
বাংলাদেশের রিয়েল এস্টেট খাতকে এগিয়ে নিতে একসঙ্গে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছে দেশের রিয়েল এস্টেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বিপ্রপার্টি ও অস্ট্রেলিয়ার ডিজিটাল ক্ল্যাসিফাইডস গ্রুপ (ডিসিজি)। ফ্রন্টিয়ার মার্কেটে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখা ও সম্ভাবনাময় উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ব্যবসার পরিসর বাড়ানোর পাশাপাশি, এই চুক্তির আওতায় বিপ্রপার্টির সেবার মান বাড়ানোর বিভিন্ন সেবা প্রদান করবে ডিসিজি।
প্রপার্টি ক্ল্যাসিফায়েড প্রতিষ্ঠান হিসেবে ২০০৯ সালে ফ্রন্টিয়ার মার্কেটে আবির্ভাব ঘটে ডিসিজির। প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন ধরে কম্বোডিয়া, পাপুয়া নিউ গিনি, লাওস এবং ফিজিতে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। একইসঙ্গে যৌথ উদ্যোগ এবং বিনিয়োগের মাধ্যমে থাইল্যান্ড-ভিত্তিক প্রপ-টেক ফাজওয়াজ গ্রুপের সঙ্গেও কাজ করছে।
বাংলাদেশের বৃহত্তম রিয়েল এস্টেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিপ্রপার্টি একটি নিরাপদ প্রপার্টি মার্কেট হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনায় ভূমিকা পালন করে আসছে। যেখানে প্রপার্টি ক্রেতা-বিক্রেতা, বাড়িওয়ালা এবং ভাড়াটিয়া নিরাপদ, সুবিন্যস্ত এবং স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রপার্টির লেনদেন সম্পন্ন করতে পারছেন। আর এ লক্ষ্য অর্জনে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বিপ্রপার্টি গ্রাহকদের প্রপার্টি বিষয়ক যেকোনো সমস্যার সমাধান দিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত।
পণ্য বিক্রি থেকে আয় বেড়েছে। উৎপাদন ব্যয়ও কিছুটা কমেছে। এতে করে সিমেন্ট উৎপাদনকারী কোম্পানি ক্রাউন সিমেন্ট পিএলসির নিট মুনাফা বাড়ার কথা। কিন্তু ডলারের বিপরীতে টাকার বড় ধরনের অবমূল্যায়নের কারণে মুদ্রা বিনিময় হারে ব্যাপক লোকসান হয়েছে কোম্পানির। চলতি ২০২২-২৩ হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) মুদ্রা বিনিময় হারে ক্রাউন সিমেন্টের লোকসান ১২ গুণ বেড়েছে। ফলে এ সময়ে কোম্পানির নিট মুনাফা না বেড়ে উল্টো আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৬ শতাংশ কমে গেছে। কোম্পানির অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় এমন তথ্য মিলেছে।
সাধারণত যেসব কোম্পানির বিদেশি ঋণ রয়েছে কিংবা কাঁচামাল আমদানি করতে হয় সেসব কোম্পানির মুদ্রা বিনিময় হারে ঝুঁকি থাকে। আমদানির এলসি বিলম্বে পরিশোধের কারণেও মুদ্রা বিনিময় হারে লোকসান হতে পারে। যেহেতু ডলার সংকটের কারণে টাকার বড় অবমূল্যায়ন হয়েছে, তাই দেশীয় অনেক কোম্পানিকে মুদ্রা বিনিময় হারে গত বছর লোকসান দিতে হয়েছে। মুদ্রা বিনিময় হারে চলতি প্রথমার্ধে ক্রাউন সিমেন্টের লোকসান দাঁড়িয়েছে ৬৫ কোটি ৫ লাখ টাকারও বেশি, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৫ কোটি ২১ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে এ খাতে কোম্পানির লোকসান বেড়েছে ১২ গুণ। কোম্পানিটির ৪৮৭ কোটি টাকার অফসোর ঋণ রয়েছে, যা মুদ্রা বিনিময় হারে লোকসানের অন্যতম কারণ।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব কাঁচামালের দাম বাড়ায় আমদানি ব্যয় উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে যায় বাংলাদেশের। আমদানি ব্যয় সামাল দিতে গিয়ে রিজার্ভ থেকে বড় অঙ্কের বিদেশি মুদ্রা সরবরাহ করতে হয়। এতে করে সংকট দেখা দেয় বিদেশি মুদ্রায়। ফলে এক বছরের মধ্যে ডলারের বিপরীতে টাকার প্রায় ২৫ শতাংশ অবমূল্যায়ন হয়।
ক্রাউন সিমেন্টের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, চলতি প্রথমার্ধে কোম্পানির পণ্য বিক্রি থেকে আয় হয়েছে ১ হাজার ১৩০ কোটি টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ২৯ শতাংশ বেশি। এ সময়ে কোম্পানির উৎপাদন ব্যয়ও আগের বছরের তুলনায় কমে এসেছে। ২০২১-২২ হিসাব বছরের প্রথমার্ধে কোম্পানির মোট বিক্রির ৯০ শতাংশের বেশি ছিল উৎপাদন ব্যয়, যা চলতি প্রথমার্ধে ৮৫ শতাংশে নেমে এসেছে। এতে করে চলতি প্রথমার্ধে মোট আয় দাঁড়িয়েছে ১৫৯ কোটি ৭৮ লাখ টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৯৭ শতাংশ বেশি।
প্রশাসনিক, বিক্রি ও বিতরণ ব্যয় শেষে চলতি প্রথমার্ধে ক্রাউন সিমেন্টের পরিচালন মুনাফা দাঁড়িয়েছে ১২৬ কোটি টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৪৯ কোটি টাকা। মুদ্রা বিনিময় হারে লোকসানসহ সুদবাবদ ব্যয়ে চলতি প্রথমার্ধে কোম্পানির ব্যয় হয়েছে ৯৪ কোটি ২০ লাখ টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ২০ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। চলতি প্রথমার্ধে বড় অঙ্কের আর্থিক ব্যয়ের পর কোম্পানির মুনাফা দাঁড়ায় ৩৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ২৯ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। চলতি হিসাব বছরে করপোরেট করেও কোম্পানিকে বেশি ব্যয় করতে হয়েছে। চলতি প্রথমার্ধে করপোরেট করে ক্রাউন সিমেন্টের ব্যয় হয় ২২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১৭ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। আলোচ্য সময়ে কর পরিশোধের পর ক্রাউন সিমেন্টের নিট মুনাফা দাঁড়ায় ৯ কোটি ৪২ লাখ টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ১৫ শতাংশ কম। শুধু মুদ্রা বিনিময় হারে ব্যাপক লোকসানের কারণে পণ্য বিক্রিতে ২৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পরও ক্রাউন সিমেন্টের নিট মুনাফা উল্টো কমে গেছে।
দেশের জুতার বাজারে সুপরিচিত ব্র্যান্ড ‘লোটো বাংলাদেশ’। ইতালি ও বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত এক্সপ্রেস লেদার প্রডাক্ট লিমিটেডের অধীনে গড়ে ওঠে ব্র্যান্ডটি। বর্তমানে ডলার সংকটের কারণে বিরূপ পরিস্থিতিতে থাকা দেশের ব্যবসাবাণিজ্য নিয়ে কথা বলেছেন এক্সপ্রেস লেদার প্রডাক্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী জামিল ইসলাম। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন দেশ রূপান্তরের সিনিয়র রিপোর্টার ফারজানা লাবনী
২০২২ সালের শুরুতে করোনার প্রাদুর্ভাব কিছুটা কমে আসায় হঠাৎ করে বিশ^বাজারে কাঁচামালের চাহিদা বেড়ে যায়। সরবরাহ সংকট দেখা দেয়। এই সংকট আরও প্রকট করে তোলে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। আমদানি ঘাটতি ব্যাপক হারে বাড়তে থাকায় ডলারের তীব্র চাহিদা তৈরি হয়। পর্যাপ্ত ডলার সরবরাহ না থাকায় প্রায় ২৫ শতাংশ অবমূল্যায়ন হয় টাকার। বৈদেশিক মুদ্রার অপ্রতুলতায় সরকার আমদানি সীমিত করার উদ্যোগ নেয়। এতে করে অনেক কোম্পানি কাঁচামাল আমদানি করতে না পারায় উৎপাদন টিকিয়ে রাখা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে।
অন্যান্য কোম্পানির মতো দেশের জুতার বাজারে অন্যতম ব্র্যান্ড লোটো বাংলাদেশও বিরূপ পরিস্থিতিতে পড়েছে। সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে লোটো বাংলাদেশের মালিকানাধীন কোম্পানি এক্সপ্রেস লেদার প্রডাক্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কাজী জামিল ইসলাম দেশ রূপান্তরকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশে ১৬ কোটি মানুষের বাজার। এদেশের ব্যবসার ক্ষেত্রে সমস্যা আছে এটা সত্য। এসব সমস্যার মধ্যেই এতদিন ব্যবসা চালিয়ে এসেছি। কিন্তু এখন! আমার তো মনে হয় প্রকৃত সংকটের চেয়ে প্রচার বেশি হচ্ছে। ব্যাংকে টাকা নেই, সঞ্চয়পত্র ভেঙে খাচ্ছে সকলে, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে পণ্য পাওয়া যাচ্ছে না এসব কথাবার্তার সবটা কি সঠিক? আমি মনে করি সব ঠিক নয়। এর অনেক কিছুই অপপ্রচার। খতিয়ে দেখা উচিত এসব প্রচারে কে বা কারা লাভবান হচ্ছে।
জামিল বলেন, আমরা প্রকৃত ব্যবসায়ী। খেটে ব্যবসা করি। আমরা চাই, দেশে ব্যবসাবাণিজ্যের বিকাশ হোক। বর্তমান পরিস্থিতিতে তারাই লাভবান হচ্ছে যারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে পারছে। এসব ব্যক্তিই দেশ থেকে আয় করে বিদেশে পাচার করে দিচ্ছে। খোঁজ নিয়ে দেখুন এদের কানাডার বেগমপাড়ায় কয়টা বাড়ি আছে, গোপনে অর্থ পাঠিয়ে কোন দেশে কী পরিমাণ জমিয়েছে!
সাক্ষাৎকারে কাজী জামিল ইসলাম জানান, গত এক যুগ থেকে হাঁটি হাঁটি পা পা করে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলেছেন। এ দেশের চামড়ার গুণগত মানের জন্য বিশ্ববাজারে চাহিদা রয়েছে। তৃণমূল পর্যায় থেকে চামড়া সংগ্রহ করে কারখানায় জুতা বানানো শুরু করেছেন। স্বল্প পরিসরে একটি শোরুম দিয়ে যাত্রা হয় প্রতিষ্ঠানটির। ক্রেতাদের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পাওয়ায় দেশব্যাপী ছড়িয়ে যায় এ ব্যবসা। একসময় ইতালিয়ান কোম্পানি লোটো বাংলাদেশে ব্যবসায়ে আগ্রহী হয়। ব্যবসায়িক আলোচনার পর উভয়পক্ষের সম্মতিতে এক্সপ্রেস লেদার প্রডাক্ট লিমিটেড এবং লোটো কোম্পানির যৌথ উদ্যোগে নতুন যাত্রা শুরু হয়। গড়ে ওঠে লোটো বাংলাদেশ ব্র্যান্ড। একে একে রাজধানীতে ছয়টি, খুলনায় দুটি, সিলেটে দুটি ও চট্টগ্রামে দুটি শোরুম গড়ে তোলা হয়। বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা ও বিভাগীয় শহরে লোটো ব্র্যান্ডের পণ্যের চাহিদা বাড়তে থাকে।
তিনি বলেন, ভালোই বিক্রি হচ্ছিল। গত বছর সারা দেশে লোটো ব্র্যান্ডের পণ্য বিক্রির জন্য এক্সপ্রেস লেদার প্রডাক্ট লিমিটেডের ২০০টি নিজস্ব শোরুম ছিল। এ বছর তা বেড়ে ২২০টি হয়েছে। এত দিন যা উৎপাদন করেছি তা দিয়েই চলেছি। কিন্তু পণ্যের মজুদ শেষের দিকে। এবার নতুন পণ্য উৎপাদনে যেতে হবে। কাঁচামাল প্রয়োজন। কিন্তু এলসির অনুমতি না পাওয়ার কারণে কাঁচামাল আনতে পারছি না। কাঁচামাল ছাড়া কীভাবে নতুন পণ্য উৎপাদন করব? প্রশ্ন এই ব্যবসায়ীর।
কাজী জামিল ইসলাম বলেন, পণ্য উৎপাদন না করতে পারলে ব্যবসায়ের খরচ কীভাবে চালাব? কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন কীভাবে দেব? পরিস্থিতি যে দিকে যাচ্ছে, মানে এলসি খুলতে না পারলে ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হবে।
তিনি জানান, বিভিন্ন ধরনের জুতা, বিশেষভাবে স্পোর্টস সু ব্যাগ, পোশাকসহ চামড়াজাত বিভিন্ন ধরনের পণ্য লোটোর শোরুমে পাওয়া যায়। বর্তমানে এক হাজারের বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে এ প্রতিষ্ঠানে। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ভালো থাকলে এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকলে ব্যবসা এগিয়ে যেত। কিন্তু বর্তমান ধারা চলতে থাকলে কী হবে বলা যাচ্ছে না জানান তিনি। বর্তমানে জুতা-স্যান্ডেলের বাজারের ২০ শতাংশের বেশি প্রতিষ্ঠানটির আওতায় রয়েছে বলে দাবি করেন এই ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
প্রতিষ্ঠানে উচ্চ বেতনে অনেক ডিজাইনার কাজ করলেও কাজী জামিল ইসলাম নিজেই লোটো বাংলাদেশের অনেক পণ্যের ডিজাইন তৈরি করেন জানিয়ে বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারের হালচাল বিবেচনায় পণ্যের ডিজাইন করি। আবার দেশীয় সংস্কৃতি যাতে হারিয়ে না যায়, সে বিষয়টিও মাথায় রাখি। বিশ্ব এখন হাতের মুঠোয়। ইন্টারনেটে সারা দুনিয়ার হালচাল জানা যায়।
মীনা বাজার, আগোরা, স্বপ্ন, বাটাসহ একাধিক শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানের অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ কাজী জামিল ইসলাম গড়ে তোলেন জুতা খাতের এ প্রতিষ্ঠান। যে প্রতিষ্ঠানটি লোটো বাংলাদেশ ব্র্যান্ডে জুতা ও স্পোর্টস পণ্যসহ চামড়াজাত বিভিন্ন পণ্যের বাজারে খ্যাতি অর্জন করেছে।
তিনি বলেন, ব্যবসায় এগিয়ে যেতে হলে একটি নির্দিষ্ট শ্রেণির ক্রেতা টার্গেট করে পণ্য বিক্রি করতে হবে। এতে সফলতা আসবে। লোটো বাংলাদেশ এ দেশের তরুণ সমাজকে সামনে রেখে গড়ে তোলা হয়েছে। আর এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে পণ্যের গুণগত মানে। কারণ একটি প্রতিষ্ঠানের সবচেয়ে বড় প্রচার তার পণ্যের মান। রুচিশীল ও টেকসই পণ্য হলে ক্রেতা বাড়বে। এভাবেই নিজের প্রতিষ্ঠানের অবস্থান তুলে ধরেন কাজী জামিল ইসলাম।
এই ব্যবসায়ী বলেন, পণ্যের গুণগত মানের বিকল্প নেই। তাই দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ক্রেতার জন্যও গুণগত মানের আধুনিক রুচিশীল পণ্যটি তৈরির চেষ্টা করি। এ দেশের তরুণ-তরুণীরা বেশিরভাগই সচেতন। গুণগত মানের পণ্য না হলে ক্রেতা পাওয়া যাবে না। সফল এ ব্যবসায়ী বলেন, যেকোনো একটি প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নিতে সবচেয়ে প্রয়োজন মানবসম্পদ। এ দেশে শ্রমিকের অভাব নেই, তবে দক্ষ শ্রমশক্তির অভাব রয়েছে। দেশকে এগিয়ে নিতে এ বিষয়ে নজর দিতে হবে সরকারকে।
ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় পণ্য বিক্রয়ের বিপরীতে এখন পর্যন্ত ভ্যাট আদায় হয়েছে প্রায় ১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। আর গতকাল শনিবার ভ্যাটের টাকা যোগ হলে তা দেড় কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
গতকাল রাজধানীর পূর্বাচলে আয়োজিত মেলায় থাকা ঢাকা পূর্ব কাস্টমস, এপাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট অফিস সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। ২৬ দিন শেষে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হয় বলে এর আগে জানানো হয়েছিল।
মেলায় দেশ-বিদেশের ৩৩১টি স্টল, প্যাভিলিয়ন ও মিনি প্যাভিলিয়ন রয়েছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলছে বাণিজ্যমেলা। তবে সাপ্তাহিক ছুটির দিন রাত ১০টা পর্যন্ত মেলা চালু থাকছে। মেলায় প্রবেশমূল্য প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ৪০ এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ২০ টাকা। অনলাইনে ৫০ শতাংশ ডিসকাউন্টে মেলার টিকিটও কেনা যাচ্ছে।
মেলায় ভ্যাট আদায়ের বিষয় জানতে চাইলে ঢাকা পূর্ব কাস্টমসের এক কর্মকর্তা বলেন, আমাদের অফিসের আওতায় উপকমিশনার ও সহকারী কমিশনারের নেতৃত্ব আটটি টিম ভ্যাট আদায়ে ধারাবাহিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
আরেক ভ্যাট কর্মকর্তা বলেন, বাণিজ্যমেলায় সবচেয়ে বেশি ভ্যাট আদায় হয় ফার্নিচার খাত থেকে। কারণ এ খাতে অর্ডার সাধারণত বেশি হয়। তবে মজার বিষয় হচ্ছে, এ খাতে অগ্রিম যতটুকু দেয়, তার ওপর ৫ শতাংশ হারে ভ্যাট পাওয়া যায়। যেখান থেকে পণ্য সরবরাহ করা হয়, সেখানে পুরো দাম দেওয়া হয়। ফলে ভ্যাটের সব অর্থ মেলা প্রাঙ্গণ থেকে আসে না। অন্যান্য পণ্যের ক্ষেত্রেও একই বিষয় প্রযোজ্য।
ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা শেষ হচ্ছে আগামী মঙ্গলবার। সেই হিসেবে মেলার শেষ সাপ্তাহিক ছুটির দিন (গতকাল শনিবার) হওয়ায় দুপুরের পর থেকে উপচেপড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে।
শিপার্স কাউন্সিল অব বাংলাদেশের ৪১তম বার্ষিক সাধারণ সভা গতকাল শনিবার ঢাকা ক্লাবে অনুষ্ঠিত হয়। কাউন্সিলের সভাপতি মো. রেজাউল করিম এতে সভাপতিত্ব করেন। এশিয়ান শিপার্স অ্যালায়েন্স (এএসএ) এবং গ্লোবাল শিপার্স অ্যালায়েন্সের (জিএসএ) সঙ্গে কাউন্সিলের কর্মকা-ের সম্পৃক্ততা ও অগ্রগতি নিয়েও আলোচনা করা হয়। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে ৪০তম বার্ষিক সাধারণ সভার কার্যবিবরণী, পরিচালনা পর্ষদের বার্ষিক প্রতিবেদন-২০২২ এবং ২০২১-২০২২ অর্থবছরের অডিট ব্যালেন্স শিট ও হিসাব বিবরণী অনুমোদিত হয় এবং ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের জন্য অডিটর নিয়োগ ও পারিশ্রমিক নির্ধারণ করা হয়। সভায় এসবিসির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান মো. আরিফুল আহ্সান, ভাইস চেয়ারম্যান এ কে এম আমিনুল মান্নান (খোকন) ও অন্যান্য পরিচালকসহ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সদস্য উপস্থিত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি
কর্মীদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে প্রথমবারের মতো দেশব্যাপী ‘জিপি রান ২০২৩’ শীর্ষক এক বিশেষ দৌড়ের আয়োজন করেছে গ্রামীণফোন। প্রথমবারের মতো আয়োজিত এই দৌড়ে দেশজুড়ে প্রতিষ্ঠানটির সব কর্মী এ আয়োজনে অংশগ্রহণ করেন। কর্মীদের ডিজিটাল দক্ষতা বিকাশের পাশাপাশি তাদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতায় জোর দেয় গ্রামীণফোন। এ উদ্যোগে অংশ নিয়ে গ্রামীণফোনের কর্মীরা এক অনন্য নজির স্থাপন করেন।
গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান, প্রধান মানবসম্পদ কর্মকর্তা সৈয়দ তানভির হোসেন এবং চিফ করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার হ্যান্স মার্টিন হেনরিক্সনসহ গ্রামীণফোনের অসংখ্য কর্মীরা দৌড়ে অংশ নেন। ২৭ জানুয়ারি রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে এই দৌড় শুরু হয়। ঢাকার বাইরের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে গ্রামীণফোন কর্মীরা ‘স্ট্রাভা’ অ্যাপের মাধ্যমে এই আয়োজনে যুক্ত হন। তারা নিজ নিজ বিভাগ থেকে একই সময়ে ৫/১০ কি.মি. পথ দৌড়ে পাড়ি দেন।
সৈয়দ তানভির হোসেন বলেন, ‘কর্মীদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা এবং তাদের জন্য উন্নত কাজের পরিবেশ নিশ্চিতে গুরুত্ব দেয় গ্রামীণফোন। ফিউচার-ফিট অর্থাৎ ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত কর্মী গড়ে তোলার জন্য পেশাদারি দক্ষতা উন্নয়নের পাশাপাশি তাদের শারীরিক ও মানসিক সুস্বাস্থ্যেও আমাদের সমান গুরুত্ব দিতে হবে।’
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।
নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ১৩ ধরনের জ্বালানি তেল ও পেট্রোলিয়াম পণ্যের ওপর থেকে বিদ্যমান ৫ শতাংশ আগাম কর প্রত্যাহারের পরিকল্পনা করেছে সরকার। অন্যদিকে উৎপাদন পর্যায়ে তরল করা পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করা হয়েছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে পেট্রোল, অকটেন ও ডিজেল আমদানিতে প্রতি লিটারে ১৩ দশমিক ৭৫ টাকা করে শুল্ক আরোপ করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ ছাড়া অন্যান্য জ্বালানি জেট ফুয়েল, ফার্নেস অয়েল, লুব বেইজ অয়েল, কেরোসিনের ক্ষেত্রে প্রতি টনে ২৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এত দিন এসব জ্বালানি তেল আমদানির ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ ছিল।
আমদানি করা পণ্যের যথাযথ মূল্য নির্ধারণে ২০২২-২৩ অর্থবছরে পণ্যের ট্যারিফ মূল্য ও ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে পেট্রোলিয়াম ও এর উপজাত দুটি হেডিংয়ের আওতায় ১২টি এইচএস কোডের বিপরীতে ট্যারিফ মূল্য এবং একটি হেডিংয়ের আওতায় একটি এইচএস কোডের বিপরীতে ন্যূনতম মূল্য বহাল আছে।
পেট্রোলিয়াম ও এর উপজাতগুলোর মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিনিয়ত ওঠানামা করার কারণে অতি প্রয়োজনীয় এই পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে এ সুপারিশ করা হয়েছে।
এলপিজি সিলিন্ডারের বিষয়ে বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, এলপিজি সিলিন্ডার তৈরির কাঁচামাল ইস্পাতের পাত (স্টিল শিট) ও ওয়েল্ডিংয়ের তার আমদানির করছাড় সুবিধা তুলে নেওয়া হয়েছে। এলপিজি সিলিন্ডার উৎপাদনকারীরা কাঁচামালে শুল্ককর ছাড় ১২ বছর ধরে ভোগ করে আসছে। তাই রাজস্ব আহরণের স্বার্থে শুধু দুটি উপকরণে ছাড় তুলে নেওয়া হয়েছে। তবে অন্যান্য করছাড়ের মেয়াদ ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বহাল থাকবে বলে।
পেট্রোলিয়াম তেল এবং বিটুমিনাস খনিজ থেকে প্রাপ্ত তেলের ওপর বিদ্যমান শুল্ক ৫ শতাংশ। নতুন বাজেট অনুযায়ী এসবের প্রতি ব্যারেলের দাম ১ হাজার ১১৭ টাকা (লিটার প্রতি ৭.০২ টাকা) হতে পারে। প্রতি টন ফার্নেস অয়েলের সুনির্দিষ্ট শুল্ক ৯ হাজার ১০৮ টাকা (লিটার প্রতি ৯.১০ টাকা) করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।