বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫, ৪ আষাঢ় ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

আ.লীগের নিবন্ধন স্থগিত

আপডেট : ১৩ মে ২০২৫, ০৭:১৮ এএম

গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সব ধরনের কর্মকাণ্ডে সরকারের নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর এবার রাজনৈতিক দল হিসেবে দলটির নিবন্ধন স্থগিত করল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল সোমবার নির্বাচন কমিশনের বৈঠকের পর রাতে কমিশন সচিব আখতার আহমেদ সাংবাদিকদের এ সিদ্ধান্ত জানান। এর আগে বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আওয়ামী লীগ ও এর শীর্ষনেতাদের বিচার প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত দলটির সব ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে।

এরপর সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে বৈঠকে বসে ইসি। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে ওই বৈঠকেই আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিতের সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকের পর ইসি সচিব বলেন, ‘আজ (গতকাল) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, তার অঙ্গ সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ইলেকশন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করা হলো। সে অনুযায়ী আমরা গেজেট নোটিফিকেশন জারি করেছি।’ ‘কোন গ্রাউন্ডে’ এ নিবন্ধন স্থগিত করা হলো জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যে প্রজ্ঞাপন, তার ধারাবাহিকতায় আমরা এটা করেছি।’

এর ফলে আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণের পথ বন্ধ হয়ে গেল। এ বিষয়ে ইসির জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, যেহেতু সরকার সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ এবং সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯ এর ধারা-১৮(১) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিচারকার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন কর্র্তৃক যেকোনো ধরনের প্রকাশনা, গণমাধ্যম, অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যেকোনো ধরনের প্রচারণা, মিছিল, সভা-সমাবেশ, সম্মেলন আয়োজনসহ যাবতীয় কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। সেহেতু, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নিবন্ধন (নম্বর-০০৬ তারিখ: ০৩/১১/২০০৮) এতদ্বারা স্থগিত করল।

২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের নিয়ম চালু করে ইসি। গত ১৭ বছরে সব মিলিয়ে ৫৫টি দলকে নিবন্ধন দেওয়া হলেও বিভিন্ন কারণে জামায়াতে ইসলামীসহ পাঁচটি দলের নিবন্ধন বাতিল হয়। আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত হওয়ায় এখন নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত দল থাকল ৪৯টি। 

এদিকে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ও নিবন্ধন স্থগিত করে প্রজ্ঞাপনের পর প্রজ্ঞাপনের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা। কেউ বলছেন, এমন পদক্ষেপ দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে একটি নতুন নজির সৃষ্টি করতে পারে। আবার কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন, শুধু নিবন্ধন স্থগিত করলেই সমাধান হবে না। ইসিকে আদালতের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। না হলে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিতর্ক তৈরি হতে পারে।

কী আছে নিবন্ধন বাতিলের আইনে : নিবন্ধিত কোনো রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা বা নিবন্ধন বাতিলের বিষয়ে স্পষ্টভাবে দিকনির্দেশনা দিয়েছে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)-১৯৭২। এ আইনের ৯০জ(১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, নির্দিষ্ট কয়েকটি শর্তে নির্বাচন কমিশন (ইসি) একটি দলের নিবন্ধন বাতিল করতে পারে।

প্রথমত, যদি কোনো দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী কমিটি দলকে বিলুপ্ত ঘোষণা করে বা নিবন্ধন বাতিলের আবেদন করে; দ্বিতীয়ত, যদি সরকার কোনো দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে; তৃতীয়ত, পরপর তিন বছর ইসির চাহিদা অনুযায়ী তথ্য দিতে ব্যর্থ হয়; চতুর্থত, অনুচ্ছেদ ৯০খ(১)(খ)-এর বিধান লঙ্ঘন করে এবং পঞ্চমত, পরপর দুটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিলে এসব ক্ষেত্রে দলটির নিবন্ধন বাতিল করতে পারে কমিশন।

সরকার কর্র্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষণার ক্ষেত্রে দলটির পক্ষ থেকে শুনানির প্রয়োজন নেই। তবে অন্যান্য কারণে নিবন্ধন বাতিলের আগে সংশ্লিষ্ট দলকে অবশ্যই শুনানির সুযোগ দিতে হয়।

আইনে আরও বলা হয়েছে, নিবন্ধন বাতিল হলে সেই নামে আর কোনো দল ভবিষ্যতে নিবন্ধন করতে পারবে না। কমিশনের সিদ্ধান্ত গেজেট আকারে প্রকাশের পর উচ্চ আদালতে আপিলের সুযোগ থাকবে। এ ছাড়া, নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত না করা, পেশাভিত্তিক সংগঠনের মাধ্যমে অঙ্গ বা সহযোগী সংগঠন পরিচালনার মতো বিষয়েও নিবন্ধন বাতিলের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।

নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য ড. মো. আবদুল আলীম দেশ রূপান্তরকে বলেন, কোনো রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিলের বিষয়ে আরওপিওতে অনেক ধারা আছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে সরকার যদি কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করে। সে ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল হতে পারত। কিন্তু এখানে দলটির কার্যক্রম নিষিদ্ধের কথা বলা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই ইসি নিবন্ধন বাতিল করতে পারে না। যেহেতু সরকার দলটির সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে, সে ক্ষেত্রে ইসি নিবন্ধন স্থগিত করতেই পারে। তবে আমি মনে করি ইসি আদালতে শরণাপন্ন হতে পারে। না হলে নির্বাচন কমিশন বিতর্কে জড়িয়ে পড়বে।

যেভাবে নিষিদ্ধ হলো আওয়ামী লীগের কার্যক্রম : গত বছর ৫ আগস্ট অভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে দলটির নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে আসছিল নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) বেশ কয়েকটি সংগঠন। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার দলটি নিষিদ্ধের দাবিতে কর্মসূচির ডাক দেন এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। ওইদিন রাত থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান নেন তারা। পরে বিভিন্ন ছাত্র ও রাজনৈতিক সংগঠন এ কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে।

পরদিন শুক্রবার বিকেল থেকে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে টানা আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হয়। এ সময় এনসিপি, ইসলামী ছাত্রশিবির, ইসলামী আন্দোলন, ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ বা আপ বাংলাদেশ, ইনকিলাব মঞ্চ, জুলাই মঞ্চসহ বিভিন্ন সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন।

এর পরদিন শনিবার বিক্ষোভকারীরা সন্ধ্যার পর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় ঘোষণা দেওয়া হয় রাতের মধ্যে যদি দাবি না মেনে নেয়, তবে মার্চ টু প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ঘোষণা করা হবে। পরে দাবির মুখে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে আওয়ামী লীগের সব কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্র্বর্তী সরকার।

এ সময় প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবনের সামনে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, এই নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্য ‘দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, জুলাই অভ্যুত্থানের নেতাকর্মীদের নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বাদী ও সাক্ষীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পরিপত্র পরবর্তী কর্মদিবসে জারি করা হবে।

কী আছে নিষেধাজ্ঞার প্রজ্ঞাপনে : প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি সরকার গঠনের পর থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সব অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সদস্য ও ভিন্নমতের মানুষের ওপর হামলা, গুম, খুন, হত্যা, নির্যাতন, ধর্ষণসহ বিভিন্ন নিপীড়নমূলক ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সারা দেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। এ ছাড়া তাদের বিরুদ্ধে গত বছর ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে গুম, খুন, পুড়িয়ে মানুষ হত্যা, গণহত্যা, বেআইনি আটক, অমানবিক নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, সন্ত্রাসী কাজ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের সুস্পষ্ট অভিযোগ রয়েছে এবং এসব অভিযোগ দেশি ও আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এসব অপরাধের অভিযোগে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সব অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এবং দেশের ফৌজদারি আদালতে বহুসংখ্যক মামলা বিচারাধীন। এসব মামলার বিচারে প্রতিবন্ধকতা তৈরি, জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি, বাংলাদেশের সংহতি, জননিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার লক্ষ্যে গত বছর ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে তারা গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-জনতার ওপর হামলা, উসকানিমূলক মিছিল আয়োজন, রাষ্ট্রবিরোধী লিফলেট বিতরণ এবং ভিনদেশে পলাতক তাদের নেত্রীসহ অন্য নেতাকর্মীর মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপরাধমূলক বক্তব্য দেওয়া, ব্যক্তি ও প্রজাতন্ত্রের সম্পত্তির ক্ষতিসাধনের প্রচেষ্টাসহ আইনশৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ড পরিলক্ষিত হয়েছে। এ ছাড়া এসব কর্মকাণ্ডে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে। দলটি এবং এর সব অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে করা মামলার বাদী ও সাক্ষীদের মনে ভীতির সঞ্চার করা হয়েছে। এভাবে বিচার বিঘিœত করার চেষ্টা করা হচ্ছে এবং সার্বিকভাবে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।

জুলাই ও আগস্টে সংঘটিত রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ীদের বিচারের দাবি রয়েছে বহুদিন ধরেই। তবে কোনো রাজনৈতিক দলকে নির্বাহী আদেশে পুরো কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার মাধ্যমে বিচারের প্রক্রিয়া শুরু করা কতটা যৌক্তিক ও গণতান্ত্রিক, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে।

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের আড়ালে দেশে সাজানো নাটক চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। এ ছাড়া ডিএমপির নিষিদ্ধ এলাকায় এনসিপির বিক্ষোভ করার ঘটনায় সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। গতকাল দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সাবেক সংসদ সদস্য নাসিরউদ্দীন পিন্টু স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ অভিযোগ তোলেন।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ায় পুরো বাংলাদেশ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে বলে মন্তব্য করেন শফিকুল আলম। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ লুট করেছে, খুন-গুম করেছে। সাড়ে তিন হাজার মানুষ গুম হয়েছে। ধরে নিয়ে আয়নাঘরে কঠিন শাস্তি দেওয়া হয়েছে। বাচ্চারাও মুক্তি পায়নি। তারা মানুষের সব অধিকার খর্ব করেছে। গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। এটা তাদের নিষিদ্ধ হওয়ার বড় কারণ।’

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যুক্ত সব রাজনৈতিক দলের সমর্থন ছিল। সব দলের সঙ্গে সরকারের কনসালটেশন হয়েছে। বিষয়টি সবাই গ্রহণ করেছে। এ সিদ্ধান্তে দেশের মানুষের সমর্থনও ছিল। তাই কোথাও আন্দোলন হয়নি।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এসসিপি) দাবিতে তড়িঘড়ি করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো কি না এমন প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলে, ‘জুলাই-আগস্টের গণআন্দোলন ঠেকাতে আওয়ামী লীগ সরকারের দমনপীড়ন নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কমিশন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা গেছে, জুলাই-আগস্টে ১ হাজার ৪০০ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, যদিও আমাদের হিসাবে তা আরও অনেক বেশি। নিষিদ্ধের জন্য বিশ্ব জুড়ে সাপোর্ট ছিল।’ তিনি বলেন, ‘জনগণ আওয়ামী লীগের মধ্যে ন্যূনতম অনুশোচনা দেখতে চেয়েছে। কিন্তু দুই হাজার মানুষ মারা গেলেও গত ৯ মাসে তাদের মধ্যে কোনো অনুশোচনা দেখিনি।’

১৪ দল কিংবা জাতীয় পার্টির মতো দলগুলোর ব্যাপারে নিষিদ্ধের পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না এ প্রশ্নের উত্তরে প্রেস সচিব বলেন, ‘জাতিসংঘের প্রতিবেদনে আওয়ামী লীগের মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রমাণ সুস্পষ্ট রয়েছে। অন্য দলগুলোর ভূমিকা সেভাবে আসেনি।’

শফিকুল আলম বলেন, ‘কী পরিমাণ লুটপাট হয়েছে সেটা আপনারা জানেন। একটি কোম্পানি ৭৫ হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছে। ফারমার্স ব্যাংক থেকে কয়েক কোটি টাকা নিয়ে গেছে।’

মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করা জামায়াতে ইসলামীর বিষয়ে সরকারের অবস্থান সম্পর্কে প্রেস সচিব বলেন, ‘এ বিষয়ে তো ২০১২ সালে আওয়ামী লীগই অ্যাকশন নিয়েছে। একাত্তরের পর তাদের (জামায়াত) নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থান হচ্ছে, ইমেডিয়েট পাস্টে যা হয়েছে, আওয়ামী লীগের সেসব অপকর্মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। চব্বিশের অভ্যুত্থানের পূর্ববর্তী ঘটনাগুলোর আলোকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

তাহলে কি সরকার একাত্তরকে এড়িয়ে যাচ্ছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘একাত্তর নিয়ে আমরা অনেক স্টেটমেন্ট দিয়েছি। নতুন কিছু বলতে চাই না। একাত্তর আমরা পুরোপুরি ধারণ করি।’

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত