ন্যায্য দামের চেয়ে জ্বালানির মূল্য বেশি
নিজস্ব প্রতিবেদক | ৫ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০
আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম কমলেও দেশের বাজারে দাম কমেনি। যদিও বিশ্বে দাম বাড়লে দ্রুত দেশের বাজারে দাম বেড়ে যায়। ন্যায্য দামের চেয়ে দেশে জ্বালানির বেশি মূল্য নেওয়া হচ্ছে। কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) প্রণীত খসড়া জ্বালানি নীতির ওপর গতকাল শনিবার নাগরিক মতবিনিময় সভায় এমন মন্তব্য করেন ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম। ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি চিটাগাং (ইউএসটিসি) ডি-ব্লকে ওই নাগরিক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ক্যাব কেন্দ্রীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন।
মতবিনিময় সভায় এম শামসুল আলম বলেন, ‘জনগণের পক্ষে জ্বালানি নীতিমালা দাবি হিসেবে আমরা প্রস্তাবনা করছি। এনার্জি ট্রানজেকশনে পরিবেশ সুরক্ষা সঠিকভাবে নির্ধারণ করতে হবে। স্বাধীন দেশে জ্বালানি সম্পদ রক্ষার জন্য সংগ্রাম বিরল। আমরা সেই সম্পদ রক্ষা করতে পারিনি। সরকারকে বিদ্যুতে ১৫ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। আমরা সেটা থেকে বের হতে পারিনি।’ তিনি আরও বলেন, ‘ভোক্তা স্বার্থ রক্ষার সময় সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো নিষ্ক্রিয় থাকে। মন্ত্রণালয়ে যে লোকগুলোকে রাখা হয়েছে তারা যদি ব্যবসার অংশ হয়, তাহলেই সমস্যা। এতে বেসরকারি খাত সুযোগ খুঁজবে। জ্বালানি খাত পরিচালনায় সরকারের অবস্থান পরিষ্কার হওয়া উচিত। জ্বালানি অধিকার সুরক্ষা হলে সব ব্যয় কমে যাবে। জাতীয় আয় বেড়ে যাবে। সামনে জ্বালানির এভাবে দাম বাড়লে আমরা লক্ষ্য থেকে ছিটকে পড়ব।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. তানজিম উদ্দিন খান বলেন, ‘জ্বালানি সমস্যা একটি রাজনৈতিক সমস্যা। এই সমস্যার কারণে আজ আমাদের অধিকার লুণ্ঠনের শিকার।জ্বালানি ব্যবহারে অধিকার উদ্ভূত অধিকার। মৌলিক অধিকারের বিবেচনায় জ্বালানি ওপর অধিকার জন্মায়। এই অধিকার সঠিকভাবে বাস্তবায়ন সরকারের দায়িত্ব।’
তিনি আরও বলেন, ‘এলএনজি, সিএনজি খাতে বিশাল বিশাল কোম্পানি গড়ে উঠেছে। সেখানে ভোক্তাদের অধিকার নিশ্চিত করা যায়নি। জ্বালানি নীতির মাধ্যমে ভোক্তাদের অধিকার নিশ্চিতের সময় এসেছে।’
ইউএসটিসির ভিসি প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, নেপালে বাড়ির ছাদে সোলার প্যানেল বসিয়ে সেখান থেকে ন্যাশনাল গ্রিডে দিচ্ছে। এটার দাম আমরা জানি। প্রতি কিলোওয়াট বিদ্যুৎ কত টাকা খরচ পড়ছে, সেটা আমরা জানি। কিন্তু নিউক্লিয়ার, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র আমাদের অন্ধকারে রেখেছে। কত কিলোওয়াট কত টাকায়, সেটা আমরা জানি না। নেপালে শতভাগ সোলারে চলে গেছে। জামার্নিতে সব পাওয়ার প্ল্যান্ট বন্ধ করে একটা সময়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে চলে যাবে। আমার জ্বালানি আমি উৎপাদন করব, সে অধিকার আমাকে দিতে হবে।’
শেয়ার করুন
নিজস্ব প্রতিবেদক | ৫ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০

আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম কমলেও দেশের বাজারে দাম কমেনি। যদিও বিশ্বে দাম বাড়লে দ্রুত দেশের বাজারে দাম বেড়ে যায়। ন্যায্য দামের চেয়ে দেশে জ্বালানির বেশি মূল্য নেওয়া হচ্ছে। কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) প্রণীত খসড়া জ্বালানি নীতির ওপর গতকাল শনিবার নাগরিক মতবিনিময় সভায় এমন মন্তব্য করেন ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম। ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি চিটাগাং (ইউএসটিসি) ডি-ব্লকে ওই নাগরিক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ক্যাব কেন্দ্রীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন।
মতবিনিময় সভায় এম শামসুল আলম বলেন, ‘জনগণের পক্ষে জ্বালানি নীতিমালা দাবি হিসেবে আমরা প্রস্তাবনা করছি। এনার্জি ট্রানজেকশনে পরিবেশ সুরক্ষা সঠিকভাবে নির্ধারণ করতে হবে। স্বাধীন দেশে জ্বালানি সম্পদ রক্ষার জন্য সংগ্রাম বিরল। আমরা সেই সম্পদ রক্ষা করতে পারিনি। সরকারকে বিদ্যুতে ১৫ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। আমরা সেটা থেকে বের হতে পারিনি।’ তিনি আরও বলেন, ‘ভোক্তা স্বার্থ রক্ষার সময় সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো নিষ্ক্রিয় থাকে। মন্ত্রণালয়ে যে লোকগুলোকে রাখা হয়েছে তারা যদি ব্যবসার অংশ হয়, তাহলেই সমস্যা। এতে বেসরকারি খাত সুযোগ খুঁজবে। জ্বালানি খাত পরিচালনায় সরকারের অবস্থান পরিষ্কার হওয়া উচিত। জ্বালানি অধিকার সুরক্ষা হলে সব ব্যয় কমে যাবে। জাতীয় আয় বেড়ে যাবে। সামনে জ্বালানির এভাবে দাম বাড়লে আমরা লক্ষ্য থেকে ছিটকে পড়ব।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. তানজিম উদ্দিন খান বলেন, ‘জ্বালানি সমস্যা একটি রাজনৈতিক সমস্যা। এই সমস্যার কারণে আজ আমাদের অধিকার লুণ্ঠনের শিকার।জ্বালানি ব্যবহারে অধিকার উদ্ভূত অধিকার। মৌলিক অধিকারের বিবেচনায় জ্বালানি ওপর অধিকার জন্মায়। এই অধিকার সঠিকভাবে বাস্তবায়ন সরকারের দায়িত্ব।’
তিনি আরও বলেন, ‘এলএনজি, সিএনজি খাতে বিশাল বিশাল কোম্পানি গড়ে উঠেছে। সেখানে ভোক্তাদের অধিকার নিশ্চিত করা যায়নি। জ্বালানি নীতির মাধ্যমে ভোক্তাদের অধিকার নিশ্চিতের সময় এসেছে।’
ইউএসটিসির ভিসি প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, নেপালে বাড়ির ছাদে সোলার প্যানেল বসিয়ে সেখান থেকে ন্যাশনাল গ্রিডে দিচ্ছে। এটার দাম আমরা জানি। প্রতি কিলোওয়াট বিদ্যুৎ কত টাকা খরচ পড়ছে, সেটা আমরা জানি। কিন্তু নিউক্লিয়ার, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র আমাদের অন্ধকারে রেখেছে। কত কিলোওয়াট কত টাকায়, সেটা আমরা জানি না। নেপালে শতভাগ সোলারে চলে গেছে। জামার্নিতে সব পাওয়ার প্ল্যান্ট বন্ধ করে একটা সময়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে চলে যাবে। আমার জ্বালানি আমি উৎপাদন করব, সে অধিকার আমাকে দিতে হবে।’