
সংকটে থাকা ব্যাংকিং ব্যবস্থায় তারল্য বাড়াতে মুদ্রানীতিতে বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে। আমানতের তুলনায় ঋণের প্রবৃদ্ধি দ্বিগুণ হওয়া ও সরকারকে ঋণ দিতে গিয়ে ব্যাংক ব্যবস্থায় তারল্য সংকট তৈরি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ কমে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। তাই তারল্যের জোগান দিতে নীতিমালায় কিছু পরিবর্তন আসতে পারে বলে আভাস পাওয়া গেছে।
গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক পর্ষদের ৪২৬তম সভা শেষে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন একাধিক বোর্ড সদস্য। সভায় সভাপতিত্ব করেন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত চলতি বছরের প্রথম বোর্ড সভায় বিষয়টি সরকারের কছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক, ডেপুটি গভর্নর, বিএফআইইউয়ের প্রধান কর্মকর্তা, চিফ ইকোনমিস্ট ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা।
২০২২ সালের শুরুতে কভিড পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার মধ্যেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয়। এতে করে বিশ^ব্যাপী সরবরাহ ব্যবস্থায় বিঘ্ন হওয়ার পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি সব পণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পায়। এতে করে অন্যান্য দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশেও উচ্চ মূল্যস্ফীতি দেখা দেয়। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে সরকার। অন্যদিকে বাজারে টাকার সরবরাহ ঠিক রাখতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নানামুখী চ্যালেঞ্জ সামনে রেখে রবিবার আসছে নতুন মুদ্রানীতি। বৈশ্বিক মন্দায় দেশের বাজারে টাকার সরবরাহ ঠিক রাখতে যথাযথ সিদ্ধান্ত আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক পর্ষদের বৈঠকে মুদ্রানীতির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আগামী ১৫ জানুয়ারি চলতি অর্থবছরের বাকি ছয় মাসের জন্য মুদ্রানীতি ঘোষণার কথা রয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর ২০২২) ব্যাংক থেকে সরকারের নিট বা প্রকৃত ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩২ হাজার ২৪৯ কোটি টাকা। তবে এ সময়ে নতুন করে বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারকে ঋণ দিয়েছে ৬৫ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা। এ সময়ের মধ্যে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ঋণ শোধ করেছে ৩৩ হাজার ৩৫৫ কোটি টাকা। ফলে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারের নিট বা প্রকৃত ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩২ হাজার ২৪৯ কোটি টাকা। আবার আমদানি ব্যয় বেশি হওয়ায় গত এক বছরে রিজার্ভ থেকে ডলারের জোগান দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে করে বিপুল পরিমাণের টাকা ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোষাগারে জমা পড়েছে। এর বাইরে কয়েকটি ইসলামী ব্যাংকে ঋণ কেলেঙ্কারির কারণে আমানতকারীদের আস্থাহীনতা দেখা দিয়েছে। যার কারণে ব্যাংক ব্যবস্থার বাইরে বিপুল পরিমাণের টাকা চলে গেছে। সবমিলিয়ে ব্যাংকে তারল্য সংকট দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে তারল্য জোগান দিতে আসন্ন মুদ্রানীতিতে বিশেষ ব্যবস্থা রাখতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের মুদ্রানীতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক আগামী জুন পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন করেছে ১৪ দশমিক ১০ শতাংশ। আগের মুদ্রানীতিতে যা ১৪ দশমিক ৮০ শতাংশ ছিল। মূলত সাম্প্রতিক সময়ে ঋণ বৃদ্ধির প্রবণতা বিশ্লেষণ করে মুদ্রানীতিতে প্রাক্কলন কিছুটা কমানো হয়েছিল।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি নভেম্বরে বেসরকারি খাতের ঋণপ্রবাহ প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ। আগের মাস অক্টোবর শেষে যা ছিল ১৩ দশমিক ৯১ শতাংশ। সেপ্টেম্বরে এই হার ছিল ১৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ। আগস্টে ছিল ১৪ দশমিক ০৭ শতাংশ এবং জুলাইয়ে মাসে ঋণপ্রবাহের প্রবৃদ্ধি ছিল ১৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ।
এদিকে গতকাল আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নগদ ফাইন্যান্স পিএলসিকে শর্তসাপেক্ষে অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে সদ্য অনুমোদন পাওয়া প্রতিষ্ঠানটি মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) ব্যবসা করতে আইনগত বিশেষ ছাড় চেয়ে যে আবেদন করেছে, তা বিবেচনার জন্য সরকারের কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পর্ষদ। সরকারের অনুমোদন পেলে ডাক বিভাগের সঙ্গে চুক্তিভিত্তিক পরিচালিত মোবাইল ব্যাংকিং ‘নগদ’ নিজেরাই পরিচালনা করতে পারবে প্রতিষ্ঠানটি।
সূত্র জানায়, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এমএফএস ব্যবসার সুযোগ নেই বলে লিজিং কোম্পানিটি শর্ত শিথিলের জন্য আবেদন করেছে। বিষয়টি বোর্ডে উত্থাপিত হয়েছে। যেহেতু আইনগত ছাড় দেওয়ার এখতিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নেই, তাই সরকারের কাছে বিষয়টি সিদ্ধান্তের জন্য পাঠানো হবে। সরকার পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সিদ্ধান্ত জানাবে।
জানা যায়, নিয়ম অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেম ডিপার্টমেন্টের লাইসেন্স ছাড়াই ডাক বিভাগের ব্র্যান্ড ব্যবহার করে ব্যবসা শুরু করে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা ‘নগদ’। স্বল্প সময়ে তারা ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। কিন্তু নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর তত্ত্বাবধানের বাইরে থেকে যায় এমএফএস প্রতিষ্ঠানটি। ফলস্বরূপ সন্দেহজনক লেনদেন, বিধিবহির্ভূত ব্যাংক লোন ও মূলধনের অতিরিক্ত ই-মানি তৈরির মতো বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে। এরপর ব্যাপক সমালোচনার মুখে ডাক বিভাগের মালিকানায় নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। পরে ব্যাংকের সঙ্গে না গিয়ে নিজেরই আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করে নগদ কর্তৃপক্ষ। নাম প্রস্তাব করা হয় ‘নগদ ফাইন্যান্স পিএলসি’।
নতুন ট্রেড লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও অনলাইন সেবাসহ অন্যান্য ফি প্রক্রিয়াকে অটোমেশনের মাধ্যমে ডিজিটাল কার্যক্রমের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানিয়েছেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)’র সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে নগর ভবনে সাক্ষাৎকালে এ দাবি জানান সামীর সাত্তার।
সামীর সাত্তার দাবি করেন, ‘ইন্টিগ্রেটেড পেমেন্ট গেটওয়ে’র প্রদত্ত নতুন ট্রেড লাইসেন্স প্রদানসহ অন্যান্য ফি প্রদান প্রক্রিয়াকে অটোমেশনের মাধ্যমে ডিজিটাল কার্যক্রমের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ট্রেড লাইসেন্স সেবা ঢাকা চেম্বার কার্যালয় থেকে দেওয়ার জন্য ডিসিসিআইতে একটি বুথ স্থাপনের আহ্বান জানান এবং এ লক্ষ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরেরও প্রস্তাব করেন তিনি।
তিনি বলেন, ঢাকার ট্রাফিক সমস্যার সমাধান করা গেলে মানুুষের কর্মঘণ্টা নষ্ট হবে না, জ¦ালানি খরচ হ্রাস পাবে, সেই সঙ্গে ব্যবসা পরিচালনায় ব্যয় অনেকাংশে কমে আসবে। স্টার্টআপ তরুণদের উদ্যোক্তাদের অনেকেরই ব্যবসায়িক কার্যালয় নেই, এমতাবস্থায় তরুণ উদ্যোক্তারা যেন সহজ শর্তে ট্রেড লাইসেন্স পেতে পারেন এ বিষয়টি বিবেচনার জন্য সিটি করপোরেশনের প্রতি আহ্বান জানান।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘ন্যাশনাল পেমেন্ট গেটওয়ে’-এর কার্যক্রম পুরোমাত্রায় চালু হলে, সিটি করপোরেশনের ট্রেড লাইসেন্স ফি-সহ অন্যান্য সব সেবা অনলাইনে গ্রহণ করা সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ডিসিসিআইতে একটি সপ্তাহব্যাপী ‘রেভিনিউ ক্যাম্প’ আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে, যার মাধ্যমে বিশেষ করে ডিসিসিআই’র সদস্যরা ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন সংক্রান্ত কার্যক্রম সহজেই সেখানে সম্পন্ন করতে পারেন।
মেয়র জানান, কোনো কর বৃদ্ধি না করেই দক্ষিণ সিটি করপোরেশন গত অর্থবছরে ৮৭৯ কোটি টাকার রেকর্ড পরিমাণ রাজস্ব আদায় করেছে। তিনি আরও বলেন, ব্যবসা ও বিনিয়োগের জন্য ঢাকাকে একটি আদর্শ ‘স্মাট সিটি’ হিসেবে গড়ে তুলতে কার্যক্রম চলমান রয়েছে। শহরের যানজট নিরসন ও পরিবহন চালাচলে শৃঙ্খলা আনয়নে শিগগিরই ‘আইওটি’ ভিত্তিক ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ নিয়েছে সিটি করপোরেশন।
ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি এস এম গোলাম ফারুক আলমগীর (আরমান), সহ-সভাপতি মো. জুনায়েদ ইবনে আলীসহ পর্ষদের সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বীমা খাতের উন্নয়নে মানুষের আস্থার সংকট কাটানো এ খাতের উদ্যোক্তাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এজন্য উদ্যোক্তাদের প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। গতকাল বৃহস্পতিবার এফবিসিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বীমা খাত বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও বীমা খাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে এ খাতে আস্থাহীনতা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এই অবস্থান থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। মানুষের মধ্যে বীমা বিষয়ে নেতিবাচক ধারণা পাল্টাতে এই খাতের সংশ্লিষ্ট সবার সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।
জসিম উদ্দিন আরও বলেন, ‘বীমা খাতে অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এখনো আমরা সেসব সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারিনি। দীর্ঘমেয়াদে ভালো করতে তরুণ শিক্ষার্থীদের এই খাতে সম্পৃক্ত করে তাদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।’
এফবিসিসিআই’র সহ-সভাপতি এম এ মোমেন বলেন, ‘সময়ের পরিবর্তন হলেও বীমা খাত সনাতন প্রক্রিয়ার মধ্যেই রয়ে গেছে। এই খাতের আধুনিকায়ন অত্যন্ত জরুরি।’ এসময় আকর্ষণীয় পণ্য ও সেবা নিয়ে আসার মাধ্যমে নতুন গ্রাহকদের আকৃষ্ট করার পরামর্শ দেন তিনি।
বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে বীমা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের প্রস্তাবগুলো লিখিতভাবে উপস্থাপন করলে এফবিসিসিআই সেগুলো নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করবে বলে জানান এফবিসিসিআই সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী।
বীমা খাতের সম্ভাবনাগুলোকে কাজে লাগাতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান কমিটির ডিরেক্টর ইনচার্জ এ.কে.এম. মনিরুল হক। বীমা খাতের চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবিলায় এ খাতের সব অংশীজনদের সহযোগিতা চান সাবেক সাংসদ ও কমিটির চেয়ারম্যান ফরিদুন্নাহার লাইলী।
এফবিসিসিআইর মহাসচিব ও জীবন বীমা করপোরেশনের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মাহফুজুল হক বলেন, এই খাতের অটোমেশন করা গেলে বিদ্যমান সমস্যাগুলোর বহুলাংশে সমাধান হবে।
এসময় এফবিসিসিআই’র পরিচালক বিজয় কুমার কেজরিওয়াল, হাফেজ হারুন, কমিটির কো-চেয়ারম্যান মজিবুল ইসলান, ইসহাক আলি খান পান্না, জালালুল আজিমসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
১১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালক পর্ষদের ৩৫৪তম সভায় সর্বসম্মতিক্রমে মোহাম্মদ ইউনুছ ব্যাংকের পরিচালক পর্ষদের চেয়ারম্যান পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন। একই সভায় মহিউদ্দিন আহমেদ পরিচালক পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান পুনর্নির্বাচিত এবং আব্দুল করিম (নাজিম) ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
পুনর্নির্বাচিত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউনুছ ১৯৫৮ সালে মুন্সীগঞ্জ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। শিল্পপতি ও ব্যবসায়ী ইউনুছ তিন দশক কাগজ, আইটি, ইন্স্যুরেন্স, মার্চেন্ট ব্যাংক, অ্যাগ্রো সেক্টর, বস্ত্র ও হিমাগার শিল্প-বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত। তিনি সোবহান আইস অ্যান্ড কোল্ড স্টোরেজ লি., ইউনুছ কোল্ড স্টোরেজ, অনন্ত পেপার মিলসসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
পুনর্নির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ চার দশক যাবৎ ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত। মহিউদ্দিন আহমেদ রূপসা ট্রেডিং করপোরেশন এবং মহিউদ্দিন অটো হাউজের স্বত্বাধিকারী। অপর ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল করিম (নাজিম) তিন দশক যুক্তরাজ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তিনি লন্ডন টি এক্সচেঞ্জ বিডির চেয়ারম্যান। বিজ্ঞপ্তি
ড. ইঞ্জিনিয়ার রশিদ আহমেদ চৌধুরী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি), চট্টগ্রামের ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। চিটাগং ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্বরত আছেন। তিনি আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের (আইআইইউসি) ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ও ফাইন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান। বিজ্ঞপ্তি
দেশের রপ্তানি আয়ের বেশিরভাগই আসে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আমেরিকার বাজার থেকে। বিশেষ করে এসব অঞ্চলে পোশাকের রপ্তানিই সবচেয়ে বেশি। ইউরোপ-আমেরিকায় রপ্তানি প্রতি মাসেই বাড়ছে। কিন্তু বিপরীতে রাশিয়া ও চীনের বাজারের রপ্তানি আয়ে প্রতি মাসেই পিছু হটছে বাংলাদেশ।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ প্রতিবেদনে রপ্তানি পণ্যের প্রধান প্রধান বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) মাত্র চারটি বাজারে মোট রপ্তানি আয়ের ৭০ শতাংশ। এর মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নেই সবচেয়ে বেশি, ৪৫ দশমিক ৫১ শতাংশ। এ বাজার থেকেই আয় হয় ১২ দশমিক ৪২ বিলিয়ন ডলার, যেখানে প্রবৃদ্ধি ছিল ১৬ দশমিক ৬ শতাংশ। এরপরের অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রের, এ বাজার থেকে রপ্তানি আয় হয়েছে ৪ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্র থেকেই আসে মোট রপ্তানি আয়ের ১৮ শতাংশ। এ দুই অঞ্চলের পরই রপ্তানি সবচেয়ে বেশি আসে জাপান ও কানাডা থেকে। জাপান থেকে আসে ৯১ কোটি ডলার, যেখানে প্রবৃদ্ধি ৪২ দশমিক ৫ শতাংশ। কানাডা থেকে ৮৬ কোটি ৩০ লাখ ডলার রপ্তানি আয় এসেছে। সব মিলিয়ে এসব বাজার থেকে মোট ১৯ দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় হয়েছে।
তবে এক সময় রপ্তানি আশা জাগিয়েও পিছুটান দিয়েছে চীন ও রাশিয়ার বাজারে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে রাশিয়াতে ১৯ কোটি ৪৯ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। গত বছরের একই সময়ে দেশটি থেকে রপ্তানি আয় ছিল ৩৭ কোটি ৭৫ লাখ ডলার। অর্থাৎ দেশটিতে গত বছরের তুলনায় ৪৮ দশমিক ৩৫ শতাংশ কম হয়েছে। এ সময়ে রাশিয়াতে রপ্তানিকৃত প্রধান প্রধান পণ্য হলো নিটওয়্যার থেকে এসেছে ১১ কোটি ৫৭ লাখ ডলার, ওভেন গার্মেন্টস ৬ কোটি ৪৮ লাখ ডলার এবং হোম টেক্সটাইল শূন্য দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলার, ক্রাস্টেসিয়ানস ৩৩ লাখ ডলার, পাট ও পাটজাত পণ্য ৬৯ লাখ ডলার।
রাশিয়ার মতো একই পথে চীনের বাজারও। এ সময়ে চীনে ৩১ কোটি ৬৯ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। গত বছরের একই সময়ে দেশটি থেকে রপ্তানি আয় ৩৫ কোটি ৭৩ লাখ ডলারের। অর্থাৎ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১১ দশমিক ৩০ শতাংশ কম।
২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে ইউরোপ-আমেরিকার প্রধান বাজারগুলো ছাড়াও অপ্রচলিত কিছু বাজারে জায়গা করে নিতে পেরেছে বাংলাদেশ। অপ্রচলিত বাজারে দেশের পোশাক রপ্তানি চলতি অর্থবছরের ছয় মাসে ৩২ শতাংশ বেড়েছে। দক্ষিণ কোরিয়াতে ৩১ কোটি ডলার, হংকংয়ে ৭ কোটি ৫৭ লাখ ডলার, ইউএইতে ৩৩ কোটি ৮৬ লাখ ডলার, ব্রাজিলে ৭ কোটি ৬৬ লাখ ডলার, সৌদি আরবে ১৬ কোটি ২৯ লাখ, মেক্সিকোতে ২০ কোটি, মালয়েশিয়ায় ১৯ কোটি ৮৯ লাখ, সিঙ্গাপুরে ৯ কোটি এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় ৬ কোটি ৯২ ডলারের পণ্য সামগ্রী রপ্তানি হয়েছে।
এ ছাড়াও নরওয়ে, চিলি, সুইজারল্যান্ড, ইরান, পাকিস্তান, মিসর, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড ইত্যাদি দেশে বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী রপ্তানি হচ্ছে। এসব দেশে রপ্তানিকৃত প্রধান প্রধান পণ্যসমূহ হলোÑ তৈরি পোশাক, হোম টেক্সটাইল, টেরিটাওয়েল, কটন ও কটন পণ্য, ম্যানমেড ফিলামেন্টস ও স্টেপল ফাইবার, চামড়া-চামড়াজাত পণ্য ও ফুটওয়্যার, কাঁচা পাট ও পাটজাত পণ্য, কার্পেট, হিমায়িত ও জীবন্ত মাছ, ক্রাস্টেসিয়ানস, শাকসবজি ও আলু, ফলমূল, শুকনা খাবার, গুঁড়ো মসলা, রাবার, তামাক, প্লাস্টিক-মেলামাইন দ্রব্যাদি, হ্যান্ডিক্রাফট, সিরামিক টেবিলওয়্যার, ফার্মাসিউটিক্যালস, বাইসাইকেল, জাহাজ, কপারওয়্যার, লোহার পাত, ফার্নিচার, বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি ও গলফ শ্যাফট।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।
নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ১৩ ধরনের জ্বালানি তেল ও পেট্রোলিয়াম পণ্যের ওপর থেকে বিদ্যমান ৫ শতাংশ আগাম কর প্রত্যাহারের পরিকল্পনা করেছে সরকার। অন্যদিকে উৎপাদন পর্যায়ে তরল করা পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করা হয়েছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে পেট্রোল, অকটেন ও ডিজেল আমদানিতে প্রতি লিটারে ১৩ দশমিক ৭৫ টাকা করে শুল্ক আরোপ করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ ছাড়া অন্যান্য জ্বালানি জেট ফুয়েল, ফার্নেস অয়েল, লুব বেইজ অয়েল, কেরোসিনের ক্ষেত্রে প্রতি টনে ২৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এত দিন এসব জ্বালানি তেল আমদানির ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ ছিল।
আমদানি করা পণ্যের যথাযথ মূল্য নির্ধারণে ২০২২-২৩ অর্থবছরে পণ্যের ট্যারিফ মূল্য ও ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে পেট্রোলিয়াম ও এর উপজাত দুটি হেডিংয়ের আওতায় ১২টি এইচএস কোডের বিপরীতে ট্যারিফ মূল্য এবং একটি হেডিংয়ের আওতায় একটি এইচএস কোডের বিপরীতে ন্যূনতম মূল্য বহাল আছে।
পেট্রোলিয়াম ও এর উপজাতগুলোর মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিনিয়ত ওঠানামা করার কারণে অতি প্রয়োজনীয় এই পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে এ সুপারিশ করা হয়েছে।
এলপিজি সিলিন্ডারের বিষয়ে বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, এলপিজি সিলিন্ডার তৈরির কাঁচামাল ইস্পাতের পাত (স্টিল শিট) ও ওয়েল্ডিংয়ের তার আমদানির করছাড় সুবিধা তুলে নেওয়া হয়েছে। এলপিজি সিলিন্ডার উৎপাদনকারীরা কাঁচামালে শুল্ককর ছাড় ১২ বছর ধরে ভোগ করে আসছে। তাই রাজস্ব আহরণের স্বার্থে শুধু দুটি উপকরণে ছাড় তুলে নেওয়া হয়েছে। তবে অন্যান্য করছাড়ের মেয়াদ ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বহাল থাকবে বলে।
পেট্রোলিয়াম তেল এবং বিটুমিনাস খনিজ থেকে প্রাপ্ত তেলের ওপর বিদ্যমান শুল্ক ৫ শতাংশ। নতুন বাজেট অনুযায়ী এসবের প্রতি ব্যারেলের দাম ১ হাজার ১১৭ টাকা (লিটার প্রতি ৭.০২ টাকা) হতে পারে। প্রতি টন ফার্নেস অয়েলের সুনির্দিষ্ট শুল্ক ৯ হাজার ১০৮ টাকা (লিটার প্রতি ৯.১০ টাকা) করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।