মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ৩ আষাঢ় ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

জাতীয় বয়সভিত্তিক সাঁতার

প্রথম দিনে মাইশার রেকর্ড

আপডেট : ২২ মে ২০২৫, ১২:৩৩ এএম

অনেকদিন পর খুদে সাঁতারুতে মুখর হয়ে উঠল মিরপুরের জাতীয় সুইমিং কমপ্লেক্স। বিভিন্ন জেলা, বিভাগ ও দলের প্রায় সাড়ে ৫০০ সাঁতারু নিয়ে বুধবার শুরু হয়েছে ৩৭তম জাতীয় বয়সভিত্তিক সাঁতার ও ডাইভিং প্রতিযোগিতা। প্রথম দিনে হয়েছে ২৪টি ইভেন্ট। তবে সবাইকে ছাড়িয়ে আলো কেড়েছেন বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাইশা আক্তার মিম। বালিকা ১৫-১৭ বছর বিভাগে ১০০ মিটার ফ্রি স্টাইলে মিম ভেঙে দেন ১৩ বছরের পুরনো রেকর্ড। ২০১২ সালে এই ইভেন্টে রেকর্ড গড়েছিলেন আনসারের নাজমা খাতুন।

মিম নিজেকে চিনিয়েছিলেন সর্বশেষ বয়সভিত্তিক জাতীয় আসরে। বিকেএসপির দশম শ্রেণির ছাত্রী গত আসরে নিজের সেরা পারফরম্যান্স করেছিলেন ৭টি সোনা ও ২টি রুপা জিতে। এবার প্রথম দিনেই জিতেছেন ৩টি সোনা। যার মধ্যে ১০০ মিটার ফ্রি স্টাইলে নতুন জাতীয় রেকর্ড গড়তে সময় নেন ১ দশমিক ০৭: ৫৪ সেকেন্ড। 

কিশোরগঞ্জের হাওরে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন মিমের বাবা বাবুল মিয়া। মিমসহ তার ৫ সন্তান। মিম দ্বিতীয়। তবে সাঁতারে আলো ছড়িয়ে দরিদ্র বাবার পাশে দাঁড়িয়েছেন এই বয়সেই। বাবা শুকনো মৌসুমে চাষের কাজ করেন। আর বর্ষায় ধরেন মাছ। কখনো ধার-দেনা করে চলতে হয়। তবে গত বছর জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে মিম ভালো করার সুবাদে ফেডারেশন ও বিকেএসপির কাছ থেকে পেয়েছিলেন ২০ হাজার টাকা। সেই টাকা দিয়ে বাবার ঋণ শোধ করেছিলেন তিনি।

কিশোরগঞ্জের নিকলী থেকে উঠে আসা মিম এবারের আসরে ৯টি ইভেন্টে অংশ নেবেন। লক্ষ্য সব কটিতেই স্বর্ণপদক জয়। পরিবার ও এলাকাবাসীর সমর্থন পেলে ভবিষ্যতে দেশকে আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে সাফল্য এনে দিতে চান, ‘আমার পরিবারের সবাই খেলাধুলা সমর্থন করেন। আব্বু আমাকে নদীতে নিয়ে যখন সাঁতার শেখান তখন তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ি।’

এবার রেকর্ড গড়ে মিলেছে ৫ হাজার টাকা। এছাড়া স্বর্ণপদক জয়েও আছে অর্থ পুরস্কার। বেশি সাফল্যে অর্থের পরিমাণটাও বাড়বে। আর এখান থেকে অর্জিত সব অর্থ বাবার হাতে তুলে দিতে চান মিম। যাতে সামনের দিনগুলোতে বাবা একটু স্বস্তি নিয়ে পরিবারের ভরণ-পোষণ নিশ্চিত করতে পারেন।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত