সূচক ৫৮০০ পয়েন্ট ছাড়াল
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৭ মে, ২০২১ ০০:০০
ঈদের আগে-পরে টানা সাত কার্যদিবসের ঊর্ধ্বগতিতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক ৫৮০০ পয়েন্ট ছাড়িয়েছে। ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বস্ত্র, সেবা ও নির্মাণ এবং জ্বালানী খাতের অধিকাংশ বড় মূলধনী কোম্পানির শেয়ারের দরবৃদ্ধিতে গতকাল রবিবার ডিএসইর সূচকটি এ উচ্চতায় উঠেছে। চাঙ্গা বাজারে লেনদেনের গতিও সন্তোষজনক অবস্থানে ছিল।
পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত এক মাস ধরে পুঁজিবাজারে যে চাঙ্গাভাব রয়েছে, গতকাল লেনদেনের শুরু থেকেই সেই ধারাবাহিকতায় ছিল। ব্যাংক খাতের নেতৃত্বে বাজারের ঊর্ধ্বমুখী ধারা শুরু হলেও পরবর্তী সময়ে বস্ত্র ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের কোম্পানিগুলোও তাতে শামিল হয়। এ সময় বেশিরভাগ খাতের শেয়ার দর বাড়লেও সাম্প্রতিক সময়ে লেনদেনে প্রাধান্য বিস্তার করা বীমা খাতের শেয়ার কিছুটা সংশোধন হয়েছে। দর ও লেনদেন দুটিই কমেছে বীমা খাতের।
গতকাল লেনদেন শেষে ডিএসইতে কেনাবেচা হওয়া ৩৬৮টি কোম্পানির মধ্যে ২৩১টির দর বেড়েছে, কমেছে ৮৮টির ও অপরিবর্তিত ছিল ৪৯টির। চাঙ্গাবাজারে গতকাল ফ্লোর প্রাইস অতিক্রম করেছে কিছু কোম্পানি। বেশিরভাগ শেয়ারের দর বাড়ায় প্রায় চার মাস পর ডিএসইর প্রধান সূচকটি ৫৮১৩ পয়েন্টে উন্নীত হয়েছে। এর আগে গত ১৪ জানুয়ারি এ সূচকটি ৫৯০৯ পয়েন্টে উন্নীত হয়েছিল। তবে এরপর মার্জিন ঋণের সুদহার সর্বোচ্চ ১২ শতাংশ নির্ধারণকে কেন্দ্র করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) নির্দেশনাকে কেন্দ্র করে বাজারে পতন ধারা তৈরি হয়। অবশ্য পরবর্তী সময়ে সর্বোচ্চ সুদহার কার্যকরের বিষয়টি স্থগিত করা হয় এবং মার্জিন ঋণ বিতরণের হারও বাড়িয়ে দেয় কমিশন। এরপর গত ৫ এপ্রিল থেকে বাজারে ধীরে ধীরে চাঙ্গাভাব তৈরি হয়।
পর্যালোচনায় দেখা গেছে, দেশের রপ্তানি পণ্যের প্রধান বাজার ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে ‘লকডাউন’ প্রত্যাহার হওয়ায় বস্ত্র খাতের শেয়ারে চাহিদা তৈরি হয়েছে। গতকাল এ খাতের ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে ৪৬টির দর বেড়েছে। পুরো খাতটির গড় বাজার মূল্য বেড়েছে প্রায় সাড়ে ৩ শতাংশ। দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংক খাতের শেয়ার দর তলানিতে থাকা ও তুলনামূলক ভালো লভ্যাংশ ঘোষণা করায় গত কয়েক দিন ধরে ব্যাংকের শেয়ারের প্রতিও বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেড়েছে। গতকাল ডিএসইতে তালিকাভুক্ত হওয়া ৩১ ব্যাংকের মধ্যে ২৫টির দর বেড়েছে। ব্যাংক খাতের বাজার মূল্য বেড়েছে ২ শতাংশ। গতকাল এনআরবিসি, প্রাইম ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। এ সময়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের বাজারদর বেড়েছে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। খাতওয়ারি হিসেবে গতকাল সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে সেবা ও নির্মাণ খাতের, ৪ দশমিক ৯ শতাংশ। এছাড়া তথ্যপ্রযুক্তি, কাগজ, ভ্রমণ, জ¦ালানি ও ফার্মাসিউটিক্যালস খাতের দর বেড়েছে। বিপরীতে বীমা, সিমেন্ট, বিবিধ ও টেলিযোগাযোগ খাতের দর কমেছে।
গতকাল ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা কমলেও তা ১ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা হয়েছে। খাতওয়ারি ও একক কোম্পানির লেনদেন চিত্রেও পরিবর্তন দেখা গেছে। দীর্ঘদিন ধরে লেনদেনে সাধারণ বীমা খাত প্রাধান্য বিস্তার করলেও মাত্র কয়েক লাখ টাকার ব্যবধানে গতকাল শীর্ষে উঠে এসেছে বস্ত্র খাত। এছাড়া বিবিধ, ব্যাংক, বীমা, জ¦ালানি, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও প্রকৌশল খাতেও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কেনাবেচা হয়েছে। লেনদেনে একক কোম্পানি হিসেবে বেক্সিমকো লিমিটেডের প্রাধান্য বজায় থাকলেও আগের কার্যদিবসের তুলনায় ২০ শতাংশ কমেছে। শীর্ষ লেনদেনের তালিকায়ও নতুনত্ব দেখা গেছে।
গতকাল ডিএসইতে লেনদেনের ভিত্তিতে (টাকায়) প্রধান ১০টি কোম্পানি হলো বেক্সিমকো লিমিটেড, সাইফ পাওয়ারটেক, রবি আজিয়াটা, সামিট পাওয়ার, ন্যাশনাল ফিড মিল, ম্যাকসন্স স্পিনিং, জেনেক্স ইনফোসিস, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, এসএস স্টিল ও আইএফআইসি ব্যাংক।
শেয়ার করুন
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৭ মে, ২০২১ ০০:০০

ঈদের আগে-পরে টানা সাত কার্যদিবসের ঊর্ধ্বগতিতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক ৫৮০০ পয়েন্ট ছাড়িয়েছে। ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বস্ত্র, সেবা ও নির্মাণ এবং জ্বালানী খাতের অধিকাংশ বড় মূলধনী কোম্পানির শেয়ারের দরবৃদ্ধিতে গতকাল রবিবার ডিএসইর সূচকটি এ উচ্চতায় উঠেছে। চাঙ্গা বাজারে লেনদেনের গতিও সন্তোষজনক অবস্থানে ছিল।
পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত এক মাস ধরে পুঁজিবাজারে যে চাঙ্গাভাব রয়েছে, গতকাল লেনদেনের শুরু থেকেই সেই ধারাবাহিকতায় ছিল। ব্যাংক খাতের নেতৃত্বে বাজারের ঊর্ধ্বমুখী ধারা শুরু হলেও পরবর্তী সময়ে বস্ত্র ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের কোম্পানিগুলোও তাতে শামিল হয়। এ সময় বেশিরভাগ খাতের শেয়ার দর বাড়লেও সাম্প্রতিক সময়ে লেনদেনে প্রাধান্য বিস্তার করা বীমা খাতের শেয়ার কিছুটা সংশোধন হয়েছে। দর ও লেনদেন দুটিই কমেছে বীমা খাতের।
গতকাল লেনদেন শেষে ডিএসইতে কেনাবেচা হওয়া ৩৬৮টি কোম্পানির মধ্যে ২৩১টির দর বেড়েছে, কমেছে ৮৮টির ও অপরিবর্তিত ছিল ৪৯টির। চাঙ্গাবাজারে গতকাল ফ্লোর প্রাইস অতিক্রম করেছে কিছু কোম্পানি। বেশিরভাগ শেয়ারের দর বাড়ায় প্রায় চার মাস পর ডিএসইর প্রধান সূচকটি ৫৮১৩ পয়েন্টে উন্নীত হয়েছে। এর আগে গত ১৪ জানুয়ারি এ সূচকটি ৫৯০৯ পয়েন্টে উন্নীত হয়েছিল। তবে এরপর মার্জিন ঋণের সুদহার সর্বোচ্চ ১২ শতাংশ নির্ধারণকে কেন্দ্র করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) নির্দেশনাকে কেন্দ্র করে বাজারে পতন ধারা তৈরি হয়। অবশ্য পরবর্তী সময়ে সর্বোচ্চ সুদহার কার্যকরের বিষয়টি স্থগিত করা হয় এবং মার্জিন ঋণ বিতরণের হারও বাড়িয়ে দেয় কমিশন। এরপর গত ৫ এপ্রিল থেকে বাজারে ধীরে ধীরে চাঙ্গাভাব তৈরি হয়।
পর্যালোচনায় দেখা গেছে, দেশের রপ্তানি পণ্যের প্রধান বাজার ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে ‘লকডাউন’ প্রত্যাহার হওয়ায় বস্ত্র খাতের শেয়ারে চাহিদা তৈরি হয়েছে। গতকাল এ খাতের ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে ৪৬টির দর বেড়েছে। পুরো খাতটির গড় বাজার মূল্য বেড়েছে প্রায় সাড়ে ৩ শতাংশ। দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংক খাতের শেয়ার দর তলানিতে থাকা ও তুলনামূলক ভালো লভ্যাংশ ঘোষণা করায় গত কয়েক দিন ধরে ব্যাংকের শেয়ারের প্রতিও বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেড়েছে। গতকাল ডিএসইতে তালিকাভুক্ত হওয়া ৩১ ব্যাংকের মধ্যে ২৫টির দর বেড়েছে। ব্যাংক খাতের বাজার মূল্য বেড়েছে ২ শতাংশ। গতকাল এনআরবিসি, প্রাইম ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। এ সময়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের বাজারদর বেড়েছে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। খাতওয়ারি হিসেবে গতকাল সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে সেবা ও নির্মাণ খাতের, ৪ দশমিক ৯ শতাংশ। এছাড়া তথ্যপ্রযুক্তি, কাগজ, ভ্রমণ, জ¦ালানি ও ফার্মাসিউটিক্যালস খাতের দর বেড়েছে। বিপরীতে বীমা, সিমেন্ট, বিবিধ ও টেলিযোগাযোগ খাতের দর কমেছে।
গতকাল ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা কমলেও তা ১ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা হয়েছে। খাতওয়ারি ও একক কোম্পানির লেনদেন চিত্রেও পরিবর্তন দেখা গেছে। দীর্ঘদিন ধরে লেনদেনে সাধারণ বীমা খাত প্রাধান্য বিস্তার করলেও মাত্র কয়েক লাখ টাকার ব্যবধানে গতকাল শীর্ষে উঠে এসেছে বস্ত্র খাত। এছাড়া বিবিধ, ব্যাংক, বীমা, জ¦ালানি, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও প্রকৌশল খাতেও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কেনাবেচা হয়েছে। লেনদেনে একক কোম্পানি হিসেবে বেক্সিমকো লিমিটেডের প্রাধান্য বজায় থাকলেও আগের কার্যদিবসের তুলনায় ২০ শতাংশ কমেছে। শীর্ষ লেনদেনের তালিকায়ও নতুনত্ব দেখা গেছে।
গতকাল ডিএসইতে লেনদেনের ভিত্তিতে (টাকায়) প্রধান ১০টি কোম্পানি হলো বেক্সিমকো লিমিটেড, সাইফ পাওয়ারটেক, রবি আজিয়াটা, সামিট পাওয়ার, ন্যাশনাল ফিড মিল, ম্যাকসন্স স্পিনিং, জেনেক্স ইনফোসিস, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, এসএস স্টিল ও আইএফআইসি ব্যাংক।