নির্বাচনে টিকে গেলেন জামায়াতের ২৫ নেতা
বিশেষ প্রতিনিধি | ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৮ ২১:০৪
শেষ পর্যন্ত জামায়াতের ২৫ প্রার্থীর প্রার্থিতা টিকে গেল। এসব প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলের এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের না থাকায় তাদের মনোনয়ন বৈধ বলে ঘোষণা দিয়েছে ইসি। এর ফলে এসব প্রার্থীর এখন আর ভোটে কোন বাধা রইল না।
রোববার ইসির বৈঠক শেষে সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতের যে ২৫ জন ধানের শীষ নিয়ে দাঁড়িয়েছেন, তাদের প্রার্থিতা বাতিলের আইনগত কোনো সুযোগ ইসির নেই। রিটার্নিং কর্মকর্তারা জামায়াতের এই ২৫ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের সময় কেউ রিটার্নিং কর্মকর্তা বা কমিশনের কাছে আপিল করেননি। ইতিমধ্যে তাদের প্রতীকও বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
বিকেল সাড়ে ৩টায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদার সভাপতিত্বে কমিশনের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর আগে নির্বাচন কমিশন সচিব সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, রোব-সোমবারের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
প্রার্থীতা টিকে যাওয়া এই ২৫ জনের মধ্যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে ২২ জন ও স্বতন্ত্রভাবে তিনজনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ২১টি আসনে বিএনপির প্রতীক ‘ধানের শীষ’ এবং চার আসনে ‘আপেল’ প্রতীকে তাঁরা নির্বাচন করছেন।
তাঁরা হচ্ছেন ঢাকা-১৫ আসনে কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান, চট্টগ্রাম-১৫ আ ন ম শামসুল ইসলাম, কক্সবাজার-২ হামিদুর রহমান আযাদ, কুমিল্লা-১১ ডা. আব্দুল্লাহ মো. তাহের, খুলনা-৫ মিয়া গোলাম পরওয়ার, খুলনা-৬ শাহ মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুছ, সাতক্ষীরা-২ মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, সাতক্ষীরা-৪ মুক্তিযোদ্ধা গাজী নজরুল ইসলাম, ঝিনাইদহ-৩ মতিয়ার রহমান, যশোর-২ মুহাদ্দিস আবু সাঈদ মুহাম্মদ শাহাদৎ হুসাইন, বাগেরহাট-৩ আবদুল ওয়াদুদ, বাগেরহাট-৪ শহীদুল ইসলাম, ঠাকুরগাঁও-২ আবদুল হাকিম, দিনাজপুর-১ মোহাম্মদ হানিফ, দিনাজপুর-৬ আনওয়ারুল ইসলাম, নীলফামারী-২ মনিরুজ্জামান মন্টু, নীলফামারী-৩ আজিজুল ইসলাম, গাইবান্ধা-১ মাজেদুর রহমান, সিরাজগঞ্জ-৪ মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, পাবনা-৫ ইকবাল হুসাইন, রংপুর-৫ গোলাম রব্বানী ও পিরোজপুর-১ শামীম সাঈদী। এর মধ্যে কক্সবাজার-২ আসনে হামিদুর রহমান আযাদ ধানের শীষ প্রতীক পাননি। তিনি আপেল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। আর স্বতন্ত্র হিসেবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে নুরুল ইসলাম বুলবুল, পাবনা-১ আসনে ব্যারিস্টার নাজিবুর রহমান (নাজিব মোমেন) এবং চট্টগ্রাম-১৬ আসনে জহিরুল ইসলাম চৌধুরী আপেল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন।
এর আগে গত ১৮ ডিসেম্বর নির্বাচনে ২৫ আসনে জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের প্রার্থিতা অযোগ্য ঘোষণা ও বাতিল চেয়ে ইসিতে করা একটি আবেদন তিন দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও ইসির প্রতি নির্দেশটি দেওয়া হয়। আবেদনটি করেন বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনের মহাসচিব সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী, সমাজকল্যাণসচিব শাহ মোহাম্মদ আলী হুসাইন, ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’-এর সভাপতি হুমায়ুন কবির ও সংগঠনটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মো. এমদাদুল হক।
এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট একই সঙ্গে জামায়াত নেতাদের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা কেন বেআইনি ও বাতিল ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি), জামায়াতের আমির ও সেক্রেটারি জেনারেল এবং ২৫ প্রার্থীকে চার সপ্তাহের মধ্যে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়। বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ গত শনিবার এ আদেশ দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল নির্বাচন কমিশন ওই আবেদনের ব্যাপারে এমন সিদ্ধান্ত দেয়।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
বিশেষ প্রতিনিধি | ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৮ ২১:০৪

শেষ পর্যন্ত জামায়াতের ২৫ প্রার্থীর প্রার্থিতা টিকে গেল। এসব প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলের এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের না থাকায় তাদের মনোনয়ন বৈধ বলে ঘোষণা দিয়েছে ইসি। এর ফলে এসব প্রার্থীর এখন আর ভোটে কোন বাধা রইল না।
রোববার ইসির বৈঠক শেষে সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতের যে ২৫ জন ধানের শীষ নিয়ে দাঁড়িয়েছেন, তাদের প্রার্থিতা বাতিলের আইনগত কোনো সুযোগ ইসির নেই। রিটার্নিং কর্মকর্তারা জামায়াতের এই ২৫ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের সময় কেউ রিটার্নিং কর্মকর্তা বা কমিশনের কাছে আপিল করেননি। ইতিমধ্যে তাদের প্রতীকও বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
বিকেল সাড়ে ৩টায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদার সভাপতিত্বে কমিশনের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর আগে নির্বাচন কমিশন সচিব সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, রোব-সোমবারের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
প্রার্থীতা টিকে যাওয়া এই ২৫ জনের মধ্যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে ২২ জন ও স্বতন্ত্রভাবে তিনজনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ২১টি আসনে বিএনপির প্রতীক ‘ধানের শীষ’ এবং চার আসনে ‘আপেল’ প্রতীকে তাঁরা নির্বাচন করছেন।
তাঁরা হচ্ছেন ঢাকা-১৫ আসনে কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান, চট্টগ্রাম-১৫ আ ন ম শামসুল ইসলাম, কক্সবাজার-২ হামিদুর রহমান আযাদ, কুমিল্লা-১১ ডা. আব্দুল্লাহ মো. তাহের, খুলনা-৫ মিয়া গোলাম পরওয়ার, খুলনা-৬ শাহ মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুছ, সাতক্ষীরা-২ মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, সাতক্ষীরা-৪ মুক্তিযোদ্ধা গাজী নজরুল ইসলাম, ঝিনাইদহ-৩ মতিয়ার রহমান, যশোর-২ মুহাদ্দিস আবু সাঈদ মুহাম্মদ শাহাদৎ হুসাইন, বাগেরহাট-৩ আবদুল ওয়াদুদ, বাগেরহাট-৪ শহীদুল ইসলাম, ঠাকুরগাঁও-২ আবদুল হাকিম, দিনাজপুর-১ মোহাম্মদ হানিফ, দিনাজপুর-৬ আনওয়ারুল ইসলাম, নীলফামারী-২ মনিরুজ্জামান মন্টু, নীলফামারী-৩ আজিজুল ইসলাম, গাইবান্ধা-১ মাজেদুর রহমান, সিরাজগঞ্জ-৪ মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, পাবনা-৫ ইকবাল হুসাইন, রংপুর-৫ গোলাম রব্বানী ও পিরোজপুর-১ শামীম সাঈদী। এর মধ্যে কক্সবাজার-২ আসনে হামিদুর রহমান আযাদ ধানের শীষ প্রতীক পাননি। তিনি আপেল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। আর স্বতন্ত্র হিসেবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে নুরুল ইসলাম বুলবুল, পাবনা-১ আসনে ব্যারিস্টার নাজিবুর রহমান (নাজিব মোমেন) এবং চট্টগ্রাম-১৬ আসনে জহিরুল ইসলাম চৌধুরী আপেল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন।
এর আগে গত ১৮ ডিসেম্বর নির্বাচনে ২৫ আসনে জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের প্রার্থিতা অযোগ্য ঘোষণা ও বাতিল চেয়ে ইসিতে করা একটি আবেদন তিন দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও ইসির প্রতি নির্দেশটি দেওয়া হয়। আবেদনটি করেন বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনের মহাসচিব সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী, সমাজকল্যাণসচিব শাহ মোহাম্মদ আলী হুসাইন, ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’-এর সভাপতি হুমায়ুন কবির ও সংগঠনটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মো. এমদাদুল হক।
এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট একই সঙ্গে জামায়াত নেতাদের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা কেন বেআইনি ও বাতিল ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি), জামায়াতের আমির ও সেক্রেটারি জেনারেল এবং ২৫ প্রার্থীকে চার সপ্তাহের মধ্যে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়। বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ গত শনিবার এ আদেশ দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল নির্বাচন কমিশন ওই আবেদনের ব্যাপারে এমন সিদ্ধান্ত দেয়।