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে। গত মার্চে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর আলাদা এক গবেষণার সঙ্গেও এ গবেষণার ফল মিলে যায়।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত