আনন্দময় করে তুলুন ঘরের ঈদ
নাহার সুলতানা | ২৩ মে, ২০২০ ০০:০০
ঘরবন্দি অবস্থায় থাকলেও ঈদের আনন্দে কমতি পড়বে কেন? বাসার সবাই মিলে আনন্দময় ঈদের পরিকল্পনা করুন। নানা আয়োজনে উৎসবমুখর করে তুলুন এবারের ঈদও। লিখেছেন নাহার সুলতানা
পোশাক ও সাজসজ্জা
বাইরে করোনা আতঙ্ক, তাই হয়তো মার্কেটে গিয়ে ঈদের নতুন কাপড় কিনতে পারেননি। অনলাইনে কেনাকাটার ব্যবস্থাও হয়নি। তাতে কী, আপনার কিংবা বাচ্চার অনেক কাপড় তুলে রাখা আছে, যা হয়তো একদিন পরেছেন কিংবা পরাই হয়নি। সেই কাপড়টি ধোয়ার প্রয়োজন হলে ধুয়ে ইস্ত্রি করে নিন। সব সময় বাড়িতে সালোয়ার-কামিজ পরেন। এবার ঈদের দিন সকালেই একটি সুতির শাড়ি পরে নিন। বাচ্চাকে মেহেদি পরিয়ে দিন। প্রয়োজনে ইউটিউবের সাহায্য নিন। সকালেই বাচ্চাকে সুন্দর কাপড় পরিয়ে রেডি করে দিন। কী কী রান্না করবেন আগের দিনই পরিকল্পনা করে নিন। প্রযোজনে কিছুটা গুছিয়ে রাখুন। বাড়ির কার কী দায়িত্ব ভাগ করে দিন। ছোটদের কিছু দায়িত্ব দিন। আপনজনদের সঙ্গে ভিডিও চ্যাটিং করে ঈদের সকালেই শুভেচ্ছা বিনিময় করুন। প্রিয়জনদের ঈদ সেলামি এবার না হয় বিকাশ করেই দিন। দুপুরের খাওয়া দাওয়ার পর সবাই মিলে টিভিতে কোনো ভালো মুভি দেখতে পারেন। কিংবা কোনো ইনডোর গেইমের আয়োজন করতে পারেন। এসব খেলায় বিজয়ীর জন্য পুরস্কারও রাখতে পারেন। সবার পছন্দের গান ব্লুটুথ স্পিকার দিয়ে বাজাতে পারেন।
ঘরের সাজ
ঘরের মধ্যে থেকে আপনার হয়তো এতদিনে একঘেয়ে লাগছে। ঈদ উপলক্ষে ঘরের সাজসজ্জায় পরিবর্তন আনুন। বসার ঘরের সাজে সোফার বড় ভূমিকা আছে। সোফার কুশন বদলে দিন। আর সোফা নতুন বা পুরনো যা-ই হোক না কেন, রাখুন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। সোফার কাভার উজ্জ্বল রঙের হলে উৎসবের ভাবটা ফুটে উঠবে। ঘরের দেয়ালের পেইন্টিংস ওলট-পালট করে কিংবা নিজেদের বাঁধাই করা ছবি দিয়ে নতুন করে সাজিয়ে দিন। বারান্দার টবগুলো ঘরের কোনায় এনে রাখতে পারেন। সবুজের স্নিগ্ধতা অন্যরকম আবহ তৈরি করবে। ঘরের পর্দাগুলো পাল্টে দেখুন, বদলে যাবে অন্দরের চেহারা। ঈদের দিনও আবহাওয়া গরম থাকবে। তাই পর্দায় রাখুন হালকা রং। সে ক্ষেত্রে চোখে স্বস্তি ও শীতলতা দুটোই পাবেন। স্ট্রান্ড ল্যাম্প ব্যবহার করে ড্রইংরুমের চেহারা পাল্টে দিতে পারেন। অনেকদিন ঘরের আসবাবগুলো একই জায়গায় থাকলে কিছু জিনিসের ডেকোরেশন বদলে দিন। স্ট্যান্ডিং লাইট সোফার ডান বা বাঁ পাশে রাখুন। দেখবেন পুরো বাড়িতে ঈদের আমেজ এসেছে।
পরিপাটি রান্নাঘর
ঈদের দুই-একদিন আগেই রান্নাঘর পরিষ্কার করুন। মসলার পাত্রের গায়ে নাম লিখে গুছিয়ে নিন, যেন দরকারমতো হাতের নাগালে পেতে পারেন। আগেই চেক করুন প্লেট-গ্লাস, কাপ-পিরিচ, চামচ সব সেট মেলানো আর গোছানো আছে কি না। বঁটি, ছুরি আগেই ধার দিয়ে হাতের কাছে রাখুন। ঈদের একদিন আগেই বেশ খানিকটা মসলা ব্লেন্ড করে ফ্রিজে রেখে দিন। সেমাই ভেজে রেখে দিন। কাবাবের মাংসটা রেডি করে রাাখতে পারেন। প্রয়োজনে রান্নার মাংস মেরিনেট করে রেখে দিতে পারেন। এছাড়া সবচেয়ে দামি ও কম দরকারি জিনিসগুলো রাখুন কিচেন র্যাকের ওপরের দিকটায়। কাচ, মেলামাইন, মাটি, অ্যালুমিনিয়াম ইত্যাদি বাসনকোসন, কাপ-পিরিচ ও চামচ আলাদা আলাদা স্থানে রাখুন। এতে এলোমেলো হয়ে যাওয়া বা ভেঙে যাওয়ার ভয় থাকবে না। চাইলে রান্নাঘরের এক পাশে একদিনের জন্য একটা মানিপ্লান্টের গাছও রাখতে পারেন।
রঙিন খাবার টেবিল
ঈদের সময় খাবার টেবিলে হরেক পদের রান্নার মধ্যে আলাদা করে শোপিস সাজানোর জায়গা থাকে না। লম্বাটে টেবিল হলে এক পাশে একটি মোমদানি রাখুন। রঙিন টেবিল ম্যাট ও রানার বিছিয়ে দিন টেবিলে। খাবার ঘরে জানালা থাকলে তার বিপরীত দেয়ালে ফ্রেমে বাঁধাই করা বড় আয়না বসিয়ে দিন। আলো বাড়বে আর ঘরে খোলামেলা ভাব আসবে। খাবার টেবিল ও চেয়ার ঈদ উপলক্ষে ভালো করে পরিষ্কার করুন।
ঝকঝকে বাথরুম
করোনাকালীন বাড়ির বাথরুম সবচেয়ে বেশি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হয়। নিয়মিত পরিষ্কারের পাশাপাশি ঈদের জন্য জন্য আরও ভালো করে পরিষ্কার করে নিন। বাথরুমে হ্যান্ডওয়াশ, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সাবান, টিস্যু রেখে দিন। বাথরুম ব্যবহারের পর মেঝে শুকনো করে মুছে রাখুন।
শেয়ার করুন
নাহার সুলতানা | ২৩ মে, ২০২০ ০০:০০

ঘরবন্দি অবস্থায় থাকলেও ঈদের আনন্দে কমতি পড়বে কেন? বাসার সবাই মিলে আনন্দময় ঈদের পরিকল্পনা করুন। নানা আয়োজনে উৎসবমুখর করে তুলুন এবারের ঈদও। লিখেছেন নাহার সুলতানা
পোশাক ও সাজসজ্জা
বাইরে করোনা আতঙ্ক, তাই হয়তো মার্কেটে গিয়ে ঈদের নতুন কাপড় কিনতে পারেননি। অনলাইনে কেনাকাটার ব্যবস্থাও হয়নি। তাতে কী, আপনার কিংবা বাচ্চার অনেক কাপড় তুলে রাখা আছে, যা হয়তো একদিন পরেছেন কিংবা পরাই হয়নি। সেই কাপড়টি ধোয়ার প্রয়োজন হলে ধুয়ে ইস্ত্রি করে নিন। সব সময় বাড়িতে সালোয়ার-কামিজ পরেন। এবার ঈদের দিন সকালেই একটি সুতির শাড়ি পরে নিন। বাচ্চাকে মেহেদি পরিয়ে দিন। প্রয়োজনে ইউটিউবের সাহায্য নিন। সকালেই বাচ্চাকে সুন্দর কাপড় পরিয়ে রেডি করে দিন। কী কী রান্না করবেন আগের দিনই পরিকল্পনা করে নিন। প্রযোজনে কিছুটা গুছিয়ে রাখুন। বাড়ির কার কী দায়িত্ব ভাগ করে দিন। ছোটদের কিছু দায়িত্ব দিন। আপনজনদের সঙ্গে ভিডিও চ্যাটিং করে ঈদের সকালেই শুভেচ্ছা বিনিময় করুন। প্রিয়জনদের ঈদ সেলামি এবার না হয় বিকাশ করেই দিন। দুপুরের খাওয়া দাওয়ার পর সবাই মিলে টিভিতে কোনো ভালো মুভি দেখতে পারেন। কিংবা কোনো ইনডোর গেইমের আয়োজন করতে পারেন। এসব খেলায় বিজয়ীর জন্য পুরস্কারও রাখতে পারেন। সবার পছন্দের গান ব্লুটুথ স্পিকার দিয়ে বাজাতে পারেন।
ঘরের সাজ
ঘরের মধ্যে থেকে আপনার হয়তো এতদিনে একঘেয়ে লাগছে। ঈদ উপলক্ষে ঘরের সাজসজ্জায় পরিবর্তন আনুন। বসার ঘরের সাজে সোফার বড় ভূমিকা আছে। সোফার কুশন বদলে দিন। আর সোফা নতুন বা পুরনো যা-ই হোক না কেন, রাখুন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। সোফার কাভার উজ্জ্বল রঙের হলে উৎসবের ভাবটা ফুটে উঠবে। ঘরের দেয়ালের পেইন্টিংস ওলট-পালট করে কিংবা নিজেদের বাঁধাই করা ছবি দিয়ে নতুন করে সাজিয়ে দিন। বারান্দার টবগুলো ঘরের কোনায় এনে রাখতে পারেন। সবুজের স্নিগ্ধতা অন্যরকম আবহ তৈরি করবে। ঘরের পর্দাগুলো পাল্টে দেখুন, বদলে যাবে অন্দরের চেহারা। ঈদের দিনও আবহাওয়া গরম থাকবে। তাই পর্দায় রাখুন হালকা রং। সে ক্ষেত্রে চোখে স্বস্তি ও শীতলতা দুটোই পাবেন। স্ট্রান্ড ল্যাম্প ব্যবহার করে ড্রইংরুমের চেহারা পাল্টে দিতে পারেন। অনেকদিন ঘরের আসবাবগুলো একই জায়গায় থাকলে কিছু জিনিসের ডেকোরেশন বদলে দিন। স্ট্যান্ডিং লাইট সোফার ডান বা বাঁ পাশে রাখুন। দেখবেন পুরো বাড়িতে ঈদের আমেজ এসেছে।
পরিপাটি রান্নাঘর
ঈদের দুই-একদিন আগেই রান্নাঘর পরিষ্কার করুন। মসলার পাত্রের গায়ে নাম লিখে গুছিয়ে নিন, যেন দরকারমতো হাতের নাগালে পেতে পারেন। আগেই চেক করুন প্লেট-গ্লাস, কাপ-পিরিচ, চামচ সব সেট মেলানো আর গোছানো আছে কি না। বঁটি, ছুরি আগেই ধার দিয়ে হাতের কাছে রাখুন। ঈদের একদিন আগেই বেশ খানিকটা মসলা ব্লেন্ড করে ফ্রিজে রেখে দিন। সেমাই ভেজে রেখে দিন। কাবাবের মাংসটা রেডি করে রাাখতে পারেন। প্রয়োজনে রান্নার মাংস মেরিনেট করে রেখে দিতে পারেন। এছাড়া সবচেয়ে দামি ও কম দরকারি জিনিসগুলো রাখুন কিচেন র্যাকের ওপরের দিকটায়। কাচ, মেলামাইন, মাটি, অ্যালুমিনিয়াম ইত্যাদি বাসনকোসন, কাপ-পিরিচ ও চামচ আলাদা আলাদা স্থানে রাখুন। এতে এলোমেলো হয়ে যাওয়া বা ভেঙে যাওয়ার ভয় থাকবে না। চাইলে রান্নাঘরের এক পাশে একদিনের জন্য একটা মানিপ্লান্টের গাছও রাখতে পারেন।
রঙিন খাবার টেবিল
ঈদের সময় খাবার টেবিলে হরেক পদের রান্নার মধ্যে আলাদা করে শোপিস সাজানোর জায়গা থাকে না। লম্বাটে টেবিল হলে এক পাশে একটি মোমদানি রাখুন। রঙিন টেবিল ম্যাট ও রানার বিছিয়ে দিন টেবিলে। খাবার ঘরে জানালা থাকলে তার বিপরীত দেয়ালে ফ্রেমে বাঁধাই করা বড় আয়না বসিয়ে দিন। আলো বাড়বে আর ঘরে খোলামেলা ভাব আসবে। খাবার টেবিল ও চেয়ার ঈদ উপলক্ষে ভালো করে পরিষ্কার করুন।
ঝকঝকে বাথরুম
করোনাকালীন বাড়ির বাথরুম সবচেয়ে বেশি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হয়। নিয়মিত পরিষ্কারের পাশাপাশি ঈদের জন্য জন্য আরও ভালো করে পরিষ্কার করে নিন। বাথরুমে হ্যান্ডওয়াশ, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সাবান, টিস্যু রেখে দিন। বাথরুম ব্যবহারের পর মেঝে শুকনো করে মুছে রাখুন।