হল না খুলে পরীক্ষা: ঢাবিতে প্রগতিশীল ছাত্র জোটের বিক্ষোভ
ঢাবি প্রতিনিধি | ১২ জানুয়ারি, ২০২১ ১৮:২০
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল না খুলে পরীক্ষা নেওয়ার পদক্ষেপের প্রতিবাদে প্রশাসনের প্রতীকী কুশপুতুল পুড়িয়ে বিক্ষোভ করেছে প্রগতিশীল ছাত্র জোট।
মঙ্গলবার দুপুরে উপাচার্য বাসভবনের সামনে পূর্বঘোষিত এই কর্মসূচি পালন করেন জোটের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতা-কর্মীরা।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তারা।
হল খোলা ছাড়াও করোনাভাইরাস মহামারীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বেতন-ফি মওকুফ এবং টিএসসি সংস্কারে বর্তমান অবকাঠামো না ভেঙে স্বতন্ত্র্য বজায় রাখারও দাবি জানান তারা।
এসব দাবিতে ২৪ জানুয়ারি দুপুর ১২টায় প্রগতিশীল ছাত্রজোটের ব্যানারে রাজু ভাস্কর্যে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয় সমাবেশ থেকে।
সেশনজট নিরসন ও ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষার কথা বিবেচনা করে মহামারীর মধ্যেই স্নাতক ফাইনাল ও স্নাতকোত্তরের পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীরা ইতিবাচকভাবে দেখলেও আবাসিক হল বন্ধ থাকায় ঢাকায় এসে কোথায় থেকে পরীক্ষা দেবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা।
কুশপুতুল পোড়ানোর আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে জোটের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সমন্বয়ক সোহাইল আহমেদ শুভ বলেন, করোনার বিশেষ পরিস্থিতিতে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শিক্ষার্থীদের জোর করে নিয়ে এসে কোনো ধরনের আয়োজন ছাড়াই পরীক্ষায় বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে অনেক বিভাগে পরীক্ষা শুরু হয়ে গেছে, অনেক বিভাগে পরীক্ষার ঘোষণা দেওয়া আছে।
তিনি বলেন, ঢাকার বাইরে থাকা বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী ঢাকায় এসে কোথায় থাকবেন, কী করবেন- তার কোনো নিশ্চয়তা না দিয়ে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। করোনা মহামারি অর্থনৈতিক সংকট তৈরি করেছে। নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের আয় কমে যাওয়া ও চাকরি হারানোর পরিস্থিতির মধ্যে শিক্ষা-কার্যক্রম বন্ধ থাকা সত্ত্বেও এ বছরের বেতন-ফি নিচ্ছে প্রশাসন। বেঁধে দেওয়া সময়ে বেতন-ফি দিতে না পারায় অনেক শিক্ষার্থীকে জরিমানাও গুনতে হচ্ছে। প্রশাসনের এসব অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্তের আমরা প্রতিবাদ জানাই।
টিএসসি সংস্কার করতে গিয়ে বর্তমান অবকাঠামো ভেঙে ফেলার শঙ্কার কথা উল্লেখ করে ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সাখাওয়াত ফাহাদ বলেন, টিএসসি ভবন কেবল ইট-পাথরের কোনো ভবন নয়। টিএসসি ভেঙে ২০ তলা ভবন বানিয়ে এর পরিসরকে সঙ্কুচিত করার চক্রান্ত চলছে।
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা সংকট চলছে। হলে জায়গা নেই, শিক্ষার্থীরা ঘুমাতে পারেন না। তারা হলের বারান্দা, মসজিদ ও ক্যানটিনে ঘুমান। গ্রন্থাগারে শিক্ষার্থীদের বসার জায়গা নেই। এসবের সুরাহা না করে প্রশাসন ২০তলা ভবন নির্মাণের যে প্রকল্প নিচ্ছে, তার পুরোটাই বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে। এখানে শিক্ষার্থীদের কোনো স্বার্থ নেই। ছাত্রসমাজ এই চক্রান্ত মেনে নেবে না।
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ছাত্র ফন্টের ঢাবি শাখার সভাপতি সালমান সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক প্রগতি বর্মণ তমা, সহ-সভাপতি সাদেকুল ইসলাম সাদিক।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
ঢাবি প্রতিনিধি | ১২ জানুয়ারি, ২০২১ ১৮:২০

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল না খুলে পরীক্ষা নেওয়ার পদক্ষেপের প্রতিবাদে প্রশাসনের প্রতীকী কুশপুতুল পুড়িয়ে বিক্ষোভ করেছে প্রগতিশীল ছাত্র জোট।
মঙ্গলবার দুপুরে উপাচার্য বাসভবনের সামনে পূর্বঘোষিত এই কর্মসূচি পালন করেন জোটের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতা-কর্মীরা।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তারা।
হল খোলা ছাড়াও করোনাভাইরাস মহামারীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বেতন-ফি মওকুফ এবং টিএসসি সংস্কারে বর্তমান অবকাঠামো না ভেঙে স্বতন্ত্র্য বজায় রাখারও দাবি জানান তারা।
এসব দাবিতে ২৪ জানুয়ারি দুপুর ১২টায় প্রগতিশীল ছাত্রজোটের ব্যানারে রাজু ভাস্কর্যে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয় সমাবেশ থেকে।
সেশনজট নিরসন ও ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষার কথা বিবেচনা করে মহামারীর মধ্যেই স্নাতক ফাইনাল ও স্নাতকোত্তরের পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীরা ইতিবাচকভাবে দেখলেও আবাসিক হল বন্ধ থাকায় ঢাকায় এসে কোথায় থেকে পরীক্ষা দেবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা।
কুশপুতুল পোড়ানোর আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে জোটের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সমন্বয়ক সোহাইল আহমেদ শুভ বলেন, করোনার বিশেষ পরিস্থিতিতে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শিক্ষার্থীদের জোর করে নিয়ে এসে কোনো ধরনের আয়োজন ছাড়াই পরীক্ষায় বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে অনেক বিভাগে পরীক্ষা শুরু হয়ে গেছে, অনেক বিভাগে পরীক্ষার ঘোষণা দেওয়া আছে।
তিনি বলেন, ঢাকার বাইরে থাকা বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী ঢাকায় এসে কোথায় থাকবেন, কী করবেন- তার কোনো নিশ্চয়তা না দিয়ে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। করোনা মহামারি অর্থনৈতিক সংকট তৈরি করেছে। নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের আয় কমে যাওয়া ও চাকরি হারানোর পরিস্থিতির মধ্যে শিক্ষা-কার্যক্রম বন্ধ থাকা সত্ত্বেও এ বছরের বেতন-ফি নিচ্ছে প্রশাসন। বেঁধে দেওয়া সময়ে বেতন-ফি দিতে না পারায় অনেক শিক্ষার্থীকে জরিমানাও গুনতে হচ্ছে। প্রশাসনের এসব অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্তের আমরা প্রতিবাদ জানাই।
টিএসসি সংস্কার করতে গিয়ে বর্তমান অবকাঠামো ভেঙে ফেলার শঙ্কার কথা উল্লেখ করে ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সাখাওয়াত ফাহাদ বলেন, টিএসসি ভবন কেবল ইট-পাথরের কোনো ভবন নয়। টিএসসি ভেঙে ২০ তলা ভবন বানিয়ে এর পরিসরকে সঙ্কুচিত করার চক্রান্ত চলছে।
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা সংকট চলছে। হলে জায়গা নেই, শিক্ষার্থীরা ঘুমাতে পারেন না। তারা হলের বারান্দা, মসজিদ ও ক্যানটিনে ঘুমান। গ্রন্থাগারে শিক্ষার্থীদের বসার জায়গা নেই। এসবের সুরাহা না করে প্রশাসন ২০তলা ভবন নির্মাণের যে প্রকল্প নিচ্ছে, তার পুরোটাই বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে। এখানে শিক্ষার্থীদের কোনো স্বার্থ নেই। ছাত্রসমাজ এই চক্রান্ত মেনে নেবে না।
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ছাত্র ফন্টের ঢাবি শাখার সভাপতি সালমান সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক প্রগতি বর্মণ তমা, সহ-সভাপতি সাদেকুল ইসলাম সাদিক।