নিউইয়র্কের একটি বক্তৃতা মঞ্চে প্রখ্যাত সাহিত্যিক সালমান রুশদির ওপর প্রাণঘাতী হামলার অপরাধে নিউজার্সির এক ব্যক্তিকে ২৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের একটি আদালত। গত শুক্রবার এই রায় দেয় আদালত। এর আগে চলতি বছরের শুরুতে হত্যাচেষ্টা ও হামলার অভিযোগে হাদি মাতার নামের ২৭ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি দোষী সাব্যস্ত হন।
ব্রিটিশ সম্প্রচারমাধ্যম বিবিসি বলছে, ২০২২ সালের আগস্টে সালমান রুশদি মঞ্চে দর্শকদের সামনে বক্তব্য রাখছিলেন। তখন তার মুখ ও ঘাড়ে একাধিকবার ছুরিকাঘাত করা হয়। এ হামলায় তিনি একটি চোখের দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেন। তার লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল এবং একটি হাত পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়ে।
সেদিন সালমানের সাক্ষাৎকার নেওয়া ব্যক্তি হেনরি রিসকেও আহত করেছিলেন মাতার। এ জন্য সাত বছরের সঙ্গে আরও তিন বছর সাজা যোগ করা হয়েছে। তবে শুক্রবার চৌতাউকুয়া কাউন্টির জেলা অ্যাটর্নি জেসন শ্মিট বলেন, একই ঘটনায় উভয় ভুক্তভোগী আহত হওয়ায় সাজা একই সঙ্গে কার্যকর করতে হবে।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের তথ্য অনুযায়ী, সাজা দেওয়ার আগে মাতার দাঁড়িয়ে বাকস্বাধীনতা সম্পর্কে একটি বিবৃতি দেন। যেখানে তিনি রুশদিকে একজন ‘ভণ্ড’ বলে অভিহিত করেন। এর আগে মাতার সাংবাদিকদের বলেছিলেন, তিনি রুশদির ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ বইটির মাত্র দুই পৃষ্ঠা পড়েছেন তবে তার বিশ্বাস, লেখক ইসলাম ধর্মকে আক্রমণ করেছেন। শুক্রবার সাজা ঘোষণার সময় সালমান রুশদি আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।
যুক্তরাজ্য-যুক্তরাষ্ট্রের দ্বৈত নাগরিক সালমান রুশদি ২০২৪ সালে ‘নাইফ’ নামে একটি স্মৃতিচারণমূলক গ্রন্থ প্রকাশ করেন, যেখানে এই হামলার ভয়াবহ অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। ভারতের মুম্বাইয়ে জন্ম নেওয়া রুশদি শৈশবে ইংল্যান্ডে চলে যান। তার দ্বিতীয় উপন্যাস ‘মিডনাইটস চিলড্রেন’ (১৯৮১) তাকে খ্যাতির শিখরে পৌঁছে দেয় এবং এতে পরাধীনতা- উত্তর ভারতের চিত্রায়ণে তিনি ব্রিটেনের মর্যাদাপূর্ণ বুকার পুরস্কার লাভ করেন।