জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগে বিরোধ: আরো এক কর্মীকে মারধর
জাবি প্রতিনিধি | ৫ আগস্ট, ২০২২ ২২:০৫
বৃহস্পতিবার খেলার মাঠে গায়ে ধাক্কা লাগার ঘটনায় এক দফা মারধরের জেরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) এবার আরেক ছাত্রলীগকর্মীকে মারধরের করা হয়েছে।
শুক্রবার বেলা সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সুফিয়া কামাল হলের সামনের সড়কে পাল্টা এ মারধরের ঘটনা ঘটে।
মারধরের শিকার সজীব হাসান সাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। সাজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে ফুটবল খেলার সময় মীর মশাররফ হোসেন হলের ছাত্রলীগকর্মী খালিদ হোসেন মাঠের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মওলানা ভাসানী হল ছাত্রলীগের কর্মী সৌরভ কাপালীর গায়ে ধাক্কা দেন। পরে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে খালিদকে মারধর করা হয়। সেসময় মওলানা ভাসানী হলের ছাত্রলীগকর্মী সজীব হাসান সাজসহ আরও কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে।
এ ঘটনার জেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হল ও মওলানা ভাসানী হলের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। রাত ৮টার দিকে রড, লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় অবস্থান নেন মীর মশাররফ হোসেন হল ছাত্রলীগের শতাধিক নেতাকর্মী। তারা বটতলার কয়েকটি দোকান ভাঙচুর করেন। পরে প্রশাসনের মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এরপর শুক্রবার আরো এক কর্মীকে মারধর করা হয়। এ ঘটনার বিচার চেয়ে বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন সাজ।
মারধরে অভিযুক্তরা হলেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের সাগর সিদ্দিকি, রসায়ন বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের তারেক মীর, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের সাব্বির হাসান সাগর ও তোফায়েল আহমেদ গালিব, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের কামরুল মাহমুদ, রসায়ন বিভাগের সৌরভ ও খালিদ হাসান ধ্রুব, মার্কেটিং বিভাগের খালিদ সাইফুল্লাহ, ইংরেজি বিভাগের শাহরিয়ার হিমেল।
তারা সবাই শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
লিখিত অভিযোগপত্রে সজীব হাসান সাজ জানান, দুজন অতিথি নিয়ে মোটরসাইকেলে ক্যাম্পাসে ঘুরছিলেন তিনি। বেগম সুফিয়া কামাল হলের সামনে পৌঁছালে অভিযুক্তরা সাজের মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে মারধর শুরু করে। তখন সাজের সঙ্গে থাকা দুই অতিথিকেও মারধর করা হয়।
মারধরের সময় মীর মশাররফ হোসেন হল ছাত্রলীগের কর্মী ইতিহাস বিভাগের ৪৩তম ব্যাচের প্রীতম আরিফ ও উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ৪৩তম ব্যাচের বিপ্লব হোসেন নির্দেশনা দিচ্ছিল বলেও অভিযোগ করেন সাজ।
তবে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্তরা।
অভিযুক্ত তারেক মীর বলেন, ‘আমি এখনো অসুস্থ। সুফিয়া কামাল হলের সামনে কী ঘটনা ঘটেছে তা আমি জানি না। ওই সময় আমি সেখানে ছিলাম না।’
এ বিষয়ে জানতে মোবাইলে কল দেওয়া হলে প্রীতম আরিফের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, ‘মারধরের ঘটনা খতিয়ে দেখা হবে। এতে দোষীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, ‘মারধরের ঘটনায় একটি অভিযোগপত্র পেয়েছি। পাশাপাশি বটতলার কয়েকটি দোকান ভাঙচুরের অভিযোগপত্রও পেয়েছি। দুটি অভিযোগই আমলে নেয়া হয়েছে। এগুলো খতিয়ে দেখা হবে। পরে নিয়মানুযায়ী প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
জাবি প্রতিনিধি | ৫ আগস্ট, ২০২২ ২২:০৫

বৃহস্পতিবার খেলার মাঠে গায়ে ধাক্কা লাগার ঘটনায় এক দফা মারধরের জেরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) এবার আরেক ছাত্রলীগকর্মীকে মারধরের করা হয়েছে।
শুক্রবার বেলা সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সুফিয়া কামাল হলের সামনের সড়কে পাল্টা এ মারধরের ঘটনা ঘটে।
মারধরের শিকার সজীব হাসান সাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। সাজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে ফুটবল খেলার সময় মীর মশাররফ হোসেন হলের ছাত্রলীগকর্মী খালিদ হোসেন মাঠের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মওলানা ভাসানী হল ছাত্রলীগের কর্মী সৌরভ কাপালীর গায়ে ধাক্কা দেন। পরে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে খালিদকে মারধর করা হয়। সেসময় মওলানা ভাসানী হলের ছাত্রলীগকর্মী সজীব হাসান সাজসহ আরও কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে।
এ ঘটনার জেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হল ও মওলানা ভাসানী হলের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। রাত ৮টার দিকে রড, লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় অবস্থান নেন মীর মশাররফ হোসেন হল ছাত্রলীগের শতাধিক নেতাকর্মী। তারা বটতলার কয়েকটি দোকান ভাঙচুর করেন। পরে প্রশাসনের মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এরপর শুক্রবার আরো এক কর্মীকে মারধর করা হয়। এ ঘটনার বিচার চেয়ে বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন সাজ।
মারধরে অভিযুক্তরা হলেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের সাগর সিদ্দিকি, রসায়ন বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের তারেক মীর, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের সাব্বির হাসান সাগর ও তোফায়েল আহমেদ গালিব, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের কামরুল মাহমুদ, রসায়ন বিভাগের সৌরভ ও খালিদ হাসান ধ্রুব, মার্কেটিং বিভাগের খালিদ সাইফুল্লাহ, ইংরেজি বিভাগের শাহরিয়ার হিমেল।
তারা সবাই শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
লিখিত অভিযোগপত্রে সজীব হাসান সাজ জানান, দুজন অতিথি নিয়ে মোটরসাইকেলে ক্যাম্পাসে ঘুরছিলেন তিনি। বেগম সুফিয়া কামাল হলের সামনে পৌঁছালে অভিযুক্তরা সাজের মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে মারধর শুরু করে। তখন সাজের সঙ্গে থাকা দুই অতিথিকেও মারধর করা হয়।
মারধরের সময় মীর মশাররফ হোসেন হল ছাত্রলীগের কর্মী ইতিহাস বিভাগের ৪৩তম ব্যাচের প্রীতম আরিফ ও উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ৪৩তম ব্যাচের বিপ্লব হোসেন নির্দেশনা দিচ্ছিল বলেও অভিযোগ করেন সাজ।
তবে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্তরা।
অভিযুক্ত তারেক মীর বলেন, ‘আমি এখনো অসুস্থ। সুফিয়া কামাল হলের সামনে কী ঘটনা ঘটেছে তা আমি জানি না। ওই সময় আমি সেখানে ছিলাম না।’
এ বিষয়ে জানতে মোবাইলে কল দেওয়া হলে প্রীতম আরিফের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, ‘মারধরের ঘটনা খতিয়ে দেখা হবে। এতে দোষীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, ‘মারধরের ঘটনায় একটি অভিযোগপত্র পেয়েছি। পাশাপাশি বটতলার কয়েকটি দোকান ভাঙচুরের অভিযোগপত্রও পেয়েছি। দুটি অভিযোগই আমলে নেয়া হয়েছে। এগুলো খতিয়ে দেখা হবে। পরে নিয়মানুযায়ী প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’