
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ছাত্রী হলে পানি গরমের হাড়ি নিয়ে হুলস্থুল কাণ্ড ঘটেছে। এ ঘটনায় এক ছাত্রীকে সিট থেকে অপসারণ, প্রশাসন বরাবর পাল্টাপাল্টি লিখিত অভিযোগ, ছাত্র উপদেষ্টাসহ হলের ছাত্রদের অবরুদ্ধ করা, বিভাগীয় সভাপতিকে ‘অপমান’এরপর সর্বশেষ প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকের ঘটনা ঘটেছে। ওই হলের হাড়ির খবর এখন আলোচিত বিষয়।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া হাড়ি নিয়ে কথাকাটাকাটির জের গড়ায় বুধবার রাত পর্যন্ত।
বুধবার দুপুরে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ করা ওই ছাত্রীকে হলে তুলে দিতে গিয়ে অবরুদ্ধ হন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা এম তারেক নূর। প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর প্রক্টরিয়াল বডির সহায়তায় তিনি উদ্ধার পান।
তবে এ সময়ে সংগীত বিভাগের সভাপতিকে ‘হেয় করার’ অভিযোগ তুলে বিভাগের শিক্ষার্থীরা হলের প্রধান ফটক আটকে অবস্থান নেন। এতে ছাত্র উপদেষ্টাসহ প্রায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
হল অবরুদ্ধ করে রাখার সময় সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে সংগীত ও চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীদের হাতে লাঞ্চনার শিকার হন বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই সাংবাদিক।
জানা যায়, বুধবার দুপুর ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলে অভিযোগকারী ছাত্রীকে তার কক্ষে তুলে দিতে গিয়ে অবরুদ্ধ হন ছাত্র উপদেষ্টা। পরে বিকাল সাড়ে ৫টায় তাকে বের করা হয়। এরপর প্রশাসন ভবনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সংগীত বিভাগের শিক্ষকরা আলোচনায় বসেন। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আলোচনা চলছে। ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছেন।
হল ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, দুপুর দেড়টায় ভুক্তভোগী ছাত্রীকে নিয়ে হলে প্রবেশ করেন ছাত্র উপদেষ্টা এম তারেক নূর। এ সময় সংগীত বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক শায়লা তাসমীনের সঙ্গে ছাত্র উপদেষ্টার বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে সংগীত বিভাগের সভাপতি ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। এর পরে সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থীরা হলের প্রধান ফটক আটকে ছাত্র উপদেষ্টা ও প্রশাসন বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
এ বিষয়ে সংগীত বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক শায়লা তাসমীন বলেন, ‘এক ছাত্রীকে মানসিক নির্যাতনের ঘটনায় আমার বিভাগের এক ছাত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি জানতে পেরে আমি ছাত্র উপদেষ্টাকে ফোন দিই। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। পরে জানতে পারি তিনি বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলে আছেন। তখন এ বিষয় তার সঙ্গে কথা বলার জন্য হলে যাই। সেখানে তিনি আমার শিক্ষার্থীদের সামনে আমাকে অপমানজনক কথা বলেন। একপর্যায়ে বলেন ‘হু আর ইউ’। এতে আমি অপমানিত বোধ করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করি। ’
এ বিষয়ে জানতে ছাত্র উপদেষ্টা এম তারেক নূরের ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা ও গবেষণা করার জায়গা। এটি কোনো ভাবে নির্যাতন ও অত্যাচার করার জায়গা নয়। এখানে শিক্ষকদের সঙ্গে কথাকাটি হয় এমন আচরণ শেখানো হয় না। যারা এ ঘটনায় জড়িত তাদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা হবে। পাশাপাশি ছাত্রী নির্যাতন করার ঘটনার তদন্তও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা হবে।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি পানি গরমের হাড়ি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলের ৫০১ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী কাজী সুমাইয়ার সঙ্গে স্মৃতি বালা ও নুরুন্নাহার দোলনের কথা কাটাকাটি হয়। স্মৃতি বালা বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। দোলন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
এতে দোলন ক্ষিপ্ত হয়ে সুমাইয়ার বিরুদ্ধে ‘বেয়াদবি’র অভিযোগ এনে তার সিট বাতিল করে গণরুমে দিতে হল প্রাধ্যক্ষ বরাবর আবেদন জমা দেন। তবে তিনি ছাত্রলীগ পরিচযের প্রভাব খাটিয়ে ভয় দেখিয়ে ব্লকের ছাত্রীদের স্বাক্ষর গ্রহণ করেন বলে অভিযোগ। এ আবেদনের প্রেক্ষিতে হল প্রাধ্যক্ষ সুমাইয়াকে গণরুমে স্থানান্তর করেন।
পরে হল প্রশাসনের এ সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে ওই ব্লকের শিক্ষার্থীরা হল প্রাধ্যক্ষ বরাবর একটি আবেদন দেন।
এসব বিষয়ে আলোচনার জন্য মঙ্গলবার সকাল ১০টায় সুমাইয়াকে প্রাধ্যক্ষের রুমে ডেকে নেয়া হয়। সেখানে আগে থেকে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগ নেত্রী স্মৃতি বালা ও দোলন। এসময় হল প্রাধ্যক্ষ ও ছাত্রলীগ নেত্রী ওই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। এক পর্যায়ে ওই শিক্ষার্থী অজ্ঞান হয়ে পড়েন। তখন তাকে তাৎক্ষণিক অ্যাম্বুলেন্সে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রে নেয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।
এসব ঘটনায় ব্লকের কয়েকজন ছাত্রী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সেদিনের ঘটনাটি খুব তুচ্ছ। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রী দোলন ও স্মৃতির কাছে ক্ষমাও চান। কিন্তু তারা তাকে ক্ষমা করেননি। স্মৃতি ও দোলন একই এলাকার হওয়ায় স্মৃতির পাওয়ারে দোলন দীর্ঘদিন ধরে হলে প্রভাব বিস্তার করে আসছে। তার ভয়ে কেউ কিছু বলতে পারে না। যার ফল এ ঘটনা। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না হলে এমন ঘটনা বৃদ্ধি পাবে।
অবশ্য মঙ্গলবার অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রী স্মৃতি বালা বলেন, ওই শিক্ষার্থীর অসুস্থ হওয়ার বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তাকে প্রাধ্যক্ষের রুমে ডাকা হয়। সেখানে হাউজ টিউটর এবং হলের অন্যান্য শিক্ষার্থীরাও ছিলেন। ওই মেয়ে আগের রাতে খায়নি, সকালেও খায়নি। প্রাধ্যক্ষের রুমে এসেই সে অসুস্থ বোধ করছিল। পরবর্তীতে তাকে কয়েকজন শিক্ষার্থী প্রাধ্যক্ষের কক্ষ থেকে নিয়ে যায়। মানসিক নির্যাতনের কোনো ঘটনা সেখানে ঘটেনি।
এ বিষয়ে নুরুন্নাহার দোলনের ফোনে একাধিকবার কল দিলে বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, হলের সিনিয়র ও জুনিয়রের মধ্যে একটু ঝামেলা হয়েছে। এর সঙ্গে ছাত্রলীগের কোনো সংশ্লিষ্টতা নাই।
মঙ্গলবার হল প্রাধ্যক্ষ ফারজানা কাইয়ুম কেয়া বলেন, হাড়ি ব্যবহারকে কেন্দ্র করে ওর সঙ্গে এক সিনিয়রের একটু সমস্যা হয়েছিল। তাই তাকে ডেকেছিলাম। কিন্তু খাবার খাওয়ার সময় সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে।
এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা এম তারেক নূর এই কমিটি গঠন করেন।
তদন্ত কমিটিতে পপুলেশন সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক আশরাফুল ইসলাম খানকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা হলের আবাসিক শিক্ষক ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মণিকৃষ্ণ মহন্ত এবং সহকারী প্রক্টর ও উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাইকা কবীর নিতু।
শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস সাহেবের প্ররোচনায় আমেরিকা স্যাংশন দিয়েছে। নোবেল শান্তি পুরস্কারকে তিনি অশান্তির কাজে লাগাতে যুদ্ধবাজ আমেরিকা ও রাজনীতিবিদ হিলারি ক্লিনটনের সঙ্গে গাঁট বেঁধেছেন।
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট বাইডেন প্রশাসনে তদবিরকারক (লবিস্ট) নিয়োগ দিয়েছে, এমনকি ইউরোপ ইউনিয়নেও। তাদের পথ দেখাচ্ছেন এবং এদের তদবিরকে ভিত্তি দিচ্ছে তিনি। ড. ইউনূস অনেক জায়গায় বলেছেন, জীবনের শেষে এসেও তিনি প্রতিশোধ নেবেন। এ প্রেক্ষিতেই বিদেশিরা আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অতি উৎসাহী হয়ে উঠেছে।
মঙ্গলবার (৩০ মে) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদক প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব বলেন নওফেল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় অবকাঠামো উন্নয়নে সফল হয় না, সফল হয় শিক্ষকদের মান অনুযায়ী। পুরান ঢাকায় আবাসন খরচ গুলশান-বনানীর চেয়ে বেশি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আবাসন সমস্যা প্রকট । তাদের একটি দাবি আছে, ওই বিষয়ে সরকার অবগত। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান, আপনারা কর্মমুখী শিক্ষা ও দক্ষতা সম্পন্ন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। জাতির পিতা আমাদের মাঠে নামতে এবং দক্ষতা অর্জন করতে বলেছেন। আমরা কামনা করি শিক্ষার্থীরা মানসিক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাক।
আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাস। প্রবন্ধটির ওপর আলোকপাত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সেলিম।
এ সময় সভাপতির বক্তব্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, বঙ্গবন্ধু কতটা শান্তিপ্রিয় ছিলেন সেটি তার ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণে প্রতিফলিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করতে হবে। সামনের জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক অনৈতিক চাপ সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় এবং স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বর্তমান সরকারকে আরো একবার সুযোগ দিতে হবে।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মিনহাজ উদ্দীনের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য প্রদান করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন, আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এস এম মাসুম বিল্লাহ,শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আবুল কালাম মো. লুৎফর রহমান।
এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি মো. ইব্রাহীম ফরাজী, সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন, বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা।
এর আগে মঙ্গলবার সকালে বঙ্গবন্ধুর ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদক প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তি উদ্যাপন উপলক্ষে জবি উপাচার্যের নেতৃত্বে একটি শোভাযাত্রা পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুজিব মঞ্চে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হয়। শহীদ মিনার চত্বরে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে উৎসবটি উদ্যাপন করা হয়।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে দুই প্রক্সিদাতাকে আটক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। মঙ্গলবার (৩০ মে) সকালে 'এ' ইউনিটের প্রথম শিফটের পরীক্ষা চলাকালে সন্দেহজনকভাবে তাদের আটক করা হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর দপ্তরে জিজ্ঞাসাবাদকালে তারা প্রক্সি দিয়েছেন বলে স্বীকার করেন। তাদের একজন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
আটক দুজন হলেন মো. হোসাইন ও মো স্বপন হোসাইন। মো. হোসাইন কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার আব্দালপুর গ্রামের কাওসার হোসেনের ছেলে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের ৪২৪ নম্বর কক্ষে রোল ২১৬০২ এর পরীক্ষার্থী জাহিদ হাসান সিয়ামের হয়ে প্রক্সি দেন।
মো. স্বপন হোসাইন নওগাঁ জেলার বদলগাছি থানার চকগোপিনাথ গ্রামের মো. মোজাম্মেল হোসেনের ছেলে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। তিনি কৃষি অনুষদ ভবনের ১৩৫ নম্বর রুমে রোল ২৪০৯৬ এর পরীক্ষার্থী তানভীর আহমেদ এর হয়ে পরীক্ষায় অংশ নেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পাণ্ডে বলেন, 'আমরা সন্দেহজনকভাবে দুজনকে আটক করেছি। তারা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নিজেদের দোষ স্বীকার করেন। তাদের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।'
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে দুই প্রক্সিদাতাকে আটক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
মঙ্গলবার (৩০ মে) সকালে 'এ' ইউনিটের প্রথম শিফটের পরীক্ষা চলাকালে সন্দেহজনকভাবে তাদেরকে আটক করা হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর দফতরে জিজ্ঞাসাবাদকালে তারা প্রক্সি দিয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন। তাদের একজন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
আটককৃতরা হলেন- মো. হোসাইন ও মো স্বপন হোসাইন। মো. হোসাইন কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার আব্দালপুর গ্রামের কাওসার হোসেনের ছেলে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের ৪২৪ নং কক্ষে রোল ২১৬০২ এর পরীক্ষার্থী জাহিদ হাসান সিয়ামের হয়ে প্রক্সি দেন।
মো. স্বপন হোসাইন নওগাঁ জেলার বদলগাছি থানার চকগোপিনাথ গ্রামের মো. মোজাম্মেল হোসেনের ছেলে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। তিনি কৃষি অনুষদ ভবনের ১৩৫ নং রুমে রোল- ২৪০৯৬ এর পরীক্ষার্থী তানভীর আহমেদের হয়ে পরীক্ষায় অংশ নেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পাণ্ডে বলেন, আমরা সন্দেহজনকভাবে দুজনকে আটক করেছি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা নিজেদের দোষ স্বীকার করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি দিতে এসে গত বছর বায়েজিদ নামে এক সাবেক শিক্ষার্থী আটক হন।
সে সময় তিনি জানিয়েছিলেন, তাকে প্রক্সি দিতে পাঠান শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুশফিক তাহমিদ তন্ময়। এ ঘটনায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ তাকে বহিষ্কার করলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
তবে বছর না যেতেই এই ‘প্রক্সি হোতা’ ছাত্রলীগের প্যাডে ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি/জালিয়াতি ঠেকাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে নজরদারি বাড়ানোর জন্য দাবি জানিয়েছেন। এই কর্মকাণ্ড অনেকটা প্রশাসনকে চ্যালেঞ্জ করার শামিল হিসেবে দেখছেন প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনের নেতারা। খোদ ছাত্রলীগ বলছে বিষয়টি হাস্যকর।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, রবিবার (২৮ মে) তন্ময় ও তার অনুসারীরা রাবি উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য, ছাত্র উপদেষ্টা ও প্রক্টরের কাছে স্মারকলিপির অনুলিপি দিয়েছেন।
স্মারকলীপির দাবিগুলো হলো- বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে মেস মালিকদের অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধ করা, ভর্তি পরীক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অস্থায়ী আবাসনের পর্যাপ্ত আয়োজন করা, ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে অতিরিক্ত রিকশা/ অটোরিকশা ভাড়া ও হোটেলের খাবারের বর্ধিত মূল্য আদায় বন্ধ করা,।
ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা যেন কোন ধরনের রাগিং ও অশালীন আচরণের শিকার না হয় তা নিশ্চিত করা, ২০২১-২২ সেশনের ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতিতে জড়িত চক্রকে গ্রেপ্তার, ভর্তি পরীক্ষা চলাকালীন ভর্তি-ইচ্ছুক ছাত্রীদের রাত্রিকালীন হলে প্রবেশের ক্ষেত্রে যেন জটিলতার সৃষ্টি না হয় সে বিষয়ে দৃষ্টি রাখা, ভর্তি পরীক্ষায় কোন ধরনের অসাধু উপায়, নকল ও প্রক্সি পরীক্ষার মতো অনৈতিক ঘটনা যেন না ঘটে সে বিষয়ে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।
ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি শাকিলা খাতুন বলেন, গত বছরের (২০২১-২২ সেশন) ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি হয়েছিল। ওই সময় তদন্ত করতে গিয়ে ছাত্রলীগ নেতারা জড়িত থাকায়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেটি এগিয়ে নিতে চায় নাই। এই কাণ্ডের তদন্ত করতে গেলে আরও বড় জায়গা বা তাদের ওপর শ্রেণির নেতারা জড়িত থাকতে পারে, প্রশাসন হয়তো সেটি ফ্ল্যাশ করতে বা দায়িত্ব নিতে চান নাই।
তিনি বলেন, তবে যেই ছাত্রলীগ নেতা প্রক্সিকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, তিনিই যখন সাংগঠনিক প্যাডে প্রশাসন বরাবর স্মারকলিপি দেন, তখন সেটি চ্যালেঞ্জিং হয়ে যায়।
শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, যে ব্যক্তি প্রক্সির সঙ্গে জড়িত বলে এর আগে প্রমাণিত হয়েছে পরবর্তীতে সেই ব্যক্তি যখন এমন দাবি জানায় তখন সেটা হাস্যকর বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীই নয় আশপাশের কারও যদি কোন বিষয় নজরে আসে তাহলে তিনি প্রশাসনকে তথ্য দিতে পারেন। তবে স্মারকলিপি গ্রহণের সময় আমি তাকে বলেছি, তোমরা যে উপদেশগুলো এখন দিচ্ছ, ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেগুলো হাতে নিয়েছে।
মূলহোতা হিসেবে তন্ময়ের নাম উঠে আসলেও কেন তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি সে বিষয়ে তিনি বলেন, যে কেউ যে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে পারে। কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত অভিযোগটি নিশ্চিন্তভাবে নিশ্চিত না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত কাউকে শাস্তির আওতায় আনা আইন বিরুদ্ধ। তবে গতবার যে নামগুলো পত্র পত্রিকায় এসেছে তারা আমাদের নজরদারিতে রয়েছে। যদি তারা এ ধরনের কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট হয় তাহলে এবার আর কেউ তাদের বাঁচাতে পারবে না।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রথম বর্ষের (৫১তম ব্যাচ) শিক্ষার্থীদের রাতে জঙ্গলে ডেকে নিয়ে র্যাগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিভাগটির দ্বিতীয় বর্ষের (৫০ তম ব্যাচ) শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে।
রোববার (২৮ মে) দিবাগত রাত ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল সংলগ্ন সিডনি ফিল্ডের পেছনের এলাকার জঙ্গলে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির কয়েক সদস্য সেখানে উপস্থিত হলে অভিযুক্তরা সটকে পড়েন। তবে একজন অভিযুক্তকে ধরতে সক্ষম হন তারা।
রাত পৌনে দুইটার দিকে র্যাগিংয়ের ঘটনায় অভিযুক্তদের শাস্তি দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রথম বর্ষের ভুক্তভোগী ১২ জন শিক্ষার্থী।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীদের বক্তব্য অনুযায়ী, রোববার রাত সাড়ে আটটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিডনি ফিল্ড সংলগ্ন এলাকায় প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের জরুরিভাবে উপস্থিত থাকতে বলে বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা। কথা মতো সেখানে উপস্থিত হন প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা। রাত সাড়ে ১১টায় সেখানে দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা গিয়ে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের নানাভাবে মানসিক নির্যাতন করতে থাকেন। এ ছাড়া প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদেরকে মুরগি ও চেয়ারের মতো করে বসানো (র্যাগিংয়ের ধরন) এবং লাফাতে বলা হয়। এক পর্যায়ে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের দিকে জুতাও ছুঁড়ে মারেন তারা।
র্যাগিং চলাকালে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির কয়েক সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত কয়েকজন সাংবাদিক। তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে সটকে পড়েন দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা। তবে আব্দুল্লাহ আল কাফি নামে এক শিক্ষার্থীকে ধরে ফেলেন প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে র্যাগিংয়ের সঙ্গে জড়িত অন্য শিক্ষার্থীদের কথা জানান তিনি।
আব্দুল্লাহ আল কাফি বলেন, আমাদের বিভাগের জুনিয়রদেরকে ডাকা হয়েছিল। ডেকে নিয়ে ওদেরকে র্যাগ দেওয়া হয়। তবে আমি দিইনি। আমি কীভাবে যেন আজকে এসে পড়েছি। আমি ভুল স্বীকার করছি আর এমনটা হবে না। আমরা ৫০তম ব্যাচের ১০ থেকে ১২ জন উপস্থিত ছিলাম। এদের মধ্যে ছিল নূর ইসলাম, তানভীর ইসলাম, মো. আবদুস ছবুর, প্রিন্স কুমার রায়, আহমেদ ইজাজুল হাসান আরিফ, চিরঞ্জীত মন্ডল, মো. রাসেল হোসাইন, মো. সিজান, খন্দকার মোয়াজ ইসলাম ও মিঠুন রায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ৫১তম ব্যাচের একাধিক ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানান, রাত সাড়ে ১১টা থেকে প্রায় দেড় ঘণ্টার মতো আমাদের র্যাগ দেওয়া হয়। এ সময় আমাদেরকে মানসিকভাবে হেনস্তা করা হয়। ম্যানার শেখানোর নামে সিনিয়ররা আমাদের বাবা-মা তুলে গালিগালাজ করে। সিনিয়রদের সালাম না দেওয়ায় শাসায় এবং আমাদের একজনের গায়ে জুতা ছুঁড়ে মারে, লাফাতে বলে এবং কয়েকজনকে মুরগি বানিয়ে শাস্তি দেয়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ও ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (আইবিএ) সহকারী অধ্যাপক এস এম এ মওদুদ আহমেদ বলেন, র্যাগিংয়ের খবর পেয়ে প্রক্টর স্যারের নির্দেশে আমরা দুইজন সহকারী প্রক্টর ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। সেখানে যাওয়া মাত্রই কয়েকজন দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। তবে আমরা আব্দুল্লাহ আল কাফী নামে একজনকে ধরতে পারি। সেখানে যারা উপস্থিত ছিল তাদের নাম সে জানিয়েছে। আমরা নবীন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের অভিযোগও পেয়েছি। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনকে বলা হয় ‘লাশের সাক্ষ্য’। সেই প্রতিবেদনে প্রায়ই ভুল থাকছে। হত্যা হয়ে যাচ্ছে আত্মহত্যা বা দুর্ঘটনা। দেশের মর্গগুলোর আধুনিকায়ন না হওয়া, চিকিৎসকদের অদক্ষতা এবং মর্গে আসার আগেই মরদেহের আলামত নষ্ট হয়ে যাওয়া ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে ভুলের অন্যতম কারণ। সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য এরকমই।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, দেশের বেশিরভাগ মর্গে মরদেহের ভিসেরা বা বিভিন্ন নমুনা সংরক্ষণের আধুনিক সুবিধাসংবলিত জায়গা নেই। এসব ধারণের জন্য কনটেইনার, প্রিজারভেটিভ বা রাসায়নিকের সরবরাহও প্রয়োজনের তুলনায় কম। অনেক সময় প্রিজারভেটিভ না থাকলে লবণ পানির সাহায্যে মর্গে লাশ সংরক্ষণ করা হয় এবং হিস্টোপ্যাথলজিক্যাল ল্যাবে যেসব স্যাম্পল বা নমুনা পাঠানো হয়, সেসব ভালোমানের ফরমালিন দিয়ে সংরক্ষিত করে পাঠানো হয় না। ফলে আলামত নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি থাকে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনেও ভুলের আশঙ্কা বাড়ে। কখনো চিকিৎসক প্রভাবিত হয়েও ভুল ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দেন।
ময়নাতদন্তসংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা বলেন, আমাদের দেশে আধুনিক মর্গ ব্যবস্থাপনা নেই। তাছাড়া লাশ মর্গে আসার আগেই অনেক আলামত নষ্ট হয়ে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে প্রথমে থানায় নেয়; তারপর থানা থেকে নেয় মেডিকেল কলেজে। এরপর অ্যাম্বুলেন্স, লেগুনা বা ট্রাকে বা ভ্যানে করে আনে মর্গে। এত আলামত নষ্ট হয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকে। এসব কারণে ভুল ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন আসে।
স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল মাহমুদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ময়নাতদন্তের ভুল প্রতিবেদনের প্রধান কারণ আধুনিক যন্ত্রপাতি ও আধুনিক মর্গের অভাব। দ্বিতীয় কারণ, লাশ যখন আমাদের কাছে আসে তখন আমরা সিন অব দ্য ক্রাইম (অপরাধের দৃশ্য) ভিজিট করি না। ফলে অনেক ইনফরমেশন ধরা পড়ে না। উন্নতবিশ্বে কোথাও অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটলে পুলিশ ওই স্থানকে হলুদ টেপ দিয়ে ঘিরে রাখে এবং সবার আগে ভিজিট করে একজন ফরেনসিক স্পেশালিস্ট। ওখান থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগৃহীত হয়ে মর্গে চলে আসে। মর্গে লাশ পাঠায় পুলিশ, পরে পোস্টমর্টেম করে সংগৃহীত তথ্য-উপাত্তের সঙ্গে মরদেহের ফাইন্ডিংস মিলিয়ে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়। সেটাই সঠিক ও নির্ভরযোগ্য হয়। কিন্তু আমাদের দেশে এমন হয় না।’
ময়নাতদন্ত কী : খুন বা অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর ভুক্তভোগীর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানার জন্য একজন ফরেনসিক চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞ মরদেহের বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন অঙ্গ বা অঙ্গবিশেষের গভীর নিরীক্ষণ করেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে মৃত্যুর কারণ উল্লেখ করে মন্তব্যসহ যে প্রতিবেদন দেওয়া হয় তাই পোস্টমর্টেম রিপোর্ট বা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন। তদন্তকারী কর্মকর্তা যদি মনে করেন, ময়নাতদন্ত হওয়া জরুরি, তখন মৃতদেহ সিভিল সার্জন বা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়।
সম্প্রতি ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে আত্মহত্যা ও রেল দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর কথা উল্লেখ থাকা ২২টি মামলা তদন্ত করে পিবিআই জানায়, এগুলো ছিল পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। ওই মামলাগুলোতে পুলিশের অন্যান্য সংস্থা তদন্ত করে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছিল।
পিবিআইপ্রধান অতিরিক্ত আইজিপি বনজ কুমার মজুমদার দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘হত্যা বা অপমৃত্যুর মামলার তদন্তে ময়নাতদন্তের ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। ভালো ময়নাতদন্ত মামলার রহস্য উদঘাটনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। অন্যদিকে ময়নাতদন্ত সঠিক না হলে তদন্ত ভিন্ন পথে মোড় নেয়। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন তদন্তকারী কর্মকর্তাকে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছতে সাহায্য করে, ঘটনার রহস্য উদঘাটনে দারুণভাবে সহায়তা করে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিটফোর্ড বা স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মর্গে ২০২১ সালে ৭৪০টি, ২০২২ সালে ৬০০টি ও চলতি বছর ১৫ মে পর্যন্ত ১৪৫টি মরদেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে। গত ১৫ মে দুপুরে সেখানকার মর্গে গিয়ে দেখা গেছে জরাজীর্ণ দশা। দুটি মরদেহ পড়ে আছে পোস্টমর্টেমের অপেক্ষায়। মর্গ সহকারী নাম প্রকাশ না করে এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘মর্গের লাশ রাখার একমাত্র ফ্রিজটি তিন বছর ধরে নষ্ট। ময়নাতদন্তের জন্য প্রয়োজনীয় মালামালের সংকট সবসময়ই থাকে। নেই আধুনিক কোনো সুবিধা। তিনজন মর্গ সহকারীই বছরের পর বছর চুক্তিভিত্তিতে কাজ করছেন।’
জানা গেছে, রাজধানীসহ দেশের অন্যান্য মর্গের দশা একই।
ময়নাতদন্ত সম্পর্কিত সমস্যা নিয়ে পিবিআইয়ের এক প্রতিবেদনে দেশের মর্গসংশ্লিষ্টদের ফরেনসিক বিষয়ে আধুনিক ও বিশ্বমানের প্রশিক্ষণের অভাব, বিশেষজ্ঞ ফরেনসিক চিকিৎসকের তুলনায় লাশের সংখ্যা বেশি, আধুনিক যন্ত্রপাতি ও হিমাগারসহ মানসম্মত অবকাঠামো না থাকাকে ভুল ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের জন্য দায়ী করা হয়েছে। এ ছাড়া মর্গ অ্যাসিস্ট্যান্ট বা ডোমের স্বল্পতা, জটিল ও চাঞ্চল্যকর মরদেহের ময়নাতদন্তের ক্ষেত্রে বোর্ড গঠন করে ময়নাতদন্ত না করা, আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে অনীহা থাকায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা ময়নাতদন্ত কাজে অংশ নিতে চান না বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ময়নাতদন্ত বিষয়ে পিবিআইয়ের প্রতিবেদন ও দেশ রূপান্তরের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বাংলাদেশের মর্গগুলোতে পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ ও আলোর ব্যবস্থাসহ আধুনিক অবকাঠামো ও বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতির ঘাটতি রয়েছে। অনেক জেলায় মর্গে বিদ্যুতের বিকল্প হিসেবে জেনারেটর নেই। অনেক জেলায় মর্গে পর্যাপ্ত দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনবল নেই। বংশ পরম্পরায় মর্গ অ্যাসিস্ট্যান্ট বা ডোমরা ময়নাতদন্তের সহযোগী হিসেবে কাজ করলেও তাদের কোনো মৌলিক প্রশিক্ষণ নেই। তাছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজসহ ব্যস্ত মর্গগুলোতে মর্গ অ্যাসিস্ট্যান্টদের স্বল্পতা প্রকট। অনেক জায়গায় দেখা গেছে, লাশ সংরক্ষণের সুরক্ষিত পরিবেশ ও প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার অভাব। বিদেশি নাগরিক ও বিশেষ ক্ষেত্রে মরদেহ প্রচলিত নিয়মে হিমঘরে সংরক্ষণ করার প্রয়োজন পড়ে। অল্পসংখ্যক মর্গে কুলিং বা ফ্রিজিং বা মর্চুয়ারি কুলার সিস্টেম থাকলেও অধিকাংশ সময় নষ্ট থাকে বলে গরমের সময় লাশে দ্রুত পচন ধরে।
ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে মৃত্যুর সম্ভাব্য সময়ের উল্লেখ থাকা জরুরি। মর্গে আধুনিক প্রযুক্তি না থাকায় অভিমত প্রদানে বিশেষজ্ঞদের সমস্যা হয়। পিবিআইয়ের প্রতিবেদনে উদাহরণ হিসেবে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের ১ জুন রাজধানীর কলাবাগান থানা এলাকায় নিজ বাসা থেকে ডা. কাজী সাবিরা রহমান লিপির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি খুন হয়েছিলেন। মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে। খুনের ধরন মোটামুটি স্পষ্ট হলেও ঘটনার রহস্য উন্মোচনে খুনের ‘সম্ভাব্য সময়’ জানার জন্য পিবিআই ঢামেক ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করলে সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়নি।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসকদের সুযোগ-সুবিধা কম হওয়ায় চিকিৎসা শিক্ষায় এ শাখাটি অবহেলিত এবং কম গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত। ফলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ এবং জেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে বিশেষজ্ঞ ফরেনসিক ডাক্তারের স্বল্পতা রয়েছে।
প্রতিবেদনটিতে আরেকটি উদাহরণ দেওয়া হয়েছে, সিএমএম আদালতের নির্দেশে ২০২১ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি পিবিআই চট্টগ্রাম মহানগরের লালমোহন থানা এলাকা থেকে কামাল মাঝির (৪৫) ৩৮ মাসের পুরনো মরদেহ তুলে ভোলার ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যায়। সেখানে কর্মরতদের কারও এ ধরনের মরদেহের ময়নাতদন্তের অভিজ্ঞতা না থাকায় মরদেহটি ভোলা থেকে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগে নেওয়া হয়। দায়িত্বরত প্রভাষক জানান, ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগে অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক ও সহকারী অধ্যাপকের পদে কেউ কর্মরত নেই। তিনি মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য অন্য কোনো মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগে নেওয়ার অনুরোধ করেন। পিবিআই মরদেহটি বরিশাল থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের সংশ্লিষ্ট বিভাগে নিয়ে যায়।
হত্যা কেন ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে আত্মহত্যা বা দুর্ঘটনা হিসেবে আসে জানতে চাইলে ফরেনসিক চিকিৎসকরা জানান, কাউকে হত্যা করে রেললাইনে ফেলে রাখলে তার ওপর দিয়ে ট্রেন গিয়ে একেবারে ক্ষতবিক্ষত হয়ে হাড়গোড় বেরিয়ে দলিত হয়ে যায়। একে চিকিৎসাশাস্ত্রে মিউটিলেডেট লাশ বলে। ওইসব লাশের আলামত বোঝা যায় না। আগের আলামত নষ্ট হয়ে নতুন আলামত তৈরি হয়। তখন রেল দুর্ঘটনাই মনে হয়। এতে অনেক সময় চিকিৎসকরা মিসগাইডেড হয়।
ফরেনসিক বিভাগে চিকিৎসকের সংকট বিষয়ে এক চিকিৎসক বলেন, ‘আমি ঢাকায়ে আছি, অথচ আমাকে কক্সবাজার বা পঞ্চগড় গিয়ে স্বাক্ষর দিতে হচ্ছে। বাইরে যাওয়ার, বিশেষ করে একা, বিপদ আছে অনেক, সংক্ষুব্ধ পক্ষ হামলা চালাতে পারে। এজন্য অনেক চিকিৎসক এ বিভাগে থাকতে চান না। এখানে সুবিধাও অনেক কম। মফস্বলে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসককে মিসগাইড করে, মিথ্যা তথ্য দিয়ে রিপোর্ট লেখানো হয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী লিমিটেড ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের মধ্যকার ফেডারেশন কাপ ফুটবলের ফাইনাল দেখতে কুমিল্লায় উড়ে গেছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।
কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে আজ বেলা ৩টা ১৫ মিনিটে শুরু হয়েছে ম্যাচটি। সালাউদ্দিন ম্যাচ শুরুর ঘণ্টা খানেক আগে কুমিল্লায় পৌঁছান।
ঢাকা থেকে সড়ক পথে কুমিল্লায় পাড়ি দিতে মাত্র দুই ঘণ্টা সময় লাগে। তবে সালাউদ্দিন দূরত্বটা পাড়ি দিয়েছেন হেলিকপ্টারে করে। যা আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
টাকার অভাবে কদিন আগে নারী ফুটবলারদের অলিম্পিক বাছাইয়ে পাঠায়নি বাফুফে। অথচ ঢাকা থেকে কুমিল্লায় যেতে বাফুফে সভাপতি বেছে নিলেন হেলিকপ্টার।
হেলিকপ্টারে ঢাকা থেকে কুমিল্লার এই যাত্রায় বাফুফে সভাপতির সঙ্গী হয়েছেন সংস্থার নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ।
ফ্যাটি লিভার রোগটি এখন ঘরে ঘরে। প্রাথমিকভাবে এই রোগের লক্ষণ না বুঝতে পারলে, অনেক সমস্যাই দেখা দিতে পারে। চিকিৎসকরা জানান, এই রোগ থেকে বাঁচতে জীবনধারায় বদল আনতে হবে।
কোন কোন উপসর্গ দেখলে সতর্ক হবেন? শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়া, হঠাৎ ভুঁড়ি বেড়ে যাওয়া, হলুদ রঙের দুর্গন্ধযুক্ত প্রস্রাব, ওজন অত্যন্ত বেড়ে যাওয়া, সারাক্ষণ ক্লান্তিভাব— এই উপসর্গগুলি ফ্যাটি লিভারের লক্ষণ হতে পারে। অনেকের ধারণা, মদ্যপান করলেই এই রোগের ঝুঁকি বাড়ে। তবে কেবল মদ্যপান ছেড়ে দিলেই এই রোগের ঝুঁকি কমবে না। কম তেলমশলার খাবার খাওয়া, বাড়ির খাবারে অভ্যস্ত হওয়া, মদ ছেড়ে দেওয়া— এই অভ্যাসগুলিই লিভারকে ভাল রাখার অন্যতম উপায়। এই অসুখকে ঠেকিয়ে রাখতে ডায়েটের ওপর বিশেষ নজর দিতে হবে। তবে এগুলিই শেষ কথা নয়। লিভার ভাল রাখতে মেনে চলতে হয় আরও কিছু নিয়মকানুন। কিন্তু কী কী?
চিনির মাত্রা কমানো
সহজে রোগা হতে চেয়ে অনেকেই নিজের খুশি মতো ডায়েট প্ল্যান বানিয়ে নেন। চিনি বাদ দিয়ে দেদারে কৃত্রিম চিনির উপরেই ভরসা করেন। এতেই আসলে চরম ক্ষতি করছেন শরীরের। অতিরিক্ত চিনি খাওয়ার অভ্যাস আমাদের লিভারের ব্যাপক ক্ষতি করে। ফ্রুকটোজ হোক কিংবা কৃত্রিম চিনি, লিভারের অসুখ ডেকে আনে।
ব্যথার ওষুধ কম খান
বেশকিছু বেদনানাশক ওষুধ লিভারের ক্ষতি করে। কিছু প্যারাসিটামল বা কোলেস্টেরলের ওষুধও লিভারের প্রভূত ক্ষতি করে। ঘুম না হলে অনেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ঘুমের ওষুধ খেতে শুরু করেন। এই অভ্যাসের কারণে লিভারের জটিল রোগে ভুগতে হতে পারে।
পানি বেশি করে খান
শরীর থেকে যতটা দূষিত পদার্থ বার করে দিতে পারবেন, লিভার ততটাই সুস্থ থাকবে। তাই বেশি করে পানি খেতে হবে। তবেই প্রস্রাবের সঙ্গে শরীরের টক্সিন পদার্থগুলি বেরিয়ে যাবে। দিনে কয়েক বার গরম পানিতে পাতিলেবুর রস দিয়ে সেই পানি খান। ডায়েটে রাখুন টক দইয়ের মতো প্রোবায়োটিক।
পর্যাপ্ত ঘুম
সারাদিন কর্মব্যস্ততা আর রাত জেগে মোবাইলে চোখ রেখে সিনেমা দেখা— সব মিলিয়ে ঘুমের সঙ্গে আপস। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ঘুমের অভাব হলে তার প্রভাব পড়ে লিভারের উপরেও।
ওজন কমান
শুধু সুন্দর দেখানোর জন্যই নয়, লিভার সুরক্ষিত রাখতে চাইলেও কিন্তু ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। আমাদের শরীরে কার্বহাইড্রেট-প্রোটিন-ফ্যাটের সঠিক ভারসাম্য থাকা ভীষণ জরুরি। তবে ইদানিং বাড়ির খাবার নয়, বরং রেস্তোরাঁর খাবার, রেড মিট, বাইরের ভাজাভুজি, প্যাকেটজাত ও প্রক্রিয়াজাত খাবার বেশি খেয়ে অভ্যস্ত। আর এর জেরেই শরীরে ট্রান্স ফ্যাটের মাত্রা বাড়ছে। লিভারের পক্ষে এই ফ্যাট মোটেই ভাল নয়।
প্রথম সেট ২৫ মিনিট, দ্বিতীয়টি ২৮ মিনিটে জিতলেন কার্লোস আলকারাজ। মনে হচ্ছিল কোয়ালিফায়ার ফ্যাভিও কোবোলিকে বুঝি উড়িয়েই দিচ্ছেন শীর্ষ বাছাই।
না, তৃতীয় সেটতে প্রতিরোধ গড়লেন ইতালিয়ান। সময় গড়ালো ঘন্টায়। শেষপর্যন্ত জয় এসেছে ৬৬ মিনিটে। ৬-০, ৬-২, ৭-৫ গেমে প্রথম রাউন্ডের ম্যাচ জিতে রাফায়েল নাদালের উত্তরসুরি ক্লে কোর্টের সর্বোচ্চ আসর শুরু করলেন।
নাদালের চোটজনিত অনুপস্থিতিতে শীর্ষবাছাই আলকারাজ। ২০২১ এ তৃতীয় রাউন্ড, গতবার কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় নিয়েছিলেন। এবার আরো এগোলে সেমিফাইনালে নোভাক জকোভিচের সংগে দেখা হওয়ার সম্ভাবনা।
সে দেখা যাবে। আপাতত দ্বিতীয় রাউন্ডে আলকারাজকে টপকাতে হবে জাপানের টি. দানিয়লেকে।
আইপিএলের পঞ্চম শিরোপা জিততে চেন্নাই সুপার কিংসের চাই ১৫ ওভারে ১৭১ রান। আহমেদাবাদে রাত ১২.৪০ মিনিটে শুরু হবে খেলা। গুজরাট টাইট্যান্সের ২১৪ রানের জবাবে খেলতে নেমে ৩ বলে ৪ রান করার পর বৃ্স্টিতে বন্ধ হয় ফাইনাল। অর্থাৎ বাকি ১৪.৩ ওভারে আরো ১৬৭ রান চাই ধোনীর দলের।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন জায়েদা খাতুন।
তিনি ঘড়ি প্রতীকে মোট ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় এ সিটির ৪৮০টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) রাতে রির্টানিং কর্মকর্তা স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
নির্বাচনের অন্য মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন ১৬ হাজার ৩৬২ ভোট, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ ৭ হাজার ২০৬ ভোট, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ১৬ হাজার ৯৭৪ ভোট, স্বতন্ত্রপ্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের মো. হারুন-অর-রশীদ ২ হাজার ৪২৬ ভোট এবং হাতি প্রতীকের সরকার শাহনূর ইসলাম ২৩ হাজার ২৬৫ ভোট পেয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ, ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী ও ১৮ জন হিজড়া। এই সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি, মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) নির্মিত হয়েছে বিশেষ কবিতা আবৃত্তির অনুষ্ঠান ‘ও ভোরের পাখি’। ঈমাম হোসাইনের প্রযোজনায় এটি উপস্থাপনা করেছেন তামান্ন তিথি। অনুষ্ঠানটিতে আবৃত্তি করেছেন আশরাফুল আলম, মীর বরকত, রফিকুল ইসলাম, পলি পারভিন, শাকিলা মতিন মৃদুলা, মাসকুর-এ সাত্তার কল্লোল, আসলাম শিশির, সংগীতা চৌধুরী, আহসান উল্লাহ তমাল। প্রচারিত হয় ২৫ মে সকাল সাড়ে ৯টায়।
এছাড়াও নির্মিত হয়েছে বিশেষ অনুষ্ঠান ‘আমারে দেবো না ভুলিতে’। অনুষ্ঠানটিতে গান, কবিতা ও আলোচনার সমন্বয়ে কবিকে সামগ্রিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও বাচিকশিল্পীদের অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিতে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে। ইয়াসমিন মুসতারী, সালাউদ্দিন আহমেদ, শেলু বড়ুয়া, ছন্দা চক্রবর্ত্তী ও ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়ের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেছেন প্রফেসর মুন্সী আবু সাইফ। মনিরুল হাসানের প্রযোজনায় অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হচ্ছে ২৫ মে দুপুর ১ টা ০৫ মিনিটে। আরও প্রচারিত হবে সংগীতানুষ্ঠান ‘দোলনচাঁপা’ ও ‘সন্ধ্যামালতী’। রাত ৯টায় প্রচারিত হবে নাটক ‘বনের পাপিয়া’ (পুনপ্রচার)।