রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: বন্ধ ক্যাম্পাস যেন মাদক সেবনের আখড়া
শাহীন আলম, রাবি প্রতিনিধি | ১৯ জানুয়ারি, ২০২১ ১৭:৫৩
বৈশ্বিক করোনা মহামারির কারণে দেশের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো বন্ধ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ও। প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষাকার্যক্রম প্রায় স্থবির হয়ে পড়লেও বন্ধ ক্যাম্পাসে থেমে নেই মাদকসেবীদের আড্ডা।
ক্যাম্পাস যেন পরিণত হয়েছে মাদকসেবনের আখড়ায়। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ড্রেন আর ভবনের পেছনে মিলছে ফেনসিডিলের পড়ে থাকা বোতল। কে বা কারা এসব কর্মকাণ্ডে জড়িত তাদের প্রশাসন চিহ্নিত করতে পারছে না।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হাবিবুর রহমান হলের সামনের মাঠের কোনায় স্তূপ হয়ে আছে ফেনসিডিলের বোতল। হলের পাশের একটা পুকুরে ভাসছে এমন অনেকগুলো ফেনসিডিলের খালি বোতল। বিশ্ববিদ্যালয়ের তুঁত বাগানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে মাদক গ্রহণ করার বিভিন্ন আলামত। এ ছাড়া ক্যাম্পাসের ড্রেনগুলোতেও অসংখ্য ফেনসিডিলের বোতল পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বহিরাগতদের আনাগোনা ক্যাম্পাসে থেমে নেই। তারা প্রশাসনের নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে যখন-তখন ক্যাম্পাসে প্রবেশ করছেন। কারো ধার ধারছেন না তারা। ক্যাম্পাসে প্রবেশের কারণ জানতে চাওয়ায় পুলিশের সঙ্গে প্রায়ই বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ছে তারা। এ ছাড়া পুলিশের একটি দল নিয়মিত টহলে থাকলেও কোনো মাদকসেবী ধরা পড়ছে না। তাই শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের তৎপরতা নিয়ে সমালোচনা করছেন।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. হাসান সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, করোনার এই সময়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশে এখন কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। তাহলে কারা মাদকের আড্ডা বসিয়ে ক্যাম্পাসের পরিবেশ নষ্ট করছে? বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এ বিষয়ে আরও কঠোর হওয়া উঠিত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সূত্র বলছে, ক্যাম্পাসের কাজ করেন এমন কিছু চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী আছে যারা এসব মাদকসেবীদের সুপরিচিত। তাদের হাত ধরেই ক্যাম্পাসে মাদকের আখড়া তৈরি হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক মলয় কুমার ভৌমিক বলেন, ক্যাম্পাসগুলোতে যদি মাদকের পরিমাণ এত বেড়ে যায় তাহলে এটা একটা জাতির জন্য হতাশার খবর। ক্যাম্পাসে কারা মাদক সেবন করেন এটা নিয়ে একটা তদন্ত কমিটি হওয়া উচিত। এর সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির আওতায় নিয়ে উচিত বলে মনে করছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, মাদকমুক্ত ক্যাম্পাস নির্মাণে আমি নিরলস কাজ করে যাচ্ছি। ইতিমধ্যে আমি স্টুয়ার্ড শাখা এবং পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথাও বলেছি। যত দূর শুনেছি ক্যাম্পাসের এক শ্রেণির কর্মচারীরা এর সঙ্গে জড়িত। তবে আমরা হাতেনাতে যদি কাউকে ধরতে পারি তাদের বিরুদ্ধে কড়া আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
শাহীন আলম, রাবি প্রতিনিধি | ১৯ জানুয়ারি, ২০২১ ১৭:৫৩

বৈশ্বিক করোনা মহামারির কারণে দেশের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো বন্ধ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ও। প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষাকার্যক্রম প্রায় স্থবির হয়ে পড়লেও বন্ধ ক্যাম্পাসে থেমে নেই মাদকসেবীদের আড্ডা।
ক্যাম্পাস যেন পরিণত হয়েছে মাদকসেবনের আখড়ায়। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ড্রেন আর ভবনের পেছনে মিলছে ফেনসিডিলের পড়ে থাকা বোতল। কে বা কারা এসব কর্মকাণ্ডে জড়িত তাদের প্রশাসন চিহ্নিত করতে পারছে না।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হাবিবুর রহমান হলের সামনের মাঠের কোনায় স্তূপ হয়ে আছে ফেনসিডিলের বোতল। হলের পাশের একটা পুকুরে ভাসছে এমন অনেকগুলো ফেনসিডিলের খালি বোতল। বিশ্ববিদ্যালয়ের তুঁত বাগানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে মাদক গ্রহণ করার বিভিন্ন আলামত। এ ছাড়া ক্যাম্পাসের ড্রেনগুলোতেও অসংখ্য ফেনসিডিলের বোতল পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বহিরাগতদের আনাগোনা ক্যাম্পাসে থেমে নেই। তারা প্রশাসনের নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে যখন-তখন ক্যাম্পাসে প্রবেশ করছেন। কারো ধার ধারছেন না তারা। ক্যাম্পাসে প্রবেশের কারণ জানতে চাওয়ায় পুলিশের সঙ্গে প্রায়ই বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ছে তারা। এ ছাড়া পুলিশের একটি দল নিয়মিত টহলে থাকলেও কোনো মাদকসেবী ধরা পড়ছে না। তাই শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের তৎপরতা নিয়ে সমালোচনা করছেন।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. হাসান সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, করোনার এই সময়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশে এখন কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। তাহলে কারা মাদকের আড্ডা বসিয়ে ক্যাম্পাসের পরিবেশ নষ্ট করছে? বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এ বিষয়ে আরও কঠোর হওয়া উঠিত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সূত্র বলছে, ক্যাম্পাসের কাজ করেন এমন কিছু চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী আছে যারা এসব মাদকসেবীদের সুপরিচিত। তাদের হাত ধরেই ক্যাম্পাসে মাদকের আখড়া তৈরি হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক মলয় কুমার ভৌমিক বলেন, ক্যাম্পাসগুলোতে যদি মাদকের পরিমাণ এত বেড়ে যায় তাহলে এটা একটা জাতির জন্য হতাশার খবর। ক্যাম্পাসে কারা মাদক সেবন করেন এটা নিয়ে একটা তদন্ত কমিটি হওয়া উচিত। এর সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির আওতায় নিয়ে উচিত বলে মনে করছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, মাদকমুক্ত ক্যাম্পাস নির্মাণে আমি নিরলস কাজ করে যাচ্ছি। ইতিমধ্যে আমি স্টুয়ার্ড শাখা এবং পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথাও বলেছি। যত দূর শুনেছি ক্যাম্পাসের এক শ্রেণির কর্মচারীরা এর সঙ্গে জড়িত। তবে আমরা হাতেনাতে যদি কাউকে ধরতে পারি তাদের বিরুদ্ধে কড়া আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করব।