সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

অপচয় অভাব ডেকে আনে

আপডেট : ২৪ জুন ২০২৫, ১২:১৭ এএম

অপচয় করা কবিরা গুনাহ। এ গুনাহ অভাব ডেকে আনে। তবুও মানুষ এ বিষয়ে সচেতন হয় না। তাই তো দেখা যায়, প্রয়োজন ছাড়াই গ্যাসের চুলা জ্বালিয়ে রাখা হচ্ছে। ছাদের ওপর ট্যাংকি থেকে পানি পড়ছে। মোটর কখন ছেড়েছেন বাড়িওয়ালা ভুলেই গেছেন। পানিতে রাস্তা তলিয়ে গেছে। পথচারীদের চলাচলে অসুবিধার শেষ নেই। খেতে পারবেন এক প্লেট। অথচ তিন প্লেট খাবার নিলেন। পরে সব খাবার নষ্ট হলো। শার্ট, প্যান্ট যা আছে চলে। তারপরও আলমারি ভরা শার্ট-প্যান্ট। পরে আর পরাই হয় না। মা বোনদের শাড়ি, গহনা, কাপড়, মেকআপ সামগ্রী যা দরকার, কেনা হয় অনেক বেশি। সব ব্যবহারও হয় না। পরে ফেলা দেওয়া হয়।

অর্থ, সম্পদ ও খাবারে সচেতনভাবেই অপচয় করা হচ্ছে। অথচ প্রকৃত মুসলমান অপচয় করতে পারে না। রাসুল (সা.) ও সাহাবিরা প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ রাখতেনই না। সব দান করে দিতেন। অপচয়ের তো প্রশ্নই ওঠে না। আমরা কেমন উম্মত? সম্পদের গর্বে মাটিতে পা পড়ে না। আবার এই সম্পদ অহেতুক অপচয়ও করি। ধনীর সম্পদে যে গরিবের হক আছে সেই কথা যেন আমরা ভুলেই গেছি। এত কষ্টের সম্পদ মানুষকে দেব কেন? এমন মিথ্যা দম্ভ, অহংকার সচরাচর দেখা যায়।

গোটা পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ। তিনি যতটুকু সম্পদ আমাদের দেন অবশ্যই সেটার সঠিক ব্যবহার করতে হবে। সম্পদ তিনি দেন। সেই আল্লাহকেই সম্পদের হিসাব দিতে হবে। অপচয়কারীর পরিণাম আখেরাতে তো বটেই পৃথিবীতেও ভালো নয়। ভয়ানক আজাব তার জন্য অপেক্ষমাণ। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘নিশ্চয় অপচয়কারীরা শয়তানের ভাই।’ (সুরা বনি ইসরাইল ২৭)

খাবার যেমন কম খাওয়া উত্তম তেমনি খাদ্যের অপচয় করা যাবে না। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা পানাহার করো, কিন্তু অপচয় কোরো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ অপচয়কারীকে পছন্দ করেন না।’ (সুরা আরাফ ৩১) কেউ যদি আল্লাহর অপছন্দনীয় বান্দা হতে চায়। তাহলে সে অপচয় করতে পারে। এমন আহাম্মক যে নেই তা বলা যাবে না।

অপচয় সম্পর্কে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহতায়ালা অপচয়কারীকে অভাবগ্রস্ত করেন।’ আসলে অপচয়কারী আল্লাহর দেওয়া অনুগ্রহের ব্যাপারে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না। অপচয় করে। পরে নিজের করুণ পরিণতি নিজেই ডেকে আনে। ইমাম সাদেক (রা.)-এর মতে, চার শ্রেণির মানুষের দোয়া আল্লাহ কবুল করেন না। তার মধ্যে এক শ্রেণি হলো বিনা কারণে যারা অর্থ অপচয় ও অপব্যয় করে। ইসলাম মধ্যম পন্থাকে সমর্থন করে। যতটুকু দরকার ততটুকু সম্পদের ব্যবহার করতে হবে। অর্থ ব্যয়েও মধ্যম পন্থা অবলম্বন করতে হবে।

আমার যা আছে তার ব্যবহারের হিসাব আল্লাহকে দিতে হবে। সম্পদ তিনি দেন। মুহূর্তে কেড়ে নিতে পারেন। মনে-প্রাণে এমন বিশ্বাসে অটল থাকা চাই। তাহলে প্রাত্যহিক জীবনে অপচয় থেকে আমাদের বেঁচে থাকা সম্ভব হবে।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত