বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

ঘরে নফল নামাজ পড়ার তাগিদ

আপডেট : ১৭ জুন ২০২৫, ১২:১২ এএম

ইসলাম একটি পরিপূর্ণ জীবনবিধান, যা মানুষের প্রতিটি কাজকে ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত করেছে, যদি তা সঠিক উদ্দেশ্য ও পদ্ধতিতে সম্পন্ন করা হয়। তবে এর মধ্যেও কিছু ইবাদত রয়েছে, যেগুলো ইসলামের মৌলিক স্তম্ভরূপে বিবেচিত। নামাজ তার অন্যতম। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মুসলমানের জন্য ফরজ এবং তা যথাসময়ে জামাতের সঙ্গে আদায় করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিধান। এই জামাতভিত্তিক নামাজ মুসলিম সমাজে ঐক্য, শৃঙ্খলা ও ভ্রাতৃত্ববোধ গড়ে তোলে। পাশাপাশি নামাজ মানুষের ব্যক্তিগত আত্মশুদ্ধির পথও সুগম করে। যদিও ফরজ নামাজ মসজিদে গিয়ে জামাতের সঙ্গে আদায় করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা, তবুও ইসলামের নির্দেশনা অনুযায়ী ফরজ নামাজ ছাড়া অন্যান্য নফল নামাজ নিজ ঘরে পড়া উত্তম।

যে ঘরে ইবাদত-আমল হয় না, সে ঘর ধীরে ধীরে শয়তানের আস্তানায় পরিণত হয়। আর যে ঘরে আল্লাহর নাম উচ্চারিত হয়, তাতে নেমে আসে রহমতের স্রোত, দূর হয় অকল্যাণ ও অশান্তি। আজকের ব্যস্ত ও যান্ত্রিক জীবনে মানুষ যখন আত্মিক প্রশান্তি হারিয়ে ফেলছে, তখন ঘরে নফল নামাজ আদায় হতে পারে একটি কার্যকর সমাধান। এটি শুধু আত্মশুদ্ধিই নয়, বরং পরিবারকেও দ্বীনি পরিবেশে গড়ে তুলতে সহায়ক ভূমিকা রাখে। একজন মানুষ যখন নিজ ঘরে নফল ইবাদতে নিমগ্ন হয়, তখন তা পরিবারের অন্য সদস্যদেরও উদ্বুদ্ধ করে।

জামাতে নামাজ আদায়ের ফজিলত অনেক। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, জামাতে নামাজ আদায়েরে ফজিলত একাকী আদায়কৃত নামাজ অপেক্ষা ২৭ গুণ বেশি। (সহিহ বুখারি ৬৪৫) অলসতা ও অবহেলায় জামাত ত্যাগকারীর প্রতি নবী করিম (সা.) এতটাই ক্ষুব্ধ ছিলেন যে, তিনি তাদের ঘরবাড়ি পর্যন্ত জ্বালিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। এসব কঠোরতা ফরজ নামাজের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। ফরজ ছাড়া অন্যান্য নফল নামাজ নিজ ঘরে পড়াই উত্তম। নবী করিম (সা.)-এর আমলও তাই ছিল। যদি ঘরে নামাজ পড়ার পরিবেশ থাকে তাহলে নফল ও সুন্নত ঘরে আদায় করে এরপর মসজিদে গিয়ে জামাতে শামিল হওয়া কাম্য। হজরত যায়েদ ইবনে সাবিত (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেন, ফরজ ছাড়া তোমাদের বাড়িতে আদায়কৃত নামাজ সর্বোৎকৃষ্ট। (জামে তিরমিজি ৪৫০)

ঘরে নফল নামাজ আদায়ের তাগিদ দিয়েছেন নবীজি (সা.)। হজরত ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেন, তোমাদের বাড়িতেও নামাজ আদায় করো, সেটাকে কবরস্থানে পরিণত কোরো না। (জামে তিরমিজি ৪৫১) ঘরে নামাজ পড়ার উদ্দেশ্য এটা হতে পারে যে, নিজ আবাসস্থলও যেন আল্লাহর স্মরণ থেকে বঞ্চিত না হয় এবং শয়তানের প্রভাবমুক্ত থাকে। মহান আল্লাহ আমাদের আমল করার তওফিক দান করুন। আমিন।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত