সুস্থতা অর্জনে ন্যাচারাল মেডিসিন ও লাইফস্টাইল মডিফিকেশনকে গুরুত্ব দিতে হবে
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২০ জানুয়ারি, ২০২২ ১৬:২২
সুস্থ থাকার জন্য মেডিকেল চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা আছে। তবে এর পাশাপাশি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত ন্যাচারাল মেডিসিন এবং সর্বোপরি লাইফস্টাইল মডিফিকেশনকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।
বুধবার রাতে রাজধানীর একটি রেস্টুরেন্টে ‘রিজেনারেটিভ হেলথ উইথ নিউট্রিশন অ্যান্ড অলটারনেটিভ মেডিসিন’ শীর্ষক সায়েন্টিফিক সেমিনারে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন চিকিৎসা বিজ্ঞানী ড. এম মজিবুল হক এ কথা বলেন।
মূল প্রবন্ধে তিনি বলেন, আজ ৭০ ভাগ মানুষ ক্রনিক বা দুরারোগ্য ব্যাধিতে ভুগছে। পৃথিবীর ৭৫ ভাগ মানুষকে কোনো না কোনো মেডিসিন নিতে হয়। পৃথিবীর অর্ধেকের বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকে।
ড. মুজিবুল হক বলেন, বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের মাঝে ৯ কোটি মারা যাবে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকে। আমাদের কার্ডিওলজিস্টের কি অভাব রয়েছে? গ্যাপটা কোথায়? সেটা হলো পুষ্টি।
তিনি বলেন, সুস্থ থাকার জন্য আমাদের মেডিকেল চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা আছে। তবে এর পাশাপাশি পরীক্ষিত পুষ্টির সমন্বয় রিজেনারেটিভ মেডিকেল থেরাপি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত ন্যাচারাল মেডিসিন এবং সর্বোপরি লাইফস্টাইল মডিফিকেশন সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।
ড. মুজিবুল হক আরও বলেন, ওষুধ আমাদেরকে সাময়িকভাবে সুস্থতা দান করলেও দীর্ঘমেয়াদি এর নানাবিধ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এমতাবস্থায় গতানুগতিক ওষুধের পরিমাণ যথাসম্ভব কমিয়ে ন্যাচারাল মেডিসিন তথা স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের ওপর বিশেষভাবে জোর দেওয়া প্রয়োজন।
তার দাবি, মানুষ অধিক খাবার খাওয়ার ফলে সুস্থ হয় না বা স্বাস্থ্যবান হয় না বরং অসুস্থ হয়ে পড়ে। আর সেই খাবারটি যদি স্বাস্থ্যসম্মত না হয় তবে তো এর ভয়াবহতা আরও মারাত্মক আকার ধারণ করে।
এই গবেষক বলেন, এজন্য ফাস্টফুড তথা জাঙ্ক ফুড পরিহার করে প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত খাবার খেতে হবে, কেমিক্যালমুক্ত খাবার খেতে হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি অনুষদ বিভাগের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. চৌধুরী মাহমুদ হাসান বলেন, চিকিৎসা বিজ্ঞানের তিনটি দিক- মেডিকেল ব্যবস্থাপত্র, ফার্মাসিস্ট ও নার্স। তার সঙ্গে এখন যুক্ত হয়েছে কমপ্লিমেন্টারি মেডিসিন বা সাপ্লিমেন্টারি মেডিসিন।
‘তার পাশাপাশি পুষ্টি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এখন। আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) পুষ্টির ওপর বেশ জোর দিয়েছে’ যোগ করেন তিনি।
চৌধুরী মাহমুদ হাসান আরও বলেন, সব রোগীর জন্য ন্যাচারাল মেডিসিন নয়। যাদের বাইপাস সার্জারির প্রয়োজন তাদেরকে সেই চিকিৎসাই করাতে হবে। যারা স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন বা ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন তাদের চিকিৎসা সেই অনুযায়ীই করতে হবে। আবার কিছু রোগ ন্যাচারাল মেডিসিন দিয়েই ভালো উপকার হয়।
তিনি বলেন, এটা আমাদের বুঝতে হবে কোন পদ্ধতিটা কোন রোগীর ওপর প্রয়োগ করা হবে। সেই অনুযায়ীই চিকিৎসা করাতে হবে। এখানে সবাই মিলেই একটা সমন্বিত চিকিৎসা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। তাহলেই রোগীরা উপকৃত হবে।
অধ্যাপক ড. আবু খুলদুন আল মাহমুদের সভাপতিত্বে সেমিনারে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- দেশের প্রখ্যাত পুষ্টিবিদ আখতারুন্নাহার আলো, পুষ্টিবিদ ইশরাত জাহান, পুষ্টিবিদ সিরাজাম মুনিরা প্রমুখ।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২০ জানুয়ারি, ২০২২ ১৬:২২

সুস্থ থাকার জন্য মেডিকেল চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা আছে। তবে এর পাশাপাশি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত ন্যাচারাল মেডিসিন এবং সর্বোপরি লাইফস্টাইল মডিফিকেশনকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।
বুধবার রাতে রাজধানীর একটি রেস্টুরেন্টে ‘রিজেনারেটিভ হেলথ উইথ নিউট্রিশন অ্যান্ড অলটারনেটিভ মেডিসিন’ শীর্ষক সায়েন্টিফিক সেমিনারে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন চিকিৎসা বিজ্ঞানী ড. এম মজিবুল হক এ কথা বলেন।
মূল প্রবন্ধে তিনি বলেন, আজ ৭০ ভাগ মানুষ ক্রনিক বা দুরারোগ্য ব্যাধিতে ভুগছে। পৃথিবীর ৭৫ ভাগ মানুষকে কোনো না কোনো মেডিসিন নিতে হয়। পৃথিবীর অর্ধেকের বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকে।
ড. মুজিবুল হক বলেন, বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের মাঝে ৯ কোটি মারা যাবে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকে। আমাদের কার্ডিওলজিস্টের কি অভাব রয়েছে? গ্যাপটা কোথায়? সেটা হলো পুষ্টি।
তিনি বলেন, সুস্থ থাকার জন্য আমাদের মেডিকেল চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা আছে। তবে এর পাশাপাশি পরীক্ষিত পুষ্টির সমন্বয় রিজেনারেটিভ মেডিকেল থেরাপি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত ন্যাচারাল মেডিসিন এবং সর্বোপরি লাইফস্টাইল মডিফিকেশন সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।
ড. মুজিবুল হক আরও বলেন, ওষুধ আমাদেরকে সাময়িকভাবে সুস্থতা দান করলেও দীর্ঘমেয়াদি এর নানাবিধ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এমতাবস্থায় গতানুগতিক ওষুধের পরিমাণ যথাসম্ভব কমিয়ে ন্যাচারাল মেডিসিন তথা স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের ওপর বিশেষভাবে জোর দেওয়া প্রয়োজন।
তার দাবি, মানুষ অধিক খাবার খাওয়ার ফলে সুস্থ হয় না বা স্বাস্থ্যবান হয় না বরং অসুস্থ হয়ে পড়ে। আর সেই খাবারটি যদি স্বাস্থ্যসম্মত না হয় তবে তো এর ভয়াবহতা আরও মারাত্মক আকার ধারণ করে।
এই গবেষক বলেন, এজন্য ফাস্টফুড তথা জাঙ্ক ফুড পরিহার করে প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত খাবার খেতে হবে, কেমিক্যালমুক্ত খাবার খেতে হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি অনুষদ বিভাগের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. চৌধুরী মাহমুদ হাসান বলেন, চিকিৎসা বিজ্ঞানের তিনটি দিক- মেডিকেল ব্যবস্থাপত্র, ফার্মাসিস্ট ও নার্স। তার সঙ্গে এখন যুক্ত হয়েছে কমপ্লিমেন্টারি মেডিসিন বা সাপ্লিমেন্টারি মেডিসিন।
‘তার পাশাপাশি পুষ্টি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এখন। আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) পুষ্টির ওপর বেশ জোর দিয়েছে’ যোগ করেন তিনি।
চৌধুরী মাহমুদ হাসান আরও বলেন, সব রোগীর জন্য ন্যাচারাল মেডিসিন নয়। যাদের বাইপাস সার্জারির প্রয়োজন তাদেরকে সেই চিকিৎসাই করাতে হবে। যারা স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন বা ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন তাদের চিকিৎসা সেই অনুযায়ীই করতে হবে। আবার কিছু রোগ ন্যাচারাল মেডিসিন দিয়েই ভালো উপকার হয়।
তিনি বলেন, এটা আমাদের বুঝতে হবে কোন পদ্ধতিটা কোন রোগীর ওপর প্রয়োগ করা হবে। সেই অনুযায়ীই চিকিৎসা করাতে হবে। এখানে সবাই মিলেই একটা সমন্বিত চিকিৎসা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। তাহলেই রোগীরা উপকৃত হবে।
অধ্যাপক ড. আবু খুলদুন আল মাহমুদের সভাপতিত্বে সেমিনারে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- দেশের প্রখ্যাত পুষ্টিবিদ আখতারুন্নাহার আলো, পুষ্টিবিদ ইশরাত জাহান, পুষ্টিবিদ সিরাজাম মুনিরা প্রমুখ।