
আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিপুল পরিমাণের অর্থ আত্মসাৎকারী পিকে হালদারের প্রতিষ্ঠান রিলায়েন্স ফাইন্যান্সের সহযোগী কোম্পানি রিলায়েন্স ব্রোকারেজ সার্ভিসেসের লেনদেন স্থগিত করেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। প্রতিষ্ঠানটির ট্রেড লাইসন্স নবায়ন না হওয়ায় ব্রোকারেজ হাউজটির লেনদেন বন্ধ রেখেছে ডিএসই। ফলে গত ১৩ ও ১৪ ফেব্রুয়ারি এ ব্রোকারেজ হাউজের বিনিয়োগকারীরা কোনো শেয়ার লেনদেন করতে পারেননি।
ডিএসই সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
লেনদেন বন্ধ প্রসঙ্গে ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম সাইফুর রহমান মজুমদার দেশ রূপান্তরকে বলেন, রিলায়েন্স ব্রোকারেজের সনদ নবায়ন না হওয়ায় এসইসির নির্দেশে লেনদেন স্থগিত রাখা হয়েছে।
আর এসইসির মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. রেজাউল করিম জানিয়েছেন, ব্রোকারেজ হাউজটির সনদ নবায়নের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। পরবর্তী কমিশন সভায় সিদ্ধান্ত হতে পারে।
জানা গেছে, ২০২২ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর রিলায়েন্স ব্রোকারেজের লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়েছে। গত পাঁচ মাসেও ব্রোকারেজ হাউজটি তাদের স্টক ব্রোকার সনদ নবায়ন করতে পারেনি। পিকে হালদারের কেলেঙ্কারির পর সম্প্রতি রিলায়েন্স ফাইন্যান্সের নাম পরিবর্তন করে আভিভা ফাইন্যান্স করা হয়। এখন ব্রোকারেজ হাউজের নাম পরিবর্তন করে আভিভা ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট নামে সনদ নবায়ন করতে চায় রিলায়েন্স ব্রোকারেজ। তবে প্রতিষ্ঠানটির একজন পরিচালকের সিআইবি রিপোর্ট আপডেট না থাকায় সনদ নবায়ন হয়নি।
১০ বছর আগেও মানুষ ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার বিকল্প কিছুই ভাবতে পারতেন না। এটিএম বুথের প্রচলন থাকলেও সেখান থেকে টাকা উত্তোলনের হার ছিল একেবারেই নগণ্য। প্রযুক্তির কল্যাণে লেনদেন সহজ করতে দিনদিন তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন মেশিন। আর নগদ টাকা বহন ও লাইনে দাঁড়িয়ে টাকা উত্তোলনের যন্ত্রণা থেকে বাঁচতে মানুষ ঝুঁকছে কার্ড, মোবাইল ব্যাংকিং বা ডিজিটাল লেনদেনে। এক কথায় প্রযুক্তি মানুষের জীবনযাত্রাকে উন্নত করার পাশাপাশি নগদ অর্থ থেকে মানুষকে বিমুখ করছে।
মূলত এই অভ্যস্ততা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে ২০২০ সালে দেশে হানা দেওয়া মহামারী করোনা। গত ৪ বছরে মানুষ কার্ডে লেনদেন বাড়িয়েছে ১৩৫ শতাংশ। আর মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেন বেড়েছে ১২৪ দশমিক ৮৫ শতাংশ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, কার্ডভিত্তিক লেনদেন বাড়াতে ব্যাংকগুলো বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে আসছে। করোনাকালীন ব্যাংকের অনেক শাখার লেনদেন সীমিত ছিল। ফলে ওই সময় গ্রাহকদের টাকা উত্তোলনের সুবিধার্থে এটিএম বা সিআরএমের ওপর জোর দেওয়া হয়। ওই সময় এটিএম বুথ থেকে দিনে একজনের টাকা উত্তোলনের সর্বোচ্চ সীমা বাড়িয়ে এক লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়। মূলত ওই সময়েই জনসাধারণের মধ্যে কার্ড বা মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহারের অভ্যস্ততা তৈরি হয়েছে। যে কারণে মানুষ এখনো ব্যাংকের শাখায় যাওয়ার পরিবর্তে ডিজিটাল লেনদেনে গুরুত্ব দিচ্ছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, করোনা শুরু হওয়ার আগে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে কার্ডের মাধ্যমে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১৬ হাজার ৮৬৬ কোটি টাকা। ২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনা হানা দিলে ওই বছরের ডিসেম্বরে বেড়ে দাঁড়ায় ২০ হাজার ৬৭২ কোটি টাকা। আর সদ্যসমাপ্ত ২০২২ সালের ডিসেম্বরে এটি ১৩৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৯ হাজার ৬৬৫ টাকা। অর্থাৎ চার বছরের ব্যবধানে কার্ডের মাধ্যমে মানুষের লেনদেন বেড়েছে ২২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।
এদিকে, গত বছরের মার্চে দেশের খোলাবাজারে ডলারের সংকট দেখা দেয়। এ সময় ৮৬ টাকায় বিক্রি হওয়া ডলার ১২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, কোনো কোনো ব্যাংক ডলার বিক্রি করে এ খাতে ৭০০ শতাংশ পর্যন্ত লাভ করেছে। ওই সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে বিদেশে যাওয়ার সময় নগদ ডলার ক্রয়ের বিপরীতে কার্ডে ডলার ইস্যুর বিষয়ে মানুষকে জোর দেওয়া হয়।
এ কারণে কার্ডের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের প্রবণতাও বেড়েছে। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে কার্ডের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন হয়েছিল ২৫০ কোটি টাকা। এ বছরের ব্যবধানে ২০২২ সালে ডিসেম্বরে এটি ১৫৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৪০ কোটি টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২১ সালের জুন মাসে দেশে ই-কমার্সের রেকর্ড ১ হাজার ২৭৭ কোটি টাকা লেনদেন হয়। কিন্তু গণমাধ্যমে বেশ কয়েকটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের প্রতারণা প্রকাশিত হওয়ার পর দেশের ই-কমার্স ব্যবসায় ব্যাপক ধস নামে। ওই বছরের ডিসেম্বরে লেনদেন নেমে দাঁড়ায় ৮২৫ কোটি টাকায়। তবে এ চিত্র কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে বিদায় ২০২২ সালে। ওই বছরের এপ্রিলে আবারও ই-কমার্সের লেনদেন হাজার কোটি ছাড়িয়েছে। আর ডিসেম্বরে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ১৩০ কোটি টাকা।
এদিকে, অটোমেটেড টেলার মেশিন (এটিএম), ক্যাশ ডিপোজিট মেশিন (সিডিএম), ক্যাশ রিসাইক্লিং মেশিন (সিআরএম) ও পয়েন্ট অব সেলসের (পিওএস) মাধ্যমেও লেনদেন বেড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে এটিএমের মাধ্যমে ২০ হাজার ৮২৪ কোটি টাকা, সিআরএমের মাধ্যমে ৩ হাজার ৩১০ কোটি টাকা ও পিওএসের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ১১৬ টাকা। ৪ বছরের ব্যবধানে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে এটিএমে ২৯ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকা, সিআরএমে ৬ হাজার ৩৭৫ কোটি টাকা ও পিওএসের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৬১৪ টাকা।
রপ্তানি আয় বহুমুখী করতে যেসব সম্ভাবনাময় শিল্প গড়ে উঠেছে, তারমধ্যে প্রকৌশল শিল্প অন্যতম। করোনার সময় দেশের প্রধান প্রধান রপ্তানি আয়ের খাতগুলো মার খেলেও ভালো প্রবৃদ্ধিতে টিকে ছিল হালকা প্রকৌশল শিল্প। করোনার ভয়াল থাবার ভয়ংকর গল্প মাড়িয়ে ২০২০-২১ অর্থবছর শেষে এ খাতটি থেকে রপ্তানি আয় হয়েছিল প্রায় ৫৩ কোটি ডলার, যা কিনা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮১ শতাংশ বেশি। সর্বশেষ ২০২১-২২ অর্থবছরেও এ খাতের রপ্তানির প্রবৃদ্ধি ছিল ১৫১ শতাংশ। কিন্তু সম্ভাবনাময় খাতটি চলতি অর্থবছরে বৈশি^ক পরিস্থিতির শিকার হয়ে পিছিয়ে পড়ছে। নানামুখী সংকটে পড়ে উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে রপ্তানি আয়।
রপ্তানিকারকরা বলছেন, এ খাতের পণ্য উৎপাদনের কাঁচামাল সম্পূর্ণ আমদানিনির্ভর। আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়া, দেশের অভ্যন্তরের কারখানায় বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সংকটে প্রকৌশল খাতের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। আবার ডলার সংকটের কারণে কাঁচামাল আমদানি ব্যাহত হওয়া ও দেশে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন ব্যয় বেড়ে গিয়ে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছে সম্ভাবনাময় এ শিল্পটি। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) প্রকৌশল পণ্যের রপ্তানি আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৪৩ শতাংশ কমে গেছে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর হিসাবে, এ খাতের প্রধান রপ্তানি পণ্য হলো বাইসাইকেল, ইলেকট্রিক পণ্য, আয়রন ও স্টিল, তামার তার, মেশিনারিজ, স্টেইনলেইস স্টিলসহ বিভিন্ন দ্রব্য। কভিডকালেও যে পণ্য রপ্তানি আয়ে খুব আশা জাগিয়েছিল, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে তাতে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের সাত মাসে প্রকৌশল পণ্য রপ্তানি করে আয় হয়েছে ৩১ কোটি ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৪৯ কোটি ডলার।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রয়োজনীয় সহযোগিতা পেলে এ খাত থেকে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ২০০ বিলিয়ন রপ্তানি আয় সম্ভব। কারণ বিশ^বাজারে এর বাজার ৬ ট্রিলিয়ন ডলারেরও বেশি। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এ শিল্পকে খুব একটা গুরুত্ব না দেওয়ায় এটি পিছিয়ে পড়ছে।
জানতে চাইলে হালকা প্রকৌশল শিল্পের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক দেশ রূপান্তরকে বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর উৎপাদন কমে যাওয়ায় আমাদের অনেক দক্ষ শ্রমিক পেশা ছেড়ে চলে গেছেন। নতুন করে দক্ষ শ্রমিক না পাওয়ায় এ শিল্পের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সরকার এখন আমাদের পাঁচটি সহযোগিতা করলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ২০০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি আয় এনে দেওয়া সম্ভব। এর মধ্যে রয়েছে পর্যাপ্ত দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ, প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হওয়া প্রযুক্তি সহায়তা, সরকারের সুদূরপ্রসারী নীতি সহায়তা, শ্রমিকদের উন্নতমানের প্রশিক্ষণ ও পরিকল্পিত শিল্প পার্ক। এ সহায়তাগুলো পেলে আমাদের এ খাত সবচেয়ে বেশি রপ্তানি আয় এনে দিতে সক্ষম হবে।
২০২১-২২ অর্থবছরে এ খাতের রপ্তানি আয় ছিল ৭৯ কোটি ৫৬ লাখ ডলার। আগের অর্থবছরের চেয়ে প্রায় ৫০ শতাংশ বেশি রপ্তানি হওয়ায় চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে এর রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে ৯৬ কোটি ডলারের বেশি ধরা হয়েছে।
প্রকৌশল খাতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি আয় ছিল ইঞ্জিনিয়ারিং ইকুইপমেন্টস। ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে এসব পণ্য রপ্তানি করে আয় ছিল ১৮ কোটি ২০ লাখ ডলার, যা চলতি অর্থবছরের একই সময়ে ৬ কোটি ১২ লাখ ডলারে নেমে এসেছে। গত বছরের একই সময়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আয় ছিল ৯ কোটি ৩২ লাখ ডলার, যা এখন ৪ কোটি ডলারে নেমে এসেছে। বাইসাইকেল রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি না হলেও কমে গেছে কপার ও স্টেইনলেস স্টিল ওয়ারের রপ্তানি। অবশ্য ইলেকট্রিক প্রডাক্টের রপ্তানি এ সময়ে কিছুটা বেড়েছে।
বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প মালিক সমিতি’র মতে, সারা দেশে তাদের ৫০ হাজার কারখানায় কর্মরত আছেন ৬ লাখ দক্ষ ও আধাদক্ষ শ্রমিক। এ খাতে আরও ৬০ লাখ মানুষের জীবিকা পরোক্ষভাবে নির্ভরশীল। দেশের মোট উৎপাদিত পণ্য বা জিডিপি’তে ৩ শতাংশ অবদান রাখছে প্রায় ১০ হাজারের বেশি রকমের পণ্য উৎপাদনকারী খাতটি।
বাংলাদেশে প্রকৌশল খাতে এ পর্যন্ত বিনিয়োগ করা হয়েছে এক লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া, স্থানীয় বাজারে এর পণ্য ও পরিষেবার বিক্রি প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা।
গত সোমবার ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই এ খাতের উৎপাদন কমে যাওয়ায় সরকারের নীতি সহায়তা চেয়েছে। ব্যবসায়ীরা জানান, কারখানায় বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকটের কারণে উৎপাদনও প্রায় এক-তৃতীয়াংশে কমে এসেছে। কম উৎপাদন নিয়ে ব্যাংকঋণ পরিশোধ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তৈরি হচ্ছে ঋণখেলাপি হওয়ার শঙ্কা। এ অবস্থায় সরকারের সহযোগিতা না পেলে দেশের স্টিল, রড ও সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিগুলোকে টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন ব্যবসায়ীরা।
এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন কারখানায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহসহ এ শিল্পের কাঁচামাল আমদানিতে ডলার তহবিল গঠনের দাবি জানান। পাশাপাশি ঋণপত্র (এলসি) খোলার ব্যাপারে সহযোগিতা করতে ব্যাংকগুলোর প্রতিও আহ্বান জানান তিনি।
ইপিবি’র মতে, এসব প্রকৌশল পণ্য রপ্তানি হচ্ছে ভারত, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ব্রিটেন, জাপান, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্র, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, চীন, মিয়ানমার, ইতালি, পর্তুগাল, কোরিয়া, চাদ, সুইজারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, গ্রিস, কুয়েত, কেনিয়া, নেপাল, তিমুর, ইয়েমেন, ফ্রান্স, হংকং, শ্রীলঙ্কা, বেলজিয়াম, বুরুন্ডি, ব্রাজিল, কলম্বিয়া, জার্মানি, আলজেরিয়া, মিসর, স্পেন, হন্ডুরাস, এস্তোনিয়া, নেদারল্যান্ডস এবং চিলিতে।
আউশের আবাদ ও উৎপাদন বাড়াতে ৫৭ কোটি ২৫ লাখ টাকার প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। সারা দেশের ১০ লাখ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক এ প্রণোদনার আওতায় বিনামূল্যে বীজ ও সার পাচ্ছেন। গতকাল কৃষি মন্ত্রণালয়ের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, উচ্চফলনশীল আউশ ধানের উৎপাদন বাড়াতে এ প্রণোদনার আওতায় একজন কৃষক এক বিঘা জমিতে চাষের জন্য প্রয়োজনীয় ৫ কেজি বীজ, ১০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার বিনামূল্যে পাচ্ছেন। কৃষি মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত বাজেট কৃষি পুনর্বাসন সহায়তা এবং বীজ ও চারা খাত থেকে এ প্রণোদনা প্রদান করা হচ্ছে। মাঠপর্যায়ে শিগগিরই এসব প্রণোদনা বিতরণ কার্যক্রম শুরু হবে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত বাজেট কৃষি পুনর্বাসন সহায়তা খাত থেকে এ প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। মাঠপর্যায়ে এসব প্রণোদনা বিতরণ কার্যক্রম চলমান আছে। এরই মধ্যে গড়ে প্রায় ৫০ শতাংশ প্রণোদনা বিতরণ শেষ হয়েছে।
খাদ্য সংকট নিয়ে ইতিমধ্যেই সতর্ক বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, আগামী বছর বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকট ও দুর্ভিক্ষের বড় ধরনের আশঙ্কা রয়েছে। বাংলাদেশে এমন পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে। দেশের পতিত আবাদ জমির প্রতিটি ইঞ্চি কাজে লাগাতে হবে খাদ্য উৎপাদনের জন্য।
বাংলাদেশ বিজনেস সামিটের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগকারীদের কাছে বাংলাদেশ, দেশের সম্ভাবনাময় খাত এবং ব্যবসার পরিবেশ তুলে ধরতে চায় ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। সেই লক্ষ্যেই ঢেলে সাজানো হয়েছে আসন্ন বাংলাদেশ বিজনেস সামিটকে। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকায় নিযুক্ত থাই রাষ্ট্রদূত মাকাওয়াদি সুমিতমোরের সঙ্গে এফবিসিসিআই কার্যালয়ে এক সৌজন্য সাক্ষাতে এ মন্তব্য করেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, হাই-টেক পণ্য উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ। থাইল্যান্ড ইতিমধ্যেই এই সেক্টরে বিশেষ করে অটোমোবাইলে ভালো সুনাম অর্জন করেছে। তাই, উভয় দেশের জন্যই এই সেক্টরে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। থাই বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য এটি একটি ভালো সুযোগ হতে পারে উল্লেখ করে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড উভয়ই কৃষি ও কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণে একসঙ্গে কাজ করতে পারে।
আগামী ১১-১৩ মার্চ ঢাকায় অনুষ্ঠেয় বাংলাদেশ বিজনেস সামিটে যোগ দিতে থাইল্যান্ডের সরকারি কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের আমন্ত্রণ জানান এফবিসিআই সভাপতি।
বাংলাদেশে নিযুক্ত থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত মাকাওয়াদি সুমিতমোর বাংলাদেশ বিজনেস সামিট আয়োজনের জন্য এফবিসিসিআইকে অভিনন্দন জানান। থাই রাষ্ট্রদূত এ সময় এফবিসিসিআই সভাপতির নেতৃত্ব, কঠোর পরিশ্রম এবং নিষ্ঠার প্রশংসা করেন।
রাষ্ট্রদূত মাকাওয়াদি সুমিতমোর বলেন, গত বছর আমরা বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছরপূর্তি উদযাপন করেছি। দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা এখন নতুন উচ্চতায়। আগামী মার্চে থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্র সচিবের নেতৃত্বে একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর করবে বলেও জানান থাই রাষ্ট্রদূত।
এফবিসিসিআই সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, সহ-সভাপতি এম এ মোমেন, মো. আমিন হেলালী, মো. হাবিব উল্লাহ ডন, সালাউদ্দিন আলমগীর, সাবেক রাষ্ট্রদূত মাসুদ মান্নান, মিনিস্টার কাউন্সেলর এবং থাই দূতাবাসের মিশনের ডেপুটি হেড প্যানম থংপ্রায়ুন, এফবিসিসিআই পরিচালক মো. নাসির মজুমদার, মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজুল হক প্রমুখ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
কোনো শিল্প উদ্যোগ যেন রুগ্ণ হয়ে না পড়ে সে জন্য দীর্ঘমেয়াদি শিল্প ঋণ নিশ্চিতকরণের আহ্বান জানিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)। গতকাল মঙ্গলবার এফবিসিসিআইয়ের ‘স্ট্যান্ডিং কমিটি অন রিহ্যাবিলিটেশন অব সিক ইন্ডাস্ট্রিজ’র দ্বিতীয় সভায় এ আহ্বান জানান এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘ব্যাংক ঋণ নিয়ে একটি কারখানা স্থাপন করতে গেলে দেখা যায়, কাজ শেষ হওয়ার আগেই ঋণের মেয়াদ শেষ। এতে করে একজন উদ্যোক্তা তার কারখানায় উৎপাদন শুরুর আগেই ঋণখেলাপিতে পরিণত হন। দীর্ঘমেয়াদি ঋণ ব্যবস্থা না থাকায় শিল্পপ্রতিষ্ঠানটি রুগ্ণ হয়ে পড়ে।’
একবার কোনো উদ্যোক্তা বা প্রতিষ্ঠান ঋণখেলাপি হয়ে পড়লে, প্রক্রিয়াগত জটিলতার কারণে তার ঋণ হিসাব সহজে অবসায়ন করা সম্ভব হয় না বলে জানান ব্যবসায়ী নেতারা। এমন অবস্থায়, রুগ্ণ শিল্পের পুনর্বাসন এবং নিষ্পত্তিকরণ প্রক্রিয়া সহজীকরণে নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন মো. জসিম উদ্দিন। এ বিষয়ে শিল্প উদ্যোক্তাদের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা তৈরির পরামর্শ দেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
সভায় এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু জানান, বহু আগে থেকেই নন টেক্সটাইল খাতের শিল্পগুলোর নিষ্পত্তিকরণ হচ্ছিল না। এ ব্যাপারে এফবিসিসিআই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছে।
এফবিসিসিআইয়ের সহসভাপতি এমএ মোমেন বলেন, ‘দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে রুগ্ণ শিল্পকে টেনে তুলতেই হবে। এ ক্ষেত্রে দেশের ব্যাংকগুলোই বড় ভূমিকা রাখতে পারে।’
সভায় জানানো হয়, রুগ্ণ শিল্পের ঋণ হিসাব অবসায়নে ইতিমধ্যে দুটি সার্কুলার জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সার্কুলারগুলোর যথাযথ বাস্তবায়ন চান এফবিসিসিআইর সাবেক পরিচালক এবং কমিটির সদস্য মাকসুদুর রহমান।
রুগ্ণ শিল্পের নিষ্পত্তিকরণ প্রক্রিয়ার জটিলতা দূর করতে দ্রুত একটি ‘রুগ্ণ শিল্প নীতিমালা’ প্রণয়ন জরুরি বলে জানান কমিটির চেয়ারম্যান সাদেক উল্ল্যাহ চৌধুরী।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী, সালাউদ্দিন আলমগীর, মো. হাবীব উল্লাহ ডন, পরিচালক হাসিনা নেওয়াজ, এমজিআর নাসির মজুমদার, সাবেক পরিচালক, কমিটির কো-চেয়ারম্যান এবং সদস্যরা।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ১৩ ধরনের জ্বালানি তেল ও পেট্রোলিয়াম পণ্যের ওপর থেকে বিদ্যমান ৫ শতাংশ আগাম কর প্রত্যাহারের পরিকল্পনা করেছে সরকার। অন্যদিকে উৎপাদন পর্যায়ে তরল করা পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করা হয়েছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে পেট্রোল, অকটেন ও ডিজেল আমদানিতে প্রতি লিটারে ১৩ দশমিক ৭৫ টাকা করে শুল্ক আরোপ করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ ছাড়া অন্যান্য জ্বালানি জেট ফুয়েল, ফার্নেস অয়েল, লুব বেইজ অয়েল, কেরোসিনের ক্ষেত্রে প্রতি টনে ২৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এত দিন এসব জ্বালানি তেল আমদানির ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ ছিল।
আমদানি করা পণ্যের যথাযথ মূল্য নির্ধারণে ২০২২-২৩ অর্থবছরে পণ্যের ট্যারিফ মূল্য ও ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে পেট্রোলিয়াম ও এর উপজাত দুটি হেডিংয়ের আওতায় ১২টি এইচএস কোডের বিপরীতে ট্যারিফ মূল্য এবং একটি হেডিংয়ের আওতায় একটি এইচএস কোডের বিপরীতে ন্যূনতম মূল্য বহাল আছে।
পেট্রোলিয়াম ও এর উপজাতগুলোর মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিনিয়ত ওঠানামা করার কারণে অতি প্রয়োজনীয় এই পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে এ সুপারিশ করা হয়েছে।
এলপিজি সিলিন্ডারের বিষয়ে বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, এলপিজি সিলিন্ডার তৈরির কাঁচামাল ইস্পাতের পাত (স্টিল শিট) ও ওয়েল্ডিংয়ের তার আমদানির করছাড় সুবিধা তুলে নেওয়া হয়েছে। এলপিজি সিলিন্ডার উৎপাদনকারীরা কাঁচামালে শুল্ককর ছাড় ১২ বছর ধরে ভোগ করে আসছে। তাই রাজস্ব আহরণের স্বার্থে শুধু দুটি উপকরণে ছাড় তুলে নেওয়া হয়েছে। তবে অন্যান্য করছাড়ের মেয়াদ ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বহাল থাকবে বলে।
পেট্রোলিয়াম তেল এবং বিটুমিনাস খনিজ থেকে প্রাপ্ত তেলের ওপর বিদ্যমান শুল্ক ৫ শতাংশ। নতুন বাজেট অনুযায়ী এসবের প্রতি ব্যারেলের দাম ১ হাজার ১১৭ টাকা (লিটার প্রতি ৭.০২ টাকা) হতে পারে। প্রতি টন ফার্নেস অয়েলের সুনির্দিষ্ট শুল্ক ৯ হাজার ১০৮ টাকা (লিটার প্রতি ৯.১০ টাকা) করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।