
আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা প্রার্থীরা ঋণখেলাপি কি না তা খতিয়ে দেখতে নির্বাচন কমিশনের কাছে প্রার্থীদের তথ্য চেয়ে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সকল রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নির্দিষ্ট ছকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন (সিআইবি) ব্যুরোকে এ তথ্য দিতে বলা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে খেলাপিদের তথ্য চেয়ে চিঠি দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতেই মনোনয়নপত্র দাখিলকারী সব প্রার্থীর তথ্য চাওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
সিআইবির যুগ্ম পরিচালক মো. শহিদুল ইসলামের পাঠানো এ সংক্রান্ত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, আসন্ন বিভিন্ন নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলকারী প্রার্থীদের ঋণখেলাপি সংক্রান্ত তথ্য পাঠানোর জন্য সব প্রার্থীর পূর্ণ নাম, পিতার নাম, মাতার নাম, স্বামীর নাম (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) বাংলা ও ইংরেজিতে, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, করদাতা শনাক্তকরণ সংখ্যা, জন্ম তারিখ, স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা সংবলিত তথ্য সংযুক্ত ছক অনুযায়ী যথাযথভাবে পূরণ করে রিটার্নিং অফিসার/সহকারী রিটার্নিং অফিসারের সিল, স্বাক্ষর ও ফোন (মোবাইল) নম্বর প্রদানপূর্বক তা ই-মেইলের মাধ্যমে অত্র ব্যুরোতে প্রেরণের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আপনাদের বিশেষভাবে অনুরোধ করা যাচ্ছে।
পূর্ণাঙ্গ তথ্যপ্রাপ্তি সাপেক্ষে প্রার্থীদের ঋণখেলাপি সংক্রান্ত তথ্য আপনাদের কাছে পাঠানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আগামী ১৬ মার্চ ৫৬টি ও ২০ মার্চ ছয়টি ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ ও উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া ১৬ মার্চ ১১টি ও ২০ মার্চ একটি পৌরসভার বিভিন্ন পদে অনুষ্ঠিত হবে উপনির্বাচন।
পরিবেশবান্ধব ইলেকট্রিক মোটরযান আমদানিতে শুল্ক ছাড়ের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ-চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিসিসিসিআই)। অন্যদিকে আরেক ব্যবসায়ী সংগঠন ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (আইবিসিসিআই) থেকেও তিন চাকাবিশিষ্ট সিএনজি, এলএনজি, এলপিজিচালিত গাড়ি উৎপাদনকারী শিল্পের বিকাশে রাজস্ব ছাড়ের দাবি করেছে। প্রযুক্তিসংশ্লিষ্ট ও অপ্রচলিত পণ্য উৎপাদনের জন্য ১২ বছরের কর রেয়াত সুবিধা প্রদানের পাশাপাশি নির্মাণসামগ্রী, মূলধনী যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ, অগ্নিনিরাপত্তা সংক্রান্ত সরঞ্জাম, সোলার সিস্টেম আমদানিতে শুল্কছাড় চেয়েছে বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা)।
গতকাল রবিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত প্রাক-বাজেট সভায় বিসিসিসিআই, আইবিসিসিআই ও বেপজার পক্ষ থেকে এনবিআর চেয়ারম্যানের কাছে এসব লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়েছে।
গতকাল বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা), বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্ট (বিল্ড) ও বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষও তাদের লিখিত বক্তব্য জমা দেয়। এ সময় এনবিআর চেয়ারম্যান সভাপতিত্ব করেন। এনবিআর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বিসিসিসিআইর প্রস্তাবনায় আছে, ইলেকট্রিক মোটরসাইকেল, ইলেকট্রিক মোটরযান (প্রাইভেট কার, বাস, ট্রাক, ফর্কলিফ্ট) আমদানিতে উৎসাহ দেওয়ার জন্য শুল্কমুক্ত অথবা শুল্ক কমিয়ে আনা জরুরি। এইচএস কোড সঠিকভাবে নিরূপণ করে মোটরযানগুলোকে সিবিইউ এবং সিকেডি আলাদা করা প্রয়োজন। এ ছাড়া সিকেডির কন্ডিশন অনুযায়ী, সিবিইউর পার্থক্য ২৫ শতাংশ করা এখন সময়ের দাবি।
আইবিসিসিআইর প্রস্তাবে বলা হয়েছে, তিন চাকাবিশিষ্ট সিএনজি, এলএনজি, এলপিজিচালিত গাড়ি উৎপাদনকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠানের বিকাশ ও প্রসারের লক্ষ্যে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে কিছু শর্ত পালন করে উপকরণ আমদানি করতে হয়। শর্তের মধ্যে ছিল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব কারখানায় চেসিস, রিয়ারবডি, শক এবজরবার, মাফলার উৎপাদনের সক্ষমতা থাকতে হবে। এ শর্ত শিথিল বা সংশোধন করে মূসক, শুল্ক ও করের রেয়াতি সুবিধা প্রদানের দাবি করা হয়েছে।
এ সময় সভাপতির বক্তব্যে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, আমরা চাই আপনারা সহজে ব্যবসা করেন, কর দেন। কিন্তু আপনাদের দাবি থাকে কর মওকুফ করে দেওয়া হোক। মধ্যম ও উন্নত দেশের মানুষজন পুরোপুরি কর দেয় বিধায় তারা উন্নত। যেহেতু আমরা মধ্যম আয়ের দেশে যাচ্ছি আপনাদের এই কর মওকুফের কালচার থেকে বের হয়ে আসার চেষ্টা থাকতে হবে।
তিনি বলেন, অনেক খাতকে আমরা অ্যাসেম্বলিংয়ের জন্য সাপোর্ট দিয়েছি, যাতে তারা ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের দিকে যেতে পারে। কিন্তু তারা এখনো অ্যাসেম্বলিংই করে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে আমাদের লক্ষ্য পূরণ হয়নি। এই সাপোর্টের কোনো মানে হয় না।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশ এত বিপদে নেই যে, বিদেশি বিনিয়োগের জন্য আমাদের এখনো উজাড় করে দিতে হবে। একসময় রপ্তানির জন্য অনেক কিছুই করেছি, বিদেশিদের খুশি করার চেষ্টা করেছি। এখন আমরা সেই অবস্থায় নেই। এখনো যদি আগের মানসিকতা রাখি, তাহলে উন্নত দেশ হব কী করে। এখন আমরা আগের সিদ্ধান্তগুলো পুনর্বিবেচনা করব, দেখব যে কোথায় কোথায় আর সাপোর্ট দরকার নেই।
তিনি বলেন, লিখিত প্রস্তাবনাগুলো আমরা খুবই গুরুত্বের সঙ্গে পর্যালোচনা করি, তবে সেই অর্থে বিবেচনা করতে পারি না। আপনারা যখন কথা বলেন, শুধু নিজের অবস্থান থেকে কথা বলেন। কখনো এনবিআরের অবস্থানটা বুঝতে চান না। আমরা চাই দেশেই মানসম্মত পণ্য উৎপাদন হোক। বিদেশ থেকে জাহাজ ভরে পণ্য আসতে থাকবে, আমরা সাপোর্ট দিয়ে যাব। এমনটা হতে পারে না। এনবিআর সে রকম ভাবে না।
গতকাল নারী উদ্যোক্তাদের নিয়ে কাজ করা সংগঠন (ওয়েন্ড) নারীদের জন্য করমুক্ত আয়সীমা ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা থেকে ৭ লাখে উন্নীত করার প্রস্তাব দিয়েছে।
বেজা, বিডা, বেপজা ও বিল্ডের পক্ষ থেকে শুল্কমুক্ত সুবিধায় ইপিজেডে নির্মাণসামগ্রী আমদানি, শুল্কমুক্ত সুবিধায় মূলধনী যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ আমদানির সুবিধা, কাঁচামাল ও খুচরা যন্ত্রাংশের ওপর অগ্রিম প্রত্যাহার, শুল্কমুক্ত সুবিধায় অফিস চেয়ারসহ উৎপাদন কাজে ব্যবহৃত প্লাস্টিক ক্যারেট, ফ্যান, ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেকিং সিস্টেম আমদানির ওপর সুবিধা প্রদানের দাবি জানানো হয়।
বিডা থেকে অনাবাসিক ব্যক্তির আয়ের ওপর প্রযোজ্য উৎসে কর কর্তনের হার ২০ শতাংশের পরিবর্তে ৫ থেকে ১০ শতাংশ করার সুপারিশ জানিয়েছে। একই সঙ্গে ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) ও পয়েন্ট অব সেলস মেশিন (পস) ট্র্যাকিংয়ের সুপারিশ জানানো হয়েছে। কাঁচামাল ও খুচরা যন্ত্রাংশের ওপর আগাম কর প্রতি বছর ১ শতাংশ হারে কমিয়ে তা চূড়ান্তভাবে শূন্য শতাংশ করা ও সবক্ষেত্রে আগাম করহার ৩ শতাংশ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে সভায়। সবুজ শিল্প তৈরির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সব যন্ত্রপাতি শুল্ক ও ভ্যাটমুক্ত আমদানি সুবিধা প্রদান, ইপিজেডের শিল্পপ্রতিষ্ঠানের জন্য কর রেয়াত সুবিধাও চেয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
অনলাইনে কেনাকাটায় গ্রাহকের ভোগান্তি কমাতে এগিয়ে এসেছে সরকার। এ খাতের ভোক্তাদের নানা ধরনের অভিযোগ নিষ্পত্তিতে একটি কেন্দ্রীয় প্ল্যাটফর্ম খোলা হয়েছে। এখন থেকে অনলাইন কেনাকাটায় কোনো ভোক্তা নিজেকে প্রতারিত মনে করলে ‘সেন্ট্রাল কমপ্লেইন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ নামের এই প্ল্যাটফর্মে অভিযোগ জানাতে পারবেন। এরপর যাচাই-বাছাইয়ে সেই অভিযোগের প্রতিকার মিলবে বলে জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
অনলাইনে সিসিএমএস ডটগভ ডটবিডি (পপসং.মড়া.নফ) পোর্টালে গিয়ে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া মেনে একজন ভোক্তা ই-কমার্স সংক্রান্ত যেকোনো ‘যৌক্তিক’ অভিযোগ উপস্থাপন করতে পারবেন। গতকাল রবিবার সচিবালয়ে ‘সেন্ট্রাল কমপ্লেইন সিস্টেম’ উদ্বোধন করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। এ সময় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকও উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় তারা জানান, হয়রানিমূলক অভিযোগ করলেও গ্রাহককে সহজে চিহ্নিতও করা যাবে। এছাড়া অভিযোগ নিষ্পত্তির অগ্রগতি এসএমএস ও ইমেইলের মাধ্যমে অভিযোগকারীকে জানিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে এ প্ল্যাটফর্মে।
বর্তমান দুনিয়ায় সেন্ট্রাল কমপ্লেইন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সিসিএমএস) ‘দরকার’ মন্তব্য করে টিপু মুনশি বলেন, ‘সময়োপযোগী পদক্ষেপ হলো ’সিসিএমএস’। মানুষ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে যাতে না ঠকে, ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেজন্য এই সিস্টেম দরকার। এটা হওয়ায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের খুব উপকার হয়েছে।’
আইসিটি মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞ দল এ ধরনের ডিজিটাল সিস্টেম চালুতে মূল ভূমিকা রেখেছে বলে জানান বাণিজ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ই-কমার্স খাতে গ্রাহক হয়রানির অভিযোগের কারণে একসময় ‘রাতে ঘুমাতে পারতেন না’ তিনি।
তিনি বলেন, ‘এক সময় অনেক ঝামেলা গেছে। অনেক অভিযোগ, ফোন, অফিসারদের সঙ্গে মিটিং, রাতে ঘুমাতে পারিনি।’
প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন ‘সিসিএমএস’ প্ল্যাটফর্মটির মূল দেখভালকারীর দায়িত্ব ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের। ২০১৮ সালে ই- কমার্স নিয়ে যখন সমস্যা দেখলাম, তখন প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের নির্দেশনায় বেসিস, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ই-ক্যাবসহ সবার সহযোগিতায় ডিজিটাল কর্মাস নীতিমালা করি।’
অনুষ্ঠানে জানান হয়, এটি একটি কেন্দ্রীয় প্ল্যাটফর্ম, যেখানে একজন ভোক্তা ই-কমার্স সংক্রান্ত যেকোনো ‘যৌক্তিক’ অভিযোগ সহজে উপস্থাপন করে প্রতিকার চাইতে পারবেন। প্ল্যাটফর্মটি ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, ই-কমার্স স্টেকহোল্ডার, নথি সিস্টেম এবং বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রি নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সমন্বয় করে পরিচালিত হবে।
প্রতিটি ই-কমার্স সাইটের সঙ্গে সিসিএমএস প্ল্যাটফর্মটি ইন্টিগ্রেটেড থাকবে। ফলে ভোক্তা খুব সহজেই এটি ব্যবহার করে অভিযোগ দিতে পারবেন। ভোক্তাদের মোবাইল নম্বর ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে অভিযোগটি গ্রহণ করা হয়। ফলে কেউ হয়রানিমূলক অভিযোগ করলে ধরা পড়ে যাবেন।
কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বহুলেন সড়ক টানেল বা বঙ্গবন্ধু টানেলের নির্মাণকাজ প্রায় শেষের পথে। খুব শিগগিরই তা চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে। তবে এটি চালু হলে এর সার্ভিস এরিয়ার নিয়ন্ত্রণ কার হাতে থাকবে সেটি নিয়ে এখনো সন্দিহান সংশ্লিষ্টরা। এ নিয়ে নেই কোনো নীতিমালাও। সম্প্রতি চলমান এ প্রকল্পের জন্য বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) করা পরিবীক্ষণ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ তথ্য।
আইএমইডির প্রতিবেদনে বলা হয়, সার্ভিস এরিয়ার অবকাঠামো নির্মাণ সম্পন্ন হলে তা পরিচালনার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত হবে। সার্ভিস এরিয়ার অবকাঠামো পরিচালনা সেতু বিভাগের কাজের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে মনে করছে এ মূল্যায়ন সংস্থাটি। এ ক্ষেত্রে সার্ভিস এরিয়ার অবকাঠামো নির্মাণ শেষ ও ঠিকাদার থেকে গ্রহণের পর এটি কীভাবে পরিচালিত হবে এ বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা গাইডলাইন তৈরি করা আবশ্যক বলেও মনে করে তারা।
কর্ণফুলী টানেলের আনোয়ারা অংশে স্থাপিত টোল প্লাজা থেকে প্রায় আড়াই কিলোমিটার দূরে সাগরের পাড়ে অবস্থিত প্রায় ৬৩ একর জমিতে নির্মাণাধীন সার্ভিস এরিয়ায় হোটেল, মোটেল মেস, কনভেনশন সেন্টার, হেলথ সেন্টার, জাদুঘর, সুইমিং পুল, ব্রিজ, মসজিদ, অভ্যন্তরীণ রাস্তা ইত্যাদির ভৌত অবকাঠামো নির্মাণকাজ পুরোদমে চলছে। তবে এসব স্থাপনায় কোনো সুনির্দিষ্ট পরামর্শক নেই। এটি তৈরি হচ্ছে পরামর্শকের কোনো ভূমিকা ছাড়াই।
আইএমইডি বলছে, নির্মাণকাজ শেষ হলে হোটেল, মোটেল মেস, কনভেনশন সেন্টার, হেলথ সেন্টার, জাদুঘর, সুইমিং পুল, ব্রিজ, মসজিদ, অভ্যন্তরীণ রাস্তা ইত্যাদির ইন্টেরিয়র ডেকোরেশনের জন্য সামঞ্জস্যপূর্ণ ও মানসম্পন্নভাবে উপস্থাপনের লক্ষ্যে স্বীকৃত পরামর্শক থাকা আবশ্যক বলে প্রতীয়মান হয়েছে।
কর্ণফুলী টানেলের সঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগের জন্য আনোয়ারা প্রান্তে টানেলের অ্যাপ্রোচ সড়ক আনোয়ারা-বাঁশখালী পটিয়া সড়কটি চার লেনে উন্নীতকরণের বিষয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদনে।
সেতু কর্তৃপক্ষের বাস্তবায়নাধীন ‘কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বহুলেন সড়ক টানেল নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পটি আইএমইডির মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. জহির রায়হান গত ২২ জানুয়ারি পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন প্রতিবেদনের কপি-পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে আইএমইডি।
এ প্রসঙ্গে প্রকল্প পরিচালক মো. হারুনুর রশীদ চৌধুরী কথা বলতে রাজি হননি।
এ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, প্রকল্পের অধিগ্রহণ ও রিকুইজিশনযোগ্য মোট ৩৭৪ দশমিক ২৬ একর ভূমির মধ্যে এখন পর্যন্ত ৩৬৫ দশমিক ৩৯ একর ভূমি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে প্রকল্পের জন্য একান্তই প্রয়োজন না হলে অবশিষ্ট ১৪ একর ভূমি অধিগ্রহণ না করার জন্য পরামর্শ দিয়েছে এ মূল্যায়ন সংস্থা।
প্রকল্পের আওতায় প্রণীত পুনর্বাসন অ্যাকশন প্ল্যান অনুযায়ী পুনর্বাসন কার্যক্রম অবশিষ্ট থাকলে তা দ্রুত সম্পন্ন করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতেও বলা হয়েছে।
প্রকল্পটির শেষ মুহূর্তে এসে গত ১৭ জানুয়ারি ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে কর্ণফুলী টানেল নির্মাণ প্রকল্পের খরচ ৩১৫ কোটি টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক)। একই সঙ্গে প্রকল্পের মেয়াদও বাড়ানো হয়েছিল। এই সংশোধনীতে ঠিকাদারের বিল পরিশোধসহ বিভিন্ন আমদানি খাতে খরচ বাড়ছে প্রায় আড়াইশ কোটি টাকা।
ফলে সব মিলিয়ে এখন এই প্রকল্পে খরচ হবে ১০ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা। প্রকল্পটি শেষ করার জন্য এর আগে সময় দেওয়া হয়েছিল ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এই মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানো হয়েছে।
টানেল চালু হলে দৈনিক ১৭ হাজার ২৬০ এবং বছরে ৭৬ লাখ যানবাহন চলাচল করতে পারবে। টানেল ঘিরে চট্টগ্রাম, বান্দরবান, কক্সবাজার জেলার যোগাযোগব্যবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন আনা হচ্ছে। পাশাপাশি যোগাযোগব্যবস্থার সুবিধা নিয়ে নতুন শিল্প-কারখানা গড়ে তোলার উদ্যোগও শুরু হয়েছে।
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, মূল টানেলের দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার। এর মধ্যে টানেলের প্রতিটি সুড়ঙ্গের দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার। দুই সুড়ঙ্গে দুটি করে মোট চারটি লেন থাকবে। মূল টানেলের সঙ্গে পশ্চিম ও পূর্ব প্রান্তে ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক থাকবে। আর আনোয়ারা প্রান্তে রয়েছে ৭২৭ মিটার দীর্ঘ উড়ালসড়ক। কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে ১৮ থেকে ৩৬ মিটার গভীরতায় সুড়ঙ্গ তৈরি করা হয়েছে। প্রতিটি ৩৫ ফুট প্রশস্ত ও ১৬ ফুট উচ্চতার। প্রথমে টানেল নির্মাণের খরচ ধরা হয় ৮ হাজার ৪৪৬.৬৩ কোটি টাকা। পরে ব্যয় বাড়িয়ে ধরা হয় ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা। এবার ব্যয় বাড়ায় প্রকল্পের খরচ দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা।
দেড় মাসের ব্যবধানে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেন আবারও ৩০০ কোটি টাকার নিচে নেমে এসেছে। সম্প্রতি লেনদেনের নেতৃত্বে থাকা শেয়ারগুলো থেকে বিনিয়োগকারীরা মুখ ফিরিয়ে নেওয়ায় কেনাবেচা কমে যাচ্ছে। গতকাল রবিবার ডিএসইতে কেনাবেচা হয়েছে ২৮৫ কোটি টাকা, যা আগের কার্যদিবসের চেয়ে ১৬ শতাংশ কম। এর আগে ডিএসইতে সর্বনিম্ন লেনদেন হয়েছিল গত ৮ জানুয়ারি, ২৮৪ কোটি টাকা।
ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নের কারণে শক্ত মৌলভিত্তির অনেক কোম্পানির নিট মুনাফায় পতন হয়েছে। কোনো কোনোটি আবার লোকসানেও পড়েছে। সামগ্রিকভাবে তালিকাভুক্ত ৭০ শতাংশ কোম্পানির নিট মুনাফা আগের বছরের চেয়ে কমে গেছে। নতুন করে লোকসানে পড়েছে ২৫টিরও বেশি কোম্পানি। এমন পরিস্থিতিতে সম্প্রতি যেসব বিনিয়োগকারী পুঁজিবাজারে সক্রিয় ছিলেন, তারাও এখন সাইডলাইনে ফিরতে শুরু করেছেন। লেনদেন কমে যাওয়ার এটিই প্রধান কারণ।
শেয়ার ক্রয়ের চাহিদা কমে যাওয়ায় গতকাল সব ধরনের সূচকেরও পতন হয়েছে। ডিএসইতে কেনাবেচা হওয়া বেশিরভাগ শেয়ারের দর কমে যাওয়ায় স্টক এক্সচেঞ্জটির প্রধান মূল্যসূচক আগের দিনের চেয়ে ১৮ পয়েন্ট কমে যায়। গতকাল ডিএসইতে কেনাবেচা হওয়া ২৯৮টি সিকিউরিটিজের মধ্যে দর বেড়েছে ১৮টির। বিপরীতে কমেছে ১৪৮টির ও অপরিবর্তিত ছিল ১৩২টির শেয়ারদর।
পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত এক মাস ধরে ১০-১৫টি শেয়ারে পুঁজিবাজারের লেনদেন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছিল। গতকাল সেসব শেয়ারের বেশিরভাগেরই লেনদেন কমার পাশাপাশি দরও কমেছে। কোম্পানির আর্থিক পরিস্থিতির অবনতির পাশাপাশি ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের গুজবও বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
টেস্ট ক্রিকেটে সিলেটের পথচলা শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালে। অভিজাত সংস্করণে যা ছিল দেশের অষ্টম ভেন্যু। জিম্বাবুয়ের সঙ্গে ম্যাচ দিয়ে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে পা রাখে দেশের সবচেয়ে সুন্দর এই স্টেডিয়ামটি। তবে মাঠের অভিষেক ম্যাচেই হেরে যায় বাংলাদেশ। তারপর আর কোনো পাঁচ দিনের খেলা গড়ায়নি এই মাঠে। এ নিয়ে স্থানীয়দের আক্ষেপের শেষ নেই।
অবশেষে অপেক্ষার প্রহর ফুরাচ্ছে। পাঁচ বছর পর আবারও টেস্ট ক্রিকেট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক ও সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল।
ক্রিকবাজের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেছেন, ‘আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরে আমরা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজের প্রথম টেস্ট আয়োজন করতে পারব বলে আশা করছি। এটি আমাদের জন্য খুব একটি উপলক্ষ হবে। কারণ পাঁচ বছর পর সিলেটের মাঠে টেস্ট ক্রিকেট ফিরবে।’
সম্প্রতি নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধি দল সিলেট সফর করেছে। তারা সেখানকার মাঠসহ সব সুযোগ সুবিধা পরিদর্শন করেছেন। পাশাপাশি নিরাপত্তার বিষয়ে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। সবকিছু দেখে তারা এখানে আরও বেশি ম্যাচ আয়োজনের জন্য উন্মুখ বলে জানিয়েছেন বিসিবির নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান নাদেল।
তিনি যোগ করেছেন, ‘নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধি দল আমাদের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বেশ মুগ্ধ। তাদের প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হয়েছে আমরা তাদের সব প্রত্যাশা ও প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে পারব।’
এফটিপি সূচি অনুযায়ী চলতি বছর বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ওয়ানডে ও দুই টেস্ট ম্যাচের সিরিজে খেলার কথা নিউজিল্যান্ডের। তবে সিরিজটি হবে দুই ভাগে। প্রথম ভাগে সেপ্টেম্বরের শেষভাগে বাংলাদেশের সঙ্গে ওয়ানডে খেলবে কিউইরা। এই সিরিজ খেলেই বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে যাবে দুই দল।
বিশ্বকাপের পর হবে দুই দলের টেস্ট সিরিজ। নভেম্বরের শেষ দিকে আবারও বাংলাদেশে আসবে কিউইরা। বিসিবি প্রস্তাবিত সূচি অনুযায়ী ২১ নভেম্বর ঢাকায় পা রাখার কথা সফরকারীদের। এরপর একটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলবে দলটি। ২৮ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর হবে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার সিরিজের প্রথম টেস্ট।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।
দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী লিমিটেড ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের মধ্যকার ফেডারেশন কাপ ফুটবলের ফাইনাল দেখতে কুমিল্লায় উড়ে গেছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।
কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে আজ বেলা ৩টা ১৫ মিনিটে শুরু হয়েছে ম্যাচটি। সালাউদ্দিন ম্যাচ শুরুর ঘণ্টা খানেক আগে কুমিল্লায় পৌঁছান।
ঢাকা থেকে সড়ক পথে কুমিল্লায় পাড়ি দিতে মাত্র দুই ঘণ্টা সময় লাগে। তবে সালাউদ্দিন দূরত্বটা পাড়ি দিয়েছেন হেলিকপ্টারে করে। যা আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
টাকার অভাবে কদিন আগে নারী ফুটবলারদের অলিম্পিক বাছাইয়ে পাঠায়নি বাফুফে। অথচ ঢাকা থেকে কুমিল্লায় যেতে বাফুফে সভাপতি বেছে নিলেন হেলিকপ্টার।
হেলিকপ্টারে ঢাকা থেকে কুমিল্লার এই যাত্রায় বাফুফে সভাপতির সঙ্গী হয়েছেন সংস্থার নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ।