লে. কর্নেল ফেরদৌস আহমেদ
প্রকল্প পরিচালক, চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী
দেশ রূপান্তর : মাঠপর্যায়ে জলাবদ্ধতা প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে খালের উভয় পাড়ের বাড়িঘর ভাঙতে হচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষের সঙ্গে মুখোমুখি অবস্থানে যেতে হচ্ছে সেনাবাহিনীকে। এ সমস্যা কীভাবে সামাল দিচ্ছেন?
লে. কর্নেল ফেরদৌস আহমেদ : একজন মানুষের সারাজীবনের সঞ্চয় দিয়ে একটি বাড়ি নির্মাণ করেছে। এখন খাল সংস্কার ও সম্প্রসারণ করতে গিয়ে যখন বাড়িটি ভেঙে দেওয়া হচ্ছে, তখন খারাপ লাগলেও কিছু করার নেই। তবে অনেক ক্ষেত্রে আমরা নিরীহ মানুষদের ঘর বানিয়ে দিচ্ছি। মসজিদ ও মন্দির ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা পুনর্নির্মাণ করে দিচ্ছি। অন্যদিকে ভবনের ক্ষতিপূরণ থেকে যাতে ভবন মালিকরা বঞ্চিত না হন, আমরা সেদিকেও খেয়াল রাখি। সবকিছুর ঊর্ধ্বে হলো চট্টগ্রামবাসীকে জলাবদ্ধতামুক্ত নগরী উপহার দেওয়া।
দেশ রূপান্তর : জলাবদ্ধতামুক্ত নগরী উপহার দেওয়া কি সম্ভব?
লে. কর্নেল ফেরদৌস আহমেদ : সিডিএ ও সিটি করপোরেশনসহ বিভিন্ন সংস্থাগুলোর সমন্বয়হীনতার অভাবে আমরা প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নিতে পারছিলাম না। কিন্তু বর্তমানে সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের একটা উষ্ণ সম্পর্ক বিরাজ করছে। আর এর প্রভাব পড়ছে আমাদের কাজের মধ্যে। যে গতিতে এখন কাজ এগিয়ে চলছে, এতে জুন ২০২৬ সালের মধ্যে আমরা জলাবদ্ধতার প্রকল্পের কাজ শেষ করতে পারব বলে আশা করছি। আর তা করা গেলে এবং একই সঙ্গে জলাবদ্ধতার চলমান অন্য প্রকল্পগুলো শেষ হলে অবশ্যই জলাবদ্ধতা দুর্ভোগ থেকে নগরবাসী মুক্তি পাবে।
দেশ রূপান্তর : জলাবদ্ধতায় অন্যতম সমস্যা হলো নালা ও খালগুলোতে আবর্জনা নিক্ষেপ। এ সমস্যা কীভাবে দূর করা যাবে বলে আপনি মনে করেন?
লে. কর্নেল ফেরদৌস আহমেদ : এজন্য সবার আগে নগরবাসীকে সচেতন হতে হবে। নগরবাসী সচেতন হলে জলাবদ্ধতা সমস্যার অনেকটাই সমাধান হয়ে যাবে। একই সঙ্গে আমাদের অনেকগুলো খালকে যদি জলপথের জন্য প্রস্তুত করতে পারি, তাহলে খালগুলো যেমন সচল থাকবে, তেমনি খালে ময়লা-আবর্জনা ফেলা থেকেও রক্ষা পাবে। আমরা নগরীর অনেকগুলো খালে এখনই নৌযান চালাতে পারি। এতে নগরীতে সড়কের ওপর চাপ কমবে এবং যানজটও নিয়ন্ত্রণে আসবে।
দেশ রূপান্তর : নগরীর খালগুলোয় রেগুলেটর বসানো হচ্ছে। কিন্তু এতে খালগুলোয় যে পলি সঞ্চয়ন হবে, তা নিয়ে কোনো গবেষণা নেই। ফলে আগামীর চট্টগ্রামের কী অবস্থা হবে?
লে. কর্নেল ফেরদৌস আহমেদ : অবশ্যই খালগুলো ড্রেজিং করতে হবে। রেগুলেটরগুলো নিয়মিত মেইনটেন্যান্স করতে হবে। যদি তা করা না যায়, তাহলে জলাবদ্ধতা নিরসনের শতভাগ সুফল আসবে না।