২০৩০ নাগাদ দারিদ্র্যসীমা ৩ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৫ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০
শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও গতিশীল নেতৃত্বের কারণেই দেশ আজ দ্রুত সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। ১১ বছর ধরে আমাদের দেশ গড়ে সাত শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে বিশ্বের শীর্ষ প্রবৃদ্ধির দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে বলেও জানান তিনি।
আগামী পাঁচ বছরে আরও পাঁচ শতাংশ দারিদ্র্যসীমা হ্রাস পাবে। অর্থনৈতিক কূটনীতির সফলতার কারণেই এই অর্জন সম্ভব হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ২০৪১ সালে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত হবে। যেখানে অন্ন-বস্ত্র বাসস্থানের জন্য কোনো হাহাকার থাকবে না। জিডিপিতে যে অভাবনীয় সাফল্য এসেছে তাতে আগামী ২০৩০ সাল নাগাদ দারিদ্র্যসীমা তিন শতাংশে নামিয়ে আনা হবে। গতকাল দুপুরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী নাটোর সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ কথা বলেন। এর আগে তিনি ঐতিহাসিক উত্তরা গণভবন ও রাজবাড়ী পরিদর্শন করেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ এখন অর্থনৈতিক কূটনীতি নিয়ে কাজ করছে। মধ্যপ্রাচ্যের বাইরে গিয়ে নতুন নতুন দেশে মানবসম্পদ রপ্তানির উদ্যোগ নিয়েছে। রপ্তানি বাণিজ্যেও এসেছে বৈচিত্র্য। আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রীসহ নতুন নতুন পণ্য রপ্তানি করছে। বৈশ্বিক মহামারী করোনার মধ্যেও বাংলাদেশ তার জিডিপি ৮ দশমিক ২-এ রাখতে সক্ষম হয়েছে। যা অনেক দেশের কাছেই বিস্ময়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর অনুসৃত ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব’ এই পররাষ্ট্রনীতিতে পথ চলছে বাংলাদেশ। সবার সঙ্গে বৈরিতা পরিহার করে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রক্ষা করে কাজ করে যাচ্ছি আমরা। আমাদের লক্ষ্য বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রক্ষা করে অর্থনৈতিক কূটনীতির সুফল অর্জন করা। করোনাকালীন স্থবির সময়েও যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশ থেকে করোনা প্রতিরোধ ও চিকিৎসার মেডিক্যাল সরঞ্জামাদি রপ্তানির সুযোগ তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ৮০ লাখ পিপিই পাঠানো হয়েছে।
ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, অর্থনৈতিক কূটনীতির সুফল পেতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পাঁচটি পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। এর মধ্যে রয়েছে- দেশের মানব সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং দক্ষ জনগোষ্ঠীর জন্য বিশ্বের নতুন নতুন দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা, দেশের অপার সম্ভাবনাময় মানবসম্পদ ও প্রাকৃতিক সম্পদগুলোর সহজলভ্যতা বিশ্বের কাছে তুলে ধরে বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্র বৃদ্ধি করা, দেশের অর্থনীতিতে প্রবাসীদের অসামান্য অবদানকে সম্মান দিতে বিদেশে আমাদের মিশনগুলোতে পাসপোর্ট ডেলিভারিসহ প্রযুক্তিনির্ভর সেবার পরিধি দ্রুত ও সহজ করা হচ্ছে। মুজিববর্ষ-২০২০ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী-২০২১-কে কেন্দ্র করে বিশ্বের কাছে অপার সম্ভাবনাময় বাংলাদেশকে তুলে ধরা।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, বিশ্বের সর্বাধিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের পাশাপাশি দারিদ্র্য বিমোচনেও আমরা অগ্রগামী। ইতিমধ্যে গত ১১ বছরে দেশের দারিদ্র্যসীমা অর্ধেক হ্রাস পেয়ে ২০ শতাংশে নেমে এসেছে। আগামী পাঁচ বছরে আরও পাঁচ শতাংশ হ্রাস পাবে। পর্যায়ক্রমে দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ উন্নয়নের পথপরিক্রমায় ২০৪১ সালে বঙ্গবন্ধুর চির কাক্সিক্ষত সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলায় পরিণত হবে।
ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সবসময় প্রতিবেশী রাষ্ট্রসহ সব রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার নীতি অনুসরণ করে। যুদ্ধ নয়, সীমান্ত হত্যা, পানি সমস্যাসহ অনেক অমীমাংসিত বিষয় বাংলাদেশ ডায়ালগের মাধ্যমে সমাধান করেছে। নরেন্দ্র মোদি-শেখ হাসিনা যেভাবে সমস্যার সমাধান করেছেন অন্য কোথাও তার নজির পাওয়া যাবে না। মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন নাটোর-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. শফিকুল ইসলাম শিমুল, নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য মো. শহিদুল ইসলাম ও নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা প্রমুখ। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, অতিরিক্ত সচিব মো. শামসুল হক, মো. সাব্বির আহমদ চৌধুরী ও সৈয়দ মাসুদ মাহমুদ খন্দকার, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক এফ এম বোরহান উদ্দিন, খন্দকার মো. তালহা, মো. নজরুল ইসলাম, মো. তারিকুল ইসলাম, মোহাম্মদ সারওয়ার মাহমুদ ও মেহেদী হাসান প্রমুখ।
মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মো. শাহরিয়াজ। সভা শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুরের উদ্দেশে রওনা দেন।
শেয়ার করুন
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৫ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০

শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও গতিশীল নেতৃত্বের কারণেই দেশ আজ দ্রুত সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। ১১ বছর ধরে আমাদের দেশ গড়ে সাত শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে বিশ্বের শীর্ষ প্রবৃদ্ধির দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে বলেও জানান তিনি।
আগামী পাঁচ বছরে আরও পাঁচ শতাংশ দারিদ্র্যসীমা হ্রাস পাবে। অর্থনৈতিক কূটনীতির সফলতার কারণেই এই অর্জন সম্ভব হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ২০৪১ সালে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত হবে। যেখানে অন্ন-বস্ত্র বাসস্থানের জন্য কোনো হাহাকার থাকবে না। জিডিপিতে যে অভাবনীয় সাফল্য এসেছে তাতে আগামী ২০৩০ সাল নাগাদ দারিদ্র্যসীমা তিন শতাংশে নামিয়ে আনা হবে। গতকাল দুপুরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী নাটোর সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ কথা বলেন। এর আগে তিনি ঐতিহাসিক উত্তরা গণভবন ও রাজবাড়ী পরিদর্শন করেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ এখন অর্থনৈতিক কূটনীতি নিয়ে কাজ করছে। মধ্যপ্রাচ্যের বাইরে গিয়ে নতুন নতুন দেশে মানবসম্পদ রপ্তানির উদ্যোগ নিয়েছে। রপ্তানি বাণিজ্যেও এসেছে বৈচিত্র্য। আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রীসহ নতুন নতুন পণ্য রপ্তানি করছে। বৈশ্বিক মহামারী করোনার মধ্যেও বাংলাদেশ তার জিডিপি ৮ দশমিক ২-এ রাখতে সক্ষম হয়েছে। যা অনেক দেশের কাছেই বিস্ময়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর অনুসৃত ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব’ এই পররাষ্ট্রনীতিতে পথ চলছে বাংলাদেশ। সবার সঙ্গে বৈরিতা পরিহার করে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রক্ষা করে কাজ করে যাচ্ছি আমরা। আমাদের লক্ষ্য বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রক্ষা করে অর্থনৈতিক কূটনীতির সুফল অর্জন করা। করোনাকালীন স্থবির সময়েও যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশ থেকে করোনা প্রতিরোধ ও চিকিৎসার মেডিক্যাল সরঞ্জামাদি রপ্তানির সুযোগ তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ৮০ লাখ পিপিই পাঠানো হয়েছে।
ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, অর্থনৈতিক কূটনীতির সুফল পেতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পাঁচটি পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। এর মধ্যে রয়েছে- দেশের মানব সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং দক্ষ জনগোষ্ঠীর জন্য বিশ্বের নতুন নতুন দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা, দেশের অপার সম্ভাবনাময় মানবসম্পদ ও প্রাকৃতিক সম্পদগুলোর সহজলভ্যতা বিশ্বের কাছে তুলে ধরে বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্র বৃদ্ধি করা, দেশের অর্থনীতিতে প্রবাসীদের অসামান্য অবদানকে সম্মান দিতে বিদেশে আমাদের মিশনগুলোতে পাসপোর্ট ডেলিভারিসহ প্রযুক্তিনির্ভর সেবার পরিধি দ্রুত ও সহজ করা হচ্ছে। মুজিববর্ষ-২০২০ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী-২০২১-কে কেন্দ্র করে বিশ্বের কাছে অপার সম্ভাবনাময় বাংলাদেশকে তুলে ধরা।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, বিশ্বের সর্বাধিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের পাশাপাশি দারিদ্র্য বিমোচনেও আমরা অগ্রগামী। ইতিমধ্যে গত ১১ বছরে দেশের দারিদ্র্যসীমা অর্ধেক হ্রাস পেয়ে ২০ শতাংশে নেমে এসেছে। আগামী পাঁচ বছরে আরও পাঁচ শতাংশ হ্রাস পাবে। পর্যায়ক্রমে দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ উন্নয়নের পথপরিক্রমায় ২০৪১ সালে বঙ্গবন্ধুর চির কাক্সিক্ষত সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলায় পরিণত হবে।
ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সবসময় প্রতিবেশী রাষ্ট্রসহ সব রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার নীতি অনুসরণ করে। যুদ্ধ নয়, সীমান্ত হত্যা, পানি সমস্যাসহ অনেক অমীমাংসিত বিষয় বাংলাদেশ ডায়ালগের মাধ্যমে সমাধান করেছে। নরেন্দ্র মোদি-শেখ হাসিনা যেভাবে সমস্যার সমাধান করেছেন অন্য কোথাও তার নজির পাওয়া যাবে না। মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন নাটোর-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. শফিকুল ইসলাম শিমুল, নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য মো. শহিদুল ইসলাম ও নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা প্রমুখ। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, অতিরিক্ত সচিব মো. শামসুল হক, মো. সাব্বির আহমদ চৌধুরী ও সৈয়দ মাসুদ মাহমুদ খন্দকার, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক এফ এম বোরহান উদ্দিন, খন্দকার মো. তালহা, মো. নজরুল ইসলাম, মো. তারিকুল ইসলাম, মোহাম্মদ সারওয়ার মাহমুদ ও মেহেদী হাসান প্রমুখ।
মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মো. শাহরিয়াজ। সভা শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুরের উদ্দেশে রওনা দেন।