প্রণোদনা ঋণ
ভর্তুকির সুদ গ্রাহকের ওপর চাপানো যাবে না
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৩ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০
করোনার ক্ষতি মোকাবিলায় ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে ঋণ নিলে গ্রাহকদের সুদে ভর্তুকি দিচ্ছে সরকার। তবে তা গ্রাহকের ওপর চাপিয়ে সুদসহ পুরো টাকা পরিশোধের সময় বেঁধে দিচ্ছে কিছু ব্যাংক। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ভর্তুকি সুদকে আলাদা হিসাবে সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
গতকাল মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত নির্দেশনা সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশনায় বলেছে, ঋণের ওপর আরোপযোগ্য নির্ধারিত সুদের মধ্যে গ্রাহক কর্তৃক প্রদেয় অংশ গ্রাহকের ঋণ হিসাবের বিপরীতে আরোপ করা যাবে। অবশিষ্ট অংশ পৃথক হিসাবে সংরক্ষণ করতে হবে।
করোনাভাইরাসের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ভর্তুকি সুদে এখন পর্যন্ত সোয়া লাখ কোটি টাকার ২১টি প্রণোদনা ঋণ প্যাকেজ ঘোষণা করে সরকার। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় প্যাকেজ হলো ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ও সেবা খাতের জন্য। বড় উদ্যোক্তাদের জন্য প্রথমে এ ঋণের প্যাকেজ ছিল ৩০ হাজার কোটি টাকা। পরে তা দুই দফায় বাড়িয়ে ৪০ হাজার কোটি টাকা করা হয়।
এ ঋণের সুদ ৯ শতাংশ, তবে তাতে সরকার ভর্তুকি দিচ্ছে সাড়ে ৪ শতাংশ। ফলে গ্রাহকদের সাড়ে ৪ শতাংশ সুদ পরিশোধ করতে হবে।
গত বছর ১২ এপ্রিল জারি করা সার্কুলারের এ নির্দেশনা স্মরণ করিয়ে দিয়ে গতকালের নির্দেশনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত আর্থিক সহায়তা প্যাকেজের আওতায় ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ও সেবা খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোকে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল হিসেবে ঋণ সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোকে কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়। ওই সার্কুলারে এ প্যাকেজের আওতায় বিতরণকৃত ঋণের ওপর আরোপিত সুদ অর্ধেক গ্রাহক পরিশোধ করবে এবং অবশিষ্ট অংশ সরকারের কাছ থেকে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ভর্তুকি হিসেবে প্রাপ্য হবে মর্মে উল্লেখ রয়েছে।
কিন্তু সম্প্রতি লক্ষ করা যাচ্ছে, কতিপয় ব্যাংক আলোচ্য প্যাকেজের আওতায় প্রদত্ত ঋণের বিপরীতে নির্ধারিত সমুদয় সুদ বা মুনাফা গ্রাহকের ঋণ হিসাবের বিপরীতে আরোপ করছে; যার ফলে গ্রাহক আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে গ্রাহক যাতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেজন্য আলোচ্য প্যাকেজের আওতায় প্রদত্ত ঋণের বিপরীতে শুধু সুদ বা মুনাফা আরোপের ক্ষেত্রে কয়েকটি নির্দেশনা অনুসরণ করতে বলা হয়েছে।
ঋণের ওপর আরোপযোগ্য নির্ধারিত সুদ বা মুনাফার শুধু গ্রাহক প্রদেয় অংশ গ্রাহকের ঋণ হিসাবের বিপরীতে আরোপ করা যাবে এবং অবশিষ্ট অংশ পৃথক হিসাবে সংরক্ষণ করতে হবে। তবে ঋণগ্রহীতা কর্তৃক প্রদেয় সুদ বা মুনাফা আলোচ্য সার্কুলারে বর্ণিত নির্দেশনা অনুযায়ী যথাসময়ে পরিশোধিত না হলে ব্যাংক সমুদয় সুদ বা মুনাফা গ্রাহকের ঋণ হিসাবের বিপরীতে আরোপ করতে পারবে এবং তা গ্রাহকের দায় হিসেবে বিবেচিত হবে।
এছাড়া ঋণ আদায়, সুদ বা মুনাফার অর্থ পুনর্ভরণসহ সার্বিক বিষয়ে ১২ এপ্রিলের সার্কুলারের নির্দেশনাগুলো অনুসরণ করতে হবে।
শেয়ার করুন
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৩ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০

করোনার ক্ষতি মোকাবিলায় ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে ঋণ নিলে গ্রাহকদের সুদে ভর্তুকি দিচ্ছে সরকার। তবে তা গ্রাহকের ওপর চাপিয়ে সুদসহ পুরো টাকা পরিশোধের সময় বেঁধে দিচ্ছে কিছু ব্যাংক। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ভর্তুকি সুদকে আলাদা হিসাবে সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
গতকাল মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত নির্দেশনা সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশনায় বলেছে, ঋণের ওপর আরোপযোগ্য নির্ধারিত সুদের মধ্যে গ্রাহক কর্তৃক প্রদেয় অংশ গ্রাহকের ঋণ হিসাবের বিপরীতে আরোপ করা যাবে। অবশিষ্ট অংশ পৃথক হিসাবে সংরক্ষণ করতে হবে।
করোনাভাইরাসের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ভর্তুকি সুদে এখন পর্যন্ত সোয়া লাখ কোটি টাকার ২১টি প্রণোদনা ঋণ প্যাকেজ ঘোষণা করে সরকার। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় প্যাকেজ হলো ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ও সেবা খাতের জন্য। বড় উদ্যোক্তাদের জন্য প্রথমে এ ঋণের প্যাকেজ ছিল ৩০ হাজার কোটি টাকা। পরে তা দুই দফায় বাড়িয়ে ৪০ হাজার কোটি টাকা করা হয়।
এ ঋণের সুদ ৯ শতাংশ, তবে তাতে সরকার ভর্তুকি দিচ্ছে সাড়ে ৪ শতাংশ। ফলে গ্রাহকদের সাড়ে ৪ শতাংশ সুদ পরিশোধ করতে হবে।
গত বছর ১২ এপ্রিল জারি করা সার্কুলারের এ নির্দেশনা স্মরণ করিয়ে দিয়ে গতকালের নির্দেশনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত আর্থিক সহায়তা প্যাকেজের আওতায় ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ও সেবা খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোকে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল হিসেবে ঋণ সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোকে কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়। ওই সার্কুলারে এ প্যাকেজের আওতায় বিতরণকৃত ঋণের ওপর আরোপিত সুদ অর্ধেক গ্রাহক পরিশোধ করবে এবং অবশিষ্ট অংশ সরকারের কাছ থেকে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ভর্তুকি হিসেবে প্রাপ্য হবে মর্মে উল্লেখ রয়েছে।
কিন্তু সম্প্রতি লক্ষ করা যাচ্ছে, কতিপয় ব্যাংক আলোচ্য প্যাকেজের আওতায় প্রদত্ত ঋণের বিপরীতে নির্ধারিত সমুদয় সুদ বা মুনাফা গ্রাহকের ঋণ হিসাবের বিপরীতে আরোপ করছে; যার ফলে গ্রাহক আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে গ্রাহক যাতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেজন্য আলোচ্য প্যাকেজের আওতায় প্রদত্ত ঋণের বিপরীতে শুধু সুদ বা মুনাফা আরোপের ক্ষেত্রে কয়েকটি নির্দেশনা অনুসরণ করতে বলা হয়েছে।
ঋণের ওপর আরোপযোগ্য নির্ধারিত সুদ বা মুনাফার শুধু গ্রাহক প্রদেয় অংশ গ্রাহকের ঋণ হিসাবের বিপরীতে আরোপ করা যাবে এবং অবশিষ্ট অংশ পৃথক হিসাবে সংরক্ষণ করতে হবে। তবে ঋণগ্রহীতা কর্তৃক প্রদেয় সুদ বা মুনাফা আলোচ্য সার্কুলারে বর্ণিত নির্দেশনা অনুযায়ী যথাসময়ে পরিশোধিত না হলে ব্যাংক সমুদয় সুদ বা মুনাফা গ্রাহকের ঋণ হিসাবের বিপরীতে আরোপ করতে পারবে এবং তা গ্রাহকের দায় হিসেবে বিবেচিত হবে।
এছাড়া ঋণ আদায়, সুদ বা মুনাফার অর্থ পুনর্ভরণসহ সার্বিক বিষয়ে ১২ এপ্রিলের সার্কুলারের নির্দেশনাগুলো অনুসরণ করতে হবে।