সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

৮০ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন তিন ছাত্রনেতা

আপডেট : ২৪ মে ২০২৫, ১০:০০ পিএম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা, সাম্য হত্যার বিচার ও নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে প্রায় ৮০ ঘণ্টা ধরে অনশনরত তিন ছাত্র নেতা অনশন ভেঙেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের আশ্বাসের পর তারা অনশন ভাঙেন।

শনিবার (২৪ মে) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় ঢাবির ডা. মর্তুজা মেডিকেল সেন্টারে পানি পান করিয়ে তাদের অনশন ভাঙান উপাচার্য। এদিকে আগামী সোমবারের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়  কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের কমিশন গঠন করে বুধবারের মধ্যে তফসিল ঘোষণার দাবিতে বিক্ষোভ করেছে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ (বাগছাস)।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) বিকেলে অনশনরতদের সাথে সাক্ষাৎ করে তাদের দাবি পূরণের আশ্বাস দেন ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ। এছাড়াও আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজাহার আগেই ডাকসু নির্বাচনের জন্য সম্ভাব্য সব পদক্ষে গ্রহণ করে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে বলে জানান তিনি। তার এই আশ্বাসের ফলে অনশনরত তিন ছাত্র অনশন ভাঙতে রাজি হন। এ সময় উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ ও প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমদ উপস্থিত ছিলেন। এর আগে তারা অসুস্থ হলে ভিসির বাসভবনের সামনে থেকে ঢাবির শহীদ মুর্তজা মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। 

এর আগে তিন দফা দাবিতে বুধবার (২১ মে) দুপুর সাড়ে বারোটায় ঢাবির ভিসির বাসভবনের সামনে আমরণ অনশনে বসেন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা। একই দিন সন্ধ্যায় ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাবি শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মাহতাব ইসলাম অনশনে বসেন। পরবর্তীতে ২২ মে সন্ধ্যায় তাদের সঙ্গে অনশনে বসেন স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্রসংসদের আহ্বায়ক জামালুদ্দিন মো. খালিদ।

এদিকে আগামী সোমবারের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের কমিশন গঠন করে বুধবারের মধ্যে তফসিল ঘোষণার দাবিতে বিক্ষোভ করেছে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ (বাগছাস)। শনিবার দুপুরে তারা মধুর ক্যান্টিনের সামনে জড়ো হয় এবং  সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে কলাভবন, হলপাড়া প্রদক্ষিণ করে সিনেট ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে।

অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবি উত্থাপন করেন। তাদের দাবিগুলো হলো-সাম্য হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করা, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা জোরদার করা ও দ্রুততম সময়ের মধ্যে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা।

এসময় সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আব্দুল কাদের সোমবারে মধ্যে ডাকসুর নির্বাচন কমিশন গঠন এবং বুধবারের মধ্যে তফসিল ঘোষণার আল্টিমেটাম দেন। তিনি বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচন নিয়ে আর কোনো টালবাহানা আমরা মেনে নেব না। নির্বাচন বানচালের কোনো চেষ্টাই সফল হবে না। ভিসি-প্রক্টরের উদ্দেশে তিনি বলেন, ক্যাম্পাসে শিক্ষক, কর্মকর্তা নির্বাচন হতে পারে। কিন্তু ডাকসু নির্বাচন হতে পারে না। যদি আপনারা নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিত ও ডাকসু নির্বাচন না দিতে পারেন, তাহলে আপনারা এই আসনের যোগ্য না।’

অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিদিন দল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে আলোচনায় বসেন। আসন্ন কোরবানির ঈদের আগেই ডাকসুর রোডম্যাপ ঘোষণা হবে এবং সাম্য হত্যার সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দিলে তারা কর্মসূচি শেষ করেন।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত