শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

জীবনের ১১ নিয়ম

আপডেট : ১৮ মে ২০২৫, ০৩:২৬ এএম

ভারতীয় বংশোদ্ভূত ইংরেজি ভাষার জনপ্রিয় লেখক চেতন ভগতের একটি অনুপ্রেরণাদায়ী বই ‘১১ ৎঁষবং ভড়ৎ ষরভব’। বইটিতে লেখক এমন ১১টি দিক তুলে ধরেছেন, যা বর্তমান পৃথিবীতে সফলতার জন্য সংগ্রামরত প্রতিটি মানুষের অনুসরণীয়। বইটির বিষয়বস্তু অনুসারে জীবনের ১১টি নিয়ম নিয়ে লিখেছেন এজাজ পারভেজ

স্বাস্থ্যকে অবহেলা নয়

‘স্বাস্থ্যই সব সুখের মূল’ একটি প্রাচীন প্রবাদ। এই প্রাচীন প্রবাদটিকে অবহেলা করেননি আধুনিক যুগের পাঠকের লেখক চেতন ভগত। তিনি মানুষের জীবনের ১১টি নিয়মের

প্রথমটিতেই বলেছেন, স্বাস্থ্যকে অবহেলা নয়’। স্বাস্থ্য ভালো না থাকলে পরিশ্রম করে সফলতা লাভ করা যায় না। তাই দৈনন্দিন জীবনের সব অভ্যাস স্বাস্থ্যবান্ধব হতে হবে। কাজের ব্যস্ততার জন্য অনিয়মিত আহার গ্রহণ, শরীরচর্চা না করা, অতিরিক্ত রাত জাগা, প্রভৃতি ক্ষতিকর অভ্যাস পরিহার করতে হবে।

নিজের আবেগের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা

যেসব কারণে একজন ব্যক্তি ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে জীবনকে ভুল পথে পরিচালিত করে তার মধ্যে অন্যতম প্রধান হলো, আবেগের বশবর্তী হওয়া। আবেগে অন্ধ হয়ে অনেকে নিজের ক্যারিয়ার ও লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হয়। সেজন্য নিজের আবেগের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা সাফল্য লাভের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সস্তা বিনোদনের পেছনে ছুটবেন না

ডোপামিন হরমোন মানুষের মধ্যে সুখানুভূতির সৃষ্টি করে। কোনো কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করলে, কাজের স্বীকৃতি পেলে, অন্যের কাছে মূল্যায়িত হলে যেমন ডোপামিন হরমোন ক্ষরিত হয় তেমনি সোশ্যাল মিডিয়া ব্রাউজিং, আড্ডা দেওয়া প্রভৃতি কাজেও ডোপামিন ক্ষরিত হয়। কিন্তু লেখক চেতন ভগত সস্তা ডোপামিন অর্থাৎ সোশ্যাল মিডিয়া থেকে প্রাপ্ত লাইক, কমেন্ট, শেয়ারের সংখ্যা দেখে সন্তুষ্টি লাভ বা অহেতুক আড্ডা থেকে প্রাপ্ত ডোপামিনের পেছনে ছুটতে মানা করেছেন।

যে সহে সে রহে

শরৎচন্দ্র তার বিলাসী গল্পে বলেছিলেন, ‘অতিকায় হস্তী লোপ পাইয়াছে কিন্তু তেলাপোকা টিকিয়া আছে।’ এই টিকে থাকার শক্তিকে লেখক চেতন ভগত মোটেও ছোট করে দেখেননি। অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেছেন, ‘দুঃসময়ে টিকে থাকা সুসময়ের বিপ্লবের সমান’। তাই এই ঝঞ্জাবিক্ষুব্ধ পৃথিবীতে টিকে থাকার জন্য চিরায়ত কৌশল যেমন প্রয়োগ করতে হবে তেমনি নতুন যুগের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতাগুলোও আয়ত্ত করতে হবে।

সহজ সাধারণ ইংরেজিতে যোগাযোগে দক্ষ হওয়া

এটা অনস্বীকার্য যে, ইংরেজি এমন একটি ভাষা যে ভাষা আয়ত্ত করতে পারলে পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে গিয়ে নিজের প্রয়োজনটি ব্যক্ত করা সম্ভব। বৈশ্বিক পৃথিবীতে যে মানুষ একটি নির্দিষ্ট গ-ি জীবনকে অতিবাহিত করতে চান তিনি প্রায় সময়ই তার যথাযথ মূল্যায়ন পান না। নিজের যথাযথ মূল্যায়নের জন্য তাই নিজেকে হাজির করতে হবে বিশ্ববাজারে। আর এজন্য ইংরেজিতে দক্ষ হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সহজ সরল ইংরেজিতে শোনা, বলা, পড়া ও লেখার দক্ষতা অর্জন করা এখন ততটাই প্রয়োজনীয় যতটা প্রয়োজনীয় বেঁচে থাকার জন্য শ্বাস নেওয়া।

নেটওয়ার্ক তৈরি

মানুষ যুথবদ্ধভাবে বেঁচে থাকে। একে অন্যের সহযোগিতা দ্বারাই মানুষ নির্মাণ করেছে এই সভ্যতা। তাই নিজের চারপাশে একটি সাহায্যকারী মানুষের শক্তিশালী বলয় গড়ে তোলা নিজের লক্ষ্য অর্জনের খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই সমমনা ও ইতিবাচক মানুষের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলুন।

ভালো মানুষ হন কিন্তু ব্যবহৃত হবেন না

সফল হতে ভালো মানুষ হওয়ার বিকল্প নেই। কিন্তু কেউ আপনার ভালোমানুষির সুযোগে আপনাকে ব্যবহার করছে কি না, লক্ষ্য রাখুন। নিজেকে ব্যবহৃত হতে দেবেন না।

বড় কাজকে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করুন

অধিকাংশ মানুষ সফলতা এজন্য অর্জন করতে পারে না কারণ সে কাজের ব্যাপ্তি দেখে ভয় পায়। কিন্তু আপনি যদি কোনো কাজকে কীভাবে ছোট ছোট করে ভাগ করে সম্পন্ন করতে হয় সে বিষয়ে দক্ষতা করে ফেলেন তাহলে কোনো কাজকেই আর ভয় পাবেন না। সফলতা তখন আপনারই।

আপনার নিয়ন্ত্রণে থাকা বিষয়ে মনোযোগ দিন

নিজের কাজের প্রতি মনোযোগী হন। যা আপনার নিয়ন্ত্রণে নেই সে বিষয়ে মনোযোগ দেবেন না। কারণ আপনি শুধু সেই বিষয়েই অবদান রাখতে পারবেন, যা আপনার নিয়ন্ত্রণে আছে।

ভুল থেকে শিখুন

টমাস আলভা এডিসন ট্যাংস্টেন আবিস্কার করতে ১০,০০০ বার পরীক্ষাটি করেন। প্রতিবার ভিনি ভিন্ন উপাদান দিয়ে চেষ্টা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, আমি ১০,০০০ বার ব্যর্থ হইনি। আমি শিখেছিলাম যে, ওই পদার্থ দিয়ে ট্যাংস্টেন তৈরি সম্ভব নয়। ভুল থেকে অনুতাপ করবেন না। ভুলকে পথের শেষ ভাববেন না। ভুল থেকে শিক্ষা নিন। আবার যাত্রা শুরু করুন।

বর্তমানে বাঁচুন

অমনোযোগী মানুষের মন অতীতচারী হয় বা ভবিষ্যতের আকাশকুসুম কল্পনায় ভেসে বেড়ায়। কিন্তু সফলতা লাভ করতে হলে বর্তমানে বাঁচুন।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত