রাজধানীর সড়কে দুই ঘণ্টায় একই পরিবারের তিনজনসহ চারজনের মৃত্যু
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২১ জানুয়ারি, ২০২২ ২১:৪৩
রাজধানীর যাত্রাবাড়ি ও রামপুরায় প্রায় দুই ঘণ্টার ব্যবধানে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের তিনজনসহ চারজন প্রাণ হারিয়েছেন।
শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী মাতুয়াইলে বাসের ধাক্কায় সিএনজি চালিত অটোরিকশায় থাকা একই পরিবারের তিনজন ও রামপুরায় সকাল ৮টার দিকে পিকআপ ভ্যান ও সিএনজি চালিত অটোরিকশার সংঘর্ষে অটোরিকশাচালক রাজীবের (৩৮) মৃত্যু হয়েছে।
পুলিশ ও হাসপাতালে থাকা স্বজনরা দেশ রূপান্তরকে জানান, শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে যাত্রাবাড়ী মাতুয়াইলে দ্রুতগতির একটি বাসের ধাক্কায় সিএনজি চালিত অটোরিকশা দুমড়েমুচড়ে যায়। এতে অটোরিকশায় থাকা একই পরিবারের তিনজন ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান। তারা হলেন- আব্দুর রহমান (৬৫), তার মেয়ে শারমিন আক্তার (৩৫) ও জামাতা রিয়াজুল (৪৫)।
একই ঘটনায় শারমিনের ৬ বছরের মেয়ে বৃষ্টি আক্তার ও অটোরিকশাচালক রফিকুল ইসলাম (৪২) আহত হয়েছেন।
হতাহতদের সবাইকে তাদেরকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ(ঢমেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর সকাল সাড়ে ৭টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
শারমিনের বড় ভাই নজরুল ইসলাম দেশ রূপান্তরকে জানান, তাদের বাড়ি বরিশাল উজিরপুর উপজেলায় মশান গ্রামে। তিন দিন আগে তাদের মা সাহেদা বেগমকে রাজধানীর মহাখালী ক্যান্সার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মাকে দেখতে শারমিন, তার স্বামী, মেয়ে ও বাবাকে নিয়ে গ্রামে থেকে লঞ্চে করে সকালে ঢাকায় আসেন। লঞ্চ থেকে সদরঘাটে নেমে প্রথমে সেখান থেকে অটোরিকশা যোগে মাতুয়াইলে ভাই নজরুলের বাসায় যাচ্ছিলেন। পথে দুর্ঘটনার শিকার হন।
যাত্রাবাড়ি থানার এস আই বিশ্বজিৎ সরকার জানান, সকালে মাতুয়াইল মেডিকেলের সামনে সেন্টমার্টিন পরিবহনের একটি বাস অটোরিকশাটিকে ধাক্কা দেয়। এতে অটোরিকশার চার যাত্রী ও চালক গুরুতর আহত হয়। পরে তাদেরকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে তিনজনকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আহত দুই জনের চিকিৎসা চলছে।
স্বজনরা জানান, নিহত আ. রহমান গ্রামে মাছের ব্যবসা করতেন। শারমিন গৃহিনী ও তার স্বামী বরিশাল বাবুগঞ্জ থানা এলাকার একটি এনজিও এর ম্যানেজার। শারমিনের মেয়ে আহত বৃষ্টি স্থানীয় একটি স্কুলের নার্সারিতে পড়ে।
এদিকে শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে রাজধানীর রামপুরায় পিকআপ ভ্যান ও সিএনজি চালিত অটোরিকশার মধ্যে সংঘর্ষে রাজীব (৩৮) নামে এক ব্যক্তি গুরুতর আহত অবস্থায় রাস্তায় পড়েছিলেন। পরে তাকে উদ্ধার করে সকাল সাড়ে আটটার দিকে ঢামেক হাসপাতালে নেওয়ার পর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহতের বড় ভাই মো. নিজাম জানান, বরিশাল বাকেরগঞ্জ উপজেলার নেয়ামতি গ্রামের আইয়ুব আলীর ছেলে রাজিব। এক ছেলে ও দুই মেয়েসহ স্ত্রী লাকি বেগমকে নিয়ে খিলগাঁও সিপাহীবাগ আইসক্রিম ফ্যাক্টরি গলিতে থাকতেন। ভাড়ায় অটোরিকশা চালাতেন তিনি।
রামপুরা থানার এস আই মোমিনুর রহমান দেশ রূপান্তরকে জানান, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে রামপুরা বেটার লাইফ হাসপাতালের সামনে রাস্তায় একটি পিকআপভ্যান ইউটার্ন নিচ্ছিল। এমন সময় রামপুরা থেকে মালিবাগগামী অটোরিকশার সাথে সংঘর্ষ হয়। এতে অটোরিকশা চালক গুরুতর আহত হন। আহত ব্যক্তিকে উদ্ধার করে প্রথমে পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে রাতেই তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। শুক্রবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
তিনি আরও জানান, ঘটনার পরপরই পিকআপ ভ্যানটি জব্দ করা হয়েছে এবং এর চালককে আটক করা হয়েছে। রাজীবের মৃতদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে রাখা হয়েছে।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২১ জানুয়ারি, ২০২২ ২১:৪৩

রাজধানীর যাত্রাবাড়ি ও রামপুরায় প্রায় দুই ঘণ্টার ব্যবধানে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের তিনজনসহ চারজন প্রাণ হারিয়েছেন।
শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী মাতুয়াইলে বাসের ধাক্কায় সিএনজি চালিত অটোরিকশায় থাকা একই পরিবারের তিনজন ও রামপুরায় সকাল ৮টার দিকে পিকআপ ভ্যান ও সিএনজি চালিত অটোরিকশার সংঘর্ষে অটোরিকশাচালক রাজীবের (৩৮) মৃত্যু হয়েছে।
পুলিশ ও হাসপাতালে থাকা স্বজনরা দেশ রূপান্তরকে জানান, শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে যাত্রাবাড়ী মাতুয়াইলে দ্রুতগতির একটি বাসের ধাক্কায় সিএনজি চালিত অটোরিকশা দুমড়েমুচড়ে যায়। এতে অটোরিকশায় থাকা একই পরিবারের তিনজন ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান। তারা হলেন- আব্দুর রহমান (৬৫), তার মেয়ে শারমিন আক্তার (৩৫) ও জামাতা রিয়াজুল (৪৫)।
একই ঘটনায় শারমিনের ৬ বছরের মেয়ে বৃষ্টি আক্তার ও অটোরিকশাচালক রফিকুল ইসলাম (৪২) আহত হয়েছেন।
হতাহতদের সবাইকে তাদেরকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ(ঢমেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর সকাল সাড়ে ৭টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
শারমিনের বড় ভাই নজরুল ইসলাম দেশ রূপান্তরকে জানান, তাদের বাড়ি বরিশাল উজিরপুর উপজেলায় মশান গ্রামে। তিন দিন আগে তাদের মা সাহেদা বেগমকে রাজধানীর মহাখালী ক্যান্সার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মাকে দেখতে শারমিন, তার স্বামী, মেয়ে ও বাবাকে নিয়ে গ্রামে থেকে লঞ্চে করে সকালে ঢাকায় আসেন। লঞ্চ থেকে সদরঘাটে নেমে প্রথমে সেখান থেকে অটোরিকশা যোগে মাতুয়াইলে ভাই নজরুলের বাসায় যাচ্ছিলেন। পথে দুর্ঘটনার শিকার হন।
যাত্রাবাড়ি থানার এস আই বিশ্বজিৎ সরকার জানান, সকালে মাতুয়াইল মেডিকেলের সামনে সেন্টমার্টিন পরিবহনের একটি বাস অটোরিকশাটিকে ধাক্কা দেয়। এতে অটোরিকশার চার যাত্রী ও চালক গুরুতর আহত হয়। পরে তাদেরকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে তিনজনকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আহত দুই জনের চিকিৎসা চলছে।
স্বজনরা জানান, নিহত আ. রহমান গ্রামে মাছের ব্যবসা করতেন। শারমিন গৃহিনী ও তার স্বামী বরিশাল বাবুগঞ্জ থানা এলাকার একটি এনজিও এর ম্যানেজার। শারমিনের মেয়ে আহত বৃষ্টি স্থানীয় একটি স্কুলের নার্সারিতে পড়ে।
এদিকে শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে রাজধানীর রামপুরায় পিকআপ ভ্যান ও সিএনজি চালিত অটোরিকশার মধ্যে সংঘর্ষে রাজীব (৩৮) নামে এক ব্যক্তি গুরুতর আহত অবস্থায় রাস্তায় পড়েছিলেন। পরে তাকে উদ্ধার করে সকাল সাড়ে আটটার দিকে ঢামেক হাসপাতালে নেওয়ার পর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহতের বড় ভাই মো. নিজাম জানান, বরিশাল বাকেরগঞ্জ উপজেলার নেয়ামতি গ্রামের আইয়ুব আলীর ছেলে রাজিব। এক ছেলে ও দুই মেয়েসহ স্ত্রী লাকি বেগমকে নিয়ে খিলগাঁও সিপাহীবাগ আইসক্রিম ফ্যাক্টরি গলিতে থাকতেন। ভাড়ায় অটোরিকশা চালাতেন তিনি।
রামপুরা থানার এস আই মোমিনুর রহমান দেশ রূপান্তরকে জানান, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে রামপুরা বেটার লাইফ হাসপাতালের সামনে রাস্তায় একটি পিকআপভ্যান ইউটার্ন নিচ্ছিল। এমন সময় রামপুরা থেকে মালিবাগগামী অটোরিকশার সাথে সংঘর্ষ হয়। এতে অটোরিকশা চালক গুরুতর আহত হন। আহত ব্যক্তিকে উদ্ধার করে প্রথমে পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে রাতেই তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। শুক্রবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
তিনি আরও জানান, ঘটনার পরপরই পিকআপ ভ্যানটি জব্দ করা হয়েছে এবং এর চালককে আটক করা হয়েছে। রাজীবের মৃতদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে রাখা হয়েছে।