হাওরের আলোকিত নারী দীপালী সরকারের জীবনাবসান
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২০ জানুয়ারি, ২০২২ ১৩:১৭
হাওরের আলোকিত মানুষ ও রত্নগর্ভা জননী দীপালী সরকার পরলোকগমন করেছেন।
বুধবার রাত ৯টা ৪৩ মিনিটে রাজধানীর একটি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত ১৭ জানুয়ারি সকালে দীপালী সরকার ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর তিনি আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
বৃহস্পতিবার সকালে আত্মীয়-স্বজন, অনুরাগী ও শুভানুধ্যায়ীদের উপস্থিতিতে দীপালী সরকারকে কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম থানার বাঙ্গালপাড়া শ্মশানে দাহ করা হয়।
দীপালী সরকারের জন্ম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার সরাইল সদর ইউনিয়নের নাথহাটি গ্রামে (১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দের) ১৩৫০ বঙ্গাব্দের দীপান্বিতা তিথিতে। দীপাবলি বা দীপান্বিতা তিথিতে জন্ম বলে নাম রাখা হয় দীপালী। দীপালী সরকারের বাবা মহাপ্রভু দেবনাথ এবং মাতা বিমলা দেবী।
দীপালীর শৈশব ও কৈশোর কাটে ঐতিহ্যবাহী জনপদ সরাইল ও কালিকচ্ছে। ১৩৬৭ বাংলা সালের ২০ ফাল্গুন তিনি কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম উপজেলার বাঙ্গালপাড়া নিবাসী ডা. রমেন্দ্র নারায়ণ সরকারের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।
স্বামীর চাকরিসূত্রে তিনি বসবাস করেন রংপুর, গাইবান্ধা, গাজীপুরের কালিয়াকৈর, নরসিংদী, কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী, করগাঁও ইত্যাদি অঞ্চলে। আশির দশক থেকে তিনি বসবাস করতেন অষ্টগ্রামের বাঙ্গালপাড়ার নাথপাড়ার বাড়িতে।
কৈশোর থেকে দীপালী সরকারের বই পড়ার প্রতি ছিল প্রবল আগ্রহ। গাইবান্ধা থাকা অবস্থায় তিনি নিজের বাসায় গড়ে তোলেন একটি গ্রন্থাগার। তার গ্রন্থাগার থেকে তৈরি হয়েছে অনেক পাঠক। পাঠাভ্যাস তিনি সঞ্চারিত করেছেন সন্তান, স্বজন, শুভানুধ্যায়ীদের মধ্যে।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে কটিয়াদীর বাসা থেকে তার গ্রন্থাগারটি লুট হয়ে যায়। এরপর আবার গড়ে তুলেছিলেন পাঠাগার।
অষ্টগ্রাম উপজেলার প্রশাসন ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস পালন উপলক্ষে ‘সফল জননী নারী’ হিসেবে দীপালী সরকারকে ‘জয়িতা পদক’ ও সংবর্ধনা প্রদান করে।
দীপালী সরকারের সন্তানদের মধ্যে ছেলে তাপস সরকার অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা, তপন সরকার শিক্ষক, তরুণ সরকার সাংবাদিক ও তুষার সরকার পুলিশ কর্মকর্তা এবং মেয়ে অপর্ণা সরকার গৃহিণী।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২০ জানুয়ারি, ২০২২ ১৩:১৭
হাওরের আলোকিত মানুষ ও রত্নগর্ভা জননী দীপালী সরকার পরলোকগমন করেছেন।
বুধবার রাত ৯টা ৪৩ মিনিটে রাজধানীর একটি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত ১৭ জানুয়ারি সকালে দীপালী সরকার ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর তিনি আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
বৃহস্পতিবার সকালে আত্মীয়-স্বজন, অনুরাগী ও শুভানুধ্যায়ীদের উপস্থিতিতে দীপালী সরকারকে কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম থানার বাঙ্গালপাড়া শ্মশানে দাহ করা হয়।
দীপালী সরকারের জন্ম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার সরাইল সদর ইউনিয়নের নাথহাটি গ্রামে (১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দের) ১৩৫০ বঙ্গাব্দের দীপান্বিতা তিথিতে। দীপাবলি বা দীপান্বিতা তিথিতে জন্ম বলে নাম রাখা হয় দীপালী। দীপালী সরকারের বাবা মহাপ্রভু দেবনাথ এবং মাতা বিমলা দেবী।
দীপালীর শৈশব ও কৈশোর কাটে ঐতিহ্যবাহী জনপদ সরাইল ও কালিকচ্ছে। ১৩৬৭ বাংলা সালের ২০ ফাল্গুন তিনি কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম উপজেলার বাঙ্গালপাড়া নিবাসী ডা. রমেন্দ্র নারায়ণ সরকারের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।
স্বামীর চাকরিসূত্রে তিনি বসবাস করেন রংপুর, গাইবান্ধা, গাজীপুরের কালিয়াকৈর, নরসিংদী, কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী, করগাঁও ইত্যাদি অঞ্চলে। আশির দশক থেকে তিনি বসবাস করতেন অষ্টগ্রামের বাঙ্গালপাড়ার নাথপাড়ার বাড়িতে।
কৈশোর থেকে দীপালী সরকারের বই পড়ার প্রতি ছিল প্রবল আগ্রহ। গাইবান্ধা থাকা অবস্থায় তিনি নিজের বাসায় গড়ে তোলেন একটি গ্রন্থাগার। তার গ্রন্থাগার থেকে তৈরি হয়েছে অনেক পাঠক। পাঠাভ্যাস তিনি সঞ্চারিত করেছেন সন্তান, স্বজন, শুভানুধ্যায়ীদের মধ্যে।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে কটিয়াদীর বাসা থেকে তার গ্রন্থাগারটি লুট হয়ে যায়। এরপর আবার গড়ে তুলেছিলেন পাঠাগার।
অষ্টগ্রাম উপজেলার প্রশাসন ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস পালন উপলক্ষে ‘সফল জননী নারী’ হিসেবে দীপালী সরকারকে ‘জয়িতা পদক’ ও সংবর্ধনা প্রদান করে।
দীপালী সরকারের সন্তানদের মধ্যে ছেলে তাপস সরকার অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা, তপন সরকার শিক্ষক, তরুণ সরকার সাংবাদিক ও তুষার সরকার পুলিশ কর্মকর্তা এবং মেয়ে অপর্ণা সরকার গৃহিণী।