জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
মুক্তিযোদ্ধা শিক্ষকের রাষ্ট্রীয় সুবিধা বাতিলের সিনেট আজ
জাবি প্রতিনিধি | ২৪ জুন, ২০২২ ০৮:০৮
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ৩৯তম বার্ষিক সিনেট সভা আজ বেলা সাড়ে তিনটায় শুরু হবে। এ সভায় মুক্তিযোদ্ধা শিক্ষকদের এক বছর বেশি চাকরির সুবিধা বাতিলের বিষয়েও সিদ্ধান্ত হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে একমাত্র মুক্তিযোদ্ধা শিক্ষক সাবেক উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক আমির হোসেন। যিনি একবছর বেশি চাকরির সুবিধা না পেলে চলতি বছরের জুনেই অবসর প্রস্তুতিমূলক ছুটিতে (এলপিআর) যাবেন। অর্থনীতি বিভাগের এই অধ্যাপককে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি থেকে সরিয়ে দিতেই মুক্তিযোদ্ধা শিক্ষকদের চাকরির ওই সুবিধা তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় পাশ হয়ে আসা এ সিদ্ধান্ত আজ সিনেট সভায় প্রস্তাবনা আকারে উঠবে। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। প্রশ্ন উঠেছে, রাষ্ট্র থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের চাকরিতে এই সুবিধা দেওয়া হয়েছে যা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও বলবৎ রয়েছে; তবে তা বাতিল করতে যাচ্ছে কেন জাবি প্রশাসন।
জাবি ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধারা একটি স্বাধীন দেশ আমাদের উপহার দিয়েছে। তাই তাদেরকে সম্মানীত করতে পারাটা গর্বের। কিন্তু জাবি প্রশাসন যদি এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে যে, একটা সম্মান দিয়েও ফিরিয়ে নেওয়া হচ্ছে এর মানে সম্মানের বদলে অপমান করা হচ্ছে। যা কোনভাবেই কাম্য নয়।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য ও সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবির বলেন, ‘একজন মুক্তিযোদ্ধা শিক্ষকের সঙ্গে এমন আচরণ করা দুঃখজনক। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তারা এ সুযোগ ভোগ করেছেন। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও এ সুবিধা দেওয়া হয়। আমি উপাচার্যকে (নূরুল আলম) অনুরোধ করেছি তাকে (অধ্যাপক আমির হোসেন) যেন অসম্মান না করা হয়।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারন জানতে চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) এবং কোষাধ্যক্ষকে মুঠোফোনে কল দেওয়া হলেও তারা রিসিভ করেননি।
তবে সিন্ডিকেট সদস্য ও জাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক লায়েক সাজ্জাদ এন্দেল্লাহ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘রাষ্ট্রীয়ভাবে একটি সিদ্ধান্ত আছে যে, কোন শিক্ষকই ৬৫ বছরের বেশি চাকরিতে থাকতে পারবেন না। সেই অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধা শিক্ষকদের চাকরিতে অতিরিক্ত এক বছর থাকার বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মে কোন পরিবর্তন নিয়ে আসাটা অনাকাক্সিক্ষত। যদি সরকার আইন করে কোন সুবিধা দিয়ে থাকে তাহলে কোনভাবে সেই অধিকার খর্ব করা যাবে না। আর এটি কোন বিশেষ উদ্দেশ্যে করাটা কাম্য নয়। দেশে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আলাদা করে নিয়ম আছে। যে অধিকার একজন আইনগতভাবে পান, সেটা হুট করে বাদ দেওয়া যায় না।’ বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিকভাবে প্যানেল নির্বাচনের মাধ্যমে উপাচার্য নিয়োগের ব্যাপারেও কথা বলেন তিনি।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
জাবি প্রতিনিধি | ২৪ জুন, ২০২২ ০৮:০৮

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ৩৯তম বার্ষিক সিনেট সভা আজ বেলা সাড়ে তিনটায় শুরু হবে। এ সভায় মুক্তিযোদ্ধা শিক্ষকদের এক বছর বেশি চাকরির সুবিধা বাতিলের বিষয়েও সিদ্ধান্ত হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে একমাত্র মুক্তিযোদ্ধা শিক্ষক সাবেক উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক আমির হোসেন। যিনি একবছর বেশি চাকরির সুবিধা না পেলে চলতি বছরের জুনেই অবসর প্রস্তুতিমূলক ছুটিতে (এলপিআর) যাবেন। অর্থনীতি বিভাগের এই অধ্যাপককে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি থেকে সরিয়ে দিতেই মুক্তিযোদ্ধা শিক্ষকদের চাকরির ওই সুবিধা তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় পাশ হয়ে আসা এ সিদ্ধান্ত আজ সিনেট সভায় প্রস্তাবনা আকারে উঠবে। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। প্রশ্ন উঠেছে, রাষ্ট্র থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের চাকরিতে এই সুবিধা দেওয়া হয়েছে যা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও বলবৎ রয়েছে; তবে তা বাতিল করতে যাচ্ছে কেন জাবি প্রশাসন।
জাবি ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধারা একটি স্বাধীন দেশ আমাদের উপহার দিয়েছে। তাই তাদেরকে সম্মানীত করতে পারাটা গর্বের। কিন্তু জাবি প্রশাসন যদি এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে যে, একটা সম্মান দিয়েও ফিরিয়ে নেওয়া হচ্ছে এর মানে সম্মানের বদলে অপমান করা হচ্ছে। যা কোনভাবেই কাম্য নয়।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য ও সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবির বলেন, ‘একজন মুক্তিযোদ্ধা শিক্ষকের সঙ্গে এমন আচরণ করা দুঃখজনক। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তারা এ সুযোগ ভোগ করেছেন। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও এ সুবিধা দেওয়া হয়। আমি উপাচার্যকে (নূরুল আলম) অনুরোধ করেছি তাকে (অধ্যাপক আমির হোসেন) যেন অসম্মান না করা হয়।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারন জানতে চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) এবং কোষাধ্যক্ষকে মুঠোফোনে কল দেওয়া হলেও তারা রিসিভ করেননি।
তবে সিন্ডিকেট সদস্য ও জাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক লায়েক সাজ্জাদ এন্দেল্লাহ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘রাষ্ট্রীয়ভাবে একটি সিদ্ধান্ত আছে যে, কোন শিক্ষকই ৬৫ বছরের বেশি চাকরিতে থাকতে পারবেন না। সেই অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধা শিক্ষকদের চাকরিতে অতিরিক্ত এক বছর থাকার বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মে কোন পরিবর্তন নিয়ে আসাটা অনাকাক্সিক্ষত। যদি সরকার আইন করে কোন সুবিধা দিয়ে থাকে তাহলে কোনভাবে সেই অধিকার খর্ব করা যাবে না। আর এটি কোন বিশেষ উদ্দেশ্যে করাটা কাম্য নয়। দেশে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আলাদা করে নিয়ম আছে। যে অধিকার একজন আইনগতভাবে পান, সেটা হুট করে বাদ দেওয়া যায় না।’ বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিকভাবে প্যানেল নির্বাচনের মাধ্যমে উপাচার্য নিয়োগের ব্যাপারেও কথা বলেন তিনি।