‘ক্ষেপণাস্ত্র দূরের কথা আজ সারা দিন তেহরানে একটা ককটেলের শব্দও পেলাম না! এতেই বোঝা যায়, ইরানি হামলার কাছে ইসরাইল কতটা অসহায়।’ ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলা চালানোর পর তেহরানের জনগণের মন্তব্য এমনই। ইরান-ইসরাইল সংঘাতের পর থেকেই ইরানের জনগণের আত্মশক্তি সামরিক শক্তির চেয়ে কম নয়। যুক্তরাষ্ট্রের হামলার আগেই টের পায় ইরান, গোপন স্থানে সরানো হয় ইউরেনিয়াম। যুক্তরাষ্ট্র হামলা চালায় রবিবার ভোরে আর ইউরেনিয়াম সরানো হয় শনিবার ভোরে।
গত শনিবার মার্কিন যুদ্ধবিমানগুলো ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। লক্ষ্যবস্তু ছিল ফোরডো, নাতাঞ্জ এবং ইসফাহানের পারমাণবিক কেন্দ্র। এই হামলা বিশ্বজুড়ে উদ্বেগের জন্ম দিলেও ইরান সরকার বলছে, এসব অঞ্চলের সাধারণ জনগণের জন্য তেমন কোনো ঝুঁকি তৈরি হয়নি।
ইরান সরকারের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, ‘নাতাঞ্জ, ইসফাহান এবং ফোরডোসহ পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর পার্শ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দাদের কোনো বিপদের আশঙ্কা নেই। ইরানের জনগণ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা চালিয়ে যতে পারে।’ তিনি নিশ্চিত করেন যে, হামলার পর এসব এলাকায় তেজস্ক্রিয় বিকিরণের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
ইরানের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, মার্কিন হামলার আগে ইরানের বেশিরভাগ উচ্চসমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম গোপন ও নিরাপদ স্থানে স্থানান্তর করা হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘এই পদক্ষেপটি শনিবার ভোরেই সম্পন্ন হয় এবং এই কৌশলগত প্রস্তুতি ইরানের ক্ষয়ক্ষতি অনেকাংশে কমিয়েছে।’
তিনি আরও জানান, ‘ফোরডো পারমাণবিক স্থাপনায় কর্মীদের সংখ্যা কমিয়ে আনা হয়েছে, যাতে সম্ভাব্য মানবিক ক্ষয়ক্ষতি হ্রাস পায়।
অন্যদিকে, মার্কিন এই আগ্রাসনের প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি (এনপিটি)-এর ১০ নম্বর অনুচ্ছেদের আওতায় ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার আইনি অধিকার রাখে বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্ট কূটনৈতিক মহল।
আইআরজিসির জনসংযোগ বিভাগ প্রথমবারের মতো খাইবার-শেকান নামে বহুমুখী-ওয়ারহেড বহনে সক্ষম ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের ঘোষণা দিয়েছে। ট্রু প্রমিজ-৩ অপারেশনস রুমে অবস্থান করা আইআরজিসির কমান্ডার-ইন-চিফ মেজর জেনারেল মোহাম্মদ পাকপুর জানান, ইসরাইলের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান ২৪/৭ চলমান থাকবে; যতক্ষণ না ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠী তাদের অপরাধে শাস্তি পায়।