
খেলাপি ঋণ দেশের ব্যাংক খাতকে সবচেয়ে বড় ঝুঁকির মুখে ফেলে দিয়েছে। ঋণখেলাপিদের নানা সুবিধা দিয়েও লাগাম টানা যাচ্ছে না। দেশের ব্যাংকিং খাতে যে পরিমাণ খেলাপি রয়েছে, তার প্রায় অর্ধেকই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর। বিভিন্ন আলোচনা-সমালোচনা ও উদ্যোগের পরও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে কমেনি, বরং বছর বছর তা আরও বাড়ছে। এসব ব্যাংকের যে খেলাপি তার প্রায় সবই আদায় অযোগ্য। গত পাঁচ বছরে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে আদায় অযোগ্য বা মন্দমানের খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৫৭ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
২০২২ সালের ডিসেম্বর শেষে রাষ্ট্রের অধীনে থাকা ৬ বাণিজ্যিক ব্যাংকের মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৬ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা। ২০১৭ সালের তুলনায় এসব প্রতিষ্ঠানে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ৫১ শতাংশেরও বেশি। এদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর যে খেলাপি ঋণ রয়েছে, তার প্রায় সবই আদায় অযোগ্য বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে। বর্তমানে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে যে খেলাপি রয়েছে তার ৯৪ শতাংশই মন্দমানের আদায় অযোগ্য, যার পরিমাণ হচ্ছে ৫৩ হাজার ২১১ কোটি টাকা।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, যে হারে মন্দ ঋণ বাড়ছে, এটা অব্যাহত থাকলে বড় ধরনের সংকটে পড়বে দেশের ব্যাংক খাত। তাই সুশাসন ফেরাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। প্রয়োজনে আইনের সংস্কার করারও পরামর্শ তাদের।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন বলছে, ২০১৭ সালে দেশের ব্যাংক খাতে যে খেলাপি ঋণ ছিল, তার মধ্যে আদায় অযোগ্য মন্দ ঋণ ছিল ৩৩ হাজার ৮২১ কোটি টাকা, যা ২০২২ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৩ হাজার ২১১ কোটি টাকা। অর্থাৎ ৫ বছরে দেশের ব্যাংক খাতে মন্দ ঋণ বেড়েছে ৫৭ দশমিক ৩২ শতাংশ। বিপুল পরিমাণের এই আদায় অযোগ্য ঋণের কারণে ব্যাংকগুলোকে শতভাগ সঞ্চিতি রাখতে হচ্ছে। এতে ব্যাংকের মুনাফা কমে যাচ্ছে। তবে মুনাফা কম থাকায় বেশিরভাগ ব্যাংক প্রয়োজনীয় সঞ্চিতি সংরক্ষণ করতে পারছে না। ৫ বছর আগে এই ৬ ব্যাংকের নিরাপত্তা সঞ্চিতির ঘাটতি ছিল ৮ হাজার ২৫৮ কোটি টাকা। বর্তমানে তা কিছুটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৮২৮ কোটি টাকায়।
আলোচিত সময়ে মন্দ ঋণ সবচেয়ে বেশি বেড়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংকে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের পর ব্যাংকটির মন্দ ঋণ বেড়েছে ২০৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ। ২০১৭ সালে ব্যাংকটির মন্দ ঋণ ছিল ৪ হাজার ৪১৭ কোটি টাকা, যা ২০২২ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৫৪৬ কোটি টাকা। এ বিষয়ে জানতে অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুরশেদুল করিমকে একাধিকবার ফোন দিয়েও পাওয়া যায়নি।
অগ্রণী ব্যাংকের মতো একই পথে হেঁটেছে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকও। ৫ বছর আগে ব্যাংকটির মন্দ ঋণ ছিল ৪ হাজার ৯৮১ কোটি টাকা। বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৬৫২ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত ৫ বছরে ব্যাংকটির মন্দ ঋণ বাড়ার হার ১৭৪ শতাংশ। এ বিষয়ে বক্তব্য পাওয়া যায়নি জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুছ ছালাম আজাদেরও। একাধিকবার কল ও খুদে বার্তা পাঠালেও তিনি জবাব দেননি।
মন্দ ঋণ বেড়ে যাওয়ার সূচকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে তৃতীয় অবস্থান রূপালী ব্যাংকের। গত পাঁচ বছরে ব্যাংকটির মন্দ ঋণ বেড়েছে ৫২ শতাংশ। ৫ বছর আগে ব্যাংকটির মন্দ ঋণ ছিল ৪ হাজার ৮১ কোটি টাকা। বর্তমানে তা ৬ হাজার ২০৪ কোটি টাকা। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে খেলাপি সূচকে চারে অবস্থান করছে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল)। ৫ বছরে ব্যাংকটির মন্দ ঋণ বেড়েছে ২৩ দশমিক ৪২ শতাংশ। পাঁচে থাকা বেসিক ব্যাংকের মন্দ ঋণ বেড়েছে মাত্র ১ শতাংশ।
তবে এই সূচকে একমাত্র ব্যতিক্রম রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক সোনালী ব্যাংক। গত পাঁচ বছরে ব্যাংকটির মন্দ ঋণ বাড়েনি। উল্টো ৬ দশমিক ৪৪ শতাংশ কমেছে। ২০১৭ সালে সোনালী ব্যাংকের মন্দ ঋণ ছিল ১২ হাজার ১৩৭ কোটি টাকা। বর্তমানে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৩৫৬ কোটি টাকা।
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ প্রসঙ্গে বিশ^ব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন দেশ রূপান্তরকে বলেন, খেলাপি ঋণ অথবা মন্দ ঋণ কমাতে বাংলাদেশে যেসব আইন আছে সেগুলোরও প্রয়োগ হচ্ছে না। এখন যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যদি আইনের সংস্কারও করা হয়, তবুও এই মন্দ ঋণ উত্তোলন করা সম্ভব হবে না। ব্যাংকিং খাতে সুশাসন ফেরাতে দরকার রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। এ ছাড়া কোনোভাবেই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর উন্নতি সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিকভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে আমরা ব্যাংক হিসেবে গড়ে তুলব। কাউকে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার মাধ্যম হিসেবে ব্যাংকগুলোকে ব্যবহার করা যাবে না। ব্যাংকগুলোকে প্রতিযোগিতা করতে দিতে হবে। তাহলে যারা ভালো করছে তারা বড় ব্যাংক হিসেবে রূপান্তরিত হবে। আর যারা খারাপ করছে তাদের অবস্থান খারাপ থাকবে।
মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম বলেছেন, মাঠ পর্যায়ে রাজস্ব কর্মকর্তা একজন ব্যবসায়ীর ভাগ্য নির্ধারণ করে থাকে। ব্যবসায়ীদের সহায়তা করার জন্য সরকার ও এনবিআরের যে সদিচ্ছা রয়েছে তা মাঠ পর্যায়ে গিয়ে আর থাকে না। তাই আমরা সব সময় রাজস্ব খাতে হয়রানি দূর করতে অটোমেশন চালুর পরামর্শ দিয়ে আসছি। কিন্তু দীর্ঘদিনের এ দাবিটি এখনো পূরণ হয়নি। তাই ভোগান্তিও কমেনি।
গতকাল শনিবার এমসিসিআই আয়োজিত সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় ও মুক্ত আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। মো. সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সহসভাপতি হাবিবুল্লাহ এন করিম, মহাসচিব ফারুক আহমদ প্রমুখ।
খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ায় আর্থিক খাতে সংকট সৃষ্টি হয়েছে। খেলাপিদের বিষয়ে এমসিসিআইয়ের অবস্থা কী জানতে চাইলে সংগঠনটির সহসভাপতি হাবিবুল্লাহ এন করিম জানান, খেলাপিদের পক্ষে আমরা নেই। খেলাপি কমানোর বিষয়ে এমসিসিআই খুব শক্ত অবস্থানে আছে। আমরা খেলাপিদের প্রমোটও করি না আবার প্রোটেকশনও দিই না। কীভাবে খেলাপি ঋণ কমানো যায় এ বিষয়ে নিয়ে সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে বহুবার আলোচনা করেছি। খেলাপি ঋণের মওকুফ আমরা চাই না।
মূল্যস্ফীতির চাপ মোকাবিলা, নিজেদের সক্ষমতা বাড়ানো ও চলমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে বাণিজ্যে টিকে থাকতে জ্বালানির মূল্য এখনই সমন্বয় না করে আরও কিছুদিন ভর্তুকি চান দেশের এলিট শ্রেণির ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা। দেশে ভালো বিনিয়োগ পরিবেশ নিশ্চিতে সূচক দরকার। কিন্তু বিশ্বব্যাংক কয়েক বছর ধরে ইজ অব ডুয়িং বিজনেস প্রকাশ করছে না।
এমসিসিআই সভাপতি বলেন, মূল্যস্ফীতির চাপের মধ্যে আইএমএফের (আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল) পরামর্শে সরকার সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছে জ্বালানিতে কোনো ভর্তুকি দেবে না। আন্তর্জাতিক দামের সঙ্গে প্রতি মাসে না হলেও প্রান্তিকে সমন্বয় করে মূল্য নির্ধারণ করবে। কিন্তু এখনো বিশ্বে মহামারী শেষ হয়নি। চলমান আছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এ অবস্থায় জ্বালানিতে ভর্তুকি তুলে নিলে দেশের ব্যবসায়ীরা চাপে পড়বে, উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে, প্রতিযোগিতা সক্ষমতা কমে যাবে। তাই আমরা চাচ্ছি এখন অর্থাৎ এ বছর জ্বালানির দাম সমন্বয় না করে ভর্তুকি চালু রাখা হোক।
তিনি জানান, আগামী চার বছর পর যখন স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণ করব তখন এমনিতেই বাণিজ্যে অনেক সুযোগ-সুবিধা তুলে নেওয়া হবে, তখন ইচ্ছে করলেই ভর্তুকি দিয়ে টিকিয়ে রাখা যাবে না। তখন আমাদের টিকিয়ে রাখতে হলে সরকারকে নীতি সহায়তা দিতে হবে।
কাঁচামাল আমদানির এলসি খুলতে কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে এমসিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতে গত বছর থেকে দেশে তীব্র আকারে ডলার সংকট দেখা দিয়েছে। আমদানি ব্যয় মেটাতে বাধ্য হয়ে রিজার্ভ থেকে খরচ করেছে সরকার।
ব্যাংক জরুরি মুহূর্তে ঋণপত্র বা এলসি খুলতে পারছে না অভিযোগ করে এমসিসিআই সভাপতি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পণ্য উৎপাদনের কাঁচামাল আমদানিতে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই কিন্তু আমরা আগের মতো সহজে এলসি খুলতে পারছি না। কারণ প্রয়োজনীয় ডলার সাপোর্ট দিতে পারছে না। তাই এখনো কাঁচামাল আমদানির এলসি খুলতে অনেক সময় লাগছে।
এমসিসিআই সভাপতি বলেন, করোনার মধ্যেও আমরা বেশ কয়েকটি সূচকে উন্নতি করেছি। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ইতিমধ্যে প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) ৩২ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে এই অর্থবছরে ৬০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি হবে। তিনি জানান, মহামারী অন্যান্য দেশে যেমন ক্ষতি করেছে আমাদের অর্থনীতিতে তেমন আঘাত হানতে পারেনি। এর মূল কারণ সরকারের সঠিক পদক্ষেপ ও আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ। এ কারণে আমাদের ভালো প্রবৃদ্ধি হয়েছে, রপ্তানি আয়ও ভালো হয়েছে। সরকার যদি আমাদের সঠিক নিয়মে নীতি সহায়তা দেয় তাহলে আগামীতেও ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার হবে।
তৈরি পোশাক নিয়ে এমসিসিআই সভাপতি বলেন, দেশের রপ্তানি খাতে রাজস্ব বাড়াচ্ছে তৈরি পোশাক খাত। চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে পোশাক খাতে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৪ দশমিক ৪ শতাংশ। এছাড়া বর্তমানে দেশের পোশাক খাতে প্রতি মাসে ৪ দশমিক ৪৬ মিলিয়ন ডলার রপ্তানি হচ্ছে। তবে রপ্তানির ক্ষেত্রে শুধু তৈরি পোশাকের ওপর নির্ভর করা উচিত না। রপ্তানি আয় বাড়াতে রপ্তানি বহুমুখীকরণে বিকল্প নেই বলেও তিনি জানান।
বিশ্বসেরা পরিবেশবান্ধব কারখানার স্বীকৃতি পেয়েছে বাংলাদেশের গ্রিন টেক্সটাইল লিমিটেড ইউনিট-৪। লিড সনদে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে সবুজ কারখানার শীর্ষস্থান দখল করে নিয়েছে কারখানাটি। ১১০ নম্বরের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি পেয়েছে ১০৪। শুধু তারাই নয়, এখন বিশ্বের সবচেয়ে পরিবেশবান্ধব ১০টি কারখানার ৮টিই বাংলাদেশের। আর বিশ্বসেরা ১০০ কারখানার মধ্যে বাংলাদেশের ৫২টি। গতকাল শনিবার লিড সনদের এই তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। বিজিএমইএ এ খবর নিশ্চিত করেছে।
শীর্ষ ১০-এর মধ্যে থাকা দেশের পরিবেশবান্ধব কারখানাগুলো হলো রেমি হোল্ডিংস লিমিটেড, ফতুল্লা অ্যাপারেলস, তারাসিমা অ্যাপারেলস লিমিটেড, প্লামি ফ্যাশনস লিমিটেড, সিল্কেন সুইং লিমিটেড, মিথেলা টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। তবে তালিকার তৃতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশি কারখানার নাম প্রকাশ করা হয়নি। শুধু দেশের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
এই ১০ কোম্পানির সব কটিই প্লাটিনাম সনদ পেয়েছে। ১১০-এর মধ্যে যেসব কোম্পানি ৮০ বা তার চেয়ে বেশি নম্বর পায়, তারা প্লাটিনাম সনদ লাভ করে। কোনো কারখানা ৬০ থেকে ৭৯ নম্বর পেলে গোল্ড সনদ পায়, ৫০ থেকে ৫৯ পেলে পায় সিলভার সনদ আর ৪০ থেকে ৪৯ পেলে পায় সার্টিফায়েড সনদ।
বিশ্বের বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান পরিবেশবান্ধব স্থাপনার সনদ দিয়ে থাকে। তাদের মধ্যে অন্যতম একটি যুক্তরাষ্ট্রের ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল (ইউএসজিবিসি)। তারা ‘লিড’ নামে পরিবেশবান্ধব স্থাপনার সনদ দিয়ে থাকে। এই লিডের তালিকায় গ্রিন টেক্সটাইল এখন শীর্ষ পরিবেশবান্ধব কারখানা। এপিক গ্রুপ ও এনভয় লিগ্যাসির যৌথ উদ্যোগে ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় তৈরি পোশাকশিল্পের কোম্পানি গ্রিন টেক্সটাইল।
লিডের পূর্ণাঙ্গ রূপ লিডারশিপ ইন এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ডিজাইন। সনদটি পেতে একটি প্রকল্পকে ইউএসজিবিসির তত্ত্বাবধানে নির্মাণ থেকে উৎপাদন পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয়ে সর্বোচ্চ মান রক্ষা করতে হয়। এ জন্য নতুন ভবন নির্মাণ কিংবা পুরনো ভবন সংস্কার করেও আবেদন করা যায়।
বেশ কিছু ক্যাটাগরিতে লিড সনদ দেওয়া হয়। এর মধ্যে টেকসই কারখানা প্রাঙ্গণ ক্যাটাগরিতে গ্রিন টেক্সটাইল পেয়েছে ১০-এ ১০; পানির দক্ষ ব্যবহারে পেয়েছে ১১-তে ১১; জ¦ালানি ও পরিবেশে পেয়েছে ৩৩-এ ৩২; উপকরণ ও সম্পদে ১৩-তে ১১; অভ্যন্তরীণ পরিবেশ মানে ১৬-তে ১৪, উদ্ভাবনে ৬-এ ৬, আঞ্চলিক অগ্রাধিকারে ৪-এ ৪; অবস্থান ও যাতায়াতে ২০-এ ১৫।
লিড তালিকার শীর্ষ ১০০টি কোম্পানির মধ্যে ৫২টি বাংলাদেশের, অর্থাৎ এ তালিকায় থাকা সবচেয়ে বেশি কোম্পানি বাংলাদেশের। এরপর সবচেয়ে বেশি বেশি কোম্পানি আছে চীনের। তাদের আছে ১০টি কারখানা। এরপর পাকিস্তানের আছে ৯টি কারখানা। শ্রীলঙ্কা ও ভারতের আছে ৬টি করে কারখানা। ভিয়েতনাম ও তাইওয়ানের আছে ৪টি করে কারখানা।
পোশাকশিল্পের উদ্যোক্তা সাজ্জাদুর রহমান মৃধার হাত ধরে ২০১২ সালে দেশে পরিবেশবান্ধব কারখানার যাত্রা শুরু হয়। পাবনার ঈশ্বরদী ইপিজেডে তার প্রতিষ্ঠিত ভিনটেজ ডেনিম স্টুডিও প্রথম এই মর্যাদা লাভ করে।
বর্তমানে বিশ্বে অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে বাংলাদেশেই সবচেয়ে বেশি পরিবেশবান্ধব পোশাক ও বস্ত্রকল রয়েছে। তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাতের পাশাপাশি শিপইয়ার্ড, জুতা ও ইলেকট্রনিকস পণ্য খাতেও আছে পরিবেশবান্ধব কারখানা। বাণিজ্যিক ভবনও হচ্ছে পরিবেশবান্ধব, তবে সংখ্যায় কম।
বিজিএমএইএর তথ্যানুসারে, বাংলাদেশে পরিবেশবান্ধব কারখানার সংখ্যা ১৮৩। আরও পাঁচ শতাধিক কারখানা এই সনদ পাওয়ার প্রক্রিয়ায় আছে বলে জানিয়েছে তারা।
বিজিএমইএ পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল দেশ রূপান্তরকে জানান, কার্বন নিঃসরণ কমানো ও নিরাপদ কর্মপরিবেশের নিশ্চিত করতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমাদের সবুজ কারখানার উদ্যোগ এটাই প্রমাণ করে যে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্প অন্য অনেক দেশের তুলনায় অধিক নিরাপদ। আমরা আশা করছি, আমাদের উদ্যোগ বিবেচনা করে ক্রেতারা আমাদের পণ্যের যৌক্তিক মূল্য দেবে।
জাতীয় বাজেটের অর্ধেকের বেশি অর্থায়নের দায় রয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাঁধে। অথচ চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের রাজস্ব আদায়ে এনবিআরের ঘাটতি এরই মধ্যে ১৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। আগামীতে আদায় বাড়ানো সম্ভব না হলে ঘাটতি আরও বাড়তে পারে। এমন পরিস্থিতিতে অভ্যন্তরীণ সম্পদ থেকে শুল্ক, আবগারি ও ভ্যাটের রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও ভবিষ্যৎ কর্মকৌশল নির্ধারণে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে আজ জরুরি সভা ডেকেছে এনবিআর চেয়ারম্যান।
এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, এনবিআরের বাস্তবভিত্তিক লক্ষ্যমাত্রা নির্র্ধারণ না করার ফলে গত কয়েক অর্থবছর থেকেই এ ঘাটতি থাকছে। এতে শেষ সময়ে উন্নয়ন প্রকল্প থামিয়ে দিতে হচ্ছে বা কাজের গতি কমাতে হচ্ছে। সরকারের ঋণনির্ভরতা বাড়ছে, যা অর্থনীতির ভারসাম্য নষ্ট করছে।
এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা রহমাতুল মুনিমের সভাপতিত্বে ওই সভা আজ ২৬ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এনবিআরের শুল্ক ও ভ্যাট প্রশাসনের দ্বিতীয় সচিব শেখ মেজবাহ-উল-সাবেরিন সই করা চিঠিতে বলা হয়েছে, শুল্ক, আবগারি ও ভ্যাট অনুবিভাগের চলতি অর্থবছরের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত রাজস্ব আহরণের অগ্রগতি এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরের রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের কর্মকৌশল ঠিক করার লক্ষ্যে আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি সভা অনুষ্ঠিত হবে।
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে ডিসেম্বর পর্যন্ত এনবিআর রাজস্ব আদায় করেছে ১ লাখ ৪৪ হাজার ৩০৭ কোটি টাকা। অর্থবছরে জুলাই-ডিসেম্বর এই ৬ মাসে রাজস্ব ঘাটতি বা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম আদায় হয়েছে ১৩ হাজার ৭৭৮ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। যদিও গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ১০.১৩ শতাংশ। ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সাময়িক হিসাবে এ ঘাটতি ১৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
বাংলাদেশের জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা (ন্যাপ) বাস্তবায়নে জার্মানির সহায়তা চেয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন। মন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবিলায় সদ্যপ্রণীত ন্যাপ বাস্তবায়নে ২৩০ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হবে। জার্মানিসহ উন্নত বিশ্ব সহায়তা করলে এটি বাস্তবায়ন সহজ হবে।
আজ শনিবার ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মানির রাষ্ট্রদূত অচিম ট্রস্টার ও বাংলাদেশ সফররত জার্মান পার্লামেন্টের সদস্যদের সঙ্গে এক দ্বিপাক্ষিক আলোচনা সভায় এ সহায়তা কামনা করেন পরিবেশমন্ত্রী।
পরিবেশমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন রোধে সুন্দরবনসহ সারা দেশে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
এছাড়াও বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সার্কুলার ইকোনমি বাস্তবায়ন এবং বায়ুদূষণ রোধে পোড়ানো ইটের পরিবর্তে ব্লক ইটের প্রচলন করতে সরকার কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।
এসব ক্ষেত্রে জার্মানির সহায়তা কামনা করেন পরিবেশমন্ত্রী।
এ সময় প্রযুক্তি হস্তান্তর, সক্ষমতা বৃদ্ধি, নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ জলবায়ু পরিবর্তন সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলোতেও জার্মানির সহযোগিতা চান তিনি।
জার্মান রাষ্ট্রদূত বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট সব কার্যক্রমে এবং বাংলাদেশে চলমান উন্নয়নে জার্মানির সহযোগিতা ক্রমবর্ধমান গতিতে অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, পারস্পরিক আলাপ-আলোচনা ও চাহিদার ভিত্তিতে এ সহযোগিতা দেওয়া হবে।
বৈঠকে অন্যদের মধ্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) ইকবাল আব্দুল্লাহ হারুন, অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ) মো. মনিরুজ্জামান, অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ) সঞ্জয় কুমার ভৌমিক এবং অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ, দূষণ নিয়ন্ত্রণ) মিজানুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন (বিএসসি) লিমিটেডের নিট মুনাফা বেড়েছে। চলতি ২০২২-২৩ হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৮ টাকা ৪১ পয়সা, যা আগের হিসাব বছরের একই সময়ে ছিল ৮ টাকা ২৮ পয়সা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির ইপিএস বেড়েছে ১৩ পয়সা বা ১ দশমিক ৫৫ শতাংশ।
কোম্পানিটির সর্বশেষ প্রকাশিত চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের (অক্টোবর-ডিসেম্বর) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদন অনুসারে, আলোচ্য প্রান্তিকে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৪ টাকা ৪৩ পয়সা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৩ টাকা ৯৪ পয়সা। ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৭৯ টাকা ৯৭ পয়সায়।
ভাঙাগড়ার মধ্য দিয়েই চলছে ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান। নেতৃত্ব পরিবর্তন হয়েছে, তারপরও যেন ভাগ্যটা ফেরানো যাচ্ছিল না। পরাশক্তির তকমাটা খসে যায় গেল এক যুগে। লিগ শিরোপা তাদের কাছে শুধুই মরীচিকা। সাদা-কালোদের কাছে টুর্নামেন্টের শিরোপাও দূর আকাশের তারায় রূপ নিয়েছিল। সেখান থেকে মোহামেডানকে বলতে গেলে একাই শিরোপার স্বাদ দিয়েছেন ‘ঘরের ছেলে’ সুলেমান দিয়াবাতে। মালির এই স্ট্রাইকার টানা পাঁচ মৌসুম ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন মাঝারি মানের মোহামেডানকে। তার জাদুতে গতকাল ফেডারেশন কাপের মহা-ফাইনালে আবাহনীকে হারিয়েছে সাদা-কালোরা। এই অর্জন এসেছে অনেক অপেক্ষার পর। তাই তো এই শিরোপাকে মোহামেডানের ঘুরে দাঁড়ানোর অনুপ্রেরণা হিসেবে দেখছেন দিয়াবাতেও। বিশ্বাস করেন, এই শিরোপা বদলে দেবে মোহামেডানের চিন্তাধারাকে।
টাইব্রেকারে শিরোপা জয়ের পর ড্রেসিং রুমে সতীর্থদের হুল্লোড়ের মধ্যে ম্যাচসেরা, টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার নিয়ে এক কোনায় বসে দেশে পরিবারের সঙ্গে ফোনে কথা বলছিলেন দিয়াবাতে। সেই ফাঁকেই সাংবাদিকদের কাছে জানালেন প্রতিক্রিয়া, ‘পেনাল্টি শুটআউটের আগ পর্যন্ত ম্যাচটা ভীষণ কঠিন ছিল আমাদের জন্য। আল্লাহ আমাদের সহায়তা করেছেন এই ট্রফিটি জিততে। তাই আমি অনেক খুশি। আমার ক্যারিয়ারে কোনো ফাইনালে প্রথমবারের মতো চার গোল করলাম। তাই সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই।’ দিয়াবাতে বলেন, ‘৯ বছর পর আমি একা নই, সব খেলোয়াড় মিলে মোহামেডানকে একটা শিরোপা এনে দিয়েছি। বিশ্বাস ছিল ম্যাচে ফিরতে পারলে আমরাই শিরোপা জিতব, সেটাই হয়েছে। আমি এই অর্জন মালিতে থাকা আমার পরিবার, বিশেষ করে আমার মাকে উৎসর্গ করছি।’ শিরোপাটা মোহামেডানের অন্তর্বর্তীকালীন কোচ আলফাজ আহমেদের জন্যও বিশেষ অর্জন। ফুটবল ক্যারিয়ারে অসংখ্য আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচ খেলেছেন এবং জিতেছেন। তবে এই জয়টাকে আলাদা করে রাখছেন তিনি, ‘আজকের খেলাটা অনেক বড় অর্জন। ব্যাকফুটে থেকে ফিরে আসা, ম্যাচ দেখে বোঝা যাচ্ছিল না কে জিতবে। দিয়াবাতে আসাধারণ ফুটবল খেলেছে। মুজাফ্ফারভের হাত ভেঙে দিয়েছিল, ওই অবস্থায়ও সে খেলা চালিয়ে গেছে। খেলোয়াড়দের কমিটম্যান্ট ছিল অসাধারণ। খেলোয়াড় হিসেবে আমি শিরোপা জিতেছি, এবার কোচ হিসেবে শীর্ষ পর্যায়ে প্রথম শিরোপা জিতলাম। তাই শিরোপাটাকেই আমি এগিয়ে রাখব।’ প্রথমার্ধে ২ গোলে পিছিয়ে পড়ার পরও হাল ছাড়েননি আলফাজ। শিষ্যদের শিখিয়েছেন মাথা ঠান্ডা রেখে পাল্টা জবাব দেওয়ার মন্ত্র, ‘প্রথমার্ধের খেলা শেষে শিষ্যদের বলেছি, তোমরা মাথা ঠা-া রেখে খেলো। তারা সেটাই করেছে।’
চোটে পড়ে মাঠ ছাড়া গোলকিপার সুজন সতীর্থ বিপুকে টাইব্রেকারে দারুণ পারফরম্যান্সের জন্য প্রশংসায় ভাসিয়েছেন, ‘মাঠ ছাড়ার এক মিনিটের মধ্যে আবাহনী যখন গোল পরিশোধ করল, তখন ভীষণ খারাপ লাগছিল। মনে হচ্ছিল আমরা আর পারব না। তবে আমার ধারণা ভুল প্রমাণ করেছে বিপু। আমি তাই অনেক বেশি খুশি।’
বিজ্ঞান ও আধুনিক প্রযুক্তির বিকাশের প্রয়োজনীয়তার ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুসলিম উম্মাহকে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে তাদের সন্তানদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষার ক্ষেত্রে আরও বেশি বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি (আইইউটি) ক্যাম্পাসে ৩৫তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি বলেন, ‘আমাদের সন্তানদের পড়াশোনার জন্য আরও বেশি পরিমাণে বিনিয়োগ করতে হবে।’
মুসলমানদের যথেষ্ট পরিমাণ সম্পদ রয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে বিজ্ঞান ও আধুনিক প্রযুক্তির উন্নয়নে যথাযথভাবে এই সম্পদ ব্যবহার করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, আমরা এটা করতে পারব।’ তিনি আরও বলেন, ‘যখনই আমি ওআইসি সদস্য দেশে যাই, তাদের আমি এই অনুরোধই করি।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘ইসলামের স্বর্ণযুগে বিশ^সভ্যতা, বিজ্ঞান, ইতিহাস, সাহিত্য, দর্শন, রসায়ন, গণিত, চিকিৎসা, জ্যোতির্বিদ্যা, ভূগোলসহ জ্ঞানের আরও অনেক শাখায় মুসলিম স্কলারদের ব্যাপক অবদান রয়েছে, যা আমাদের মুসলিমদের ঐতিহ্যের গৌরবময় ইতিহাস গড়েছে। সেই যুগের মুসলিম স্কলাররা সংস্কৃতি, জ্ঞান অর্জন, বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার এবং সমসাময়িক সাহিত্যে বিশে^ আধিপত্য বিস্তার করেছিল।’ তিনি আরও বলেন, ‘সেই অবস্থান থেকে বর্তমানে মুসলিম উম্মাহর এই পিছিয়ে থাকার কারণগুলো আমাদের বিশ্লেষণ করা দরকার।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সম্প্রীতির অভাব, জ্ঞান-বিজ্ঞানের অভাব এবং অন্য অনেক বিষয় মুসলিম উম্মাহর পতনের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি এই হারানো গৌরব পুনরুদ্ধারের জন্য আমাদের মুসলিম উম্মাহকে মতভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। পাশাপাশি মুসলিম দেশগুলোকে, বিশেষ করে তাদের নিজস্ব শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ও বিজ্ঞান এবং আধুনিক প্রযুক্তির বিকাশে আরও বেশি বিনিয়োগ করতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, আধুনিক যুগে মুসলিমরা মাত্র তিনটি নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। দুঃখজনক হলেও সত্য যে এটাই এই আধুনিক যুগে গবেষণা, প্রযুক্তি ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে মুসলিম উম্মাহর অবদানের প্রকৃত উদাহরণ। তিনি অভিমত ব্যক্ত করে বলেন, ‘মুসলিম জাতির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে জোরালো প্রচেষ্টা প্রয়োজন, যাতে করে তারা এ ক্ষেত্রে আরও অবদান রাখতে পারেন।’
চতুর্থ শিল্পবিপ্লব দ্বারা উপস্থাপিত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মুসলিম সম্প্রদায়ের পিছিয়ে পড়া উচিত নয়; বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবটিকস, ইন্টারনেট অব থিংস, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং ও অন্যান্য খাতে।
ওআইসির মহাসচিব ও ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) চ্যান্সেলর হিসেন ব্রাহিম তাহার সভাপতিত্বে এতে স্বাগত বক্তব্য দেন আইইউটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম। এ ছাড়া এই সমাবর্তন অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনিও বক্তব্য দেন।
সমাবর্তনে ২০২১ এবং ২০২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের স্নাতক, মাস্টার্স, পিএইচডি এবং ডিপ্লোমা ডিগ্রি দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের অসামান্য ফলাফলের জন্য দুই ধরনের স্বর্ণপদক আইইউটি স্বর্ণপদক এবং ওআইসি স্বর্ণপদক দেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে আইইউটির ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী তার অর্থায়নে আইইউটির নবনির্মিত মহিলা হলেরও উদ্বোধন করেন।।
ক্রেডিট কার্ড একটি লাইফস্টাইল পণ্য। বাংলাদেশের অধিকাংশ ব্যাংক এখন ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করছে। বাংলাদেশে ইস্যুকৃত মোট ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা ২২ লাখ কিন্তু একক (ইউনিক) গ্রাহক সংখ্যা তুলনামূলক অনেক কম। ক্রেডিট কার্ড পুরোপুরি জামানতবিহীন পার্সোনাল ঋণ হলেও ঋণ পরিশোধের হার খুব সন্তোষজনক। গ্রাহক পর্যায়ে একটি ক্রেডিট কার্ড দিতে গেলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী বেশ কিছু অত্যাবশ্যক কাগজপত্রের প্রয়োজন হয়। এটিকে ঋণ হিসেবে না দেখে লাইফস্টাইল পণ্য হিসেবে দেখে এর আবশ্যকীয় কাগজপত্র জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা কিছুটা শিথিল করা হলে ক্রেডিট কার্ড ব্যাপ্তি অতি দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে। তখন নিম্ন আয়ের মানুষরাও ক্রেডিট কার্ড নিতে পারবেন, যা ক্যাশলেস সোসাইটি গঠনের মাধ্যমে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করবে।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের আর্থিক লেনদেন ব্যবস্থা দ্রুতগতিতে ডিজিটাল আর্থিক লেনদেনে রূপান্তরিত হচ্ছে। ক্যাশলেস বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের ডিজিটাল লেনদেনে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে যেমন পিওএস, এটিএম, সিআরএম, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, কিউআর কোড ইত্যাদি। বিগত বছরগুলোতে ডিজিটাল লেনদেনের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০২১ সালের মার্চ মাসে ইন্টারনেট ব্যাংকিং এবং ই-কমার্সের মাধ্যমে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ২৪ হাজার কোটি টাকা, ২০২২ সালে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৩১ হাজার কোটি টাকা এবং ২০২৩ সালের মার্চ মাসে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৫ হাজার কোটি টাকা। তাই বলা যায়, প্রত্যাশার চেয়েও দ্রুতগতিতে অত্যন্ত শক্তিশালীভাবে প্রথাগত আর্থিক লেনদেনের পাশাপাশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থা।
তুলনামূলক কম ব্যবহারকারী
আমাদের দেশে তুলনামূলকভাবে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনেক কম। দেশে ইস্যুকৃত ডেবিট কার্ডের সংখ্যা ৩ কোটি ১০ লাখ যেখানে ইস্যুকৃত ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা প্রায় ২২ লাখ। ডেবিট কার্ড ও ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যার মধ্যে যে বড় ব্যবধান, এর প্রধান এবং অন্যতম কারণ হলো ক্রেডিট কার্ডের ক্ষেত্রে কাগজপত্র জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা। এছাড়া রয়েছে ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কে গ্রাহকদের প্রচলিত বিভিন্ন ভ্রান্ত ধারণা।
ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার বাড়াতে হলে আগে কার্ড ব্যবহারের ইকোসিস্টেম প্রসারিত করতে হবে। কিউ-আরকোড এবং অ্যাপসভিত্তিক লেনদেন বৃদ্ধি পেলে পুরো দেশে ক্রেডিট কার্ড তথা সামগ্রিকভাবে কার্ডের ব্যবহার ছড়িয়ে পড়বে।
ব্যবহারকারী কারা
ব্যাংকগুলো চাকরিজীবী এবং ব্যবসায়ী উভয় শ্রেণির গ্রাহকদের ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করছে, তবে এক্ষেত্রে চাকরিজীবীদের বেশি প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। ক্রেডিট কার্ডের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো ঋণের সহজলভ্যতা এবং সুবিধাজনক পরিশোধ ব্যবস্থা। এছাড়া রয়েছে বিভিন্ন ধরনের প্রমোশনাল অফার যেমন ইএমআই, ক্যাশব্যাক ডিসকাউন্টসহ বাই ওয়ান গেট ওয়ান, ইন্স্যুরেন্স, রিওয়ার্ড পয়েন্ট, মিট অ্যান্ড গ্রিট, লাউঞ্জ সুবিধা ইত্যাদি।
ঋণ শোধের যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হয়
ক্রেডিট কার্ড আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অপরিহার্য পণ্য হয়ে উঠেছে। এটি নিতে হলে ঋণ পরিশোধের যোগ্যতার প্রমাণের সঙ্গে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার প্রমাণও দাখিল করতে হয়। দেশে এখন রিটার্ন জমা দেওয়ার হার বেড়েছে। সবাই প্রতি বছর তার আয়কর রিটার্ন জমা দেয়। কিন্তু অনেকে অসাবধানতাবশত আয়কর রিটার্ন জমা দেয় না। তাছাড়া অনেকের করযোগ্য আয় না থাকায় তারাও রিটার্ন জমা দেয় না। যা ক্রেডিট ইস্যু করার ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও প্রভাব বিস্তার করছে বলে মনে করি।
জীবন সহজ করছে ক্রেডিট কার্ড
ক্রেডিট কার্ড আমাদের জীবনের অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে। এটির ব্যবহারও অত্যন্ত সহজ। ক্রেডিট কার্ড বিলম্বিত বিল পরিশোধের ভিত্তিতে কাজ করে, যার অর্থ আপনি এখন আপনার প্রয়োজনে কার্ড ব্যবহার করে অর্থ ব্যয় করতে পারেন এবং পরে তা সুবিধামতো সময়ে পরিশোধ করতে পারেন। ব্যবহৃত অর্থ গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে ডেবিট হয় না। এভাবে গ্রাহক প্রতিবার তার প্রয়োজনে কার্ড ব্যবহার করতে পারেন, যা আমাদের জীবনযাত্রাকে অত্যন্ত সহজ ও সাবলীল করে তুলেছে। একজন গ্রাহক যদি নিয়মিত সঠিক সময়ে তার ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধ করেন তাহলে কখনোই সেই গ্রাহক ঋণগ্রস্ত হবেন না। ব্যাংকগুলোর শক্তিশালী মনিটরিং ও রিকভারি ব্যবস্থা থাকার কারণে এই সেক্টরের খেলাপি ঋণের হার তুলনামূলক অনেক কম।
নিরাপত্তায় প্রয়োজন সচেতনতা
ডিজিটাল পেমেন্টগুলো সাধারণত বিভিন্ন ব্যবহারিক কারণে অফলাইন পেমেন্টের চেয়ে বেশি নিরাপদ। যেমন নগদ অর্থ বহনের ঝুঁকি না থাকা, চুরি, জালিয়াতির আশঙ্কা কম থাকা। ডিজিটাল লেনদেনে গ্রাহকের যে ধরনের সচেতনতা প্রয়োজন
কার্ড নম্বর, কার্ডের পেছনের ৩ সংখ্যার কার্ড ভেরিফিকেশন ভ্যালু (CVV2), ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড (OTP), মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ এবং নিরাপত্তা পিন কারও সঙ্গে বিনিময় না করা।
সন্দেহজনক কোনো ওয়েবসাইটে ই-কমার্স লেনদেন থেকে বিরত থাকা ও কার্ডের তথ্য সংরক্ষণ থেকে বিরত থাকা।
সন্দেহজনক কোনো ই-মেইল অথবা এসএমএসে থাকা লিঙ্কে প্রবেশ করা থেকে বিরত থাকা।
সাইবার সংক্রান্ত ঝুঁকি বিবেচনায় ডিজিটাল ডিভাইসের সব সফটওয়্যার হালনাগাদ রাখা এবং নিরাপত্তা সফটওয়্যার ব্যবহার করা।
যেকোনো সন্দেহজনক লেনদেন অতিসত্বর ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট ব্রাঞ্চ অথবা ব্যাংকের কল সেন্টারে অবহিত করা।
কার্ড হারানোর পরপরই ব্যাংকের কল সেন্টারে অবহিত করা।
সাধারণত, অধিকাংশ ব্যাংকই নির্দিষ্ট লেনদেনের পরিমাণের ভিত্তিতে ক্রেডিট কার্ডের বার্ষিক ফি সম্পূর্ণ বা আংশিক মওকুফ করে দিয়ে থাকে, যার ফলে এটি গ্রাহকের ওপর বাড়তি কোনো চাপ সৃষ্টি করে না। ক্রেডিট কার্ড একটি লাইফস্টাইল পণ্য, বিশ্বের অন্যান্য দেশের ক্রেডিট কার্ডের সুদের হারের তুলনায় বাংলাদেশে তা অপেক্ষাকৃত অনেক কম। তবে ব্যাংকগুলো সেটেলমেন্টের দিন থেকে সর্বোচ্চ ৪৫ দিন পর্যন্ত বিনাসুদে বিল পরিশোধের সুযোগ দিয়ে থাকে। তাই যদি কোনো গ্রাহক বুঝে সচেতনভাবে নিয়মিত বিল পরিশোধ করে তবে এটা কিন্তু গ্রাহকদের জন্য একটি চমৎকার সুযোগ।
গ্রাহকদের বিভিন্ন চাহিদার কথা মাথায় রেখে ব্যাংকগুলো বিভিন্ন উৎসবে নানা ধরনের অফার দিয়ে থাকে যার ফলে গ্রাহক বেশি বেশি লেনদেন করতে উদ্বুদ্ধ হয় যা ব্যবসায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
এ যেন ২০২২ বিশ্বকাপের ফাইনাল! সুলেমান দিয়াবাতে যেন কিলিয়েন এমবাপ্পে। না, ১৮ ডিসেম্বর লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে ফরাসি যুবরাজ এমবাপ্পের মতো ট্র্যাজিক হিরো হতে হয়নি দিয়াবাতেকে। হয়েছেন বিজয়ী দলের গর্বিত সেনাপতি। দুই ঐতিহ্যবাহী দল মোহামেডান ও আবাহনীর মধ্যে ফেডারেশন কাপের ফাইনালটা হয়ে উঠেছিল এক বাঁক বদলের লড়াই। যতবার আবাহনী এগিয়ে গেছে ততবারই দিয়াবাতে জ্বালিয়েছেন মোহামেডানের আশার প্রদীপ। নির্ধারিত ৯০ মিনিট ৩-৩। অতিরিক্ত সময়ে ৪-৪। আবাহনীর চার গোল চার জনের; কিন্তু মোহামেডানের চারটাই দিয়াবাতের। এরপর টাইব্রেকারের ভাগ্য পরীক্ষার শুরুটাও মালির ফরোয়ার্ডের লক্ষ্যভেদে। শেষ পর্যন্ত ভাগ্য পরীক্ষাটা ৪-২ গোলে জিতে ৯ বছর পর কোনো টুর্নামেন্টের শিরোপার স্বাদ পেল মোহামেডান।
ভাষা সৈনিক শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরুতে এগিয়ে ছিল আবাহনীই। তাদের সামনে প্রথমার্ধে বড্ড অগোছালো মনে হয়েছে আলফাজ শিষ্যদের। মারিও লেমস তুণের সব সেরা তীরদের জড়ো করে একাদশ সাজিয়েছিলেন। যার নেতৃত্ব দেন হাফ-ফিট রাফায়েল আগুস্তো। আক্রমণভাগে তার দুপাশে ছিলেন দানিয়েল কলিনদ্রেস ও তরুণ ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। আর ঠিক ওপরে এমেকা ওগবাহ। আকাশির আক্রমণ ঠেকাতে তখন নাজেহাল সাদা-কালোরা। উপর্যুপরি আক্রমণ থেকে আবাহনীকে ১৬ মিনিটে এগিয়ে নেন ফাহিম। কলিনদ্রেসের কাছ থেকে বল পেয়ে এমেকা ওগবাহ ডিফেন্সচেড়া পাস বাড়ান। চলন্ত বলে ফাহিমের বাঁ পায়ের শট মোহামেডান কিপার সুজন হোসেনের গ্লাভস ছুঁয়ে জালে জড়ায়। মোহামেডান অসহায়ত্বের সুযোগ ৪৩ মিনিটে কাজে লাগান কোস্টারিকার বিশ্বকাপার কলিনদ্রেস। নিজেদের অর্ধ থেকে হৃদয়ের বাড়ানো বল আয়ত্তে নিয়ে মার্কার হাসান মুরাদকে কোনো সুযোগ না দিয়ে ডান পায়ের জোরালো শটে বল দূরের পোস্ট দিয়ে জালে জড়ান এই তারকা।
বিরতি থেকে মাঠে ফিরে অন্যরকম এক মোহামেডান। আলফাজ তিনটি পরিবর্তন করে মাঠে পাঠান জাফর ইকবাল, শাহরিয়ার ইমন ও আলমগীর রানাকে। তাতেই গতি পায় সাদা-কালোর আক্রমণ। ৫৬ মিনিটে ২-১ করেন দিয়াবাতে। কামরুলের ক্রস হেড করে ক্লিয়ার করতে গিয়ে ডিফেন্ডার আলমগীর মোল্লা বল দিয়ে দেন দিয়াবাতের কাছে; দুর্দান্ত সাইডভলিতে বল জালে জড়ায় দিয়াবাতে। চার মিনিট পর সমতাসূচক গোল করেন তিনি। উজবেক মিডফিল্ডার মোজাফফরভের জোরালো ভলি আবাহনী কিপার রুখলেও বাঁদিকে জাফর পেয়ে দ্রুত ক্রস ফেলেন গোলমুখে। মার্কারদের ছাপিয়ে দারুণ হেডে সোহেলকে পরাস্ত করে ম্যাচ জমিয়ে তোলেন দিয়াবাতে। ৬৫ মিনিটে এমেকা ওগবাহর হেড পোস্টে লেগে ফিরলে হতাশ হতে হয় আবাহনীকে। পরের মিনিটে ডান দিক থেকে ফাহিমের শট সুজন কোনোমতে সেভ করলেও আলতো ট্যাপে গোল করে আবাহনীর লিড পুনরুদ্ধার করেন এমেকা (৩-২)। তবে ৮৩ মিনিটে কামরুলের কর্নারে দিয়াবাতে হ্যাটট্রিক করে মোহামেডানকে আবার ম্যাচে ফেরান।
অতিরিক্ত সময়ের শুরুতে দুটি অসাধারণ সেভ করেন মোহামেডান কিপার সুজন। ৯৬ মিনিটে রহমতের কর্নার ঘুরে ফিরে রাফায়েলের কাছে এলে তাতে দারুণ শট নেন। তবে সুজন ঝাঁপিয়ে তা রুখে দেন। পরের মিনিটে কলিনদ্রেসের কর্নারে আসাদুজ্জামান বাবলুর হেড ফিস্ট করে বিপদমুক্ত করে মোহামেডানকে ম্যাচে রাখেন সুজন। ১০৬ মিনিটে মোহামেডানকে পেনাল্টি উপহার দেন সোহেল। শাহরিয়ার ইমনের ঠেলে দেওয়া বল ধরতে ছুটছিলেন দিয়াবাতে। তার এক টাচে বলটা চলে যাচ্ছিল গোললাইনের বাইরে। তবে সোহেলের পা ধরে টান দিলে পড়ে যান দিয়াবাতে। পেনাল্টি থেকে সোজাসুজি শটে প্রথমবারের মতো মোহামেডানকে লিড এনে দেন দিয়াবাতে। এই ম্যাচটা সেখানেই শেষ হয়ে যেতে পারত। তবে বিধাতা যে ফাইনালের চিত্রনাট্য লিখেছেন অন্যভাবে। ম্যাচের ১১৬ মিনিটে মোহামেডানের তেকাঠীর আস্থা সুজনকে ব্যথা পেয়ে মাঠ ছাড়তে হয়। মাঠে এসে অপ্রস্তুত আহসান হাবিব বিপুকে পরের মিনিটেই গোল হজম করতে হয়। রয়্যালের কাছ থেকে আড়াআড়ি পাস পেয়ে বক্সের অনেক বাইরে থেকে ডানপায়ের জোরালো শটে গোল করেন এই ডিফেন্ডার। তাতে ম্যাচ গড়ায় পেনাল্টিতে।
ভাগ্য পরীক্ষায় অবশ্য বিপু মোহামেডানের বিজয়ের নায়ক হয়ে ওঠেন বিপু। শুরুতেই ঠেকিয়ে দেন রাফায়েলের শট। অন্যদিকে দিয়াবাতে, আলমগীর কবির রানা, রজার দুরাতে টানা ৩ গোল করেন। আবাহনীর হয়ে এমেকা ও ইউসেফ গোল করলে স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৩-২। এরপর মোহামেডানের শাহরিয়ার ইমনের শট সোহেল ঠেকিয়ে দিলে আবাহনীর ফেরার আশা জাগে। তবে বিপু কলিনদ্রেসের শট রুখে দিলে উত্তাল হয়ে ওঠে মোহামেডান গ্যালারি। আর কামরুল হাসান ঠিকঠাক লক্ষ্যভেদ করে অনেক চাওয়ার শিরোপা নিশ্চিত করেন মোহামেডানের।
অভিনেত্রী দর্শনা বণিক আবারও শাকিব খানের সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করবেন। যদিও কলকাতার বেশ কিছু ছবিতে পর পর কাজ করেছেন দর্শনা। তবুও শাকিব খানের সঙ্গে দর্শনার নতুন কাজকে ঘিরে শুরু হয়েছিল নানা রকমের জল্পনা। ওপার বাংলার একের পর এক সিনেমায় সই করে চলেছেন দর্শনা। কিছু দিন আগে অভিনেতা আজাদ আদরের সঙ্গে একটি ছবিতে স্বাক্ষর করেছেন নায়িকা। এরপর আবার শাকিবের সঙ্গে জুটি বাঁধতে চলেছেন অভিনেত্রী।
সম্প্রতি ‘দিদি নম্বর ১’ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন অভিনেত্রী। সেই অনুষ্ঠানেই বাংলাদেশের কাজের পরিবেশ, শাকিবের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিলেন দর্শনা। ইদানীং কি টালিগঞ্জের থেকে ওপার বাংলায় বেশি গুরুত্ব পাচ্ছেন তিনি? দর্শনার স্পষ্ট জবাব, ‘এখানেও অনেক কাজ করছি। টালিগঞ্জের কাজের জন্যই তো বাইরে বিভিন্ন কাজের সুযোগ আসছে। দুই বাংলাই আমার কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ।’
বাংলাদেশে শাকিবের সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছে অনেক অভিনেতারই। সেখানে পদ্মা পাড়ের প্রথম ছবিতেই নায়ক হিসেবে পেয়েছেন তাকে। শাকিব প্রসঙ্গে দর্শনা বলেন, ‘খুবই ভালো অভিজ্ঞতা। শাকিব ওখানে এক বিশাল নাম। তবে সেটে তেমনটা কখনো মনে হয়নি।’ তবে নতুন কাজের প্রসঙ্গে কোনো কথা বলতে নারাজ অভিনেত্রী। এই মুহূর্তে কলকাতাতেই রয়েছেন। খুব শিগগিরই বাংলাদেশে আসছেন এমনটাই আভাস দিলেন এই নায়িকা।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন জায়েদা খাতুন।
তিনি ঘড়ি প্রতীকে মোট ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় এ সিটির ৪৮০টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) রাতে রির্টানিং কর্মকর্তা স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
নির্বাচনের অন্য মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন ১৬ হাজার ৩৬২ ভোট, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ ৭ হাজার ২০৬ ভোট, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ১৬ হাজার ৯৭৪ ভোট, স্বতন্ত্রপ্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের মো. হারুন-অর-রশীদ ২ হাজার ৪২৬ ভোট এবং হাতি প্রতীকের সরকার শাহনূর ইসলাম ২৩ হাজার ২৬৫ ভোট পেয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ, ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী ও ১৮ জন হিজড়া। এই সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি, মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) নির্মিত হয়েছে বিশেষ কবিতা আবৃত্তির অনুষ্ঠান ‘ও ভোরের পাখি’। ঈমাম হোসাইনের প্রযোজনায় এটি উপস্থাপনা করেছেন তামান্ন তিথি। অনুষ্ঠানটিতে আবৃত্তি করেছেন আশরাফুল আলম, মীর বরকত, রফিকুল ইসলাম, পলি পারভিন, শাকিলা মতিন মৃদুলা, মাসকুর-এ সাত্তার কল্লোল, আসলাম শিশির, সংগীতা চৌধুরী, আহসান উল্লাহ তমাল। প্রচারিত হয় ২৫ মে সকাল সাড়ে ৯টায়।
এছাড়াও নির্মিত হয়েছে বিশেষ অনুষ্ঠান ‘আমারে দেবো না ভুলিতে’। অনুষ্ঠানটিতে গান, কবিতা ও আলোচনার সমন্বয়ে কবিকে সামগ্রিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও বাচিকশিল্পীদের অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিতে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে। ইয়াসমিন মুসতারী, সালাউদ্দিন আহমেদ, শেলু বড়ুয়া, ছন্দা চক্রবর্ত্তী ও ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়ের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেছেন প্রফেসর মুন্সী আবু সাইফ। মনিরুল হাসানের প্রযোজনায় অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হচ্ছে ২৫ মে দুপুর ১ টা ০৫ মিনিটে। আরও প্রচারিত হবে সংগীতানুষ্ঠান ‘দোলনচাঁপা’ ও ‘সন্ধ্যামালতী’। রাত ৯টায় প্রচারিত হবে নাটক ‘বনের পাপিয়া’ (পুনপ্রচার)।