জাবিতে ছাত্রদল কর্মীকে মারধর ছাত্রলীগের, সাংবাদিকের ফোন তল্লাশি
জাবি প্রতিনিধি | ২৮ জুন, ২০২২ ২১:৫৮
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) এক ছাত্রদল কর্মীকে মারধর এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত এক সাংবাদিকের ফোন তল্লাশির অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।
সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলাভবন সংলগ্ন মুরাদ চত্ত্বরে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল ও সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনের উপস্থিতিতে এসব ঘটে বলে জানা যায়।
মারধরের শিকার ছাত্রদল কর্মীর নাম হামিদুল্লাহ সালমান। তিনি ইংরেজি বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের (৪৯তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী এবং মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক ছাত্র।
আর ভুক্তভোগী সাংবাদিকের নাম ফরিদুর রেজা খান। ইংরেজি বিভাগের এই শিক্ষার্থী একটি অনলাইন নিউজপোর্টালের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুরাদ চত্ত্বরে বসে কথা বলছিলেন হামিদুল্লাহ সালমান ও ফরিদুর রেজা। এ সময় ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা সেখানে গিয়ে হামিদুল্লাহকে চত্ত্বর সংলগ্ন যাত্রী ছাউনির পেছনে নিয়ে যান। তারা সেখানে হামিদুল্লাহকে বেধড়ক মারধর করেন। একপর্যায়ে সেখান থেকে হামিদুল্লাহকে বের করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন ফরিদুর রেজা। সেখানে তাদের দুজনের ফোন তল্লাশী করা শুরু করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা হামিদুল্লাহকে উদ্ধার করে।
হামিদুল্লাহ সালমান বলেন, ‘আমি ছাত্রদল করি বলে ছাত্রলীগের নেতারা আমাকে বেধড়ক মারধর করেছে। তারা জোর-জবরদস্তি করে আমার জবানবন্দিমূলক একটি ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে।’
ফরিদুর রেজা খান বলেন, ‘হামিদুল্লাহ আর আমি একসঙ্গে বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম। ছাত্রলীগের নেতারা হামিদুল্লাহকে মারধর শুরু করলে আমি তাকে বের করার চেষ্টা করি। এতে ছাত্রলীগের নেতারা আমার ওপরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। পরে বিশেষ একটি ছাত্রসংগঠনকে আমি তথ্য দিয়ে সহায়তা করছি-এমন অভিযোগ তুলে তারা আমার মোবাইলের ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জার, গ্যালারিসহ ফোনের ব্যক্তিগত তথ্য ঘাঁটাঘাঁটি করে।’
এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান সোহেলকে ফোনে কল দেওয়া হলেও রিসিভ করেননি।
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন সাংবাদিকদের বলেন, ওই ছাত্রদল কর্মীকে বলা হয়েছিল ক্লাস-পরীক্ষা বাদে ক্যাম্পাসে যেন না আসে। কারণ সে ক্যাম্পাসে নানা নাশকতার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল।
তিনি আরো বলেন, ছাত্রদলের ওই কর্মী ক্যাম্পাসে নাশকতার পরিকল্পনা করছিলেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সুশৃঙ্খল পরিবেশ বিঘ্নিত করার চক্রান্ত করছিলেন মর্মে একটি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন। তবে মারধর করার বিষয়ে আমি জানি না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, ‘এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত আমাকে কোনো অভিযোগপত্র দেওয়া হয়নি। অভিযোগপত্র পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
জাবি প্রতিনিধি | ২৮ জুন, ২০২২ ২১:৫৮

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) এক ছাত্রদল কর্মীকে মারধর এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত এক সাংবাদিকের ফোন তল্লাশির অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।
সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলাভবন সংলগ্ন মুরাদ চত্ত্বরে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল ও সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনের উপস্থিতিতে এসব ঘটে বলে জানা যায়।
মারধরের শিকার ছাত্রদল কর্মীর নাম হামিদুল্লাহ সালমান। তিনি ইংরেজি বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের (৪৯তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী এবং মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক ছাত্র।
আর ভুক্তভোগী সাংবাদিকের নাম ফরিদুর রেজা খান। ইংরেজি বিভাগের এই শিক্ষার্থী একটি অনলাইন নিউজপোর্টালের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুরাদ চত্ত্বরে বসে কথা বলছিলেন হামিদুল্লাহ সালমান ও ফরিদুর রেজা। এ সময় ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা সেখানে গিয়ে হামিদুল্লাহকে চত্ত্বর সংলগ্ন যাত্রী ছাউনির পেছনে নিয়ে যান। তারা সেখানে হামিদুল্লাহকে বেধড়ক মারধর করেন। একপর্যায়ে সেখান থেকে হামিদুল্লাহকে বের করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন ফরিদুর রেজা। সেখানে তাদের দুজনের ফোন তল্লাশী করা শুরু করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা হামিদুল্লাহকে উদ্ধার করে।
হামিদুল্লাহ সালমান বলেন, ‘আমি ছাত্রদল করি বলে ছাত্রলীগের নেতারা আমাকে বেধড়ক মারধর করেছে। তারা জোর-জবরদস্তি করে আমার জবানবন্দিমূলক একটি ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে।’
ফরিদুর রেজা খান বলেন, ‘হামিদুল্লাহ আর আমি একসঙ্গে বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম। ছাত্রলীগের নেতারা হামিদুল্লাহকে মারধর শুরু করলে আমি তাকে বের করার চেষ্টা করি। এতে ছাত্রলীগের নেতারা আমার ওপরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। পরে বিশেষ একটি ছাত্রসংগঠনকে আমি তথ্য দিয়ে সহায়তা করছি-এমন অভিযোগ তুলে তারা আমার মোবাইলের ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জার, গ্যালারিসহ ফোনের ব্যক্তিগত তথ্য ঘাঁটাঘাঁটি করে।’
এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান সোহেলকে ফোনে কল দেওয়া হলেও রিসিভ করেননি।
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন সাংবাদিকদের বলেন, ওই ছাত্রদল কর্মীকে বলা হয়েছিল ক্লাস-পরীক্ষা বাদে ক্যাম্পাসে যেন না আসে। কারণ সে ক্যাম্পাসে নানা নাশকতার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল।
তিনি আরো বলেন, ছাত্রদলের ওই কর্মী ক্যাম্পাসে নাশকতার পরিকল্পনা করছিলেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সুশৃঙ্খল পরিবেশ বিঘ্নিত করার চক্রান্ত করছিলেন মর্মে একটি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন। তবে মারধর করার বিষয়ে আমি জানি না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, ‘এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত আমাকে কোনো অভিযোগপত্র দেওয়া হয়নি। অভিযোগপত্র পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’