বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

দুই বিশ্বযুদ্ধের নিষ্ফল কান্না

আপডেট : ২৩ জুন ২০২৫, ০৩:০৭ এএম

এ এক উন্মাদ, আজব, উদ্ভট, অমানবিক ও হিংস্র পৃথিবীতে বাস করছি আমরা। দন্ত-নখরবিহীন জাতিসংঘের উদ্বেগ প্রকাশ করা ছাড়া কোনো কাজ নেই। যুদ্ধে সাধারণ নাগরিকদের রক্ষাকবচ ‘জেনেভা কনভেনশন’ এখন উপহাসের কেতাব! বেশিরভাগ দেশই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের প্রেমে প্রতিবেশীকে গেছে ভুলে! মানুষ মরছে হাজার হাজার, লাখ লাখ আর প্রতিবাদকারীরা পরছে হাতকড়া, না হলে শত্রুপক্ষের নজরদারির কারণে আতঙ্কে! এ রকম পাশবিক, চূড়ান্ত নিষ্ঠুর অমানবিক পৃথিবীতে মানুষ সুস্থ থাকতে পারে না, সেটি সম্ভবও নয়। এ যেন মাৎস্যন্যায় যুগকেও হার মানিয়েছে। কিছু পরাশক্তির কাছে আমাদের এই অতি গর্বের, উন্নত সভ্যতা (?) তীব্র মর্যাদাহানি ও চরম অপমানের শিকার হচ্ছে। অবস্থা এতটাই বেআইনি হয়েছে যে, এখন কোনো রাষ্ট্র চাইলেই আরেক রাষ্ট্রকে নির্বিঘ্নে আক্রমণ করতে পারে। বর্তমান সময়ের হিসাবে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ খরচ হয়েছিল ১০.৫০ ট্রিলিয়ন ডলার (১৯১৮ সালে যুদ্ধের সময়ে যা ছিল ৪০০ বিলিয়ন ডলার) আর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের খরচ হয়েছিল ৭৮.৩৮ ট্রিলিয়ন ডলার (সে সময়ে ৫ ট্রিলিয়ন ডলার)। আর্থিক দিক থেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ কতটা দানব ছিল, তা বোঝা যায় যদি আমরা বর্তমান বৈশ্বিক জিডিপির সঙ্গে তুলনা করি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মুদ্রাস্ফীতি-সমন্বিত ব্যয় আজকের বৈশি^ক জিডিপির প্রায় ৬৯% (১১৩.৮ ট্রিলিয়ন ডলার)। ওই যুদ্ধ ছিল চরম ধ্বংসাত্মক, যেখানে পারমাণবিক বোমা ব্যবহার করা হয়েছিল।   

মানুষের কসাইখানা ছিল দুই বিশ্বযুদ্ধ : প্রথম বিশ্বযুদ্ধে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের মৃত্যু সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল প্রায় ১ কোটি আর বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যু হয়েছিল প্রায় ৭ কোটি (সামরিক অভিযান, দুর্ভিক্ষ ও রোগ ইত্যাদি কারণে)। আহত সৈন্যের সংখ্যা পৌঁছায় প্রায় ২ কোটি ১০ লাখে। লাখ লাখ মানুষ ইউরোপ জুড়ে নিখোঁজ এবং বাস্তুচ্যুত হয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ছিল আরও হৃদয়বিদারক ও মর্মান্তিক। ওই যুদ্ধে সামরিক মানুষের মৃত্যুর সংখ্যা ছিল প্রায় ২.৫ কোটি এবং বেসামরিক প্রায় ৫.৫ কোটি মানুষের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছিল। ওই যুদ্ধে হলোকাস্টের শিকার হন প্রায় ৬০ লাখ ইহুদি ব্যক্তি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বাস্তুচ্যুত হন প্রায় ৬ কোটি মানুষ। জাপানে পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গে ভস্মীভূত হয়ে মারা যান (হিরোশিমা ও নাগাসাকি) ১ লাখ ১০ হাজার নিরীহ মানুষ। পরবর্তীকালে তেজস্ক্রিয়তাজনিত অসুস্থতা, ক্যানসার ও ট্রমাজনিত কারণে আরও এক লাখ মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। সেই ভয়াবহ হামলার নমুনা হিসেবে এখনো সেখানে বিকলাঙ্গ ও মানসিকভাবে অসুস্থ শিশুর জন্ম দেখা যায়।

জেনেভা কনভেনশনের অস্তিত্ব নেই : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর চতুর্থ জেনেভা কনভেনশনের যে ধারাটি বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা দেয়, তার নির্বিচার লঙ্ঘন ঘটে চলেছে। বেসামরিক লোকদের ইচ্ছাকৃতভাবে লক্ষ্যবস্তু করা বা বেপরোয়াভাবে তাদের বিপদে ফেলার চর্চা ব্যাপক ও অবিরাম ঘটে চলেছে। যদিও এ বিষয়ে কোনো একক সরকারি হিসাব নেই। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী বড় বড় সংঘাতে প্রায় ৮ কোটি থেকে ১০ কোটিরও বেশি বেসামরিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন বলে নানা সূত্র উল্লেখ করছে। শুধু ২০২৩ সালে, জাতিসংঘ ৩৩,৪৪৩ জনেরও বেশি বেসামরিক মৃত্যুর রেকর্ড করেছে, যা ২০২২ সালের তুলনায় ৭২% বেশি। নানা নথি ও গবেষণা বলছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ২ কোটি থেকে ২.৫ কোটি বেসামরিক মানুষ প্রায় ১০০টি যুদ্ধ ও গৃহযুদ্ধের কারণে নিহত হয়েছে। অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয় হলো যুদ্ধ-পরবর্তী খাদ্যের অভাব, দুর্ভিক্ষ, রোগব্যাধি ও ভবন ধসের কারণে জীবন দিয়েছে ৬ থেকে ৮ কোটি মানুষ! ভাবা যায়? যুদ্ধের নিয়ম লঙ্ঘনের মধ্যে রয়েছে, নির্বিচারে বোমা হামলা, আশ্রয়কেন্দ্র, হাসপাতাল বা স্কুলকে লক্ষ্য করে আক্রমণ এবং প্রয়োজনের তুলনায় যথেচ্ছ বলপ্রয়োগ। চতুর্থ জেনেভা কনভেনশনের (১৯৪৯) অধীনে এসবই গুরুতর অগ্রাহ্য বা নিয়ম লঙ্ঘন। এসব আক্রমণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রগুলো দাবি করছে, তাদের আঘাত ছিল খুবই যথাযথ (প্রিসাইজ) অথবা সেগুলোতে সামরিক প্রয়োজনীয়তার আইন ও নীতিমালা প্রয়োগ করা হয়েছে। কিন্তু নানা এনজিও যেমন অ্যামনেস্টি, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, রেডক্রিসেন্ট প্রায়ই অতিরিক্ত বা বেআইনি কর্মকা-ের তথ্য তুলে ধরেছে। সিরিয়া, ইউক্রেন ও গাজায় বেসামরিক লোকদের হত্যার জন্য (যুদ্ধের) আইনবহির্ভূত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। যেমন সিরিয়ায় বেসামরিক এলাকায় রাসায়নিক হামলায় (ঘৌতা শহর, ২০১৩ সাল) অন্তত ১,৫১৪ ব্যক্তি শ্বাসকষ্টে মৃত্যুবরণ করে। এদের মধ্যে ২১৪ জন শিশু এবং ২৬২ জন মহিলা ছিল। আবার, ইউক্রেনের হাসপাতালগুলোতে বোমা হামলা করে রাশিয়া। যেমন মারিউপোল প্রসূতি ওয়ার্ড, ওখোমাতডিৎ শিশু হাসপাতাল এবং গাজায় অন্তত ২০০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে (স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয়) ইসরায়েলি হামলায় ১০০ ছাত্রছাত্রী নিহত হয়। এ ছাড়া কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে নির্যাতন, খাদ্য সরবরাহে বাধা দিয়ে অবরুদ্ধ এলাকার মানুষকে ক্ষুধার্ত রাখা, বসনিয়া ও হারেজগোভিনায় জাতিগত (মুসলিম) নিধন চালানো সাধারণ ঘটনায় পরিণত হয়েছিল। যুদ্ধের খরচ দিয়ে কী করা যেত : আমরা যদি যুদ্ধের খরচের সঙ্গে আর্থিক ও শিক্ষাগত উন্নয়নের তুলনা করি তাহলে দেখব, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রায় ৭০ বছরের জন্য অর্থায়ন করতে পারত। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক খরচ ৫৮০ কোটি ডলার। আর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ব্যয় দিয়ে হার্ভার্ডকে ৮৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে অর্থায়ন করা যেত। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ব্যয়ের অর্থ দিয়ে ২০০টি বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ করা যেত আর পরবর্তী যুদ্ধের টাকা দিয়ে আরও ২,৫০০ বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলা যেত। অর্থাৎ ওই অর্থ দিয়ে পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি বড় শহরে একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা যেত। একই ভাবে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের টাকা দিয়ে ৬০০-৮০০টি পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল তৈরি করা সম্ভব ছিল। আর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে খরচকৃত অর্থ দিয়ে আট হাজার থেকে ১০ হাজার আধুনিক হাসপাতাল তৈরি করা সম্ভব ছিল যা কিনা বিশ্বব্যাপী সর্বজনীন চিকিৎসার জন্য যথেষ্ট। ধ্বংসের পরিবর্তে এই তহবিল দিয়ে লাখ লাখ শিশুকে পূর্ণ শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষিত করা যেত। পৃথিবী কয়েক দশক আগেই গুটিবসন্ত বা ম্যালেরিয়া নির্মূল করতে পারত আর বিশ্বের প্রায় প্রতিটি গ্রামে পরিষ্কার পানি সরবরাহ ব্যবস্থা তৈরি করা যেত।

জাতিসংঘের সংস্কার জরুরি : জাতিসংঘ সাম্প্রতিক অনেক যুদ্ধ বন্ধ করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। বিশেষ করে একবিংশ শতাব্দীতে। এক কথায় বলতে গেলে, জাতিসংঘ মূল কাজে ব্যর্থ হয়েছে। যেমন :  সিরিয়ার মতো বড় যুদ্ধ প্রতিরোধ বা বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছে জাতিসংঘ। এদেশে ২০১১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ৫ লাখেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, লাখ লাখ নাগরিক হয়েছে বাস্তুচ্যুত। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যদের ভেটো ক্ষমতার কারণে দেশটি চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাশিয়া সিরিয়া বিষয়ক আলোচনায় নিরাপত্তা পরিষদে ১৭টি প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অন্যদের বিষয়ে ভেটো দিয়েছে। এতে রুদ্ধ হয়েছে যুদ্ধ বন্ধের প্রক্রিয়া। ইউক্রেনে যুদ্ধের দামামা বন্ধ করতে জাতিসংঘ নিষ্ফল হয়েছে। নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হওয়ার সুবাদে ইউক্রেনের পক্ষে যায় এমন সব প্রস্তাবে রাশিয়া ভেটো দিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়ার ভেটো আর নিরাপত্তা পরিষদের বারংবার আলোচনার মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে ইউক্রেনের ভাগ্যের চাকা। এদিকে ইয়েমেন, গাজা, সুদান, ইথিওপিয়ায় (টাইগ্রে) ব্যাপক বেসামরিক দুর্ভোগ ও চলমান সংঘাতে জাতিসংঘ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।

নিরাপত্তা পরিষদের পঙ্গুত্ব : জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ হলো শান্তিরক্ষা বাহিনীর মূল শক্তি। কিন্তু পাঁচটি স্থায়ী সদস্যের (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, চীন, রাশিয়া) ভেটো ক্ষমতার কারণে এটি এখন পঙ্গু। এই রাষ্ট্রগুলো প্রায়ই মিত্রদের রক্ষা করতে, যুদ্ধাপরাধ উপেক্ষা করতে বা তাদের নিজস্ব ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থকে এগিয়ে নিতে ভেটো ব্যবহার করে চলেছে। শুধু তাই নয়, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীরা কখনো কখনো বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছে, যেমন রুয়ান্ডায় ১৯৯৪ সালে এবং বসনিয়া ও হারজেগোভিনার শহর স্রেব্রেনিকায় ১৯৯৫ সালের যুদ্ধে অনেক লোক হতাহত হয়েছে। এসবের বাইরে কখনো কখনো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পরিষদ অনেক দেরি করেছে বা সম্পদের অভাবে অ্যাকশন নিতে পারেনি। জাতিসংঘকে মেরামত করতে হবে : মেরামত কাজের প্রথম শর্ত হচ্ছে, নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কার করা। পাঁচ রাষ্ট্রের বাইরে এর সদস্যপদ সম্প্রসারণ করতে হবে। ভারত, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা, নাইজেরিয়া বা ইন্দোনেশিয়ার মতো বৈশ্বিক দক্ষিণ শক্তিগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করে স্থায়ী সদস্যপদ সম্প্রসারণ করা যেতে পারে। ভেটো ক্ষমতা বাতিল বা সীমিত করা, বিশেষ করে গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ ইত্যাদি ক্ষেত্রে ভেটো ক্ষমতা সীমিত বা বাতিল করতে হবে। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা আদেশ দেওয়ার সক্ষমতাকে অনেক শক্তিশালী করতে হবে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনীকে ঢেলে সাজাতে হবে, যাতে তারা বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা দিতে পারে। সংকট অঞ্চলে আগাম মোতায়েনের অনুমোদন দিতে হবে। বিশ্বব্যাপী দক্ষিণের দেশগুলোকে সিদ্ধান্ত গ্রহণে আরও বেশি ভূমিকা দিতে হবে। জাতিসংঘকে ১৯৪৫ সালের রাজনীতি নয়, একবিংশ শতাব্দীর বাস্তবতার প্রতিফলন ঘটাতে হবে। সংঘাতের সময় সাধারণ নাগরিকদের ‘রক্ষার দায়িত্ব’ (রেস্পনসিবিলিটি টু প্রোটেক্ট) ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে হবে। চরম জরুরি পরিস্থিতিতে সাধারণ পরিষদকে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ভেটো বাতিল করার ক্ষমতা দেওয়া যেতে পারে। এদিকে ইরানের ওপর ইসরায়েলের সামরিক হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দ্রুত এই উত্তেজনা থামানোর আহ্বান জানিয়েছে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) ও আরব লিগ। তারা ইস্তাম্বুলে শুক্র ও শনিবার পৃথক বৈঠকের পর বলেছে, এ ধরনের হামলা জাতিসংঘের সদস্য দেশের সার্বভৌমত্বের স্পষ্ট লঙ্ঘন এবং পুরো অঞ্চলের শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি। ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের কাউন্সিল বৈঠকে সংশ্লিষ্ট দেশগুলো সর্বসম্মতিক্রমে গাজা ও ইরানে ইসরায়েলি আগ্রাসনের নিন্দা জানায়। সেই সঙ্গে, এই অঞ্চলে শান্তি পুনরুদ্ধারের জন্য অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি এবং কূটনৈতিক সমাধানের আহ্বান জানায়। সর্বশেষ : গত শনিবার রাতে ইরানের ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহান তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ডোনাল্ড ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ইরানও তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলার বিষয় নিশ্চিত করেছে। তেহরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থা ‘অ্যাটমিক এনার্জি অর্গানাইজেশন অব ইরান’ (এইওআই) বলেছে এ হামলা আন্তর্জাতিক আইন, বিশেষ করে পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তির (এনপিটি) লঙ্ঘন। যে তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার কথা যুক্তরাষ্ট্র বলছে, প্রকৃত অর্থে সেখানে তেজস্ক্রিয়তা সৃষ্টি করার মতো কোনো পদার্থ নেই। বিপুল অর্থের অপচয়, ক্ষমতার দম্ভ, আগ্রাসী মনোভাব এবং বিশ্বকে শাসন করার উদগ্র বাসনা থেকে বিশ্বের শান্তিকামী মানুষকে রক্ষা করবে কে?

লেখক: অর্থনৈতিক বিশ্লেষক ও ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক

[email protected]

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত