ভোটের আগে ব্যাচেলরদের রাজধানী ছাড়ার ‘নির্দেশ’
রশিদ আল রুহানী | ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৮ ১৯:৫৩
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০ ডিসেম্বর ভোটের আগে রাজধানীতে বসবাসরত ব্যাচেলরদের বাড়ি ছাড়তে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ছাড়া ফ্যামিলি বাসায় আগামী তিন দিন কোনো আত্মীয় না আসতে অনুরোধ করেছে পুলিশ। ফলে বিপাকে পড়েছে রাজধানীতে বসবাসকারী হাজার হাজার কর্মজীবী ব্যাচেলর। অবশ্য পুলিশের পক্ষ থেকে এমন নির্দেশনার কথা অস্বীকার করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর যাত্রাবাড়ি, সূত্রাপুর, নারিন্দা, লালবাগ, আজিমপুর, ধানমন্ডি, রায়ের বাজার, ফার্মগেট, বাড্ডা, বনশ্রী, খিলক্ষেত, নিকুঞ্জ, মণিপুরি পাড়া ও মিরপুর এলাকায় বসবাসরত বেশ কয়েকটি মেসের ফ্ল্যাটের মালিক সেখানে বসবাসরত ব্যাচেলরদের নিজ নিজ গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন।
ধানমন্ডির একটি মেসে বসবাসরত ও ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি’র ছাত্র আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘বাড়িওয়ালা আমাদের বলেছে, ভোট এসে গেল তোমরা গ্রামে ভোট দিতে যাও। ঢাকায় থাকার দরকার নেই। ঝামেলা হতে পারে। তাই গতকালই চলে এসেছি। বাড়ি থেকেও আম্মু থাকতে নিষেধ করছিল বারবার।‘
এদিকে রাজধানীর আজিমপুরের ছাপড়া মসজিদের পাশেই একটি ফ্ল্যাটে থাকেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা কলেজের কয়েকজন ছাত্র। তাদের মধ্যে রুবেল আহমেদ নামে এক ছাত্র দেশ রূপান্তরকে অভিযোগ দিয়ে বলেন, ‘আমাদের বাড়ির মালিক আমাদের গ্রামে চলে যাওয়ার জন্য মৌখিক নির্দেশ দিয়েছেন। শুনেছি পুলিশ নাকি বাড়ির মালিকের কাছে গিয়ে আমাদের সম্পর্কে জানতে চেয়েছে। হয়ত মালিক ভয় পেয়েছে। তাই গতকাল বিকেলেই গ্রামের বাড়িতে চলে আসছি’।
ব্যাচেলরদের বাড়ি ছাড়তে বলার কোনো নির্দেশনা আছে কি না জানতে চাইলে লালবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুভাষ কুমার পাল দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘রাজধানীতে যেন কোনো ধরনের নাশকতা না হয়, সাধারণ মানুষ যেন নিরাপদে থাকে সে কারণে আমরা একটু সতর্ক অবস্থানে রয়েছি। তবে যারা ভাড়াবাড়িতে থাকেন, ব্যাচেলর তাদের প্রতি এক ধরনের নজরদারি তো আছেই আর এটা স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু ব্যাচেলরদের বাড়ি ছাড়ার কোনো নির্দেশনা নেই।'
এদিকে রাজধানীর বনশ্রীতে বসবাসরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বেসরকারি চাকরিজীবী দেশ রূপান্তরকে অভিযোগ করে বলেন, ‘আমি তো আমার ফ্যামিলি নিয়ে থাকি। আত্মীয়স্বজন আসতেই পারে। কিন্তু পুলিশ নাকি বাড়িওয়ালাকে জানিয়েছে ভোটের আগের দিন, ভোটের দিন ও ভোটের পরের দিন যেন বাড়িতে আত্মীয়স্বজন না আসে। বিষয়টি নিয়ে আমি অনেক বিরক্ত।'
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. এনামুল হক দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘এটা কোনো কথা হলো? আমরা বাড়িওয়ালাদের এমন নির্দেশ দিতে যাব কোন দুঃখে। অতি উৎসাহী কিছু বাড়িওয়ালা নিজ থেকে এমনটা করতে পারে।'
এদিকে ব্যাচেলরদের বাসা ছেড়ে দেওয়ার জন্য ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে ডিএমপির মুখপাত্র উপ-পুলিশ কমিশনার (জনসংযোগ) মাসুদুর রহমানও একই কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘এমন কোনো নির্দেশনা নেই। এটা সম্পূর্ণ বানোয়াট খবর।'
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
রশিদ আল রুহানী | ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৮ ১৯:৫৩

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০ ডিসেম্বর ভোটের আগে রাজধানীতে বসবাসরত ব্যাচেলরদের বাড়ি ছাড়তে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ছাড়া ফ্যামিলি বাসায় আগামী তিন দিন কোনো আত্মীয় না আসতে অনুরোধ করেছে পুলিশ। ফলে বিপাকে পড়েছে রাজধানীতে বসবাসকারী হাজার হাজার কর্মজীবী ব্যাচেলর। অবশ্য পুলিশের পক্ষ থেকে এমন নির্দেশনার কথা অস্বীকার করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর যাত্রাবাড়ি, সূত্রাপুর, নারিন্দা, লালবাগ, আজিমপুর, ধানমন্ডি, রায়ের বাজার, ফার্মগেট, বাড্ডা, বনশ্রী, খিলক্ষেত, নিকুঞ্জ, মণিপুরি পাড়া ও মিরপুর এলাকায় বসবাসরত বেশ কয়েকটি মেসের ফ্ল্যাটের মালিক সেখানে বসবাসরত ব্যাচেলরদের নিজ নিজ গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন।
ধানমন্ডির একটি মেসে বসবাসরত ও ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি’র ছাত্র আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘বাড়িওয়ালা আমাদের বলেছে, ভোট এসে গেল তোমরা গ্রামে ভোট দিতে যাও। ঢাকায় থাকার দরকার নেই। ঝামেলা হতে পারে। তাই গতকালই চলে এসেছি। বাড়ি থেকেও আম্মু থাকতে নিষেধ করছিল বারবার।‘
এদিকে রাজধানীর আজিমপুরের ছাপড়া মসজিদের পাশেই একটি ফ্ল্যাটে থাকেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা কলেজের কয়েকজন ছাত্র। তাদের মধ্যে রুবেল আহমেদ নামে এক ছাত্র দেশ রূপান্তরকে অভিযোগ দিয়ে বলেন, ‘আমাদের বাড়ির মালিক আমাদের গ্রামে চলে যাওয়ার জন্য মৌখিক নির্দেশ দিয়েছেন। শুনেছি পুলিশ নাকি বাড়ির মালিকের কাছে গিয়ে আমাদের সম্পর্কে জানতে চেয়েছে। হয়ত মালিক ভয় পেয়েছে। তাই গতকাল বিকেলেই গ্রামের বাড়িতে চলে আসছি’।
ব্যাচেলরদের বাড়ি ছাড়তে বলার কোনো নির্দেশনা আছে কি না জানতে চাইলে লালবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুভাষ কুমার পাল দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘রাজধানীতে যেন কোনো ধরনের নাশকতা না হয়, সাধারণ মানুষ যেন নিরাপদে থাকে সে কারণে আমরা একটু সতর্ক অবস্থানে রয়েছি। তবে যারা ভাড়াবাড়িতে থাকেন, ব্যাচেলর তাদের প্রতি এক ধরনের নজরদারি তো আছেই আর এটা স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু ব্যাচেলরদের বাড়ি ছাড়ার কোনো নির্দেশনা নেই।'
এদিকে রাজধানীর বনশ্রীতে বসবাসরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বেসরকারি চাকরিজীবী দেশ রূপান্তরকে অভিযোগ করে বলেন, ‘আমি তো আমার ফ্যামিলি নিয়ে থাকি। আত্মীয়স্বজন আসতেই পারে। কিন্তু পুলিশ নাকি বাড়িওয়ালাকে জানিয়েছে ভোটের আগের দিন, ভোটের দিন ও ভোটের পরের দিন যেন বাড়িতে আত্মীয়স্বজন না আসে। বিষয়টি নিয়ে আমি অনেক বিরক্ত।'
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. এনামুল হক দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘এটা কোনো কথা হলো? আমরা বাড়িওয়ালাদের এমন নির্দেশ দিতে যাব কোন দুঃখে। অতি উৎসাহী কিছু বাড়িওয়ালা নিজ থেকে এমনটা করতে পারে।'
এদিকে ব্যাচেলরদের বাসা ছেড়ে দেওয়ার জন্য ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে ডিএমপির মুখপাত্র উপ-পুলিশ কমিশনার (জনসংযোগ) মাসুদুর রহমানও একই কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘এমন কোনো নির্দেশনা নেই। এটা সম্পূর্ণ বানোয়াট খবর।'