দেশে করোনায় আরও দুজন মারা গেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল মঙ্গলবার সকাল আটটা পর্যন্ত) মারা যাওয়া এই দুজনের একজন পুরুষ ও একজন নারী। তাদের একজনের বয়স ৪১-৫০ বছর ও অন্যজন ৭১-৮০ বছর। তাদের একজন ঢাকায় ও অন্যজন চট্টগ্রামে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। এটাই এ বছরের একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু। এ নিয়ে এ বছর করোনায় মোট সাতজন মারা গেলেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এই তথ্য জানায়। অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩১২টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। শনাক্তের হার ছিল ৫ দশমিক ৭৭ শতাংশ। এ নিয়ে এ বছর মোট করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৩৩১ জন ও নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৩ হাজার ৯৬৯টি। পরীক্ষা অনুপাতে মোট শনাক্তের হার ১৩ শতাংশ।
নতুন রোগীদের মধ্যে রাজধানীতে ৫২টি নমুনা পরীক্ষা করে দুজন, ময়মনসিংহে একজন, চট্টগ্রামে ১৮০টি নমুনা পরীক্ষা করে ১০ জন, রাজশাহীতে ২৬টি নমুনা পরীক্ষা করে চারজন ও খুলনায় ১৫টি নমুনা পরীক্ষা করে একজন রোগী শনাক্ত হয়েছে।
দেশে ২০০০ সালের ৮ মার্চ প্রথম করোনা শনাক্ত হয়। সেদিন থেকে গতকাল পর্যন্ত মোট করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে ২০ লাখ ৫১ হাজার ৮৭৬ জন ও নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১ কোটি ৫৭ লাখ ২৭ হাজার ৭৬৭টি।
করোনা মহামারীর প্রথম বছর ২০২০ সালে রোগটিতে ৭ হাজার ৫৫৯ জন মারা যান। এরপর সবচেয়ে বেশি ২০ হাজার ৫১৩ জনের মৃত্যু হয় ২০২১ সালে। এরপর ২০২২ সালে ১ হাজার ৩৬৮ জন, ২০২৩ সালে ৩৭ জন এবং ২০২৪ সালে ২২ জন মারা যান করোনায়।
সম্প্রতি ভারতসহ পার্শ্ববর্তী কয়েকটি দেশে করোনাভাইরাসের নতুন উপধরনের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় এবং অন্যান্য দেশে ভাইরাসের এই ধরনটি ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় নতুন করে সতর্কতা জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ভারত এবং ভাইরাস ছড়ানো অন্যান্য দেশে ভ্রমণ থেকে বিরত থাকতে বলেছে। পাশাপাশি ঝুঁকি মোকাবিলায় সব স্থল ও বিমানবন্দরে হেলথ স্ক্রিনিং ও নজরদারি বাড়াতে বলেছে। মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে পরামর্শ দিয়েছে।
আজ চট্টগ্রামে শুরু করোনার টিকাদান : আমাদের চট্টগ্রাম ব্যুরো জানিয়েছে, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে আজ বুধবার থেকে নগরে শুরু হচ্ছে করোনাভাইরাসের টিকাদান কার্যক্রম। প্রথম ধাপে বয়স্ক ও প্রসূতিদের ফাইজারের বুস্টার ডোজ দেওয়া হবে। পর্যায়ক্রমে অন্যদেরও টিকার আওতায় আনা হবে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ইমাম হোসেন এই তথ্য জানান।
সিটি করপোরেশনের তথ্য অনুযায়ী, নগরকে সাতটি অঞ্চলে ভাগ করে প্রতিটি অঞ্চলে প্রাথমিকভাবে ৩০০ ডোজ করে ফাইজারের টিকা পাঠানো হয়েছে। প্রতিটি ভায়ালে রয়েছে ছয় ডোজ টিকা। বর্তমানে ৬৭ হাজার ডোজ ফাইজারের টিকা রয়েছে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ইপিআই সংরক্ষণাগারে। বিভিন্ন উপজেলায় ৩০০ করে ডোজ পাঠানো হয়েছে। জুনের প্রথম সপ্তাহ থেকে সেখানে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়।
সিভিল সার্জন কার্যালয় জানিয়েছে, যেসব ব্যক্তি আগে এক বা দুটি ডোজ নিয়েছেন, তারা এ বুস্টার ডোজ নিতে পারবেন। এমনকি আগে একেবারেই টিকা না নেওয়া ব্যক্তিরাও এই ডোজ নিতে পারবেন। ১২ বছর বয়সী ও তদূর্ধ্ব সবাইকে এই টিকা দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
নারায়ণগঞ্জে করোনা পরীক্ষা শুরু : আমাদের নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, গতকাল সকাল থেকে নারায়ণগঞ্জ শহরের ৩০০ শয্যা হাসপাতালে কম সময় ও স্বল্প খরচে করোনার র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে হাসপাতালের চিকিৎসা তত্ত্বাবধায়ক (সুপার) ডা. আবুল বাশার বলেন, মঙ্গলবার (গতকাল) সকাল থেকে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট শুরু হয়েছে। প্রয়োজনীয় কেমিকেল ও রিএজেন্ট পেলে পিসিআর ল্যাবও চালু করা হবে। গুরুত্বর কোনো করোনা আক্রান্ত রোগী আসলে তার জন্য আইসোলেটেড বেডও রেডি করা হয়েছে। তবে আইসিইউ বিভাগে জনবল সংকট রয়েছে। বর্তমানে সরকার ডিএনসিসি মার্কেট হাসপাতালকে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল ঘোষণা করেছে।