চামড়া খাত উন্নয়নে আলাদা সংস্থা চান উদ্যোক্তারা
নিজস্ব প্রতিবেদক | ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০
দেশের চামড়া ও চামড়াজাত শিল্পের ব্যাপক সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও প্রত্যাশিত অগ্রগতি না হওয়ার পেছনে বেশ কিছু কারণকে দায়ী করেছেন উদ্যোক্তারা। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে খাতের উন্নয়নে একটি নির্দিষ্ট সংস্থাকে দেখভালের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। গতকাল চামড়া খাত নিয়ে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত এক অনলাইন সেমিনারে (ওয়েবিনার) তারা এসব কথা বলেন। উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি এ সময় অর্থনীতিবিদ ও অর্থনীতিবিষয়ক সাংবাদিকরা তাদের মতামত তুলে ধরেন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।
আলোচনায় অংশ নিয়ে অ্যাপেক্স গ্রুপের প্রধান সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, চামড়াজাত পণ্যের কাঁচামাল থাকা সত্ত্বেও আমরা প্রত্যাশিত অগ্রগতি করতে পারিনি। অথচ ভিয়েতনাম কাঁচামাল না থাকা সত্ত্বেও এ খাতের রপ্তানিতে বহুদূর এগিয়ে গেছে। এ খাতের উন্নয়ন একক সংস্থার ওপর দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
এ সময় বক্তারা প্রায় এক যুগেও সাভারের চামড়া শিল্পনগরীর যথাযথ প্রস্তুত না হওয়া, কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না থাকা এবং বর্জ্য পাশের ধলেশ্বরী নদীতে যাওয়ায় পরিবেশ দূষণ এবং এসব কারণে আন্তর্জাতিক মান নির্ধারণকারী প্রতিষ্ঠানের (এলডব্লিউজি) সনদ না পাওয়ার মতো বিষয়টি তুলে ধরে এসব ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। বিশেষত বর্তমান বাস্তবতায় প্রকল্পটি এখন একটি ব্যর্থতায় পর্যবসিত হতে যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন কেউ কেউ। এ পরিস্থিতিতে দ্বিতীয় প্রধান রপ্তানি খাত হিসেবে এ খাতের ভবিষ্যৎ রক্ষায় সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে দ্রুত ও যথাযথ উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান তারা।
সাভারের চামড়া শিল্পনগরীর বর্তমান পরিস্থিতির জন্য প্রকল্প বাস্তবায়নকারী ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে (চীনের একটি কোম্পানি) দায়ী করে সালমান এফ রহমান বলেন, তারা ঠিকমতো কাজ করেনি। এ ছাড়া প্রকল্পটি ব্যবহার উপযোগী হওয়ার আগেই আদালতের নির্দেশে রাজধানীর হাজারীবাগ থেকে সাভারে ট্যানারিগুলো যেতে বাধ্য হওয়ায় সমস্যা হয়েছে বলে মত দিয়ে তিনি বলেন, গত বছর গিয়েও দেখলাম সিইটিপিসহ (কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার) প্রকল্পের কোনো কিছুই প্রস্তুত হয়নি। এ সময় তিনি প্রকল্পে বর্তমানে মাত্রাতিরিক্ত পানির ব্যবহার হচ্ছে উল্লেখ করে বলেন, এটি নিয়ন্ত্রণে না এলে আমরা পানির ওপর কর আরোপে বাধ্য হব। এ ছাড়া চামড়া শিল্পের উন্নয়নে ভিয়েতনামের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করা, রপ্তানি পণ্যে চামড়া ও চামড়াবিহীন পণ্য আলাদা করার ওপর গুরুত্ব দেন।
ওয়েবিনার আয়োজনে সহযোগিতা করে রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (রেপিড) এবং দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশন। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রেপিডের চেয়ারম্যান ড. আবদুর রাজ্জাক ও নির্বাহী পরিচালক ড. আবু ইউসুফ। ইআরএফ সভাপতি সাইফ ইসলাম দিলালের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন, এশিয়া ফাউন্ডেশনের এ দেশীয় প্রতিনিধি কাজী ফয়সাল বিন সিরাজ, বিটিএ চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ, বিএফএলএলএফইএ সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিন প্রমুখ।
শেয়ার করুন
নিজস্ব প্রতিবেদক | ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০

দেশের চামড়া ও চামড়াজাত শিল্পের ব্যাপক সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও প্রত্যাশিত অগ্রগতি না হওয়ার পেছনে বেশ কিছু কারণকে দায়ী করেছেন উদ্যোক্তারা। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে খাতের উন্নয়নে একটি নির্দিষ্ট সংস্থাকে দেখভালের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। গতকাল চামড়া খাত নিয়ে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত এক অনলাইন সেমিনারে (ওয়েবিনার) তারা এসব কথা বলেন। উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি এ সময় অর্থনীতিবিদ ও অর্থনীতিবিষয়ক সাংবাদিকরা তাদের মতামত তুলে ধরেন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।
আলোচনায় অংশ নিয়ে অ্যাপেক্স গ্রুপের প্রধান সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, চামড়াজাত পণ্যের কাঁচামাল থাকা সত্ত্বেও আমরা প্রত্যাশিত অগ্রগতি করতে পারিনি। অথচ ভিয়েতনাম কাঁচামাল না থাকা সত্ত্বেও এ খাতের রপ্তানিতে বহুদূর এগিয়ে গেছে। এ খাতের উন্নয়ন একক সংস্থার ওপর দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
এ সময় বক্তারা প্রায় এক যুগেও সাভারের চামড়া শিল্পনগরীর যথাযথ প্রস্তুত না হওয়া, কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না থাকা এবং বর্জ্য পাশের ধলেশ্বরী নদীতে যাওয়ায় পরিবেশ দূষণ এবং এসব কারণে আন্তর্জাতিক মান নির্ধারণকারী প্রতিষ্ঠানের (এলডব্লিউজি) সনদ না পাওয়ার মতো বিষয়টি তুলে ধরে এসব ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। বিশেষত বর্তমান বাস্তবতায় প্রকল্পটি এখন একটি ব্যর্থতায় পর্যবসিত হতে যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন কেউ কেউ। এ পরিস্থিতিতে দ্বিতীয় প্রধান রপ্তানি খাত হিসেবে এ খাতের ভবিষ্যৎ রক্ষায় সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে দ্রুত ও যথাযথ উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান তারা।
সাভারের চামড়া শিল্পনগরীর বর্তমান পরিস্থিতির জন্য প্রকল্প বাস্তবায়নকারী ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে (চীনের একটি কোম্পানি) দায়ী করে সালমান এফ রহমান বলেন, তারা ঠিকমতো কাজ করেনি। এ ছাড়া প্রকল্পটি ব্যবহার উপযোগী হওয়ার আগেই আদালতের নির্দেশে রাজধানীর হাজারীবাগ থেকে সাভারে ট্যানারিগুলো যেতে বাধ্য হওয়ায় সমস্যা হয়েছে বলে মত দিয়ে তিনি বলেন, গত বছর গিয়েও দেখলাম সিইটিপিসহ (কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার) প্রকল্পের কোনো কিছুই প্রস্তুত হয়নি। এ সময় তিনি প্রকল্পে বর্তমানে মাত্রাতিরিক্ত পানির ব্যবহার হচ্ছে উল্লেখ করে বলেন, এটি নিয়ন্ত্রণে না এলে আমরা পানির ওপর কর আরোপে বাধ্য হব। এ ছাড়া চামড়া শিল্পের উন্নয়নে ভিয়েতনামের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করা, রপ্তানি পণ্যে চামড়া ও চামড়াবিহীন পণ্য আলাদা করার ওপর গুরুত্ব দেন।
ওয়েবিনার আয়োজনে সহযোগিতা করে রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (রেপিড) এবং দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশন। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রেপিডের চেয়ারম্যান ড. আবদুর রাজ্জাক ও নির্বাহী পরিচালক ড. আবু ইউসুফ। ইআরএফ সভাপতি সাইফ ইসলাম দিলালের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন, এশিয়া ফাউন্ডেশনের এ দেশীয় প্রতিনিধি কাজী ফয়সাল বিন সিরাজ, বিটিএ চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ, বিএফএলএলএফইএ সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিন প্রমুখ।