
সিঙ্গার বাংলাদেশ ভোক্তাদের দ্রুত বিক্রয়োত্তর সেবা নিশ্চিত করতে ভৈরবে ১৭তম আঞ্চলিক সার্ভিস সেন্টার উদ্বোধন করেছে। এই সার্ভিস সেন্টারটি মূলত ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ ও ভৈরব জেলার ভোক্তাদের বিক্রয়োত্তর সেবা নিশ্চিত করবে। সিঙ্গার বাংলাদেশের এমডি ও সিইও এম.এইচ.এম ফাইরোজ আনুষ্ঠানিকভাবে আঞ্চলিক সার্ভিস সেন্টার উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের সময় উপস্থিত ছিলেন সেলস ডিরেক্টর কাজী রফিকুল ইসলাম, হেড অব কনজিউমার সার্ভিস আদনান আফজাল এবং অন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। গ্রাহকদের দ্রুত এবং ঝামেলাবিহীন সেবা প্রদানের লক্ষ্যে তাদের কার্যক্রমে আরও দুটি নতুন সার্ভিস ভ্যান যুক্ত করেছে। বিজ্ঞপ্তি
মাছ চাষে বিশ্বে বাংলাদেশের আলাদা সুনাম আছে। মাছ চাষকে দ্বিতীয় মূল্যবান কৃষি সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করে সরকার। দেশের মোট মাছ উৎপাদনের প্রায় ৫৭ শতাংশই আসে চাষ থেকে। এ খাতের উন্নয়ন ও জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় মৎস্য সম্পদের টেকসই ব্যবস্থাপনার অভিজ্ঞতা আসিয়ানের কাছ থেকে নেবে বাংলাদেশ। এজন্য ‘মৎস্য চাষ ও মৎস্য খাত আসিয়ান বাংলাদেশের সহযোগিতা (টিপিপি)’ শীর্ষক একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে মৎস্য অধিদপ্তর।
প্রকল্পের উদ্দেশ্য হিসেবে মৎস অধিদপ্তর জানিয়েছে, উত্তম মৎস্য চাষ অনুশীলন (গ্যাপ), ক্লাস্টার একোয়া কালচার ফার্মিং বাস্তবায়ন (এএমএস) এর উদ্দেশ্য। পাশাপাশি সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদের টেকসই ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু পরিবর্তনে মৎস্য খাতে নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথ এশিয়ান নেশন্সের (আসিয়ান) কাছ থেকে সহযোগিতা নেবে বাংলাদেশ। আসিয়ানভুক্ত দেশ হতে হলে আগে সেক্টরাল ডেভেলপমেন্ট পার্টনার হতে হয়। এ প্রকল্পটি সেই উদ্দেশ্যেই নেওয়া।
এর মাধ্যমে মাছের রোগপ্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা শিখবে মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। তাছাড়া মাছসহ বিভিন্ন অর্থনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ মৎস্যবিষয়ক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা আছে এ প্রকল্পে।
বাংলাদেশ এখনো আসিয়ানের সদস্য হয়নি। এ জোটের সদস্য হওয়ার জন্য বেশ কিছু শর্ত পরিপালন করতে হয়। তবে বাংলাদেশকে আইসিটি ও মৎস্য খাত উন্নয়নের জন্য শর্ত দিয়েছিল তারা। তাই আসিয়ান সচিবালয়ের সঙ্গে শুরুতে এসব ‘সেক্টরাল ডেভেলপমেন্ট পার্টনার’ হিসেবে কাজ করবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৪ সাল থেকে আসিয়ানের সদস্য হওয়ার জন্য শর্ত পরিপালনের নির্দেশনা দিয়ে আসছিলেন। এরই অংশ হিসেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে পরামর্শের ভিত্তিতে এ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এ প্রকল্পে আঞ্চলিক সম্পর্ক উন্নয়নের কাজ করাই মূল উদ্দেশ্য বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রকল্প প্রস্তাবে দেখা যায়, এ প্রকল্পটি ২ কোটি ৮৭ লাখ টাকা ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে। সময় প্রস্তাব করা হয়েছে চলতি ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। পুরো ব্যয়ই সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে হবে। অর্থনৈতিক সংকটেও এ প্রকল্পেও মাছ চাষ শিখতে বিদেশ ভ্রমণের আবদার করেছে সংস্থাটি। এতে খরচ হবে প্রায় ৬৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রকল্পের মোট ব্যয়ের ২২ শতাংশই খরচ হবে বিদেশে প্রশিক্ষণে। তবে কতজন এ প্রকল্পের আওতায় কত দিনের প্রশিক্ষণে বিদেশ যেতে চান তা উল্লেখ করা হয়নি প্রকল্প প্রস্তাবে। পরিকল্পনা কমিশনের কাছে বিষয়টি স্পষ্ট না হওয়ায় তার ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।
কমিশনের একজন কর্মকর্তা জানান, এ মুহূর্তে বিদেশ ভ্রমণের বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হলেও অনেক মন্ত্রণালয়ই তাদের প্রকল্পে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রাখেন।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মৎস্য অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেন, মূলত আসিয়ানের সঙ্গে সেক্টরাল ডেভেলপমেন্ট পার্টনার হওয়াই এর মূল উদ্দেশ্য। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ নিয়ে কাজ করছে। আর পরিকল্পনা কমিশন যেসব মতামত দিয়েছে তা বিবেচনা করছে মন্ত্রণালয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও যৌথভাবে কাজ করবে।
এ প্রকল্পের মূল কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে আসিয়ান সদস্য রাষ্ট্র ও বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে দুটি কর্মশালা, বিদেশে প্রশিক্ষণ ও প্রতিবেদন জমা।
প্রকল্প প্রস্তাবে স্টক টেকিং প্রতিবেদন প্রণয়নের জন্য ৩ পরামর্শকের প্রস্তাব করা হয়েছে। এর জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। তিন পরামর্শক ও ব্যয়ের যৌক্তিকতা জানতে চেয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। মৎস্য অধিদপ্তর বলছে, কমিশন যে মতামত দিয়েছে তা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রকল্প প্রস্তাব আবার প্রস্তুত করা হবে।
বিশ্বের মোট মৎস্য উৎপাদনের ২০ শতাংশ আসিয়ান অঞ্চলে। ২০২০ সালে এ অঞ্চলের দেশগুলো এ খাত থেকে ১১ বিলিয়ন ডলারের বেশি রপ্তানি আয় করেছে। বাংলাদেশে মোট জনগণের প্রোটিন চাহিদার ৬০ শতাংশ সরবরাহ হয় দেশীয় উৎপাদন থেকে।
এএমএস এবং বাংলাদেশ উভয়েরই বিশ্বের সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় সামুদ্রিক ইকোসিস্টেম রয়েছে। আসিয়ান অঞ্চলে বিশ্বের ৮০০টি রিফ বিল্ডিং প্রজাতির মধ্যে ৬০০টিরও বেশি আছে। এ অঞ্চলে ১ হাজার ৬৫০টিরও বেশি মাছের প্রজাতি রেকর্ড করা হয়েছে। বাংলাদেশের বঙ্গোপসাগর ৬৪টি বৃহৎ সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের একটি। আসিয়ান সদস্য হলে এ বৃহৎ সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র কাজে লাগাতে পারবে বাংলাদেশ।
এর আগে বাংলাদেশের মৎস্য খাতে সম্ভাব্য সহযোগিতা পেতে আসিয়ান সচিবালয় ও বাংলাদেশের মধ্যে পারস্পরিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। আসিয়ান সচিবালয় এ লক্ষ্যে আসিয়ান-বাংলাদেশ কো-অপারেশন অব এগ্রিকালচার অ্যান্ড ফিশারিজ শীর্ষক একটি খসড়া তৈরি করেছিল। এ খসড়ার ভিত্তিতেই এ প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে।
আসিয়ান দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দশটি রাষ্ট্র নিয়ে গঠিত একটি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্থা। এটি ১৯৬৭ সালের ৮ আগস্ট ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ডের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়। পরে, ব্রুনেই, কম্বোডিয়া, লাওস, মিয়ানমার এবং ভিয়েতনাম সদস্যপদ লাভ করে।
সম্প্রতি দেশের সবচেয়ে বড় এমএফএস সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশের সঙ্গে পার্টনারশিপ করেছে ডিজিটাল বাংলাদেশের কানেক্টিভিটি পার্টনার গ্রামীণফোন। এর মাধ্যমে গ্রামীণফোন বিকাশকে নিজেদের পছন্দের পেমেন্ট পার্টনার হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। এখন গ্রামীণফোনের গ্রাহকরা সহজেই মাইজিপি অ্যাপ থেকে একটি ট্যাপে বিকাশের মাধ্যমে দ্রুত ও স্বাচ্ছন্দ্যদায়ক উপায়ে পেমেন্ট সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর জিপিহাউজে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে নতুন এই সেবার উদ্বোধন করেন গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান এবং বিকাশের প্রধান নির্বাহী কামাল কাদীর। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন গ্রামীণফোনের চিফ ডিজিটাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজি অফিসার সোলায়মান আলম ও চিফ মার্কেটিং অফিসার মোহাম্মদ সাজ্জাদ হাসিব এবং বিকাশের চিফ প্রোডাক্ট অ্যান্ড টেকনোলজি অফিসার মোহাম্মদ আজমল হুদা ও প্রতিষ্ঠানটির চিফ কমার্শিয়াল অফিসার আলী আহম্মেদসহ উভয় প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ। বিজ্ঞপ্তি
সাউথইস্ট ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ আবিদুর রহমান চৌধুরী ও মো. মাছুম উদ্দিন খানকে ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) হিসেবে পদোন্নতি দিয়েছে।
পদোন্নতির আগে আবিদুর রহমান চৌধুরী একই ব্যাংকের প্রিন্সিপাল শাখায় সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট (এসইভিপি) ও শাখা প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি ফ্রাঙ্কফুর্ট স্কুল ফাইন্যান্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট থেকে ঝুঁকি (রিস্ক) ব্যবস্থাপনার একজন প্রত্যয়িত বিশেষজ্ঞ, যিনি একই ব্যাংকের করপোরেট শাখার ব্যবস্থাপকসহ বিভিন্ন পদে ২৬ বছরেরও বেশি সময় সেবা দিয়েছেন।
আবিদুর রহমান ১৯৯৬ সালে সাউথইস্ট ব্যাংকে প্রবেশনারি অফিসার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন।
ডিএমডি পদে পদোন্নতি পাওয়া মো. মাছুম উদ্দিন খান এর আগে সাউথইস্ট ব্যাংকের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট (এসইভিপি) ও প্রধান কার্যালয়ের ক্রেডিট রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ডিভিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি ১৯৯৬ সালে অগ্রণী ব্যাংকে যোগদানের মাধ্যমে ব্যাংকিং সেক্টরে কর্মজীবন শুরু করেন। পরে তিনি বেসিক ব্যাংক ও দি সিটি ব্যাংকে গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৯ সালে সাউথইস্ট ব্যাংকে যোগদান করেন তিনি।
সুদীর্ঘ ২৬ বছরের কর্মময় জীবনে তিনি প্রধান কার্যালয়ের ক্রেডিট রিস্ক ম্যানেজমেন্ট, ফরেন ট্রেড, মাইক্রো ক্রেডিট, স্পেশাল অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদি বিভাগের প্রধান হিসেবে এবং শাখা ব্যবস্থাপনায় অত্যন্ত দক্ষতার স¦াক্ষর রাখেন। বিজ্ঞপ্তি
করোনাভাইরাস মহামারীর ক্ষতি সামলে উঠতে ক্ষতিগ্রস্ত সিএমএসএমই খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বল্পসুদে ঋণ দিতে ২ হাজার ৫২০ কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন স্কিম চালু করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আগে শুধু চলতি মূলধন হিসেবে এ ঋণ দেওয়া হতো। এখন থেকে কটেজ, মাইক্রো ও স্মল প্রতিষ্ঠানগুলোকে চলতি মূলধনের পাশাপাশি তিন বছর মেয়াদি টার্ম লোন হিসেবে এই ঋণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বিদ্যমান অবকাঠামো সংস্কার ও সাজসজ্জার পাশাপাশি সিএমএসএমই প্রতিষ্ঠানের স্বল্প ও মধ্যমেয়াদি সম্পদ ক্রয়ের জন্য পুনঃঅর্থায়নকারী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রদেয় পুনঃঅর্থায়ন সহায়তা চলতি মূলধনের পরিবর্তে মেয়াদি ঋণ হিসেবে বিবেচিত হবে। যার মেয়াদ হবে তিন বছর। পুনঃঅর্থায়নের তারিখের এক বছর পর থেকে ঋণের টাকা সমন্বয় করা হবে।
এর আগে ২০২১ সালে করোনাভাইরাস মহামারীর ক্ষতি সামলে উঠতে বাংলাদেশ ব্যাংক শিল্প ও মাঝারি শিল্প (সিএমএসএমই) খাতের উদ্যোক্তাদের জন্য ৩০ কোটি ডলার বা ২ হাজার ৫২০ কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল চালু করে। এ ঋণের অর্থের জোগান দেয় এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি)। এই তহবিল থেকে উদ্যোক্তাদের সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ সুদে ঋণ দেওয়া হবে। তহবিলটির নাম দেওয়া হয় ‘কভিড-১৯ ইমার্জেন্সি অ্যান্ড ক্রাইসিস রেসপন্স ফ্যাসিলিটি প্রজেক্ট (সিইসিআরএফপি)’।
ওই সময় নীতিমালায় বলা হয়েছে, সিএমএসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের জন্য সরকার ২০ হাজার কোটি টাকার যে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে, ওই নিয়মেই এই প্যাকেজ বাস্তবায়ন করা হবে।
এর আগে ২০২১ সালের ৩১ মে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসের প্রকোপ মোকাবিলায় সরকার এখন পর্যন্ত ১ লাখ ২৮ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা প্রণোদনা তহবিল ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে ৯টি তহবিলের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক সরাসরি সম্পৃক্ত। তবে মোট ১২টি তহবিল বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ ব্যাংক, যার আকার প্রায় এক লাখ কোটি টাকা।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ গত বৃহস্পতিবার এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সেলিম উদ্দিনকে বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইনান্স করপোরেশনের (বিএইচবিএফসি) পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক ও চেয়ারম্যান হিসেবে পুনর্নিয়োগ করেছে। দেশের বিশিষ্ট এ হিসাববিজ্ঞানীর এ পুনর্নিয়োগ বর্তমান নিয়োগের মেয়াদ সমাপ্তির পর থেকে কার্যকর হবে। আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি বর্তমান নিয়োগের মেয়াদ সমাপ্ত হবে।
দ্য ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি)-এর সহসভাপতি সেলিম উদ্দিন ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। ইতিপূর্বে তিনি রূপালী ব্যাংকের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া, তিনি রূপালী ইনভেস্টমেন্ট এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।
নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ১৩ ধরনের জ্বালানি তেল ও পেট্রোলিয়াম পণ্যের ওপর থেকে বিদ্যমান ৫ শতাংশ আগাম কর প্রত্যাহারের পরিকল্পনা করেছে সরকার। অন্যদিকে উৎপাদন পর্যায়ে তরল করা পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করা হয়েছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে পেট্রোল, অকটেন ও ডিজেল আমদানিতে প্রতি লিটারে ১৩ দশমিক ৭৫ টাকা করে শুল্ক আরোপ করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ ছাড়া অন্যান্য জ্বালানি জেট ফুয়েল, ফার্নেস অয়েল, লুব বেইজ অয়েল, কেরোসিনের ক্ষেত্রে প্রতি টনে ২৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এত দিন এসব জ্বালানি তেল আমদানির ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ ছিল।
আমদানি করা পণ্যের যথাযথ মূল্য নির্ধারণে ২০২২-২৩ অর্থবছরে পণ্যের ট্যারিফ মূল্য ও ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে পেট্রোলিয়াম ও এর উপজাত দুটি হেডিংয়ের আওতায় ১২টি এইচএস কোডের বিপরীতে ট্যারিফ মূল্য এবং একটি হেডিংয়ের আওতায় একটি এইচএস কোডের বিপরীতে ন্যূনতম মূল্য বহাল আছে।
পেট্রোলিয়াম ও এর উপজাতগুলোর মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিনিয়ত ওঠানামা করার কারণে অতি প্রয়োজনীয় এই পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে এ সুপারিশ করা হয়েছে।
এলপিজি সিলিন্ডারের বিষয়ে বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, এলপিজি সিলিন্ডার তৈরির কাঁচামাল ইস্পাতের পাত (স্টিল শিট) ও ওয়েল্ডিংয়ের তার আমদানির করছাড় সুবিধা তুলে নেওয়া হয়েছে। এলপিজি সিলিন্ডার উৎপাদনকারীরা কাঁচামালে শুল্ককর ছাড় ১২ বছর ধরে ভোগ করে আসছে। তাই রাজস্ব আহরণের স্বার্থে শুধু দুটি উপকরণে ছাড় তুলে নেওয়া হয়েছে। তবে অন্যান্য করছাড়ের মেয়াদ ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বহাল থাকবে বলে।
পেট্রোলিয়াম তেল এবং বিটুমিনাস খনিজ থেকে প্রাপ্ত তেলের ওপর বিদ্যমান শুল্ক ৫ শতাংশ। নতুন বাজেট অনুযায়ী এসবের প্রতি ব্যারেলের দাম ১ হাজার ১১৭ টাকা (লিটার প্রতি ৭.০২ টাকা) হতে পারে। প্রতি টন ফার্নেস অয়েলের সুনির্দিষ্ট শুল্ক ৯ হাজার ১০৮ টাকা (লিটার প্রতি ৯.১০ টাকা) করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।