কর্মীদের বেতন বাড়ানো নিয়ে উদ্বিগ্ন ব্যাংক
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৬ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০
কর্মীদের বেতন-ভাতা বাড়ানোর ফলে ব্যাংকে কী ধরনের প্রভাব পড়তে পারে সে বিষয়ে আলোচনা করেছেন ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) নেতারা। এ বিষয়ে গতকাল মঙ্গলবার বিএবির উদ্যোগে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে অংশ নেন ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) নেতারাও।
বৈঠকে অংশ নেওয়া একটি সূত্র জানায়, আজ বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের সঙ্গে দেখা করে বিএবি নেতারা ব্যাংকের কর্মীদের বেতন বৃদ্ধি নিয়ে তাদের মতামত জানাবেন। বেলা সাড়ে ১২টায় গভর্নরের সঙ্গে তাদের দেখা করার কথা রয়েছে।
জানা গেছে, গতকালের বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বিএবি সভাপতি ও এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার। তিনি দেশ রূপান্তরকে গতকাল রাতে বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি কর্মীদের এন্ট্রি লেভেলের বেতন নির্ধারণ করে একটি সার্কুলার দিয়েছে। এ বিষয়টি স্বাভাবিকভাবেই আমাদের আলোচনায় আসার কথা। বৈঠকে অংশ নেওয়া সব ব্যাংকের উদ্যোক্তাই এ বিষয়ে তাদের বক্তব্য জানিয়েছেন। তাদের উদ্বিগ্ন হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। ওইসব বক্তব্যই আমরা গভর্নরের সঙ্গে দেখা করে তুলে ধরব।’ গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক এক সার্কুলার জারির মাধ্যমে ব্যাংকগুলোর এন্ট্রি লেভেলের কর্মীদের বেতন সর্বনিম্ন ২৮ হাজার টাকা নির্ধারণ করে দেয়। শিক্ষানবিশকাল পার হলে কর্মীদের বেতন নির্ধারণ করে দেওয়া হয় সর্বনিম্ন ৩৯ হাজার টাকা। এছাড়া ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের অব্যবহিত নিচের পদগুলোতেও আনুপাতিক হারে বেতন বাড়ানোর নির্দেশনা দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওই সার্কুলারে। এছাড়া ব্যাংকের কর্মচারীদের সর্বনিম্ন বেতন-ভাতা ২৪ হাজার টাকা নির্ধারণ করে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তাছাড়া আমানতের লক্ষ্য পূরণের শর্তে কোনো কর্মীর পদোন্নতি আটকে দেওয়া বা কোনো অভিযোগ ছাড়াই অদক্ষতার কথা বলে কোনো কর্মীকে চাকরিচ্যুত করা যাবে না বলেও নির্দেশনা দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
তবে ওই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে গেলে ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীরা এই করোনাকালে বড় ধরনের হোঁচট খাবেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। তারা এই নির্দেশনা শিথিল চান। তবে এ বিষয়ে তারা প্রকাশ্যে কিছু বলতে চাননি।
বৈঠকে আরও অংশ নেন স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের চেয়ারম্যান কাজী আকরাম উদ্দীন আহমদ, এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান তমাল এস এম পারভেজ, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউনুছসহ বেশ কয়েকটি ব্যাংকের পরিচালক। ব্যাংক নির্বাহীদের পক্ষ থেকে বৈঠকে এবিবি চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সেলিম আর এফ হোসেন এবং ট্রাস্ট ব্যাংকের এমডি হুমায়রা আজম অংশ নেন। এ সময় ব্যাংকগুলোর পরিচালকদের দাবি ছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই নির্দেশনা শিথিল করা দরকার। অথবা নির্দেশনাটি বাস্তবায়নের জন্য আরও সময় দরকার। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী ১ মার্চ থেকে কর্মীদের বর্ধিত এই বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন করতে হবে বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোকে। তবে ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই নির্দেশনা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে ব্যাংক-সংশ্লিষ্টদের মধ্যে। এ কারণে গতকাল এ সংক্রান্ত নির্দেশনায় কিছুটা স্পষ্টিকরণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
শেয়ার করুন
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৬ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০

কর্মীদের বেতন-ভাতা বাড়ানোর ফলে ব্যাংকে কী ধরনের প্রভাব পড়তে পারে সে বিষয়ে আলোচনা করেছেন ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) নেতারা। এ বিষয়ে গতকাল মঙ্গলবার বিএবির উদ্যোগে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে অংশ নেন ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) নেতারাও।
বৈঠকে অংশ নেওয়া একটি সূত্র জানায়, আজ বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের সঙ্গে দেখা করে বিএবি নেতারা ব্যাংকের কর্মীদের বেতন বৃদ্ধি নিয়ে তাদের মতামত জানাবেন। বেলা সাড়ে ১২টায় গভর্নরের সঙ্গে তাদের দেখা করার কথা রয়েছে।
জানা গেছে, গতকালের বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বিএবি সভাপতি ও এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার। তিনি দেশ রূপান্তরকে গতকাল রাতে বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি কর্মীদের এন্ট্রি লেভেলের বেতন নির্ধারণ করে একটি সার্কুলার দিয়েছে। এ বিষয়টি স্বাভাবিকভাবেই আমাদের আলোচনায় আসার কথা। বৈঠকে অংশ নেওয়া সব ব্যাংকের উদ্যোক্তাই এ বিষয়ে তাদের বক্তব্য জানিয়েছেন। তাদের উদ্বিগ্ন হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। ওইসব বক্তব্যই আমরা গভর্নরের সঙ্গে দেখা করে তুলে ধরব।’ গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক এক সার্কুলার জারির মাধ্যমে ব্যাংকগুলোর এন্ট্রি লেভেলের কর্মীদের বেতন সর্বনিম্ন ২৮ হাজার টাকা নির্ধারণ করে দেয়। শিক্ষানবিশকাল পার হলে কর্মীদের বেতন নির্ধারণ করে দেওয়া হয় সর্বনিম্ন ৩৯ হাজার টাকা। এছাড়া ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের অব্যবহিত নিচের পদগুলোতেও আনুপাতিক হারে বেতন বাড়ানোর নির্দেশনা দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওই সার্কুলারে। এছাড়া ব্যাংকের কর্মচারীদের সর্বনিম্ন বেতন-ভাতা ২৪ হাজার টাকা নির্ধারণ করে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তাছাড়া আমানতের লক্ষ্য পূরণের শর্তে কোনো কর্মীর পদোন্নতি আটকে দেওয়া বা কোনো অভিযোগ ছাড়াই অদক্ষতার কথা বলে কোনো কর্মীকে চাকরিচ্যুত করা যাবে না বলেও নির্দেশনা দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
তবে ওই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে গেলে ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীরা এই করোনাকালে বড় ধরনের হোঁচট খাবেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। তারা এই নির্দেশনা শিথিল চান। তবে এ বিষয়ে তারা প্রকাশ্যে কিছু বলতে চাননি।
বৈঠকে আরও অংশ নেন স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের চেয়ারম্যান কাজী আকরাম উদ্দীন আহমদ, এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান তমাল এস এম পারভেজ, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউনুছসহ বেশ কয়েকটি ব্যাংকের পরিচালক। ব্যাংক নির্বাহীদের পক্ষ থেকে বৈঠকে এবিবি চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সেলিম আর এফ হোসেন এবং ট্রাস্ট ব্যাংকের এমডি হুমায়রা আজম অংশ নেন। এ সময় ব্যাংকগুলোর পরিচালকদের দাবি ছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই নির্দেশনা শিথিল করা দরকার। অথবা নির্দেশনাটি বাস্তবায়নের জন্য আরও সময় দরকার। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী ১ মার্চ থেকে কর্মীদের বর্ধিত এই বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন করতে হবে বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোকে। তবে ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই নির্দেশনা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে ব্যাংক-সংশ্লিষ্টদের মধ্যে। এ কারণে গতকাল এ সংক্রান্ত নির্দেশনায় কিছুটা স্পষ্টিকরণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক।