বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫, ৪ আষাঢ় ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

কেন বাড়বে আইফোনের দাম

আপডেট : ১৪ মে ২০২৫, ০১:৫১ এএম

শুল্কের চাপ, উৎপাদনের স্থানান্তর ও সম্ভাব্য ডিজাইন পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে আসছে পরবর্তী আইফোন সিরিজ। এসব কারণে দাম বাড়তে পারে।

মার্কিন টেক জায়ান্ট অ্যাপল তাদের আসন্ন শরৎকালীন আইফোন লাইনআপের দাম বাড়ানোর কথা ভাবছে। তবে এই দাম বাড়ানোর পেছনে শুধু মুনাফা নয়, রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার বাণিজ্য উত্তেজনা, যার প্রভাব পড়ছে উৎপাদন ব্যয়েও। বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানায়, অ্যাপল চাইছে এমনভাবে দাম বৃদ্ধি করতে, যাতে সেটা চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক বৃদ্ধির সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত না হয়। এর কারণ রাজনৈতিক সমালোচনা এড়ানো এবং মার্কিন ক্রেতাদের আস্থা ধরে রাখা। সোমবার যুক্তরাষ্ট্র ও চীন দুই দেশই পারস্পরিক শুল্ক কিছুটা কমানোর ঘোষণা দিলে অ্যাপলের শেয়ারমূল্য ৭% পর্যন্ত বেড়ে যায়। তবে ৩০% আমদানি শুল্ক এখনো বহাল আছে, যা অ্যাপলের মতো চীনা উৎপাদন নির্ভর কোম্পানির জন্য চাপ তৈরি করছে। তবে যে কোনো মূল্যে এমন পরিস্থিতি এড়াতে চায় অ্যাপল, যেখানে কেউ যেন মনে না করে চীনা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের কারণে আইফোনের দাম বাড়াচ্ছে তারা। অ্যাপলের বেশিরভাগ পণ্য চীনে তৈরি হলেও দাম বাড়ানোর বেলায় অন্য কারণ দেখাতে চায় কোম্পানিটি। এ বিষয়ে রয়টার্সের মন্তব্যের অনুরোধের সাড়া দেয়নি অ্যাপল।

এর আগে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ব্যাপকহারে আমদানি শুল্ক বাড়ানোর কারণে অ্যাপল পণ্যের দাম নাটকীয়ভাবে বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেছিলেন, ট্রাম্প প্রশাসনের আরোপিত শুল্কের কারণে পরবর্তী আইফোনের দাম ২ হাজার ৩০০ ডলার পর্যন্ত হতে পারে। বিশ্লেষকরা আরও বলেছিলেন, শুল্কের কারণে বিভিন্ন কোম্পানির উৎপাদন ব্যয় ৩০ শতাংশ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। এই বাড়তি খরচ কোম্পানিগুলো ভোক্তাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে কি না সে বিষয়টিও স্পষ্ট নয়।

বাণিজ্য উত্তেজনা ও উচ্চ শুল্কের কারণে অ্যাপল ইতিমধ্যেই ভারতে উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। অ্যাপলের ভাষ্য, এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে শুধু শুল্কজনিত কারণে তাদের ৯০০ মিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত খরচ হতে পারে। বিশ্লেষকরা ভাবছেন, অ্যাপল দ্রুততার সঙ্গে চীন থেকে উৎপাদন সরিয়ে ভারত ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় কেন্দ্রস্থ করে তুলছে। এতে করে যুক্তরাষ্ট্রে সরবরাহ সহজ হবে এবং শুল্কের প্রভাব কিছুটা হলেও কমবে। বর্তমানে আইফোন ১৬ সিরিজের মূল মডেলের দাম ৭৯৯ ডলার হলেও, যুক্তরাষ্ট্রে শুল্কসহ তা বাড়তে পারে ১,১৪২ ডলার পর্যন্ত, যা ৪৩ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়। এই হিসাব করেছে রোজেনব্লাট সিকিউরিটিজ। দাম বাড়ানোর যৌক্তিকতা তৈরি করতে অ্যাপল পরিকল্পনা করছে বেশ কিছু নতুন ফিচার ও ডিজাইন পরিবর্তন। তার মধ্যে রয়েছে: অতিসিøম বডি, উন্নত এআই ফিচার, দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি, হাই-এন্ড ক্যামেরা আপগ্রেড।

তবে প্রযুক্তি বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, দাম বাড়ালে স্যামসাং, গুগল ও অন্যান্য অ্যান্ড্রয়েড নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সুযোগ নিয়ে মার্কেট শেয়ার দখলের চেষ্টা করতে পারে। শুধু বাজার নয়, রাজনৈতিক চাপ এড়াতেও অ্যাপলকে কৌশলী হতে হচ্ছে।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত