বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫, ১০ আষাঢ় ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

কোরআনে বর্ণিত সাতটি বিশেষ নৈতিক গুণ

আপডেট : ১৩ মে ২০২৫, ১২:২৬ এএম

ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা, যা মানুষের নৈতিক চরিত্র গঠন ও উন্নয়নে ব্যাপক গুরুত্ব দিয়েছে। কোরআনুল কারিমে মহান আল্লাহ যেসব গুণাবলির কথা বলেছেন, সেগুলো আমাদের জীবনে প্রতিফলিত হলে সমাজে শান্তি ও সুশৃঙ্খল পরিবেশ প্রতিষ্ঠিত হবে। এখানে কোরআনে বর্ণিত সাতটি গুরুত্বপূর্ণ নৈতিক গুণ নিয়ে আলোচনা করা হলো।

সত্যবাদিতা : কোরআনে সত্যবাদিতার কথা একাধিক স্থানে উচ্চারিত হয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনগণ! আল্লাহকে ভয় করো এবং সত্যবাদীদের সঙ্গে থাকো।’ (সুরা তাওবা ১১৯) সত্য বলার মধ্যে রয়েছে সঠিক পথের সন্ধান। মিথ্যা আমাদের থেকে কল্যাণকে দূরে সরিয়ে দেয় এবং আত্মবিশ্বাস ও বিশ্বাসযোগ্যতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

ধৈর্য : ধৈর্য একটি গুরুত্বপূর্ণ নৈতিক গুণ। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।’ (সুরা বাকারা ১৫৩) জীবনের প্রতিটি কঠিন মুহূর্তে ধৈর্য অবলম্বন করে আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করতে পারি।

কৃতজ্ঞতা : মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘তোমরা যদি কৃতজ্ঞ হও, তবে অবশ্যই আমি তোমাদের আরও দেব।’ (সুরা ইবরাহিম ৭) কৃতজ্ঞতা আমাদের মনকে প্রশান্ত রাখে এবং আরও বেশি নেয়ামত লাভের পথ সুগম করে।

ক্ষমাশীলতা : অন্যকে ক্ষমা করা ইসলামের একটি মহান গুণ। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তুমি ক্ষমা প্রদর্শন করো, সৎকর্মের নির্দেশ দাও এবং মূর্খদের এড়িয়ে চলো।’ (সুরা আরাফ ১৯৯) ক্ষমা মানবিকতার এক উচ্চতম পর্যায়। মহান আল্লাহ ক্ষমা করতে পছন্দ করেন, ক্ষমাকারীকে পছন্দ করেন।

ন্যায়পরায়ণতা : কোরআনে বলা হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা ইনসাফ প্রতিষ্ঠাকারী হয়ে যাও আল্লাহর জন্য সাক্ষ্যদাতারূপে, যদিও তা তোমাদের নিজেদের বিরুদ্ধে কিংবা পিতা-মাতা ও আত্মীয়স্বজনের বিরুদ্ধে হয়।’ (সুরা নিসা ১৩৫) ন্যায়পরায়ণতা সমাজে সঠিক বিচার প্রতিষ্ঠা করে এবং অবিচার ও অশান্তি দূর করে।

আমানতদারি : মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের আদেশ করছেন যে, তোমরা আমানতসমূহ তার হকদারকে আদায় করে দেবে এবং যখন মানুষের মধ্যে বিচার করবে, তখন ইনসাফের সঙ্গে বিচার করবে। আল্লাহ তোমাদেরকে যে বিষয়ে উপদেশ দেন, তা কতই না উৎকৃষ্ট।’ (সুরা নিসা ৫৮) আমানতদারি একটি বড় দায়িত্ব, যা সব স্তরের মানুষের ওপর আল্লাহর নির্ধারিত।

রাগ দমন : কোরআনে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘যারা সুসময়ে ও দুঃসময়ে ব্যয় করে এবং ক্রোধ সংবরণ করে, মানুষকে ক্ষমা করে। আর আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালবাসেন।’ (সুরা আলে ইমরান ১৩৪) রাগ নিয়ন্ত্রণ করার মাধ্যমে আমরা শারীরিক ও মানসিক শান্তি লাভ করতে পারি।

কোরআনে বর্ণিত এই সাতটি নৈতিক গুণ আমাদের জীবনকে সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ রাখতে সহায়ক। প্রতিটি গুণের অনুশীলন আমাদের ব্যক্তিগত উন্নতির পাশাপাশি সমাজে কল্যাণ সাধনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সুতরাং ইসলামি শিক্ষা অনুসরণ করে যদি আমরা এসব গুণাবলি অর্জন করি, তবে সমাজে সঠিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠিত হবে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ সম্ভব হবে।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত