
বাংলাদেশে টেকসই উন্নয়নে অর্জনের পথে ‘বিকল্প জ্বালানি’ নিশ্চিতে ধারাবাহিক প্রচেষ্টার জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে বসুন্ধরা এলপিজি। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যভিত্তিক অর্থনীতি সাময়িকী ‘বিজনেস ট্যাবলয়েড’ বসুন্ধরা এলপি গ্যাসকে ‘বেস্ট এলপি গ্যাস কোম্পানি’ হিসেবে অ্যাওয়ার্ড প্রদান করে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। প্রতি বছর নিজ নিজ ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বদের এ পুরস্কার দেয় ম্যাগাজিনটি। এক্ষেত্রে কোনো প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট শিল্পখাতে সম্ভাবনা ও দক্ষতা বিবেচনায় নেওয়া হয়।
আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ায় বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফিয়াত সোবহান ভোক্তা, বিক্রেতা, পরিবেশকসহ সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। বাংলাদেশের প্রথম এলপি গ্যাস কোম্পানি হিসেবে বিগত ২০ বছর ধরে রান্নার বিকল্প জ্বালানি সরবরাহে হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে এবং প্রায় লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে।
বসুন্ধরা এলপি গ্যাসের হেড অব সেলস জাকারিয়া জালাল বলেন, বসুন্ধরা এলপি গ্যাস দুই দশকেরও বেশি সময়ের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে দেশে এলপিজি বাজারকে শক্তিশালী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বাংলাদেশ এবং বিশ্বব্যাপী ব্র্যান্ডকে শক্তিশালী করার জন্য স্বল্প এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার প্রতিফলনেই এই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। বিজ্ঞপ্তি
অবশেষে চূড়ান্ত নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০১৯-২০ অর্থবছরে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের (রাকাব) লোকসান দাঁড়াল ৬১৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। সাময়িক আর্থিক প্রতিবেদনে এই লোকসান দেখানো হয় ৬০৩ কোটি টাকা। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শনে লোকসান বেশি ধরা পড়ায় সম্প্রতি তা সংশোধন করে চূড়ান্ত করে ব্যাংকটি।
চূড়ান্ত নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বিশেষায়িত এই ব্যাংকটির ক্রমপুঞ্জীভূত লোকসান দাঁড়াল ১ হাজার ৭১৫ কোটি ২১ লাখ টাকা। ২০১৯ এর ৩০ জুনে এই লোকসান ছিল ১ হাজার ১০০ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।
সম্প্রতি রাকাবের আয়কর উপদেষ্টা হায়দার আহমদ খান এফসিএ কর্র্তৃক প্রস্তুতকৃত সংশোধিত আয়কর বিবরণীতে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।
জানা গেছে, আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪-এর ৭৫ (১) ধারা মোতাবেক রাকাবকে প্রতিবছর কোম্পানি আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হয়। ২০১৯-২০ অর্থবছরের আয়কর রিটার্ন দাখিলের নির্ধারিত সময় ছিল ২০২১ সালের ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বার্ষিক হিসাব দুটি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট ফার্ম দিয়ে নিরীক্ষা শেষ না হওয়ায় গত ১৩ জানুয়ারি রাকাবের সাময়িক আয়কর বিবরণী দাখিল করা হয়। তবে গত ৩০ জুন রাকাবের পরিচালনা পর্ষদ ২০১৯-২০ অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন দেয়। ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সংশোধিত কোম্পানি আয়কর রিটার্ন প্রস্তুতের জন্য গত ২২ আগস্ট আয়কর উপদেষ্টা হায়দার আহমদ খানের কাছে পাঠায় রাকাব। গত ২৫ আগস্ট সংশোধিত আয়কর রিটার্ন প্রস্তুত করে ব্যাংকে পাঠিয়ে দেন হায়দার আহমদ খান।
এর আগে সাময়িক আয়কর রিটার্ন অনুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবছর রাকাবের লোকসান ছিল ৬০৩ কোটি টাকা। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিশেষ পরিদর্শনে উঠে আসে এই লোকসান প্রায় ৬১৭ কোটি টাকা। অবশেষে রাকাবের নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়, এই লোকসান প্রায় ৬১৫ কোটি টাকা।
আলোচ্য সময়ে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ ছিল প্রায় ১ হাজার ৭৫৬ কোটি টাকা, যা ব্যাংকের বিতরণকৃত ঋণের প্রায় ৩০ শতাংশ। রাকাবের লোকসানি শাখার সংখ্যাও বাড়ছে। ৩৮৩টি শাখার মধ্যে ১১৮টি শাখাই লোকসানে রয়েছে।
বিপুল পরিমাণ লোকসানের বোঝা নিয়েও প্রতি বছর জুন ও ডিসেম্বরভিত্তিক কর্মীদের পদোন্নতি দিচ্ছে রাকাব। করোনা মহামারীর কারণে গত ডিসেম্বরভিত্তিক পদোন্নতি আটকে থাকায় গত ২৪ জুন অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধির সমন্বয়ের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে গত ২৭ জুন কর্মীদের পদোন্নতি দেয় রাকাব। ডিসেম্বরভিত্তিক পদোন্নতির রেশ-আনন্দ শেষ হতে না হতেই জুনভিত্তিক পদোন্নতি প্রদানের সাক্ষাৎকার নেওয়ার জন্য গত ২৫ জুলাই আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে প্রতিনিধি চেয়ে চিঠি দেয় রাকাব।
এবার উপমহাব্যবস্থাপক ও সমমান, সরকারি মহাব্যবস্থাপক ও সমমান এবং সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার পদে পদোন্নতি বিবেচনার জন্য ১নং পদোন্নতি কমিটিতে প্রতিনিধি দেওয়ার জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে চিঠি লেখেন রাকাবের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. ইসমাইল হোসেন। গত ৩১ জুলাই এ পদোন্নতির সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও এই সময়ের মধ্যে প্রতিনিধি না দেওয়ায় সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হয়নি। গত ৩১ আগস্ট জুনভিত্তিক পদোন্নতির ১নং কমিটিতে প্রতিনিধি হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয় আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ সফিউল আলমকে। তবে বর্তমানে রাকাবের এমডি অসুস্থ থাকায় সাক্ষাৎকারের নতুন তারিখ এখনো নির্ধারণ করা হয়নি।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, পুঁজিবাজার দেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখে। কিন্তু অনেকেই ভুল বুঝে পুঁজিবাজারকে অনুৎপাদনশীল খাত বলে মন্তব্য করে থাকেন। এটি ঠিক নয়। পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ করে কোম্পানিগুলো ব্যবসা সম্প্রসারণ করছে, যা সরাসরি উৎপাদনশীল খাতে ব্যবহার হয়। গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) নতুন ট্রেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসইসি চেয়ারম্যান এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিএসইর চেয়ারম্যান মো. ইউনুসুর রহমান। এতে ডিএসইর পরিচালক রকিবুর রহমান, মোহাম্মদ শাহজাহান, সালমা নাসরীন, ডিবিএ সভাপতি শরীফ আনোয়ার হোসেন ও ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক আমিন ভূইয়া বক্তব্য রাখেন। ডিএসইর গতকালের অনুষ্ঠানে নতুন ৫২টি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধির হাতে ট্রেক সনদ তুলে দেওয়া হয়।
শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, পুঁজিবাজারকে অনেকে ভুল বুঝে অনুৎপাদনশীল খাত হিসেবে বলে থাকেন। সম্ভবত মানুষ দেশের যে সেকেন্ডারি মার্কেট আছে, যেখানে একটা এক্সিট প্ল্যান আছেÑসেটাকে পুঁজিবাজার মনে করেন। আসলে সেকেন্ডারি মার্কেট যেখানে মানুষের হাতে থাকা শেয়ার লেনদেন হয় শুধু, সেটাই কিন্তু পুঁজিবাজার নয়। আমাদের প্রাইমারি মার্কেট আছে, বন্ড মার্কেট আছে। প্রাইমারি মার্কেটের মাধ্যমে উৎপাদনশীল খাতে টাকা দিচ্ছি। বন্ড মার্কেটের মাধ্যমে উৎপাদনশীল খাতে টাকা দিচ্ছি। পুঁজিবাজারের মাধ্যমে টাকা নিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো দেশে এবং দেশের বাইরে ব্যবসা বাড়াচ্ছে। টাকাগুলো তো সব উৎপাদনশীল খাতে যাচ্ছে। তাহলে এখানে অনুৎপাদনশীল কথাটা কেন আসল।
এসইসি চেয়ারম্যান বলেন, আমরা ব্যবসাবান্ধব হয়ে কাজ করার চেষ্টা করছি। তবে অল্প কিছু প্রতিষ্ঠান আছে, যারা নিয়মকানুন মানতে চায় না। সুশাসনের বাইরে চলে যায় এবং নিজের মতো চলার চেষ্টা করে। তিনি বলেন, মানুষ কষ্টের যে টাকা আপনাদের (কোম্পানির) কাছে দিয়ে যায়, তা রক্ষা করতে হবে। তবে এই বিনিয়োগের বিপরীতে তাদের যে রিটার্ন বা লভ্যাংশ পাওয়ার অধিকার আছে, তা অনেকে বিশ্বাস করে না। তবে কমিশন এ বিষয়ে কঠোর।
কোনো কোম্পানিতে মানুষ যদি কষ্টের টাকা বিনিয়োগ করার পর কোনো রিটার্ন না পায়, তাহলে কেন তাদের সঞ্চয় ওই কোম্পানিতে দেবে। এটা কিন্তু একটা বেসিক জিনিস। এটা সব কোম্পানি কর্তৃপক্ষকেই বুঝতে হবে। আমরা এখন সব কোম্পানিকে এটা বোঝানোর চেষ্টা করছি। এই রিটার্ন পাওয়ার অনিশ্চয়তার কারণেই আগে অনেকেই পুঁজিবাজারে আসত না বলে জানান শিবলী রুবাইয়াত। কারণ এখানে টাকা দিয়ে কিছুই পাওয়া যায় না। রিটার্ন তো পায় না, আসলও পায় না। এতে যেটা হয়, সেই মার্কেট ছোট হয়ে যায় এবং মরে যায়।
তাই এ বিষয়ে কমিশনকে কঠোর থাকতে হচ্ছে বলে জানান এসইসির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত। যাতে করে বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা দিতে পারি। তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত না হলে কেউ কোনো দিন এখানে আসবে না। তাই সবার কাছে অনুরোধ, আপনাদের ওপর বিশ্বাস করে যারা তাদের কষ্টের সঞ্চয় দিয়ে যাচ্ছে, তাদের সম্মান করবেন এবং তাদের সম্পদ সুরক্ষা ও রিটার্ন দেবেন। কারণ এটি একটি পরিবারের জন্য খুবই দরকারি।
এসইসি চেয়ারম্যান বলেন, আজকে (শনিবার) সনদ প্রদানের মাধ্যমে ৫২টি নতুন সদস্য অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে, যা পুঁজিবাজারকে আরও শক্তিশালী করবে। এই নতুন সদস্যদের অন্তর্ভুক্তি অনেকটা একটি পরিবারে নতুন সদস্যের আগমনের মতো খুশির খবর।
শিবলী রুবাইয়াত বলেন, রেমিট্যান্সের টাকা দেশের কোনায় কোনায় পড়ে আছে, যারা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে চায়। তবে আমরা যদি সুশাসনের মাধ্যমে রিটার্ন নিশ্চিত করতে পারি। তখন সমস্ত টাকা পুঁজিবাজারে চলে আসবে। এতে করে পুঁজিবাজার হবে অনেক বড় এবং অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি হয়ে উঠবে।
নতুন ট্রেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ডিএসইর পরিচালক রকিবুর রহমান বলেন, আমার ধারণা আগামী বছরে ৫ হাজার কোটি টাকা লেনদেন হবে। আর সূচক কোনো ব্যাপার না। এটি ১০ হাজার উঠবে, ১৫ হাজার উঠবে, ২০ হাজার উঠবে। সূচক কোনো বিষয় না। এটি শুধু শেয়ার দরকে ইঙ্গিত করে। শেয়ারের দাম বাড়লে, সূচক বাড়বে। পুঁজিবাজার টিকে যাবে বলে নিশ্চয়তা দিয়ে রকিবুর রহমান বলেন, কিছু সংশোধন হবে। তবে মৌলিক শেয়ারে বিনিয়োগ শুরু হওয়ায় পুঁজিবাজার পড়বে না।
করোনাভাইরাসের টিকা সময়মতো না পাওয়ায় বাংলাদেশি মেরিনাররা বৈদেশিক চাকরির বাজার হারাচ্ছেন। তাই দ্রুত এসএমএম পাওয়াসহ মেরিনারদের টিকাদান সহজ করা এবং সার্টিফিকেট অব প্রফিসিয়েন্সি (সিওপি) পেতে দীর্ঘসূত্রতা ও জটিলতার সমাধানের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএমএ)।
গতকাল শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে আট দফা দাবি জানায় বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন।
বিদেশগামী জাহাজের নাবিকদের করোনা ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য ঢাকা ও চট্টগ্রামে দুটি হাসপাতাল নির্দিষ্টকরণের দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে। বলা হয়, কভিড-১৯ ভ্যাকসিনের জন্য নিবন্ধন করলেও খুব অল্পসংখ্যক নাবিক ভ্যাকসিন পেয়েছেন। এই পদক্ষেপ গ্রহণে যত বিলম্ব হবে, বিভিন্ন দেশের শিপিং কোম্পানিগুলোয় বাংলাদেশি নাবিকদের চাকরির বাজার তত সংকুচিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাংলাদেশি মেরিনারদের বেশিরভাগকেই সিঙ্গাপুর থেকে সাইন অফ (জাহাজ থেকে নামা) করতে হয়। সিঙ্গাপুর মেরিটাইম কর্তৃপক্ষের সার্কুলার অনুসারে সিঙ্গাপুরে কোনো মেরিনারকে সাইন অফ করতে হলে আগের বন্দরে করোনার পিসিআর পরীক্ষা করতে হয়। কিন্তু অনেক বন্দরে তা সম্ভব হয় না। আবার সিঙ্গাপুরে সাইন অফ করে দেশে আসার জন্যও পুনরায় পিসিআর পরীক্ষা করতে হচ্ছে। ফলে সামগ্রিক প্রক্রিয়া অত্যন্ত জটিল হয়ে পড়েছে। এ কারণে বিদেশি শিপিং কোম্পানিগুলো বাংলাদেশি মেরিনার নিয়োগে অনাগ্রহী হয়ে পড়ছে। এ অবস্থায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সিঙ্গাপুর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যার দ্রুত সমাধান করতে হবে।
নাবিকদের সিওপি প্রদানে জটিলতার জন্য নৌ পরিবহন অধিদপ্তরকে দায়ী করে ক্যাপ্টেন আনাম চৌধুরী বলেন, স্ট্যান্ডার্ড ট্রেডিং সার্টিফিকেশন অ্যান্ড ওয়াচকিপিং ফর সী-ফেয়ারার (এসটিসিডব্লিউ) অনুসারে নাবিকদের জন্য পুনরায় সিওপি পরীক্ষার অধিকতর মূল্যায়ন অত্যাবশ্যক নয়। মেরিন অ্যাকাডেমি অথবা স্বীকৃত অন্য কোনো ইনস্টিটিউট থেকে শর্টকোর্স সম্পন্ন করে সিওপি পাওয়ার পর তা মূল্যায়নের জন্য পুনরায় লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণের নামে নাবিকদের কালক্ষেপণের পাশাপাশি নানা রকম হয়রানিও করছে নৌ অধিদপ্তর। এছাড়া সিওপি মূল্যায়নের জন্য নাবিকদের ওপর নির্ধারিত ফি ধার্য করা হয়েছে। এই দীর্ঘ ও জটিল প্রক্রিয়ার পেছনে নৌ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের অনৈতিক আর্থিক সুবিধা রয়েছে অভিযোগ করে ধার্য ফি মওকুফ ও শুধুমাত্র অনলাইন মূল্যায়ন অথবা মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে দ্রুত সিওপি প্রদানের দাবি জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, উচ্চ করোনা ঝুঁকিপূর্ণ দেশ থেকে কোনো ভ্রমণকারী বা যাত্রী র্যাপিড টেস্টের (অ্যান্টিজেন টেস্ট) নেগেটিভ ফলাফল ব্যতীত ইউরোপিয়ান দেশগুলোয় প্রবেশ করতে পারছেন না। সেসব দেশ থেকে বাংলাদেশি মেরিনারদের সাইন অনের জন্য র্যাপিড টেস্টের নেগেটিভ ফলাফল বাধ্যতামূলক। এই টেস্ট বিমানে ওঠার চার ঘণ্টা আগে করতে হয়। সেজন্য হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরসহ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোয় র্যাপিড টেস্টের ব্যবস্থা প্রয়োজন। সংবাদ সম্মেলনে ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ আনাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান বোমার সহসভাপতি মেরিন ইঞ্জিনিয়ার মো. মাহবুবুর রহমান। এ সময় অন্যদের মধ্যে আলোচনা করেন সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি ক্যাপ্টেন গোলাম মহিউদ্দীন কাদরী, ট্রেজারার চিফ অফিসার মো. আলী হোসেন, কার্যনির্বাহী সদস্য মেরিন ইঞ্জিনিয়ার কাজী মো. আবু সায়ীদ, মেরিন ইঞ্জিনিয়ার অঙ্গন দাস প্রমুখ।
সাউথইস্ট ব্যাংক পর্ষদের চেয়ারম্যান পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন আলমগীর কবির। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত পরিচালনা পর্ষদের ৬৩৬তম বোর্ডসভায় তাকে ব্যাংকের চেয়ারম্যান পুনর্নির্বাচিত করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিকম (অনার্স) এবং পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমকম ডিগ্রিধারী আলমগীর কবির পেশাদার চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট।
২০০৪ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে সাউথ ইস্ট ব্যাংক পর্ষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। ব্যাংকের সব সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান এবং ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির অনারারি উপদেষ্টা।
১৯৬৯ সালে কেপিএমজির মেম্বার ফার্ম রহমান রহমান হক অ্যান্ড কোং, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসে তার কর্মজীবন শুরু হয়। এরপর তিনি রহমান রহমান হকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইডব্লিউপি অ্যাসোসিয়েটসে ম্যানেজমেন্ট কনসালট্যান্ট হিসেবে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭২ সালে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রথম বিধিবদ্ধ নিরীক্ষক হিসেবে অডিট অব অ্যাকাউন্টসের অডিট ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৭৯ সালে সৌদি আরবের রিয়াদ শহরে সৌদি অ্যাকাউন্টিং ব্যুরো, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসের হয়ে দায়িত্ব পালন করেন যেটি কুপার্স অ্যান্ড লাইব্র্যান্ড, মুরস রোল্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল এবং ইনবুকন ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের মেম্বার ফার্ম। সেখানে তিনি ১৯৭৯ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত ম্যানেজমেন্ট কনসালট্যান্ট হিসেবে গুরু দায়িত্ব পালন করেন।
এরপর দেশে ফিরে তিনি ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসিতে) সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া তিনি এসইসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও ছিলেন। ১৯৯৯ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক অব বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা উপদেষ্টা ছিলেন তিনি। বিজ্ঞপ্তি
পদোন্নতি পেয়ে সম্প্রতি মো. আনোয়ার হুসাইন ও মো. মোস্তাফিজুর রহমান মাওদুদী জনতা ব্যাংকে মহাব্যবস্থাপক হিসেবে যোগ দিয়েছেন। আনোয়ার হুসাইন ১৯৮৮ সালে জনতা ব্যাংকে সিনিয়র অফিসার হিসেবে যোগ দেন। চাকরিকালে তিনি শাখা পর্যায় ও প্রধান কার্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন।
মো. মোস্তাফিজুর রহমান মাওদুদী ১৯৮৮ সালে জনতা ব্যাংকে প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা (সিনিয়র অফিসার) হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে ব্যাংকিং ক্যারিয়ার শুরু করেন। চাকরিকালে তিনি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়, বিভাগীয় ও এরিয়া অফিস এবং শাখা পর্যায়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবস্থাপনায় স্নাতকসহ মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। বিজ্ঞপ্তি
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের শীর্ষে থাকা আর্সেনালের সঙ্গে পয়েন্ট ব্যবধান কমিয়ে আনার সুযোগ ছিল ম্যানচেস্টার সিটির। আজ বড় সেই সুযোগটা তারা হাতছাড়া করেছে। হ্যারি কেইনের রেকর্ড গড়া গোলে টটেনহামের বিপক্ষে ১-০ গোলে হেরে গেছে পেপ গার্দিওলার শিষ্যরা।
বল দখলে সিটি শুরু থেকে একচেটিয়া আধিপত্য দেখিয়ে আসছিল। তবে ম্যাচের ১৫ মিনিটে সিটির রক্ষণের ভুলে বল পেয়ে টটেনহামকে এগিয়ে দেন কেইন। সিটির ডিফেন্ডার মানুয়েল আকনজির দুর্বল পাসে বল পেয়ে বক্সে ঢুকে পিয়া-এমিল হয়বিয়া বাড়ান কেইনকে। প্রথম স্পর্শে ডান পায়ের শটে গোলটি করেন ইংলিশ ফরোয়ার্ড।
এই গোলে তিনি টটেনহামের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলের মালিক হয়ে গেছেন। ২৬৭ গোল করে তিনি পেছনে ফেলেছেন টটেনহাম কিংবদন্তি জিমি গ্রিভসকে। ১৯৭০ সাল থেকে এই রেকর্ড নিজের করে রেখেছিলেন গ্রিভস।
ছন্দে থাকা সিটির তরুণ ফরোয়ার্ড আর্লিং হলান্ড এ দিন পুরোটা সময় নিজের ছায়া হয়ে ছিলেন। তার দিনটা আজ ভালো কাটেনি। গোল করার তেমন কোনো সুযোগই পাননি সিটির এই নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকার।
এই হারে যদিও লিগ টেবিলে সিটির অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি। তবে আজ জিতে গেলে আর্সেনালের সঙ্গে পয়েন্টের ব্যবধানটা কমিয়ে আনতে পারত তারা। ২১ ম্যাচ খেলে ম্যানচেস্টার সিটির পয়েন্ট ৪৫। একটি ম্যাচ কম খেলে আর্সেনালের পয়েন্ট ৫০। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি লন্ডনে ম্যানচেস্টার সিটির মুখোমুখি হবে আর্সেনাল। ২২ ম্যাচে ৩৯ পয়েন্ট নিয়ে টটেনহামের অবস্থান পঞ্চম। তৃতীয় স্থানে আছে নিউক্যাসল ইউনাইটেড (৪০ পয়েন্ট)।
অপেক্ষার অবসান হলো। হ্যারি কেইনের হাত ধরে যেন জিমি গ্রিভস সাম্রাজ্যের সাম্রাজ্যের পতন হলো। ৫৩ বছর ধরে যে রেকর্ড তিনি দখল করে রেখেছিলেন। সেটাই আজ ভাঙলেন হ্যারি কেইন। প্রিমিয়ার লিগের ইংলিশ ক্লাব টটেনহামের সর্বোচ্চ গোলের মালিক এখন হ্যারি।
রাতে ম্যানচেস্টার সিটিকে ১-০ গোলে হারিয়েছে টটেনহাম। জয়সূচক একমাত্র গোলটি করেছেন ইংলিশ অধিনায়ক কেইন। ম্যাচের ১৫ মিনিটে সিটির ডিফেন্ডার মানুয়েল আকনজির দুর্বল পাসে বল পেয়ে বক্সে ঢুকে পিয়া-এমিল হয়বিয়া বাড়ান কেইনকে। প্রথম স্পর্শে ডান পায়ের শটে গোলটি করেন ইংলিশ ফরোয়ার্ড।
আর এই গোলে তিনি টটেনহামের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলের মালিক হয়ে গেছেন। ২৬৭ গোল করে তিনি পেছনে ফেলেছেন টটেনহাম কিংবদন্তি জিমি গ্রিভসকে। ১৯৭০ সাল থেকে এই রেকর্ড নিজের করে রেখেছিলেন গ্রিভস।
লন্ডনের ক্লাব টটেনহাম হটস্পার দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে কোনো শিরোপা জেতে না। তবুও ইংলিশ লিগে তারাই সেরা দল। দলটির অন্যতম ভরসার নাম হ্যারি কেইন। ইংলিশ এই স্ট্রাইকার ২০০৯ সালে যোগ দেওয়া ক্লাবটির হয়ে গড়ে চলেছেন একের পর এক রেকর্ড।
গত বছরের আগস্টে সার্জিও আগুয়েরোকে টপকে প্রিমিয়ার লিগে এক ক্লাবের হয়ে সর্বোচ্চ গোলের কীর্তি গড়েন কেইন। গত ২৩ জানুয়ারি তিনি স্পর্শ করেছিলেন জিমি গ্রিভসকে। আজ ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে গোল করে তাকে ছাঁড়িয়ে যান তিনি। ভেঙে ফেলেন পাঁচ দশকের রেকর্ড।
রেকর্ডগড়া গোলে ম্যানসিটির বিপক্ষে টটেনহামকে জিতিয়ে ক্লাবটির ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতা বনে যান কেইন। তিনি ছাড়িয়ে যান জিমি গ্রিভসকে। কেইনের বর্তমান গোল সংখ্যা ২৬৭। সঙ্গে লন্ডন ডার্বিতে সবচেয়ে বেশি গোলের (৪৮) রেকর্ডও তার দখলে।
এই ম্যাচে প্রিমিয়ার লিগে ৩০০ ম্যাচ খেলার রেকর্ডও ছুঁয়ে ফেলেছেন তিনি। সিটির বিপক্ষে গোল করে এই লিগে তৃতীয় খেলোয়াড় হিসেবে ২০০ গোল করার মাইলফলক স্পর্শ করেছেন কেইন। তার ওপরে আছেন শুধু অ্যালান শিয়ারার (২৬০) ও ওয়েন রুনি (২০৮)।
টটেনহাম ইতিহাসের শীর্ষ ৭ গোলদাতা
খেলোয়াড় |
গোল |
সময়কাল |
হ্যারি কেইন |
২৬৭ |
২০০৯-বর্তমান |
জিমি গ্রিভস |
২৬৬ |
১৯৬১-১৯৭০ |
ববি স্মিথ |
২০৮ |
১৯৫৫-১৯৬৪ |
মার্টিন গিভারস |
১৭৪ |
১৯৬৮-১৯৭৬ |
ক্লিফ জোন্স |
১৫৪ |
১৯৫৮-১৯৬৮ |
জারমেইন ডিফো |
১৪৩ |
২০০৩-২০০৮ |
সন হিউং-মিন |
১৩৯ |
২০১৫-বর্তমান |
শ্রম পরিদর্শক পদে যোগ দেওয়ার ৩৪ বছর পর পদোন্নতি পেলেন মাহমুদুল হক। স্বপ্ন দেখতেন পদোন্নতির সিঁড়ি বেয়ে একসময় প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ পদে যাবেন। সেই স্বপ্ন আট বছরেই লুটিয়ে পড়ল জ্যেষ্ঠতার তালিকায়।
১৯৮৮ সালে যোগ দেওয়ায় ’৯৫ সালেই পদোন্নতি পাওয়ার কথা ছিল মাহমুদুল হকের। কর্তৃপক্ষের অবহেলা আর প্রতিষ্ঠানপ্রধানের অদূরদর্শিতা সে স্বপ্ন শুরুতেই বাধা পেল। এন্ট্রি পোস্টে যোগ দেওয়ার পর তার মতো অন্য কর্মচারীরা যখন পদোন্নতির স্বপ্নে বিভোর, তখন তাতে গা-ই করলেন না সেই সময়ের প্রতিষ্ঠানপ্রধান।
মাহমুদুল অপেক্ষায় রইলেন পরিবর্তিত পরিস্থিতির জন্য। সেই পরিবর্তন আসতে আসতে চাকরিতে কেটে গেল আঠারো বছর। আঠারোতে মানুষ প্রাপ্তবয়স্ক হয়। তিনিও ভাবলেন আঠারোতে তিনি না হয় ‘জব ম্যাচিউরিটি’তে পৌঁছালেন। চাকরির আঠারো বছরে পদোন্নতি পেলেও মন্দ হয় না।
কিন্তু অবাক ব্যাপার, কর্তৃপক্ষ পদোন্নতি দিল, তবে মাহমুদুলকে ছাড়া। পদোন্নতির প্রজ্ঞাপনে কোথাও তার নাম নেই। হতাশায় মুষড়ে পড়লেন তিনি। জুনিয়র কর্মকর্তারদের নাম আছে, অথচ তার নাম নেই। প্রতিষ্ঠানের নীতি-নির্ধারকদের দরজায় দরজায় ঘুরলেন ন্যায়বিচারের আশায়। কিন্তু তারা পাত্তাই দিলেন না বিষয়টি।
তারা আমলে না নিলেও মাহমুদুলের স্বপ্ন তো সেখানেই থেমে যাওয়ার নয়। সেই স্বপ্ন পুঁজি করে তিনি গেলেন আদালতে। সেই ভিন্ন জগৎটাও কম চ্যালেঞ্জিং ছিল না। প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল তার পক্ষে রায় দিল। মাহমুদুল আনন্দে আত্মহারা হলেন। কিন্তু সেই আনন্দ বেশি দিন স্থায়ী হলো না। সরকার আপিল করল প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালে। মামলার ফল উল্টে গেল। হতাশায় ভেঙে না পড়ে তিনি গেলেন উচ্চ আদালতে। আপিল বিভাগে সিভিল আপিল মামলা করলে প্রশাসনিক আপিল আদালতের রায় বাতিল হয়। প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের রায় বহাল থাকে।
জলে নেমে কুমিরের সঙ্গে লড়াই করার মতো মাহমুদুল হকও যেন সরকারের সঙ্গে লড়াই করতে নামলেন। আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ পিটিশন করল সরকারপক্ষ। একপর্যায়ে সরকার বুঝতে পারল কোনোভাবেই তারা এ মামলায় জিততে পারবে না। সরকারপক্ষে রিভিউ পিটিশন প্রত্যাহার করা হলো। আদালত সরকারের পদোন্নতির প্রজ্ঞাপনকে আইনের কর্তৃত্ববহির্ভূত বলে ঘোষণা করল। জুনিয়র কর্মকর্তাকে যেদিন থেকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে এবং যতবার পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে, একইভাবে মাহমুদুল হককে পদোন্নতি দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। বকেয়া বেতন-ভাতাসহ সব পাওনা কড়ায়-গ-ায় পরিশোধের নির্দেশনা আসে।
আদালতের এই নির্দেশনা দেওয়া হয় ২০১৮ সালে। এরপর আদেশ বাস্তবায়ন করতে সরকারের লেগে যায় প্রায় চার বছর। ২০২২ সালের ১১ মে তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়। ৩৪ বছর পর পদোন্নতির প্রজ্ঞাপন পেয়ে স্তম্ভিত হয়ে গেলেন মাহমুদুল হক। আবারও তাকে ঠকিয়েছে সরকার। জুনিয়র কর্মকর্তা যুগ্ম মহাপরিদর্শক হলেও তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয় তার দুই ধাপ নিচের সহকারী মহাপরিদর্শক পদে। উপমহাপরিদর্শক ও যুগ্ম মহাপরিদর্শক আরও ওপরের পদ। আদালতের নির্দেশনার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
কখনোই প্রজ্ঞাপন মাহমুদুল হকের জন্য ভালো বার্তা বয়ে আনেনি। পুরো চাকরিজীবন আদালতের বারান্দায় ঘুরে তিনি পৌঁছেছেন অবসরের প্রান্তসীমায়। আর তিন মাস পরে তিনি অবসরে যাবেন। যৌবন ও মধ্য বয়সের দিনগুলোতে আদালতে ঘুরে বেড়ানোর শক্তি ও সাহস থাকলেও মাহমুদুল হক এখন সেই সাহস দেখাতে দ্বিতীয়বার চিন্তা করছেন। পারবেন তো শেষ সময়ে এসে সরকারের অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপসহীন মনোভাব দেখিয়ে শেষ পর্যন্ত লড়ে যেতে?
মাহমুদুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে দেশ রূপান্তরকে জানিয়েছেন, তিনি আদালতের কাছেই জানতে চাইবেন, আদালতের বিচার না মানার শাস্তি কী।
পুরো ঘটনা শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা শুনিয়ে জানতে চাইলেন, কতজনের পক্ষে মাহমুদুল হকের মতো লড়াকু মনোভাব দেখানো সম্ভব?
সীমাহীন আনন্দ নিয়ে মানুষ সরকারি চাকরিতে যোগ দেয়। এরপরই তার মধ্যে যে স্বপ্নটি দানা বাঁধে তা হচ্ছে পদোন্নতি। কার কীভাবে পদোন্নতি হবে তা আইনকানুন, নিয়ম-নীতি দিয়ে পোক্ত করা। পুরো বিষয়টি কাচের মতো স্বচ্ছ। এরপরও পদোন্নতি হয় না। দিন, মাস, বছর পার হয়ে যায়, কাক্সিক্ষত পদোন্নতির দেখা মেলে না।
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) ২৬টি ক্যাডারের মধ্যে হাতে গোনা কয়েকটি ক্যাডারে নিয়মিত পদোন্নতি হয়। বাকি ক্যাডারে হতাশা। তার চেয়েও কঠিন পরিস্থিতি নন-ক্যাডারে। ক্যাডার কর্মকর্তারা নিজের পদোন্নতির ষোলো আনা বুঝে নিয়ে ঠেকিয়ে দেন নন-ক্যাডার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতি। সংখ্যায় বেশি হওয়ায় নন-ক্যাডাররা একজন আরেকজনকে নানা ইস্যুতে আটকাতে গিয়ে পুরো প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করেন। সরকারের মোট কর্মকর্তা-কর্মচারীর প্রায় তিন-চতুর্থাংশ কর্মচারী। সেই হিসেবে সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনবলের পদোন্নতি হয় না। পে-কমিশন হলেই কর্মচারীদের পদোন্নতির জন্য করুণা উথলে ওঠে। এমনকি ব্লকপোস্টে যারা আছেন, তাদের জন্যও পদোন্নতির বিকল্প সুবিধা বাতলে দেওয়া হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কর্মচারীদের পদোন্নতি উপেক্ষিতই থাকে।
যখন সময়মতো পদোন্নতি হয় না, তখন নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে থাকে। এসব সমস্যা সংশ্লিষ্ট দপ্তর-অধিদপ্তরের চৌহদ্দি পেরিয়ে আমজনতাকেও প্রভাবিত করে। নন-ক্যাডার কর্মকর্তা আর সঙ্গে কর্মচারীরা যখন বুঝতে পারেন পদোন্নতির আশা তাদের নেই, তখন তারা দুহাতে টাকা কামানোর ধান্দায় মেতে ওঠেন। এতে করে ঘুষের সংস্কৃতি সমাজে ছড়িয়ে পড়ে। অকার্যকর পথে হাঁটে রাষ্ট্র। সাধারণ মানুষ টাকা ছাড়া তাদের কাছ থেকে কোনো সেবা পায় না, ব্যবসায়ীরা নতুন কোনো আইডিয়া নিয়ে ব্যবসায় আসেন না, ব্যবসাবান্ধব পরিস্থিতি না থাকায় মুখ ফিরিয়ে নেন দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। প্রধানমন্ত্রীর বারবার আহ্বানেও বিনিয়োগকারীরা সাড়া দেন না। সাধারণ মানুষকে নিঃস্বার্থভাবে সেবা দেওয়ার বাণীতেও উদ্বুদ্ধ হন না সংশ্লিষ্টরা।
এই পরিস্থিতিতে অনিয়ম আটকে রাখার সব কৌশলই ব্যর্থ হচ্ছে। যথাযথ তদারকি না থাকায় বিভাগীয় ব্যবস্থা অকার্যকর হয়ে গেছে। ৩ লাখ ৫৩ হাজার ৩৫০টি অডিট আপত্তি ঝুলে থাকায় অডিট প্রতিষ্ঠানগুলোও আগ্রহ হারিয়ে নিজেরাই জড়িয়ে পড়ছে অনিয়মে। দন্তহীন বাঘে পরিণত হওয়ার তথ্য সাংবাদিকদের জানান দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান নিজেই।
নন-ক্যাডার কর্মকর্তা ও কর্মচারীর পদোন্নতির বড় একটা অংশ আটকে রাখে মন্ত্রণালয়গুলো। এই আটকে রাখার কারণ হচ্ছে মন্ত্রণালয়ের নীতিনির্ধারকদের স্বার্থ। বিভিন্ন দপ্তর, অধিদপ্তরে নন-ক্যাডার কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দিলে নিয়ম অনুযায়ী পদোন্নতিপ্রাপ্তদের ওপরের পদে বসাতে হবে। এতে মন্ত্রণালয়ের নীতিনির্ধারকদের এককালীন লাভ; অর্থাৎ টাকার বিনিময়ে একবার পদোন্নতি দেওয়া যাবে। কিন্তু পদোন্নতি না দিয়ে সংশ্লিষ্টদের চলতি দায়িত্ব দিলে বছরজুড়ে টাকা আয় করতে পারেন নীতিনির্ধারকরা। দপ্তর, অধিদপ্তরে বড় অঙ্কের টাকার বিনিময়ে চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়। চলতি দায়িত্বপ্রাপ্তদের আয় অনুসারে নীতিনির্ধারকদের মাসোহারা দিতে হয়। নন-ক্যাডারদের পদোন্নতি দেওয়া হলে মন্ত্রণালয়ের নীতিনির্ধারকদের নিয়মিত আয়ের উৎস বন্ধ হয়ে যায়। এ কারণে আইন বা বিধি-বিধানের ফাঁকফোকর গলিয়ে নন-ক্যাডার এবং কর্মচারীদের পদোন্নতি আটকে রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়।
সরকারি কর্মচারী সংহতি পরিষদের সভাপতি নিজামুল ইসলাম ভূঁইয়া মিলন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সচিবালয় এবং সারা দেশের সরকারি কর্মচারীদের পদোন্নতির মধ্যে একটু পার্থক্য আছে। নন-ক্যাডারের কিছু বিষয় ছাড়া সচিবালয়ের কর্মচারীরা সময়মতো পদোন্নতি পায়। কিন্তু সচিবালয়ের বাইরে পদোন্নতি হয় না বললেই চলে। সচিবালয়ে মাত্র ১০ হাজার কর্মচারী আছেন। সচিবালয়ের বাইরে আছেন ১০ লাখের বেশি। এসব কর্মচারীর পদোন্নতি নিয়ে বহু বছর ধরে চেষ্টা করছি। কিন্তু কোনো ফল পাইনি। সর্বশেষ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ সমস্যা নিয়ে কাজ করার জন্য একটি কমিটি করে দিয়েছে। কমিটি কিছু সুপারিশ করেছে। ব্যস, ওই পর্যন্তই। এরপর এর কোনো অগ্রগতি নেই। যেখানে সরকারপ্রধান বলেন, চাকরিজীবনে সবাই যেন কমপক্ষে একটি পদোন্নতি পায়। সেখানে বহু কর্মচারী কোনো পদোন্নতি ছাড়াই অবসরে যাচ্ছেন। সরকারপ্রধানের নির্দেশনা উপেক্ষা করেন আমলারা। তাদের আগ্রহ কেনা-কাটায়, বিদেশ ভ্রমণে, নতুন জনবল নিয়োগে। এসব করলে তাদের লাভ। কর্মচারী পদোন্নতি দিতে তাদের কোনো আগ্রহ নেই। এর নিশ্চয়ই একটা শেষ আছে। বৈষম্যের পরিণতি কী হয়, তা অনেক দাম দিয়ে বিডিআর বিদ্রোহে আমরা দেখেছি।’
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের নন-ক্যাডারদের পদোন্নতি ঝুলছে বছরের পর বছর। এই অধিদপ্তরের কয়েক শ কর্মকর্তা পাঁচ বছর আগেই পদোন্নতির যোগ্য হয়েছেন। নানা কায়দা-কানুন করে তাদের পদোন্নতি ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক সংশ্লিষ্টদের জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ করে তাদের পদোন্নতির প্রক্রিয়া এগিয়ে নিলেও শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় নতুন করে জ্যেষ্ঠতার তালিকা করার নামে সময়ক্ষেপণ করছে। জ্যেষ্ঠতার তালিকা করার পর এখন তাদের পারিবারিক সদস্যদের তথ্য যাচাই-বাছাই করার জন্য একটি সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ওই সংস্থা নন-ক্যাডার কর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্যদেরও তথ্য তালাশ করছে। তাদের আত্মীয়দের মধ্যে কে কোন দলের সমর্থক তার তথ্য নিচ্ছেন সংস্থার কর্মকর্তারা।
গত মাসে শেষ হওয়া জেলা প্রশাসক সম্মেলনে দায়িত্ব পালন করছিলেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা। ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনের সুরম্য ভবনে দায়িত্ব পালন করলেও ওই নন-ক্যাডার কর্মকর্তার মনের অবস্থাটা মনোহর ছিল না। কেমন আছেন জানতে চাইলে ওই নন-ক্যাডার কর্মকর্তা বলেন, ‘ভালো নেই। চাকরি করছি, পদোন্নতি নেই। ২০১৫ সালের আগে পদোন্নতি না পেলেও টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড ছিল। তাও তুলে দেওয়া হয়েছে। তুলে দেওয়ার সময় বলা হয়েছিল সময়মতো পদোন্নতি হবে, ব্লকপোস্টধারীদের দেওয়া হবে বিশেষ আর্থিক সুবিধা। এসবের কোনোটাই হয়নি।’
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসে একটি প্রশাসনিক আদেশ খুবই পরিচিত। সেই প্রশাসনিক আদেশ ১৬/২০১৮ অনুযায়ী ৭০ ভাগ কর্মকর্তা সরাসরি নিয়োগ হবে। আর ৩০ ভাগ পদোন্নতির মাধ্যমে পূরণ করা হয়। ৭০ ভাগ কর্মকর্তা সরাসরি নিয়োগের ফলে বিমানে বর্তমানে প্রয়োজনের তুলনায় কর্মকর্তা বেশি। নীতিনির্ধারকদের নতুন জনবল নিয়োগে আগ্রহ বেশি। পুরনোদের পদোন্নতি দিয়ে ওপরের পদ পূরণের চেয়ে তারা নতুন নিয়োগে যান। ফলে কারও চাকরিজীবনে একবারও পদোন্নতি হয় না। নামমাত্র যে পদোন্নতি হয় তা অনিয়মে ভরপুর।
নন-ক্যাডার ছাড়াও ১৩তম গ্রেড থেকে ২০তম গ্রেড পর্যন্ত পদোন্নতি হয় না বললেই চলে। প্রতিটি দপ্তরে এসব গ্রেডের পদোন্নতি আটকে আছে। অথচ এসব গ্রেডেই বেশি লোক চাকরি করছেন। সরকারের মোট জনবল প্রায় ১৫ লাখ ৫৪ হাজার ৯২৭ জন। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ২৩ শতাংশ পদের মধ্যেও নন-ক্যাডার রয়েছেন। এ ছাড়া তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ৭৭ শতাংশ পদই ১৩তম থেকে তার পরের গ্রেডের। এতে করে সহজেই বোঝা যায় সরকারের জনবলের বড় অংশই পদোন্নতির চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে। সরকারের জনবলের এই বিশাল অংশ যখন পদোন্নতি নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভোগেন, তখন তারা নানা অনিয়মে ঝুঁকে পড়েন।
বেশির ভাগ দপ্তর, অধিদপ্তর পরিচালনা করেন বিভিন্ন ক্যাডারের কর্মকর্তারা। তারা তাদের প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় থেকে প্রেষণে ক্যাডার কর্মকর্তাদের দপ্তর, অধিদপ্তরে পাঠান। প্রেষণে গিয়ে অনেক কর্মকর্তা শুধু রুটিন কাজটুকুই করতে চান। শূন্যপদে জনবল নিয়োগ বা পদোন্নতি রুটিন কাজ না হওয়ায় তা উপেক্ষিত থাকে। তা ছাড়া পদোন্নতি দিতে গিয়ে নানা জটিলতার সৃষ্টি হয়; বিশেষ করে মন্ত্রণালয় থেকে মন্ত্রী বা সচিব তাদের পছন্দের লোককে পদোন্নতি দেওয়ার জন্য সংস্থার প্রধানকে চাপ দেন। এই চাপ উপেক্ষা করার কোনো সুযোগ না থাকায় অযোগ্য লোককে পদোন্নতি দিতে হয় সংস্থার প্রধানকে। এই জটিলতা থেকে দূরে থাকার জন্য সংশ্লিষ্টদের পদোন্নতি দেওয়া থেকেও দূরে থাকেন সংস্থার প্রধানরা।
নন-ক্যাডার কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের পদোন্নতি না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে খাদ্য অধিদপ্তরের ১৪ গ্রেডের একজন কর্মচারী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘বাইরের লোকের ইচ্ছাটাই জাগে না আমাদের পদোন্নতি দিতে। আমাদের দপ্তরপ্রধান মহাপরিচালক প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা। অতিরিক্ত মহাপরিচালকও অনেক সময় প্রশাসন ক্যাডার থেকে প্রেষণে আসেন। তাদের কেন ইচ্ছা জাগবে আমাদের পদোন্নতি নিয়ে। যদি এসব পদে ফুড ক্যাডারের কর্মকর্তা থাকতেন, তাহলে তারা খাদ্য বিভাগের সমস্যা বুঝতেন। তা ছাড়া নিয়োগ বিধি সংশোধনের নামে আমরা দীর্ঘদিন একই পদে আটকে আছি।’
গত বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি সচিবালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং ব্যক্তিগত কর্মকর্তারা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের কাছে এক আবেদনে জানান, ‘বর্তমানে সচিবালয়ে প্রায় দুই হাজারের বেশি প্রশাসনিক ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তা কর্মরত। এর বিপরীতে ক্যাডারবহির্ভূত সংরক্ষিত পদের সংখ্যা ২৬৭টি, যা খুবই নগণ্য। ফলে একই পদে ২০-২২ বছরের বেশি সময় কর্মরত থাকার পরও অনেকে পদোন্নতি পাচ্ছেন না। পদোন্নতি না পাওয়ায় সৃষ্ট হতাশার ফলে কর্মস্পৃহা নষ্ট হচ্ছে।’
সরকার এ সমস্যা থেকে কীভাবে বের হতে পারে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ফিরোজ মিয়া দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘এসব সমস্যা সমাধানে সরকার সব সময়ই কাজ করে। কিন্তু এ চেষ্টা জটিলতার তুলনায় কম। এ বিষয়ে আরও এফোর্ট দিতে হবে।
বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের উপনির্বাচনে বেসরকারিভাবে ১১২ কেন্দ্রের ফলাফলে ৯৫১ ভোটের ব্যবধানে হেরে গেছেন বহুল আলোচিত স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম। একতারা প্রতীক নিয়ে তিনি পেয়েছেন ১৯ হাজার ৪৮৬ ভোট। এ আসনে জয় পেয়েছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ (ইনু) সমর্থিত প্রার্থী অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম তানসেন। মশাল প্রতীক নিয়ে তিনি পেয়েছেন ২০ হাজার ৪৩৭ ভোট।
বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে বগুড়ার দুইটিসহ মোট ৬ আসনে উপনির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হয়। ২০২২ সালের ১০ ডিসেম্বর বিএনপির এমপিরা পদত্যাগের ঘোষণা দিলে এ আসনগুলো শূন্য হয়।
তখন, বগুড়া-৬ (সদর) এবং বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দেন হিরো আলম। নির্বাচন কমিশন একদফা তার প্রার্থিতা বাতিল করলেও পরে আদালতে গিয়ে প্রার্থিতা ফিরে পান তিনি।
বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) ও বগুড়া-৬ (সদর) আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আশরাফুল হোসেন হিরো আলম বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর পর্যন্ত ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, ‘সদরের কেন্দ্র সব দখল হয়্যা গ্যাছে। ডিসি-এসপিক কয়্যাও কোনো কাম হচ্চে না। সদরের আশা সব শ্যাষ। কাহালু-নন্দীগামের অনেক কেন্দ্র ঘুরে ঘুরে দেকছি। ভোট খুব সুষ্ঠু হচ্চে। মাঠের অবস্থা ভালো। কাহালু-নন্দীগ্রামে নিশ্চিত এমপি হচ্চি।’
এর আগে, সকালে সদর উপজেলার এরুলিয়া উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে যান তিনি। ভোট দেওয়ার পর হিরো আলম বলেন, ‘বগুড়া-৬ আসনে আগে থেকেই গোলযোগের আশঙ্কা করেছিলাম, সেটাই সত্যি হয়েছে। নির্বাচনি এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। তবে বগুড়া-৪ আসনে ভোট সুষ্ঠু হচ্ছে। এভাবে সুষ্ঠু ভোট হলে এই আসনে আমিই বিজয়ী হবো।’
এদিকে বগুড়া-৬ আসনের উপনির্বাচনে কয়েকটি কেন্দ্রে নৌকা প্রার্থীর এজেন্ট বাদে অন্য এজেন্টদের ভোটকক্ষ থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ সকালে হিরো আলমসহ তিনজন প্রার্থী এ অভিযোগ করেন। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা তাদের এজেন্টদের বের করে দিয়েছেন বলে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করা হয়।
আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৭ লাখ ৫০ হাজার ১৯৪ কোটি টাকা খরচের হিসাব ধরে বাজেট প্রস্তাব প্রণয়নের কাজ শুরু করেছে সরকার। যা চলতি অর্থবছরের তুলনায় ৭২ হাজার ১৩০ কোটি টাকা বেশি। অভ্যন্তরীণ সম্পদ থেকে খরচের বেশিরভাগ অর্থ জোগাড়ের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এ লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ১৯ শতাংশ বাড়ানো হবে। আসছে জুনের প্রথমভাগে জাতীয় সংসদে আগামী অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
আগামী বাজেট হবে জাতীয় নির্বাচনের আগে বর্তমান সরকারের চলতি মেয়াদের শেষ বাজেট। তাই এখানে নেওয়া কোনো পদক্ষেপে যেন আওয়ামী লীগ সরকার সমালোচনার মুখে না পড়ে এ জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্টদের থাকছে বিশেষ নজর। এ ছাড়া রয়েছে অর্থনৈতিক সংকট। তাই সংকট ও নির্বাচন দুটোই মাথায় রাখতে হচ্ছে সরকারের নীতিনির্ধারকদের।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী অর্থবছরের বাজেট নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এরই মধ্যে মন্ত্রণালয়ে মোটাদাগে একটি রূপরেখা পাঠানো হয়েছে। নতুন পরিকল্পনার পাশাপাশি গত তিন মেয়াদে সরকার কী কী উন্নয়ন করেছে আগামী বাজেট প্রস্তাবে তা মনে করিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। গত ডিসেম্বরের শেষের দিকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি এবং উচ্চপর্যায়ের সরকারি নীতিনির্ধারকদের উপস্থিতিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ‘বাজেট মনিটরিং ও সম্পদ কমিটির বৈঠকে’ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পাঠানো আগামী বাজেটের রূপরেখা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আর গত সপ্তাহে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) চিঠি পাঠিয়ে অভ্যন্তরীণ সম্পদ থেকে রাজস্ব আদায়ের কৌশল নির্ধারণে কাজ শুরু করতে বলা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেন, যে হিসাব ধরে অর্থ মন্ত্রণালয় বাজেট প্রস্তাব প্রস্তুতির কাজ শুরু করেছে তা কয়েক দফা খতিয়ে দেখা হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে চূড়ান্ত করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে। তিনি প্রয়োজনীয় সংশোধন, যোগ-বিয়োগ করে আবারও অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠাবেন। বাজেট প্রস্তাব চূড়ান্ত হওয়ার আগেও অনেক কিছু পরিবর্তন হয়ে থাকে।
ডলার সংকটে পণ্য আমদানির জন্য ঋণপত্র বা এলসি খুলতে পারছেন না সাধারণ ব্যবসায়ীরা। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় পণ্যের দাম বাড়ছে। কাঁচামাল সংকটে বিপাকে শিল্প খাত। ব্যাংক খাতে অস্থিরতা। নতুন চাকরির সুসংবাদ নেই বললেই চলে। দফায় দফায় জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি। খুব শিগগিরই এসব সংকট কেটে যাবে বলে মনে করছেন না অর্থনীতিবিদরা। অর্থ সংগ্রহ করতে গিয়ে ঋণদাতা সংস্থার কঠিন শর্তের বেড়াজালে আছে সরকার। এমন পরিস্থিতিতেই আগামী অর্থবছরের বাজেট তৈরির কাজ শুরু হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় ও এনবিআর সূত্র জানিয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট বৈশি^ক অস্থিরতা মোকাবিলায় সরকার কী কী পদক্ষেপ নেবে তা আগামী বাজেটে স্পষ্ট করা হবে। দেশের চলমান অর্থনৈতিক সংকট দূর করতে একগুচ্ছ পরিকল্পনার কথাও বলা হবে। তবে শত সংকটের মধ্যেও আগামী বাজেটে ব্যবসায়ীদের দাবি অনুযায়ী যতটা সুবিধা দেওয়া সম্ভব তা দিতে সরকারের ঊর্ধ্বতন পর্যায় থেকে বাজেট প্রস্তুত কমিটির কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিশেষভাবে কাঁচামাল আমদানিতে রাজস্ব ছাড় দিতে হিসাব কষা হচ্ছে।
দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ডলার সংকটে আমদানি রপ্তানি প্রায় বন্ধ। ব্যবসা-বাণিজ্যে সংকটকাল চলছে। এমন পরিস্থিতিতে আগামী বাজেটে আমাদের দাবি অনুযায়ী নগদ সহায়তা দিতে হবে। রাজস্ব ছাড় দিতে হবে। কর অবকাশ ও কর অব্যাহতি বাড়াতে দিতে হবে।’
ঋণদাতা সংস্থা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দেওয়া সংস্কারের শর্ত মানার অঙ্গীকার করে সরকার ঋণ পেয়েছে। শর্ত পালনে ব্যর্থ হলে ঋণের যেকোনো কিস্তি আটকে দিতে পারে প্রতিষ্ঠানটি। পর্যায়ক্রমে প্রতি অর্থবছরের বাজেটে এসব সংস্কার প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করে বাস্তবায়ন করা হবে। আসছে বাজেটে শর্ত মানার চেষ্টা থাকবে। বিশেষভাবে অতীতের মতো ঢালাওভাবে কর অব্যাহতি দেওয়া হবে না। আর্থিক খাতের সংস্কারের কিছু ঘোষণা থাকবে। বিশেষভাবে ব্যাংক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় জোর দেওয়া হবে। আইএমএফের সুপারিশে এরই মধ্যে ভ্যাট আইন চূড়ান্ত হয়েছে। আয়কর আইন মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদন হয়েছে। শুল্ক আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ে আছে। এ তিন আইন অনুযায়ী রাজস্ব আদায়ের কৌশল নির্ধারণ করা হবে। আসছে বাজেটে টেকসই অর্থনৈতিক সংস্কারের অংশ হিসেবে সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী করার কথা বলা হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কিছু উদ্যোগের কথা শোনানো হবে।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ঋণদাতা সংস্থার শর্ত মানার কথা বলা হলেও সব আগামী বাজেটে একবারে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করতে হবে। না হলে অর্থনীতির গতি কমে যাবে।’
আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে এনবিআর-বহির্ভূত খাত এবং এনবিআর খাতের জন্য মোট আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হতে পারে ৪ লাখ ৮৬ হাজার কোটি টাকা। এনবিআরের রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা চলতি অর্থবছরের চেয়ে ১৯ শতাংশ বাড়িয়ে ধরা হতে পারে। এতে লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা হবে। এনবিআর এ লক্ষ্যমাত্রা কমানোর জোরালো আবেদন করেছে। কিন্তু তা আমলে আনেননি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। নতুন অর্থবছরে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে প্রায় ৩৫ শতাংশ বা ১ লাখ ৫৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ভ্যাট বা মূল্য সংযোজন কর (মূসক) হিসেবে, ৩৪ শতাংশ বা ১ লাখ ৫৩ হাজার কোটি টাকা আয়কর হিসেবে এবং ৩১ শতাংশ বা বাকি ১ লাখ ৩৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা শুল্ক হিসেবে সংগ্রহ করার কথা বলা হতে পারে বলে জানা গেছে।
এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রার কথা শুধু বললেই হবে না। কীভাবে অর্জিত হবে, সেটি নিয়ে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা না থাকলে প্রতিবারের মতো ঘাটতি থাকবে। রাজস্ব ঘাটতি হলে অর্থনীতিতে আয় ব্যয়ের ভারসাম্য নষ্ট হয়। তাই এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবসম্মত হওয়া উচিত।’
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, আগামী অর্থবছরের জন্য নির্ধারিত এ লক্ষ্যমাত্রা পূরণে এনবিআর উৎসে করের আওতা বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে। সম্পদশালীদের ওপর নজর বাড়ানো হবে। শুধু বেশি সম্পদ থাকার কারণে অতিরিক্ত কর গুনতে হবে। সারচার্জ বহাল রাখা হবে। সুপারট্যাক্স গ্রুপকে উচ্চহারে গুনতে হবে কর। আগামী অর্থবছরেও অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুবিধা থাকবে। অর্থ পাচারোধে আইনের শাসন কঠোর করা হবে। অর্থ পাচার আটকাতে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো হবে। করপোরেট কর কমানোর দাবি থাকলেও তা মানা হবে না। অন্যদিকে নির্বাচনের আগের বাজেট হওয়ায় করমুক্ত আয় সীমা বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করতে খোদ অর্থমন্ত্রী বললেও রাজস্ব আদায় কমে যাবে এমন যুক্তি দেখিয়ে এনবিআর রাজি নয় বলে জানিয়ে দিয়েছে। কমানো হবে শিল্পের অধিকাংশ কাঁচামাল আমদানি শুল্ক। ডলারের ওপর চাপ কমাতে বেশি ব্যবহৃত পণ্য আমদানিতে রাজস্ব ছাড় দেওয়া হবে। বিলাসবহুল পণ্য আমদানি কমাতে সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হবে। তৈরি পোশাক খাতের সব সুবিধা বহাল রাখা হবে। শিল্পের অন্যান্য খাতেও কতটা সুবিধা বাড়ানো যায় তা নিয়ে এনবিআর হিসাব করছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া বাজেট প্রস্তুতিবিষয়ক প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে, আগামী অর্থবছরের বাজেটে উন্নয়ন প্রকল্পে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি এবং ঘাটতি ২ লাখ ৬৪ হাজার ১৯৪ কোটি টাকা বরাদ্দ ধরা হতে পারে। আগামী অর্থবছরে জিডিপির ৬ শতাংশ ঘাটতি ধরে ২ লাখ ৬৪ হাজার ১৯৪ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হতে পারে। মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৫ শতাংশ ধরা হতে পারে বলে জানা যায়। ঋণদাতা সংস্থার কাছ থেকে ভর্তুকি কমানোর চাপ থাকলেও আগামীবার এ খাতে বেশি ব্যয় ধরা হতে পারে। এ খাতে ১ লাখ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হতে পারে। চলতি অর্থবছরে ভর্তুকি ব্যয় আছে ৮৬ হাজার কোটি টাকা।
উল্লেখ্য, গত সোমবার রাতে আইএমএফ বাংলাদেশকে ঋণ অনুমোদন করে। ঋণদাতা সংস্থাটির কাছ থেকে বাংলাদেশ ছয় কিস্তিতে তিন বছরে ৪৭০ কোটি ডলার পাচ্ছে। ঋণ প্রস্তাব অনুমোদনের দিন আইএমএফ ২০২৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের অর্থনীতির বিভিন্ন সূচক নিয়ে পূর্বাভাস দেয়। সংস্থাটি বলছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭ দশমিক ২ শতাংশ। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। এরপর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি বেড়ে হতে পারে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ এবং ২০২৪-২৫ অর্থবছরে তা হতে পারে ৭ দশমিক ১ শতাংশ।
এতে রিজার্ভ সম্পর্কে বলা হয়, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছর শেষে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ কমে দাঁড়াবে ৩ হাজার কোটি ডলার। তবে ২০২৩-২৪ অর্থবছর থেকে তা ধারাবাহিকভাবে বাড়বে এবং ২০২৬-২৭ অর্থবছর শেষে প্রথমবারের মতো রিজার্ভ ৫ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।