
ফরচুন ম্যাগাজিনের ২০২৩ সালের বিশ্বের সবচেয়ে পছন্দনীয় প্রতিষ্ঠানের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে মেটলাইফ। ফরচুন ম্যাগাজিনের সবচেয়ে পছন্দনীয় প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক প্রতিবেদনে মেটলাইফসহ মোট আটটি জীবন বীমা সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক স্বনামধন্য ম্যানেজমেন্ট কনসালট্যান্ট প্রতিষ্ঠান কর্ন ফেরির সঙ্গে যৌথভাবে প্রাতিষ্ঠানিক সুনামের ভিত্তিতে বিভিন্ন শিল্প খাতের পছন্দনীয় প্রতিষ্ঠানের তালিকা তৈরি করে ফরচুন ম্যাগাজিন।
শিল্প খাতে বিনিয়োগ মূল্য, ব্যবস্থাপনার মান, আর্থিক সক্ষমতা, সামাজিক দায়বদ্ধতা এবং গ্রাহক আকৃষ্ট করা সক্ষমতাসহ নয়টি বিভাগে প্রতিষ্ঠানকে রেটিং করেন ওই শিল্পের পেশাজীবী, নির্বাহী, পরিচালক এবং বিশ্লেষকরা। তার ভিত্তিতেই এই তালিকা প্রস্তুত করা হয়। বিজ্ঞপ্তি
নতুন উদ্যোক্তাদের ব্যবসায়িক ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির জন্য ২০১৬ সালে ‘উদ্ভাবন ও উদ্যোগে উন্নয়ন অ্যাকাডেমি প্রতিষ্ঠাকরণ’ প্রকল্প শুরু করেছিল সরকারের তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগ। ২০১৯ সালে প্রকল্পটির কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সাত বছরেও তা শেষ হয়নি। অথচ প্রকল্পটি নির্দিষ্ট সময়ে শেষ করতে না পারায় ফের সময় বাড়িয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। এ প্রকল্পটির পরামর্শক ব্যয়ই ১৪ কোটি টাকা। তা ছাড়া বিভিন্ন অনুদানের জন্য ব্যয় হয়েছে ১৮০ কোটি টাকার বেশি।
এ প্রকল্পটির দ্বিতীয় সংশোধিত প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে অনুমোদনের পর আগামী রবিবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অবগতির জন্য উপস্থাপন করা হবে।
শুরুতে প্রকল্পটির ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছিল ২২৯ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। কিন্তু পরে ব্যয় বাড়িয়ে ২৭১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা করা হয়েছে। এ নিয়ে প্রকল্পটির দ্বিতীয় সংশোধনী অনুমোদন হয়েছে। নতুন করে অনুমোদন পাওয়ার পর প্রকল্পটি আগামী জুনের মধ্যে শেষ করার কথা রয়েছে।
ব্যয় বিভাজনে দেখা যায়, এ প্রকল্পের পরামর্শক সেবার জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩ কোটি ৯৭ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও উৎসবে খরচ করা হয়েছে ১২ কোটি ৬২ লাখ টাকার বেশি। বিভিন্ন প্রশিক্ষণের জন্য ব্যয় করা হয়েছে ৬ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।
এ প্রকল্পের জন্য বিভিন্ন আইসিটি সরঞ্জাম কিনতে খরচ হয়েছে ১২ কোটি ৩০ লাখ টাকা। শুধু তা-ই নয়, ফার্নিচার বাবদ খরচ করা হয়েছে ২০ কোটি টাকার বেশি।
প্রকল্পটিতে বিভিন্ন খরচ মাত্রাতিরিক্ত হলেও, মূল যে কাজ উন্নয়ন অ্যাকাডেমি প্রতিষ্ঠাকরণ, সেখানে সিভিল কাজে ব্যয় করা হয়েছে মাত্র ২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।
পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেন, এ ধরনের মাত্রাতিরিক্ত ব্যয় নিয়ে প্রকল্পগুলো গ্রহণ করা হলেও এগুলোর পরিকল্পনা ঠিকমতো বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। তা ছাড়া, মন্ত্রণালয়গুলোকে এ ধরনের ব্যয় কমানোর জন্য বারবার পরামর্শ দেওয়া হলেও তারা কথা শুনছে না।
প্রকল্পটির উদ্দেশ্য হিসেবে বলা হয়েছে, এটি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। একটি নির্দিষ্ট কেন্দ্র থেকে এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে বিবেচনায় প্রকল্প এলাকা আগারগাঁও, ঢাকা নির্বাচন করা হয়েছে। বাংলাদেশে একটি উদ্ভাবনী ইকোসিস্টেম এবং উদ্যোক্তাবান্ধব সংস্কৃতি তৈরি, প্রযুক্তিনির্ভর উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা। সংস্কৃতির উন্নয়ন ও তরুণ উদ্ভাবকদের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও উদ্ভাবনী আইডিয়াসমূহ চিহ্নিতকরণ এবং উন্নয়নের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো দেওয়া এ প্রকল্পের মূল্য উদ্দেশ্য।
প্রকল্প সংশোধনের কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, ইন্টারপোর্টেবল ডিজিটাল ট্রানজেকশন প্ল্যাটফরম (আইডিটিপি) প্রণয়নের জন্য এটি সংশোধন প্রস্তাব করা হয়েছে। তা ছাড়া আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অর্থ লেনদেন, স্থানান্তর, ই-কমার্স, এম-কমার্স, বিল পেমেন্ট, মার্চেন্ট পেমেন্ট, রেমিট্যান্স আদান প্রদান, মেশিন-টু-মেশিন পেমেন্ট ইত্যাদি সম্পন্ন করার জন্য আইডিটিপি প্রণয়নের জন্য এটি সংশোধন প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রকল্পের আওতায় দেশের শিশু-কিশোরদের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংযোগ স্থাপন, তার জীবনাদর্শ, চিন্তাধারা এবং কর্মকাণ্ড বিষয়ে অবগত করা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন, কর্ম, আদর্শিক বিষয়াবলি তথা মহান মুক্তিযুদ্ধ, বর্তমান ডিজিটাল বাংলাদেশসহ দেশের যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াবলি-সংবলিত গেমভিত্তিক একটি ওয়েব প্ল্যাটফরম তৈরি করা।
এ প্রকল্পের আওতায় অনুদান হিসেবে দুই হাজার এসএমইকে ৫০ হাজার টাকা করে ১০ কোটি টাকা দেওয়ার কথা রয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে দেশীয় উদ্যোক্তা বা স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানগুলোকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে পরিচিত করানো এবং আন্তর্জাতিক এঞ্জেল ও ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানিগুলোকে দেশীয় উদ্যোক্তা-স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিনিয়োগে আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে ‘বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্র্যান্ট (বিআইজি’ প্রতিযোগিতা আয়োজনে অতিরিক্ত অর্থ সংস্থান করার কারণে প্রকল্পটি সংশোধন করা হয়েছে।
ডিজিটাল টেস্টিং ল্যাবকে ফেব্রিকেশন ল্যাবে রূপান্তরকরণ, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য গ্র্যান্ট প্রদান, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উৎপাদন, সঞ্চালন ও বিতরণে অধিকতর স্বচ্ছতা ও দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্যে ওয়েবভিত্তিক সফটওয়্যার তৈরি, মুভিং বাংলাদেশ শিরোনামে বাংলাদেশের স্টার্টআপগুলো শূন্য থেকে শুরু করে চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছানোর সংগ্রামগুলো গল্পে গল্পে ডকুমেন্টারি প্রস্তুতের মাধ্যমে তরুণ উদ্যোক্তাদের সামনে তুলে ধরার পরিকল্পনা অন্তভুক্তকরণ এবং উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন অ্যাকাডেমি প্রতিষ্ঠানের আইন চূড়ান্তকরণ।
প্রস্তাবিত প্রকল্পটির দ্বিতীয় সংশোধনী প্রস্তাব বিবেচনার জন্য গত ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে পরিকল্পনা কমিশনে অনুষ্ঠিত প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভায় কয়েকটি সিদ্ধান্ত প্রতিপালন সাপেক্ষে প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করা হয়। পিইসি সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ডিপিপি পুনর্গঠন করা হয়েছে।
প্রকল্পটির মূল কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে স্টার্টআপদের অর্থায়নের বিষয়ে নতুন কৌশলগত বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) আওতায় সরকারি মালিকানাধীন একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করা। স্টার্টআপদের আর্থিক, টেকনোলজিক্যাল, মেধা সম্পদসহ একটি ভিউ ডিলিজ্যান্স ফার্ম নিয়োগের বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা।
‘নতুন লক্ষ্য নতুন যুদ্ধ’ এই মূলমন্ত্র হৃদয়ে ধারণ করে গত ৪-৬ মার্চ কক্সবাজারে সি-পার্ল হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল আনোয়ার সিমেন্ট শিট ডিলার সম্মেলন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আনোয়ার গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মানোয়ার হোসেন, ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর ওয়াইজ মোহাম্মদ আর. হোসেন, বিল্ডিং ম্যাটেরিয়াল ডিভিশনের সিইও এ কে এম জাবেদ। আনোয়ার সিমেন্ট শিটের ডিরেক্টর-বিজনেস-মোজাম্মেল হক, আনোয়ার গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের হেড অব মার্কেটিং আবু জুবায়েদ মোহাম্মাদ রাসেলসহ সারা দেশের ডিলাররা।
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে কর হার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫০ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছে দুই সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের জাতীয় রাজস্ব ভবনে প্রাক বাজেট আলোচনায় এ দাবি জানান তারা।
বাজেট আলোচনায় এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের সভাপতিত্বে শুল্ক বিভাগের সদস্য মো. মাসুদ সাদেক, ভ্যাট নীতির সদস্য জাকিয়া সুলতানা ও আয়কর নীতির সদস্য সামস উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। এ সময় আলোচনায় অংশ নেয় তৈরি পোশাক খাতের দুই সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ।
রপ্তানির বিপরীতে প্রদত্ত নগদ সহায়তার ওপর আয়কর হার ১০ শতাংশ থেকে শূন্য শতাংশ করা, গ্রিন কারখানার জন্য করপোরেট কর হার ১০ শতাংশ করারও প্রস্তাব দিয়েছে তারা।
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, জ¦ালানি সংকটের কারণে উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধিসহ উৎপাদন কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। বিদেশি ক্রেতারা রপ্তানি আদেশ কমিয়ে দিয়েছে। যে সব রপ্তানি আদেশ ইতিমধ্যে দিয়েছে তাও ধীরগতিতে শিপমেন্টের জন্য বলছে এবং অনেক ক্রেতা রপ্তানি আদেশ বাতিল করছে।
বর্তমান এই সংকটকালীন সময়ে দেশের প্রধানতম বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে নীতি সহায়তা প্রদান করা একান্ত প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ফারুক হাসান বলেন, যুদ্ধের ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে এক অস্থির পরিস্থিতি বিরাজ করছে, যার প্রভাব পড়েছে আমাদের পোশাক শিল্পে। এই অবস্থায় যদি উৎসে কর পূর্বের ন্যায় ০.৫০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয় তাহলে বর্তমানে বিরাজমান চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে সহায়ক হবে। এবং তা আগামী পাঁচ বছর পর্যন্ত কার্যকর রাখা হোক।
সংগঠনটির অন্যান্য প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে প্রতিবছর সর্বোচ্চ পাঁচ পিস ডামি পোশাক বিনাশুল্কে আমদানির অনুমোদন দেওয়া, রপ্তানিকে প্রতিযোগী করতে পোশাক খাত সংশ্লিষ্ট ১২ ধরনের প্রতিষ্ঠান থেকে ভ্যাট অব্যাহতি, এইচ এস কোড জটিলতা নিরসন, ওয়াশিং-ড্রাই মেশিন ও অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র আমদানিতে শুল্ক ছাড়।
অন্যদিকে বিকেএমইএর অন্যান্য প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে তৈরি পোশাক খাতের প্রতিষ্ঠানসমূহকে শূন্য ভ্যাট রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি দেওয়া, সোলার প্যানেল ও ইটিপি স্থাপনে আমদানি করা রাসায়নিকের শুল্ক ও মূসক শূন্য শতাংশ করা।
বিটিএমএর প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছেরিসাইকেলড ফাইবার, ম্যানমেইড ফাইবারসহ সব প্রকারের আমদানি পর্যায়ে যাবতীয় শুল্ক, মূসক ব্যতীত আমদানির সুযোগ, সকল প্রকার পাওয়ার লুমে উৎপাদিত কৃত্রিম আশের সুতার তৈরি ফেব্রিকসের ওপর মূসক অব্যাহতির প্রস্তাব দিয়েছে।
এসব বিষয়ে ফারুক হাসান বলেন, যে সমস্যাগুলো আমরা ফেস করছি সেগুলো থেকে আমরা ওভার কাম করব।
তিনি বলেন, আমরা বাজার বৈচিত্রকরণে কাজ করছি। সরকার যে সুযোগটা আমাদের দিয়েছে তা হলোনতুন বাজারে গেলে একটা ইনসেন্টিভ পাওয়া যায়, সেই হিসেবে নতুন মার্কেটে আমরা কিন্তু গ্রো করছি।
তিনি বলেন, জানুয়ারি মাসে গ্যাসের মূল্য বাড়ানো হয়েছে। বিদ্যুতের দাম তিনবার বেড়েছে জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারির মধ্যে এসব কারণে আমাদের কস্ট অব প্রোডাকশন বেড়ে গেছে।
রপ্তানির বিপরীতে উৎসে কর কমানোর দাবি জানিয়ে বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, উৎসে করের টাকাটা সমন্বয় করা যাবে না বলে আইনে উল্লেখ আছে। আপনি যদি অতিরিক্ত টাকা নেন তাহলে এটা সমন্বয় করার সুযোগ আমাদের মৌলিক অধিকার। এই বিষয়টা বিবেচনার অনুরোধ জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, মাসে মাসে ভ্যাট রিটার্ন দাখিল করছি এখন। কিন্তু এটার সঙ্গে আমি একমত না, আমি কেনো রিটার্ন দাখিল করব। দাখিল করা যখন শুরু হলো তখন ২৫ রকমের ফাইল খাতাপত্র নিয়ে ভ্যাট অফিসে হাজির হতে হয়। এরপর কতগুলো ফর্মের কথা বলা হয়। সেগুলো আমরা কখনো দেখিনি। এটা খতিয়ে দেখবেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা এনবিআরের আরেকটা ডিপার্টমেন্ট বন্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত। সেখানে আমরা প্রতি বছর হিসাব-নিকাশ জমা দেই, তাহলে আরেকটা ডিপার্টমেন্টে কেন আমাদের দিতে হবে।
এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের এসব কথা বলেন, তৈরি পোশাকশিল্প ও এর সহযোগী শিল্পকে সাপোর্ট দেওয়ার জন্য যতটুকু করার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) করবে। ভ্যাট অনলাইন, বন্ড অটোমেশন, এসাইকুড ইত্যাদির মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের সার্ভিস আরও ভালো হচ্ছে। তবে কিছু কিছু জিনিস আমাদের মেনে নিতে হয়। যেমন কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি, জাহাজ ভাড়া বৃদ্ধি এইগুলো আমাদের মেনে নিতে হয়। রেভিনিউ আমাদের দরকার, ট্যাক্স জিডিপি বাড়ানোও দরকার। সেটাও দেখতে হবে।
নিত্যপণ্যের দামে লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি ও স্বল্প আয়ের মানুষের আয় কমার কারণে তাদের সঞ্চয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। গত বছরের আগস্টে মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ৯ দশমিক ৫২ শতাংশে। যেটি আগের মাসেও ছিল ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ। মূল্যস্ফীতি লাগামহীন হওয়ায় কৃষকরা আগের মতো বাড়তি সঞ্চয় করতে পারছেন না। যে কারণে সঞ্চয়ের প্রবণতা কমে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্য বলছে, গত বছরের সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের তুলনায় ডিসেম্বরে কৃষকদের আমানত কমেছে ৬ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিম্ন আয়ের মানুষ যে আয় করে, তা দিয়ে সংসার চালানোই কঠিন হয়ে পড়েছে। সার্বিক পরিস্থিতিতে ব্যাংকগুলোতে মোট আমানতের প্রবৃদ্ধিতেও নেতিবাচক অবস্থা বিরাজ করছে। বিশেষ সুবিধায় খোলা দরিদ্র মানুষের হিসাবেও আমানতের প্রবৃদ্ধি কমছে। সরকারি হিসাবেই ডিসেম্বর পর্যন্ত জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে পৌনে ৯ শতাংশ। একই সময়ে গড়ে আয় বেড়েছে সোয়া ৭ শতাংশ। জীবনযাত্রায় ঘাটতি থাকছে প্রায় দেড় শতাংশ। এতে মানুষের সঞ্চয় কমেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত সেপ্টেম্বরে কৃষকদের ৯৮ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৯ অ্যাকাউন্টে মোট ৬০২ কোটি টাকার আমানত ছিল। কিন্তু ডিসেম্বরে ৯৯ লাখ ৬ হাজার ৮২৪ অ্যাকাউন্টে আমানত কমে দাঁড়িয়েছে ৫৬৩ কোটি টাকা। সে হিসেবে তিন মাসে কৃষকদের অ্যাকাউন্ট শূন্য দশমিক ২৩ শতাংশ বাড়লেও আমানত কমেছে ৬ দশমিক ৪৮ শতাংশ। তবে এক বছরের হিসাবে এসব অ্যাকাউন্টে আমানত বেড়েছে ১০ দশমিক ১৮ শতাংশ। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে কৃষকদের অ্যাকাউন্টে আমানত ছিল ৫১১ কোটি টাকা।
গত বছরের শেষ দিকে বিদ্যুতের অস্থিরতার প্রভাবও পড়েছে কৃষকদের সঞ্চয়ে। বিদ্যুৎ বিভাগ জানায়, প্রতি বছর সেচ মৌসুমে (ফেব্রুয়ারি থেকে মে) বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যায়। গত মৌসুমে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা ছিল ১৪ হাজার ৭৮২ মেগাওয়াট। চলতি বছর সম্ভাব্য চাহিদা ধরা হয়েছে ১৬ হাজার মেগাওয়াট। গত বছরের তুলনায় এ বছর সেচ সংযোগের সংখ্যা ১ হাজার ৯১টি বেড়ে মোট ৪ লাখ ৬৫ হাজার ৪৫৯টি হয়েছে। এ জন্য বিদ্যুৎ লাগবে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট।
২০০৯-১০ সালের দিকে জ¦ালানির মূল্যবৃদ্ধির কারণে এক কোটির বেশি কৃষককে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা সরাসরি নগদ সহায়তা দেওয়া হয়েছিল। এ জন্য তারা ১০ টাকা দিয়ে ব্যাংক অ্যাকাউন্টও খুলেছিলেন। তাদের সেই অ্যাকাউন্ট এখনো আছে, কিন্তু সহায়তা দেওয়া হয় না। মুক্তিযোদ্ধাদের আমানত বেড়েছে সাড়ে ৮ শতাংশ। গত বছরের একই সময়ে বেড়েছিল সাড়ে ২৩ শতাংশ। গত বছরের ডিসেম্বরে সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর আওতায় সুবিধাপ্রাপ্তদের আমানত বেড়েছিল প্রায় ২ শতাংশ। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে তা বেড়েছিল সোয়া ১৯ শতাংশ।
আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) গুদামে থাকা ২০ টন সয়াবিন ও ১০ টন ছোলা। গত মঙ্গলবার রাতের দিকে এই আগুন লাগে বলে নিশ্চিত করেছে টিসিবি। ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিটের আধা ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
সংস্থাটি জানিয়েছে, রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায় টিসিবির গোডাউনে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনায় ২০ মণ সয়াবিন তেল ও ১০-১২ মণ ছোলা পুড়ে গেছে।
ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া উইং জানিয়েছে, টিসিবির গোডাউনে আগুন লাগার খবর পেয়ে রাত ১২টা ৩ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরে আরও দুই ইউনিট যোগ দিয়ে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। পরে ১২টা ২৪ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে কী কারণে আগুনের সূত্রপাত তা তাৎক্ষণিক জানাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস।
জানতে চাইলে টিসিবির চেয়ারম্যান আরিফুজ্জামান দেশ রূপান্তরকে বলেন, আগুন লাগার কারণ জানতে আমরা তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেছি। এই কমিটি আগামী সাত দিনের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে ব্যাখ্যা করবে। পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিসের কাছ থেকেও একটি উত্তর পাব। সব প্রতিবেদন হাতে এলে আমরা গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে জানাব।
তিনি আরও বলেন, আমাদের খাদ্যের গোডাউন তিনটি। এর মধ্যে একটি গোডাউনের একটা শেডে আগুন ধরেছে। তবে আমাদের খাদ্যের মজুদ অতিরিক্ত রয়েছে। আরও আগেই দেশের বিভিন্ন জেলায় রমজানের জন্য যে খাদ্যপণ্য প্রস্তুত করেছি তা আমরা পাঠিয়ে দিয়েছি। রমজানের জন্য টিসিবি খাদ্য সংকটে পড়বে না।
জানা গেছে, গুদামে থাকা কমপক্ষে ২০ টন সয়াবিন তেল পুড়ে গেছে। পাশাপাশি ১০ থেকে ১২ টন ছোলা পুড়ে গেছে। তবে ক্ষতির সঠিক পরিমাণ জানা যাবে তদন্ত কমিটির প্রদিতবেদন পাওয়ার পর।
টেস্ট ক্রিকেটে সিলেটের পথচলা শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালে। অভিজাত সংস্করণে যা ছিল দেশের অষ্টম ভেন্যু। জিম্বাবুয়ের সঙ্গে ম্যাচ দিয়ে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে পা রাখে দেশের সবচেয়ে সুন্দর এই স্টেডিয়ামটি। তবে মাঠের অভিষেক ম্যাচেই হেরে যায় বাংলাদেশ। তারপর আর কোনো পাঁচ দিনের খেলা গড়ায়নি এই মাঠে। এ নিয়ে স্থানীয়দের আক্ষেপের শেষ নেই।
অবশেষে অপেক্ষার প্রহর ফুরাচ্ছে। পাঁচ বছর পর আবারও টেস্ট ক্রিকেট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক ও সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল।
ক্রিকবাজের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেছেন, ‘আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরে আমরা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজের প্রথম টেস্ট আয়োজন করতে পারব বলে আশা করছি। এটি আমাদের জন্য খুব একটি উপলক্ষ হবে। কারণ পাঁচ বছর পর সিলেটের মাঠে টেস্ট ক্রিকেট ফিরবে।’
সম্প্রতি নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধি দল সিলেট সফর করেছে। তারা সেখানকার মাঠসহ সব সুযোগ সুবিধা পরিদর্শন করেছেন। পাশাপাশি নিরাপত্তার বিষয়ে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। সবকিছু দেখে তারা এখানে আরও বেশি ম্যাচ আয়োজনের জন্য উন্মুখ বলে জানিয়েছেন বিসিবির নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান নাদেল।
তিনি যোগ করেছেন, ‘নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধি দল আমাদের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বেশ মুগ্ধ। তাদের প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হয়েছে আমরা তাদের সব প্রত্যাশা ও প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে পারব।’
এফটিপি সূচি অনুযায়ী চলতি বছর বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ওয়ানডে ও দুই টেস্ট ম্যাচের সিরিজে খেলার কথা নিউজিল্যান্ডের। তবে সিরিজটি হবে দুই ভাগে। প্রথম ভাগে সেপ্টেম্বরের শেষভাগে বাংলাদেশের সঙ্গে ওয়ানডে খেলবে কিউইরা। এই সিরিজ খেলেই বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে যাবে দুই দল।
বিশ্বকাপের পর হবে দুই দলের টেস্ট সিরিজ। নভেম্বরের শেষ দিকে আবারও বাংলাদেশে আসবে কিউইরা। বিসিবি প্রস্তাবিত সূচি অনুযায়ী ২১ নভেম্বর ঢাকায় পা রাখার কথা সফরকারীদের। এরপর একটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলবে দলটি। ২৮ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর হবে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার সিরিজের প্রথম টেস্ট।
প্রথম দুই সেটই গড়িয়েছে টাইব্রেকারে। প্রথমটি নিষ্পত্তি হয়েছে ৮৫ মিনিটে। দ্বিতীয়টিও টাইব্রেকারে। সেটির নিষ্পত্তি ঘণ্টার ওপরে। দুটোতেই জয় নোভাক জকোভিচের। তারপরেরটিও জিতে যান এই সার্বিয়ান। ১৪তম ফ্রেঞ্চ ওপেনের খেলায় স্পেনের আলেজান্দ্রো ফোকিনার সঙ্গে ৩-০ সেটে জয়লাভ করেন তিনি। যে জয়ে মধুর প্রতিশোধ নিয়ে শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছেন তিনি।
৩৬ বছর বয়সী এই নাম্বার ওয়ান টেনিস তারকা প্রথম সেটে কিছুটা ছন্দহীন ছিলেন। তবে চ্যাম্পিয়নদের ঘুরে দাঁড়াতে তো সময় বেশি লাগে না। জকোভিচও ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। তারপর ফোকিনাকে কোনো সেট জিততে না দিয়েই ম্যাচ শেষ করেন তিনি।
প্রায় ৪ ঘণ্টাব্যাপী চলা এই ম্যাচটিতে এক পেশে জয় হলেও প্রতিটি সেটেই উত্তেজনার পারদ ছড়িয়েছেন দুজন। সমর্থকেরাও বারবার হয়েছেন রোমাঞ্চিত। তবে শেষ পর্যন্ত নোভাক জকোভিচের সমর্থকেরাই হাসি নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আগামী সোমবার জকোভিচ শেষ ষোলোর ম্যাচ খেলতে নামবেন। সেখানে প্রতিপক্ষ হিসেবে কার্লোস আলকারাজকে পেতে পারেন তিনি।
স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট কো-স্পোর্টস যতটা না তাদের কর্মগুণে সমাদৃত, তার চেয়ে বেশি আলোচিত নানা নেতিবাচক কারণে। একটা সময় কে-স্পোর্টস ও এর প্রধান নির্বাহী ফাহাদ করিমে আস্থা রেখেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। বড় বড় সব চুক্তিও সে সময় হয়েছিল দুই পক্ষের। তবে চুক্তির নানা শর্ত ভঙ্গ করে বিসিবির গুড বুক থেকে কাটা গেছে তাদের নাম।
বিসিবিতে সুবিধা করে উঠতে না পেরে গেল কয়েক বছর ফাহাদ করিম সওয়ার হয়েছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনে। বাফুফের এই আলোচিত সভাপতি একটা সময় বড় গলায় ভারতীয় ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ, বিসিবির বিপিএলের কঠোর সমালোচনা করে বলেছিলেন, ফুটবলকে জনপ্রিয় করতে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের মতো সস্তা আয়োজনের প্রয়োজন নেই।
অথচ ফাহাদের পাল্লায় পড়ে সেই সালাউদ্দিনই নিজের বলা কথা ভুলে গেছেন। তৎপর হয়েছেন নারী ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ আয়োজনে। যদিও এমন আয়োজনের জন্য কোনো রকম পূর্বপ্রস্তুতি ছিল না কে-স্পোর্টসের। যার জ্বলন্ত উদাহরণ ফ্র্যাঞ্চাইজি চূড়ান্ত না করেই আসর মাঠে গড়ানোর তারিখ ঘোষণা করা এবং অনুমিতভাবেই ঘোষিত তারিখে খেলা শুরু করতে না পারা।
কে-স্পোর্টসের সিইও ফাহাদ করিমের সঙ্গে সালাউদ্দিনের দহরম মহরম বেশ কয়েক বছর আগে থেকে। সেটা কখনো কখনো ফুটবলের স্বার্থ ছাড়িয়ে চলে যায় ব্যক্তিস্বার্থে। সাফল্যপ্রসবা নারী ফুটবলে বেশি আগ্রহ সালাউদ্দিনের। ক্রীড়া-বেনিয়া ফাহাদও সালাউদ্দিনের নারী ফুটবলের প্রতি বাড়তি অনুরাগটা ধরে ফেলে ২০১৯ সালে বাফুফেতে প্রবেশ করেন ঢাকায় অনূর্ধ্ব-১৯ আন্তর্জাতিক নারী টুর্নামেন্ট আয়োজনের মধ্য দিয়ে।
এর পরের বছর টিভি সম্প্রচারস্বত্ব পাইয়ে দিতে বাফুফের সঙ্গে তিন বছরের বড় অঙ্কের চুক্তি করে কে-স্পোর্টস। চুক্তি অনুযায়ী বাফুফেকে ফি-বছর আড়াই কোটি টাকা করে দেওয়ার কথা কে-স্পোর্টসের। সেই অর্থ বুঝে না পেয়ে সম্প্রতি ফাহাদ করিমকে চিঠি দেয় বাফুফে।
বিষয়টি সমাধান না হলে নারী ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ নিয়ে চুক্তি না করার ইঙ্গিতও দেওয়া হয়েছিল চিঠিতে। তবে এই চিঠি দেওয়া যে শুধুই আনুষ্ঠানিকতার, তা সালাউদ্দিন-ফাহাদ করিমের হাবভাবেই বোঝা যায়। চুক্তির বিষয়টাকে এক পাশে রেখে আসলে তাদের বড় দুর্ভাবনা নারী ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ।
পাঁচ তারকা হোটেলে সাবিনা খাতুন, কৃষ্ণা রানীদের নিয়ে দেশ-বিদেশ থেকে নামীদামি নায়ক-নায়িকা-মডেল ভাড়া করে এনে ফাহাদ করিম এর মধ্যেই আসরের লোগো, ট্রফি ও বল উন্মোচন করেছেন একাধিক অনুষ্ঠানে। ১ মে হওয়ার কথা ছিল আসরের প্লেয়ার্স ড্রাফটস। সেদিন ড্রাফটসের জায়গায় হয়েছে ট্রফি ও বল উন্মোচন অনুষ্ঠান। কে-স্পোর্টস যে ফ্র্যাঞ্চাইজিও চূড়ান্ত করতে পারেনি, প্লেয়ার ড্রাফটসটা হবেই বা কাদের নিয়ে?
এই অবস্থা এখনো চলমান। ১৫ মে শুরু হওয়ার কথা ছিল খেলা। সেই তারিখও ভেস্তে গেছে। আসলে অনিয়ম-জালিয়াতির আখড়ায় রূপ নেওয়া বাফুফের প্রতি আস্থা হারিয়েছে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো। যেচে কেউই চায় না ফাহাদ-সালাউদ্দিনের দেওয়া টোপ গিলতে। এমনকি ফুটবলের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক আছে এমন কোম্পানিগুলোও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
শুরুতে এ আসরটি ছয় দল নিয়ে আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছিল কে-স্পোর্টস। পরে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের কাছ থেকে প্রত্যাশিত সাড়া না পেয়ে দলসংখ্যা নামিয়ে আনা হয় চারে। জানা গেছে, বাফুফেকে পৃষ্ঠপোষকতা করা বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানে বারবার গিয়েও খেলতে রাজি করাতে পারেননি ফাহাদ। অথচ তারপরও এই ফাহাদে সালাউদ্দিনের আস্থা টলেনি।
সম্প্রতি সালাউদ্দিন, বাফুফের সিনিয়র সহসভাপতি সালাম মুর্শেদী ও বাফুফের নারী কমিটির প্রধান মাহফুজা আক্তারের সঙ্গে দীর্ঘ সভা করেন। বৈঠক শেষে বাফুফে ভবন ছাড়ার সময় ফাহাদ করিম যা বলেছিলেন, তাতে পরিষ্কার নারী ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের কোনো অগ্রগতিই হয়নি।
দেশ রূপান্তরকে ফাহাদ বলেছেন, ‘দুটি ফ্র্যাঞ্চাইজি চূড়ান্ত হয়েছে। বাকিগুলো শিগগিরই হয়ে যাবে। বড় কোনো অগ্রগতি হলে আমি সবাইকে ডেকে জানাব।’
গত সোমবার বাফুফের জরুরি সভা শেষে কাজী সালাউদ্দিন নতুন করে লিগ শুরুর তারিখ ঘোষণা করেন। পরে গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘ওমেন্স ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ ১০ জুন থেকে শুরু হবে। ১২ দিনে হবে ১৩ টি ম্যাচ। এটা এখন বলা দরকার যে, ফিফা উইন্ডোতে লিগ করছি। যেন বিদেশি খেলোয়াড় আসতে পারে। না হলে আসতে পারবে না।’
নতুন তারিখ ঘোষণা করেছেন ঠিকই। তবে আদৌ নির্ধারিত তারিখে খেলা হবে কি না, তা নিয়ে রয়েছে যথেষ্ট শঙ্কা।
গত বছর নেপালে সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর থেকেই মাঠে ফেরার দিন গুনছেন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের খেলোয়াড়রা। সাফ জয়ের পর সালাউদ্দিন শুনিয়েছিলেন গালভরা বুলি। সাবিনাদের নিয়মিত খেলার ব্যবস্থা করবেন। অথচ লিগের কিছু ম্যাচ ছাড়া আর খেলারই সুযোগ আসেনি। অথচ অর্থ সংকটের খোঁড়া অজুহাত দেখিয়ে বাফুফে মেয়েদের মিয়ানমারে পাঠায়নি অলিম্পিক বাছাই খেলতে।
ফিফা উইন্ডোতেও বাফুফে পারেনি দলের জন্য প্রতিপক্ষ জোগাতে। পাঁচ তারকা হোটেলের চোখ ঝলসানো মায়াবী আলো আর সুরের মূর্ছনায় ফাহাদ করিম আয়োজন করেছিলেন লোগো, ট্রফি উন্মোচন অনুষ্ঠান। সেখানে গিয়ে সাবিনারাও দেখেছিলেন বাড়তি কিছু উপার্জনের রঙিন স্বপ্ন। তবে বাফুফের অদূরদর্শী সভাপতি অপ্রস্তুত এক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের হাতে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ আয়োজনের দায়িত্ব তুলে দিয়ে যেন সাবিনাদের স্বপ্নটাকেই আরেকবার গলাটিপে ধরতে চাইছেন।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।
দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী লিমিটেড ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের মধ্যকার ফেডারেশন কাপ ফুটবলের ফাইনাল দেখতে কুমিল্লায় উড়ে গেছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।
কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে আজ বেলা ৩টা ১৫ মিনিটে শুরু হয়েছে ম্যাচটি। সালাউদ্দিন ম্যাচ শুরুর ঘণ্টা খানেক আগে কুমিল্লায় পৌঁছান।
ঢাকা থেকে সড়ক পথে কুমিল্লায় পাড়ি দিতে মাত্র দুই ঘণ্টা সময় লাগে। তবে সালাউদ্দিন দূরত্বটা পাড়ি দিয়েছেন হেলিকপ্টারে করে। যা আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
টাকার অভাবে কদিন আগে নারী ফুটবলারদের অলিম্পিক বাছাইয়ে পাঠায়নি বাফুফে। অথচ ঢাকা থেকে কুমিল্লায় যেতে বাফুফে সভাপতি বেছে নিলেন হেলিকপ্টার।
হেলিকপ্টারে ঢাকা থেকে কুমিল্লার এই যাত্রায় বাফুফে সভাপতির সঙ্গী হয়েছেন সংস্থার নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ।