ছাত্রলীগকে জানিয়ে হলে আসতে হবে শেকৃবি প্রশাসনকে!
শেকৃবি প্রতিনিধি | ২৫ মে, ২০২২ ১৯:১৪
হলে আসার আগে প্রশাসনকে হল ছাত্রলীগ সভাপতিকে জানিয়ে আসতে হবে বলে জানিয়েছেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল ছাত্রলীগের সভাপতি এস এম সজীব হোসাইন।
মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টায় হলের সহকারী প্রভোস্ট হলে এলে সংশ্লিষ্ট হল ছাত্রলীগ সভাপতি তাদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডার সময় এমন মন্তব্য করেন। এ সময় সজীব দাবি করেন, ‘প্রক্টর স্যার পর্যন্ত হলে এলে আমাকে ফোন দেয়। ছাত্রলীগ প্রশাসনের বডি।’
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সজীব হোসাইনের বাগবিতণ্ডার ৯ মিনিট ২ সেকেন্ডের রেকর্ডিং বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকদের হাতে এসেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়টির ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ২১ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ডাইনিংরুমে কথিত মিটিং করছিলেন। এ সময় হল পরিদর্শনে আসেন হলের সহকারী প্রভোস্ট শেখ মো. মাসুম ও মো. শরিফুল ইসলাম। এত রাতে তারা এখানে কী করছে, কেন করছে এসব প্রশ্ন করেন শিক্ষার্থীদের। কিছু সময় পর সেখানে হল ছাত্রলীগ সভাপতি এস এম সজীব হোসাইন উপস্থিত হন। একপর্যায়ে সহকারী প্রভোস্ট শেখ মো. মাসুমের সঙ্গে ছাত্রলীগ সভাপতির উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়।
প্রাপ্ত রেকর্ডিং অনুযায়ী, হল ছাত্রলীগ সভাপতি ও সহকারী প্রভোস্ট মাসুমের বাকবিতন্ডার সময় সজীব হোসাইন বলেন, ‘হলে একটা সমস্যা হইসে, আপনি আসছেন সমাধান করতে আর আমি জানি না বিষয়টা কেমন না... প্রক্টর স্যারও হলে এলে আমাকে ফোন দেয়। আপনি আমাকে ইনফর্ম করে হলে আসতেন। ছাত্রলীগ প্রশাসনের বডি।’
মিটিংয়ের প্রসঙ্গ টেনে সহকারী প্রভোস্টের উদ্দেশে সজীব বলেন, ‘আমার কাছে অভিযোগ আসছে তারা বিএনপির মিটিংয়ে গিয়েছিল, তারা ঝামেলা করতে চেয়েছিল। আমাকে সাথে না নিয়ে আপনি ঢোকেন কেমনে...।’ কিছুসময় পর ঘটনাস্থলে আসেন সহকারী প্রক্টর রাকিবুর রহমান। তাকে বলতে শোনা যায়,‘এমন তো না যে আমরা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে কোনো কাজ করছি। আমরা সবাই আমাদের দায়িত্ববোধের জায়গা থেকেই কাজ করছি। তোমাদের দাবি, তোমাদেরকে জানিয়ে আসতে হবে। কথার কথা- গাঁজা বানিয়ে খেতে কত সময় লাগে... তোমাদেরকে খবর দিতে, আসতে আর পাকড়াও করতে কোনো কিছুই থাকে না। হল প্রশাসন তো হলে আসবেই, যদি কোনো খারাপ পরিস্থিতি হয় হল প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারিকে তো জানাবেই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী প্রভোস্ট শেখ মো. মাসুম বলেন, ‘সেদিন ক্যান্টিন ম্যানেজার জাহিদ ফোন দিয়ে বলেন, তিনি আর ক্যান্টিন চালাবেন না। এরপর রাতে আমি ও শরিফুল ইসলাম হলে যাই। হলে ঢুকতেই ডাইনিংয়ে ছাত্রদের জটলা দেখে সেখানে যাই। রাতে যাই হয়েছে আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি, তারা ব্যবস্থা নেবেন।’
রেকর্ডিংয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে হল ছাত্রলীগ সভাপতি সজীব হোসাইন প্রথমে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। পরে বলেন, ‘না না এসব ভিত্তিহীন, এর কোনো ভিত্তি নেই।’
শেকৃবি প্রভোস্ট কাউন্সিলের আহ্বায়ক ও সংশ্লিষ্ট হল প্রভোস্ট প্রফেসর ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বিষয়টা আমরা জানি। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি, ছাত্রলীগের প্রেসিডেন্ট বা জিএস যেই হোক আমরা কার্যকর পদক্ষেপ নেব।’
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
শেকৃবি প্রতিনিধি | ২৫ মে, ২০২২ ১৯:১৪

হলে আসার আগে প্রশাসনকে হল ছাত্রলীগ সভাপতিকে জানিয়ে আসতে হবে বলে জানিয়েছেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল ছাত্রলীগের সভাপতি এস এম সজীব হোসাইন।
মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টায় হলের সহকারী প্রভোস্ট হলে এলে সংশ্লিষ্ট হল ছাত্রলীগ সভাপতি তাদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডার সময় এমন মন্তব্য করেন। এ সময় সজীব দাবি করেন, ‘প্রক্টর স্যার পর্যন্ত হলে এলে আমাকে ফোন দেয়। ছাত্রলীগ প্রশাসনের বডি।’
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সজীব হোসাইনের বাগবিতণ্ডার ৯ মিনিট ২ সেকেন্ডের রেকর্ডিং বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকদের হাতে এসেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়টির ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ২১ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ডাইনিংরুমে কথিত মিটিং করছিলেন। এ সময় হল পরিদর্শনে আসেন হলের সহকারী প্রভোস্ট শেখ মো. মাসুম ও মো. শরিফুল ইসলাম। এত রাতে তারা এখানে কী করছে, কেন করছে এসব প্রশ্ন করেন শিক্ষার্থীদের। কিছু সময় পর সেখানে হল ছাত্রলীগ সভাপতি এস এম সজীব হোসাইন উপস্থিত হন। একপর্যায়ে সহকারী প্রভোস্ট শেখ মো. মাসুমের সঙ্গে ছাত্রলীগ সভাপতির উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়।
প্রাপ্ত রেকর্ডিং অনুযায়ী, হল ছাত্রলীগ সভাপতি ও সহকারী প্রভোস্ট মাসুমের বাকবিতন্ডার সময় সজীব হোসাইন বলেন, ‘হলে একটা সমস্যা হইসে, আপনি আসছেন সমাধান করতে আর আমি জানি না বিষয়টা কেমন না... প্রক্টর স্যারও হলে এলে আমাকে ফোন দেয়। আপনি আমাকে ইনফর্ম করে হলে আসতেন। ছাত্রলীগ প্রশাসনের বডি।’
মিটিংয়ের প্রসঙ্গ টেনে সহকারী প্রভোস্টের উদ্দেশে সজীব বলেন, ‘আমার কাছে অভিযোগ আসছে তারা বিএনপির মিটিংয়ে গিয়েছিল, তারা ঝামেলা করতে চেয়েছিল। আমাকে সাথে না নিয়ে আপনি ঢোকেন কেমনে...।’ কিছুসময় পর ঘটনাস্থলে আসেন সহকারী প্রক্টর রাকিবুর রহমান। তাকে বলতে শোনা যায়,‘এমন তো না যে আমরা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে কোনো কাজ করছি। আমরা সবাই আমাদের দায়িত্ববোধের জায়গা থেকেই কাজ করছি। তোমাদের দাবি, তোমাদেরকে জানিয়ে আসতে হবে। কথার কথা- গাঁজা বানিয়ে খেতে কত সময় লাগে... তোমাদেরকে খবর দিতে, আসতে আর পাকড়াও করতে কোনো কিছুই থাকে না। হল প্রশাসন তো হলে আসবেই, যদি কোনো খারাপ পরিস্থিতি হয় হল প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারিকে তো জানাবেই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী প্রভোস্ট শেখ মো. মাসুম বলেন, ‘সেদিন ক্যান্টিন ম্যানেজার জাহিদ ফোন দিয়ে বলেন, তিনি আর ক্যান্টিন চালাবেন না। এরপর রাতে আমি ও শরিফুল ইসলাম হলে যাই। হলে ঢুকতেই ডাইনিংয়ে ছাত্রদের জটলা দেখে সেখানে যাই। রাতে যাই হয়েছে আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি, তারা ব্যবস্থা নেবেন।’
রেকর্ডিংয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে হল ছাত্রলীগ সভাপতি সজীব হোসাইন প্রথমে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। পরে বলেন, ‘না না এসব ভিত্তিহীন, এর কোনো ভিত্তি নেই।’
শেকৃবি প্রভোস্ট কাউন্সিলের আহ্বায়ক ও সংশ্লিষ্ট হল প্রভোস্ট প্রফেসর ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বিষয়টা আমরা জানি। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি, ছাত্রলীগের প্রেসিডেন্ট বা জিএস যেই হোক আমরা কার্যকর পদক্ষেপ নেব।’