
শহীদ মিনার প্রথম নির্মিত হয় ১৯৫২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি।
২৬ ফেব্রুয়ারি সকালে দৈনিক আজাদ পত্রিকার সম্পাদক আবুল কালাম শামসুদ্দীন আনুষ্ঠানিকভাবে শহীদ মিনার উদ্বোধন করেন। ওই দিনই বিকেলে পুলিশ হোস্টেল ঘেরাও করে এটি ভেঙে ফেলে।
প্রথম নির্মিত শহীদ মিনারটি ভেঙে ফেললেও ১৯৫৩ সাল থেকে দেশের ছাত্র-যুবসমাজ একুশে ফেব্রুয়ারির দিনটিকে ‘শহীদ দিবস’ হিসেবে পালন করতে থাকে।
১৯৫৬ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয়বার শহীদ মিনারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন পূর্ববঙ্গ সরকারের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী আবু হোসেন সরকার, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী এবং ভাষাশহীদ আবুল বরকতের মা হাসিনা বেগম। সে সময়ই একুশে ফেব্রুয়ারিকে আনুষ্ঠানিকভাবে শহীদ দিবস ও সরকারি ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
বাংলাপিডিয়া অবলম্বনে
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য গবেষণার অনেক শাখার পথিকৃৎ ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ। বিভিন্ন ভাষা ও বিষয় সম্পর্কে সুগভীর পান্ডিত্যের কারণে বিদ্বজ্জনের কাছে তিনি ‘চলন্ত এনসাইক্লোপিডিয়া’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। আমরা হয়তো অনেকেই জানি না কিংবদন্তি এই মানুষটি ছিলেন ভাষা আন্দোলনের অন্যতম অগ্রগণ্য তাত্ত্বিক যারা লেখায়, বক্তৃতায় তুলে ধরেছিলেন রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলার যথার্থতা।
মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ ১৮৮৫ সালের ১০ জুলাই পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার পেয়ারা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাড়িতেই তিনি উর্দু, ফারসি ও আরবি শেখেন আর স্কুলে সুযোগ পান সংস্কৃত পড়ার। ১৯১০ সালে কলকাতা সিটি কলেজ থেকে সংস্কৃতে অনার্সসহ বি.এ. পাস করে তিনি চেয়েছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংস্কৃত নিয়ে এম.এ. করতে। কিন্তু ওই বিভাগের এক অধ্যাপকের আপত্তিতে তা সম্ভব হয়নি। শেষে দিল্লি হাইকোর্টের নির্দেশে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষাতত্ত্ব নামে একটি বিভাগ চালু হয় এবং মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ তুলনামূলক ভাষাতত্ত্বে এম.এ. পাস করেন।
এফ.এ. পাস করার পরেই তিনি বিভিন্ন ভাষা শিখতে শুরু করেন। তিনি প্রায় ৩০টি ভাষায় অনর্গল কথা বলতে পারতেন এবং ১৮টি ভাষা সম্পর্কে সুগভীর জ্ঞান রাখতেন। ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হলে তিনি সংস্কৃত ও বাংলা বিভাগের প্রভাষক পদে যোগদান করেন। শিক্ষক থাকাকালে তিনি বাংলা ভাষার উৎপত্তি সম্পর্কে মৌলিক গবেষণা করে ১৯২৫ সালে প্রমাণ করেন যে, গৌড়ী বা মাগধী প্রাকৃত থেকে বাংলা ভাষার উৎপত্তি হয়েছে। ১৯২৬ সালে শহীদুল্লাহ্ উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য ইউরোপ যান। ১৯২৮ সালে তিনি বাংলা ভাষার প্রাচীন নিদর্শন চর্যাপদাবলি বিষয়ে গবেষণা করে প্যারিসের সোরবোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভারতীয় মুসলমানদের মধ্যে প্রথম ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন।
বহুভাষাবিদ এই পন্ডিতের মাতৃভাষার প্রতি ছিল প্রবাদপ্রতিম ভালোবাসা। তিনি বলতেন, মা, মাতৃভাষা, মাতৃভূমি প্রত্যেক মানুষের পরম শ্রদ্ধার বস্তু। ১৯২১ সাল থেকেই তিনি বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করতে অক্লান্ত চেষ্টা করেছেন। ১৯৪৭ সালে দেশবিভাগের আগেই তিনি পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা প্রশ্নে বাংলার দাবি তুলে ধরেন। বাংলা ভাষার পক্ষে লেখা, সভা-সমিতিতে ভাষণ, প্রতিবাদ, প্রতিরোধ সবকয়টিতেই তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।
উর্দুভাষী বুদ্ধিজীবীরা যখন বললেন, উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা, তখন মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ্ যুক্তি উপস্থাপন করে বলেন, কেবলমাত্র বাংলাই পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হতে পারে। ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ্ তার ‘দ্য ল্যাঙ্গুয়েজ প্রবলেম অফ পাকিস্তান’ নামের নিবন্ধে বলেন, পাকিস্তান রাষ্ট্রের বাংলাভাষী অংশে, যদি বাংলা ছাড়া অন্য কোনো ভাষা রাষ্ট্রভাষা হয়, তাহলে সেই স্বাধীনতা হবে পরাধীনতারই নামান্তর। তার এই নিবন্ধটি বাংলার মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে। একপর্যায়ে তা ভাষা আন্দোলনে রূপ নেয়।
তিনি ছিলেন বাংলা একাডেমির স্বপ্নদ্রষ্টা। চর্যাপদ বিষয়ক গবেষণা, বাংলা ভাষার উৎপত্তি সম্পর্কে তার মতবাদ, বাংলাভাষার জন্মসাল বিষয়ে তার বক্তব্য, বাংলা বর্ষপঞ্জির সংস্কার, বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস লেখা, বাংলাদেশের আঞ্চলিক ভাষার অভিধান প্রণয়ন সবই তার উল্লেখযোগ্য কীর্তি। তিনি ছিলেন ধর্মে নিষ্ঠাবান এবং অসাম্প্রদায়িক। ধর্মের নামে বাঙালিকে দ্বিধাবিভক্তির চক্রান্ত নস্যাৎ করতে তিনি বলেছিলেন, ‘আমরা হিন্দু বা মুসলমান যেমন সত্য তার চেয়ে বেশি সত্য আমরা বাঙালি।’ তার দেশপ্রেম, সাধনা ও অসাম্প্রদায়িক মনোভাব পরের প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে আছে।
বেশি সময় ধরে পড়লেই ভালো ফল করা যায় না। ভালো ফল করার জন্য প্রয়োজন নিয়ম মেনে পড়াশোনা করা। পড়াশোনার কার্যকর কিছু নিয়ম জানাচ্ছেন বিপুল জামান
পড়ার মধ্যে বিরতি : একনাগাড়ে বেশিক্ষণ পড়লে সে পড়া ভালো হয় না। আমাদের মস্তিষ্ক সর্বোচ্চ ৩০-৪০ মিনিট মনোযোগ ধরে রাখতে পারে। তাই ৩০-৪০ মিনিট পড়ার পর পাঁচ মিনিটের একটা ছোট্ট বিরতি নেওয়া উচিত। কিন্তু লক্ষ রাখতে হবে, এই পাঁচ মিনিটের বিরতি যেন দীর্ঘ সময়ের বিরতিতে পরিণত না হয়।
বুঝে পড়ো : না বুঝে মুখস্থ করে পড়া আয়ত্ত করতে গেলে সময় বেশি লাগে। শুধু তা-ই না, কিছুদিন পর সেই পড়া ভুলেও যেতে হয়। তাই মুখস্থ না করে বুঝে পড়ো। বিষয়টি বুঝতে পারলে সেটি তুমি নিজের ভাষায় উপস্থাপন করতে পারবে। কোনো বিষয় যদি তুমি বুঝে আয়ত্ত করো তাহলে সেটি যেমন সহজে ভুলবে না, তেমনি বাস্তব জীবনে তা কাজেও লাগাতে পারবে। এ কারণে মুখস্থ না করে বুঝে পড়ার প্রতি বেশি দাও।
নানাদিক থেকে দেখো : কোনো একটি বিষয় নিয়ে পড়ার সময় শুধু একটি দৃষ্টিভঙ্গি থেকে না দেখে বিষয়টিকে বিভিন্নভাবে দেখার চেষ্টা করো। একটি বিষয়কে বিভিন্ন দিক থেকে দেখার মাধ্যমে বিষয়টি ভালোভাবে বোঝা যায়। এতে মনোযোগও বেশি দিতে হয়। আর বেশি মনোযোগ দিতে হয় বলে মনে থাকেও দীর্ঘদিন।
কাউকে শেখাও : বিখ্যাত লেখক সৈয়দ মুজতবা আলী বলেছেন, কোনো একটি বই পড়ে যদি সেই বইটি তুমি নিজের মতো করে লিখতে পারো, তাহলে বোঝা যাবে বইটি তুমি বুঝতে পেরেছো। পড়াশোনার ক্ষেত্রেও কথাটি খাটে। কোনো একটি বিষয় ভালোভাবে বুঝতে পেরেছো কি না তা বোঝার ভালো উপায় হলো সেটি কাউকে শেখানো। তাই কোনো বিষয় পড়ার পর অন্য কাউকে শেখাও।
আনন্দের সঙ্গে পড়ো : পড়াশোনাকে নিরানন্দ বিষয় করে ফেলো না। পড়াশোনাকে চাপিয়ে দেওয়া কোনো কাজ মনে করলে পড়তে উৎসাহ পাবে না। যদি পড়াশোনা গুরুত্বপূর্ণ কেন তা উপলব্ধি করো তাহলে পড়তে উৎসাহিত হবে। শিক্ষাজীবন হচ্ছে জীবনের পরের ধাপের প্রস্তুতিকাল। শিক্ষাজীবনে যত ভালো প্রস্তুতি নেবে জীবনে তোমার সফল হওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি হবে। এটি উপলব্ধি করতে পারলেই দেখবে পড়তে তোমার ভালোই লাগছে।
বাবারাই আমাদের সুপার হিরো। দেখতে কী বিশাল আর কত সহজেই না কঠিন কঠিন কাজগুলো করে ফেলেন তারা। যে বইয়ের ব্যাগ বা বাজারের থলে বহন করতে আমাদের নাভিশ্বাস উঠে যায়, সেটাই কি অবলীলায় না তারা তুলে ফেলেন। বাবারা কখনো যে ছোট ছিলেন, কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে স্কুলে যেতেন এমন দৃশ্য আমরা কল্পনাও করতে পারি না। কিন্তু সত্য হলো, বাবারাও এক দিন ছোট ছিলেন। তারাও দুষ্টুমি করতেন, বোকা বোকা কাজ করতেন। প্রত্যেকের বাবাকে প্রশ্ন করলেই এর সত্যতা মিলবে।
আলেক্সান্দর রাস্কিনের ‘বাবা যখন ছোটো’ বইটি তার মেয়ে সাশার জবানিতে লিখিত। ঠান্ডা-সর্দিতে অসুস্থ সাশাকে গল্প বলে ভুলিয়ে রাখতে হতো। লেখক রাস্কিন সাশা শোনাতেন তার ছেলেবেলার বোকা বোকা ঘটনা। সেসব মজার ঘটনা শুনে অসুস্থ সাশা কিছু সময়ের জন্য ভুলে থাকত রোগযন্ত্রণা আর অবাক হয়ে ভাবত, বাবাও কোনো একসময় আমারই মতো ছোট ছিল আর আমারই মতো বোকা বোকা কাজ করত! একসময় সাশা বড় হলো, লেখক তখন ছোটদের জন্য সাশাকে বলা গল্পগুলোই বই আকারে প্রকাশ করলেন সাশার জবানিতে।
বইয়ের গল্পগুলো সেই সাশা নামের এক এইটুকুনি মেয়ের বাবার ছোট্টবেলার। বাবার ছেলেবেলার সব হেরে যাওয়ার গল্প, বোকামি আর শুধু ছেলেমানুষি অংশটার কথা-ই এসেছে বইতে। আর আছে ভুল করে অথবা ঠেকে শেখার কথা অর্থাৎ সত্যিকারের শেখার কথা। ছোট্ট বাবার পদ্য লিখত এ নিয়ে ছিল ভারী গর্ব, কুকুরকে পোষ মানাতে গিয়ে কুকুরের কামড় খাওয়া, যখন-তখন রাগ করে ঠকে যাওয়া, রঙিন বল নিয়ে খেলার সঙ্গীদের সঙ্গে হিংসুটেপনা, ইস্কুলে মানিয়ে নেওয়া, পিয়ানো না বাজাতে চাওয়াসবকিছু অকপটে উঠে এসেছে। গর্ব করে বা হিংসুটেপনা করে বাবার লাভ কিছু হয়নি, ক্ষতিই হয়েছে। ঠেকে শিখে জীবন পথে চলতে শিখেছেন বাবা। কিন্তু আজ যারা ছোট্টটি তাদেরও যেন ঠেকে এবং ঠকে শিখতে না হয় সেজন্যই বাবা (আলেক্সান্দর রাস্কিন) এই বই লিখেছেন। এই বই পড়তে শুরু করলে কখনো মৃদু হাসিতে কখনো অট্টহাসিতে ফেটে পড়বে আর ভাববে, বাবারাও তাহলে কোনো একসময় ছোট ছিল, তারাও এমন দুষ্টুমি করতেন? ল. তকমাকভের আঁকা বইয়ের ভেতরের মজার ছবিগুলো পাঠের আনন্দ বাড়িয়ে দেবে আনন্দ বহু গুণ।
ঢাকা পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন
কর্তৃপক্ষ (ওয়াসা)
পদ ও যোগ্যতা : সিস্টেম ম্যানেজার ১ জন। কম্পিউটার সায়েন্স/কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং/ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং/ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ২য় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএতে স্নাতক সম্মান বা সমমানের ডিগ্রিসহ ২য় শ্রেণির স্নাতকোত্তর বা সমমানের ডিগ্রি। সরকারি বা সমজাতীয় কোনো প্রতিষ্ঠানে সিনিয়র সিস্টেম এনালিস্ট অথবা সিনিয়র রক্ষণাবেক্ষণ প্রকৌশলী হিসেবে ন্যূনতম ৪ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা অথবা প্রাইভেট সেক্টরে সিনিয়র সিস্টেম এনালিস্ট অথবা সিনিয়র রক্ষণাবেক্ষণ প্রকৌশলী হিসেবে ন্যূনতম ৮ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা। আন্তর্জাতিক জার্নালে কমপক্ষে ২টি প্রকাশনা থাকতে হবে। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রিধারীদের অগ্রাধিকার। ২২ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে বয়স সর্বোচ্চ ৪৫ থেকে ৫৫ বছর। বেতনক্রম: ৫৬৫০০-৭৪৪০০ টাকা। স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ১ জন। কমপক্ষে এমবিবিএস ডিগ্রি পাস এবং ন্যূনতম ২ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা। ২২ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে বয়স সর্বোচ্চ ৩০ বছর। বেতনক্রম : ২২০০০-৫৩০৬০ টাকা। এই www.dwasa.org.bd) ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন জমা দেওয়া যাবে ২২ জানুয়ারি ২০২৩ পর্যন্ত। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, আবেদন পদ্ধতিসহ অন্যান্য তথ্য জানা যাবে এই ওয়েবসাইট থেকে। যোগাযোগ : সচিব, ঢাকা পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ (ওয়াসা), কারওয়ান বাজার, ঢাকা।
সূত্র : ওয়াসার ওয়েবসাইট
খুলনা কলেজিয়েট গার্লস স্কুল ও কেসিসি উইমেন্স কলেজ, খুলনা
পদ ও যোগ্যতা : প্রভাষক (ডিপার্টমেন্ট অব ফ্যাশন ডিজাইন) ১ জন। ফ্যাশন ডিজাইনে স্নাতক সম্মানসহ স্নাতকোত্তর। বেতনক্রম: ২২০০০-৫৩০৬০ টাকা। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার মধ্যে ন্যূনতম একটি পরীক্ষায় জিপিএ ৩.৫ বা ১ম বিভাগ এবং স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পরীক্ষার মধ্যে ন্যূনতম একটি পরীক্ষায় জিপিএ ৩.২৫ বা ১ম শ্রেণি থাকতে হবে। শিক্ষাজীবনের কোনো পরীক্ষায় ৩য় বিভাগ বা সমমানের ফল গ্রহণযোগ্য নয়। অভিজ্ঞদের অগ্রাধিকার। ২৫ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে বয়স সর্বোচ্চ ৩০ বছর। অধ্যক্ষ, খুলনা কলেজিয়েট গার্লস স্কুল ও কেসিসি উইমেন্স কলেজ, ১৮০/২১, খান জাহান আলী রোড, খুলনাএই ঠিকানায় আবেদন জমা দেওয়া যাবে ২৫ জানুয়ারি ২০২৩ অফিস চলাকালীন পর্যন্ত। যোগাযোগ : অধ্যক্ষ, খুলনা কলেজিয়েট গার্লস স্কুল ও কেসিসি উইমেন্স কলেজ, ১৮০/২১, খান জাহান আলী রোড, খুলনা।
সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন, ২৬ ডিসেম্বর ২০২২, পৃষ্ঠা ৯
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন জায়েদা খাতুন।
তিনি ঘড়ি প্রতীকে মোট ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় এ সিটির ৪৮০টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) রাতে রির্টানিং কর্মকর্তা স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
নির্বাচনের অন্য মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন ১৬ হাজার ৩৬২ ভোট, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ ৭ হাজার ২০৬ ভোট, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ১৬ হাজার ৯৭৪ ভোট, স্বতন্ত্রপ্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের মো. হারুন-অর-রশীদ ২ হাজার ৪২৬ ভোট এবং হাতি প্রতীকের সরকার শাহনূর ইসলাম ২৩ হাজার ২৬৫ ভোট পেয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ, ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী ও ১৮ জন হিজড়া। এই সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি, মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) নির্মিত হয়েছে বিশেষ কবিতা আবৃত্তির অনুষ্ঠান ‘ও ভোরের পাখি’। ঈমাম হোসাইনের প্রযোজনায় এটি উপস্থাপনা করেছেন তামান্ন তিথি। অনুষ্ঠানটিতে আবৃত্তি করেছেন আশরাফুল আলম, মীর বরকত, রফিকুল ইসলাম, পলি পারভিন, শাকিলা মতিন মৃদুলা, মাসকুর-এ সাত্তার কল্লোল, আসলাম শিশির, সংগীতা চৌধুরী, আহসান উল্লাহ তমাল। প্রচারিত হয় ২৫ মে সকাল সাড়ে ৯টায়।
এছাড়াও নির্মিত হয়েছে বিশেষ অনুষ্ঠান ‘আমারে দেবো না ভুলিতে’। অনুষ্ঠানটিতে গান, কবিতা ও আলোচনার সমন্বয়ে কবিকে সামগ্রিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও বাচিকশিল্পীদের অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিতে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে। ইয়াসমিন মুসতারী, সালাউদ্দিন আহমেদ, শেলু বড়ুয়া, ছন্দা চক্রবর্ত্তী ও ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়ের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেছেন প্রফেসর মুন্সী আবু সাইফ। মনিরুল হাসানের প্রযোজনায় অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হচ্ছে ২৫ মে দুপুর ১ টা ০৫ মিনিটে। আরও প্রচারিত হবে সংগীতানুষ্ঠান ‘দোলনচাঁপা’ ও ‘সন্ধ্যামালতী’। রাত ৯টায় প্রচারিত হবে নাটক ‘বনের পাপিয়া’ (পুনপ্রচার)।