
পুলিশ সদস্যদের ফিজিক্যাল ফিটনেস বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।
তিনি বলেছেন, সামনে আমাদের কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সভা-সমাবেশ করবে। এসব রাজনৈতিক দলের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব আমাদের। সরকারি সম্পত্তি ও জনগণের সম্পত্তি হেফাজত করতে হবে।
তিনি বলেন, পুলিশের কাজ হচ্ছে মাঠ পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা। মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে শারীরিক সক্ষমতা বাড়াতে প্যারেডের বিকল্প নেই।
রবিবার সকালে রাজারবাগ পুলিশ লাইনস মাঠে অনুষ্ঠিত মাস্টার প্যারেড পরিদর্শন শেষে ডিএমপি কমিশনার এসব বলেন।
পুলিশ অফিসার ও ফোর্সদের শারীরিক সক্ষমতা বাড়াতে মাস্টার প্যারেড অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় ডিএমপি কমিশনার প্রতিদিন এক ঘণ্টা করে রাজারবাগ পুলিশ লাইনস মাঠ ও পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট মাঠে প্যারেড করার নির্দেশ দেন।
মাস্টার প্যারেডে ডিএমপি কমিশনার অভিবাদন গ্রহণ করেন। এ সময় কমিশনার ডিএমপির বিভিন্ন ইউনিটের সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত কন্টিনজেন্ট এবং পতাকাবাহীদের নয়নাভিরাম প্যারেড পরিদর্শন করেন।
তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা যাতে অবনতি না ঘটে সেদিকে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। ঢাকা শহরের অপরাধ দমন ও নিয়ন্ত্রণে নিরলসভাবে কাজ করতে হবে। নগরবাসীর আস্থা অর্জনে আরো সতর্ক থাকতে হবে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নতুন ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে নামতে গিয়ে জসিম উদ্দিন (৬০) নামে এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
রবিবার বেলা সাড়ে ৩টায় জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের ভাগনে ইমতিয়াজ মাহমুদ সুজন জানান, তাদের বাড়ি কুমিল্লার তিতাস উপজেলায়। হার্টের সমস্যা, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত জসিম উদ্দিনকে শনিবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নতুন ভবনের ৬০১ নম্বর ওয়ার্ডের ৪৭ নম্বর বেডে ভর্তি করা হয়। আগুন লাগার সময়ও তিনি তার বেডে ছিলেন। তখন হঠাৎ চারতলা থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখে তাদের ওয়ার্ডের সবাই ছোটাছুটি শুরু করেন। একপর্যায়ে জসিম উদ্দিনকে নিয়ে সিঁড়ি দিয়ে ৬তলা থেকে নিচে নামার সময় অসুস্থ হয়ে সিঁড়িতেই পড়ে যান তিনি। সঙ্গে সঙ্গে অচেতন হয়ে পড়েন। দ্রুত ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নেয়া হলেও সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মো. বাচ্চু মিয়া তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, অসুস্থতার জন্য তার মৃত্যু হয়েছে। মরদেহটি তার স্বজনরা নিয়ে গেছেন।
পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গিয়ে আগুন নির্বাপণ করেন।
কিশোরগঞ্জের ভৈরব থেকে হাসপাতালে আসা কিডনি রোগী আবুল হোসেনের (৫৫) ছেলে জিহাদ হোসেন জানান, চারতলার জানালার পাশে এসিতে হঠাৎ আগুন ধরে যায়। এরপর কালো ধোঁয়া ওয়ার্ডের ভেতর ও চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। তখন হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্সরা প্রথমে ছোটাছুটি করে বাইরে বেরিয়ে যায়। এরপর কিছুসংখ্যক রোগীকে তাদের স্বজনরা দ্রুত বাইরে নিয়ে যায়।
বিভিন্ন রোগীর স্বজনরা জানান, ৪র্থ তলায় আগুন লাগলেও ১০তলা ভবনটির প্রায় সব রোগী আতঙ্কিত হয়ে বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তবে ৪র্থ তলায় ডায়ালাইসিস ইউনিটে থাকা রোগীরা কেউ বের হতে পারেনি। পুরো সময়টুকু তারা সেখানে আটকে থাকেন।
চার তলার ডায়ালাইসিস ইউনিটে ভর্তি আরিফ হোসেন (৪০) নামে এক রোগীর স্ত্রী মরিয়ম বেগম জানান, আগুনের পরপর ইউনিটটি ধোয়ায় অন্ধকার হয়ে যায়। এটি দেখেই নার্সরা বাইরে চলে যায়। রোগীকে বের করার মতো কেউ ছিল না। কিছুক্ষণ পর একে একে সবাই আবার আসেন।
হাসপাতালের নতুন ভবনের ওয়ার্ড মাস্টার মো. রিয়াজ জানান, আগুন লাগার পরপরই প্রথমে হাসপাতালের স্টাফ, নার্সরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। পরবর্তীতে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন পুরোপুরি নিভিয়ে ফেলে। পরে আবার সব রোগীদের যার যার ওয়ার্ডে পাঠানো হয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) অধ্যাপক ডা. মানিক কুমার তালুকদারকে শিশু বিভাগের নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২ ফ্রেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়টির জনসংযোগ দপ্তর থেকে এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এ পদে তিনি তিন বছর দায়িত্বপালন করতে পারবেন।
ডা. মানিক কুমার তালুকদার ২০১০ সালের ৭ জুলাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। এরপর ২০১৫ সালে সহযোগী অধ্যাপক এবং ২০২২ সালে অধ্যাপক হিসেবে শিশু রিউমাটোলোজি পদে পদোন্নতি পান।
কর্মদক্ষতা, সৎ ও নিষ্ঠাবান চিকিৎসক হিসেবে দায়িত্বপালন করায় গত বৃহস্পতিবার তাকে শিশু বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
রাজধানীর দক্ষিণখানে চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে সজিব চন্দ্র বর্মণ (৩৫) নামে এক তরুণ নিহত হয়েছেন। আজ রবিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান তিনি।
বিমানবন্দর রেলস্টেশন পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) আলী আকবর জানান, কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়া কিশোরগঞ্জ গামী 'এগারো সিন্ধুর প্রভাতী' ট্রেনে দরজায় দাঁড়িয়ে যাচ্ছিলেন সজিব। দক্ষিণখান জয়নাল মার্কেট এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় চলন্ত ট্রেনটি থেকে নিচে পড়ে যান তিনি। এতে সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যু হয় তার। মৃতদেহের ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
তিনি জানান, ওই ট্রেনের পরিচ্ছন্ন কর্মী ছিলেন তিনি। তার বাড়ি গাজীপুর কাপাসিয়া উপজেলায়। তার বাবার নাম মৃত অরুণ চন্দ্র বর্মণ। বর্তমানে মুগদায় স্ত্রী ও এক ছেলেকে নিয়ে থাকতেন।
রাজধানী ঢাকায় সাবেক স্বামীর কাছে থাকা সন্তানদের দেখতে এসে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত পাঁচন আসামিকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গত ২৬ জানুয়ারি বিকেল ৩টার দিকে অজ্ঞাতনামা ৫ জন আসামি কর্তৃক ভিকটিমকে জোরপূর্বক ধর্ষণ ও সহায়তার অপরাধে মামলা করা হয়। মামলার ঘটনাটি অত্যন্ত স্পর্শকাত এবং চাঞ্চল্যকর হওয়ায় ডিসি তেজগাঁও বিভাগ এর নির্দেশে এডিসি মোহাম্মদপুর জোন ও এসি মোহাম্মদপুর জোন এর তত্ত্বাবধানে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করে।
সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ও প্রযুক্তির সহায়তায় ও প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী ঘটনাস্থলে ৭ জন ব্যক্তি ও তিনটই রিকশার উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়। প্রযুক্তির সহায়তা ও সোর্সের মাধ্যমে গত ৩১ জানুয়ারি মোহাম্মদপুর থানার চাঁদ উদ্যান এলাকা হতে মো. শাহিনকে (১৯) গ্রেপ্তার করা হয় এবং তার নিকট হতে ভিকটিমের ব্যবহৃত খোয়া যাওয়া মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়। গত ৪ ফেব্রুয়ারি দারুস সালাম থানার গাবতলী এলাকা হতে আসামি বিল্লাল হোসেন (২৫), ঢাকার ডেমরা হতে আসামি আল-আমিন হোসেন (২৬), মোহাম্মদপুরের বছিলা হতে মো. সবুজ (২৬) ও মো. রাসের ওরফে মোল্লা রাসেল (২৪) এবং ভোলা জেলার তমুমুদ্দিন এলাকা হতে আসামি মো. শফিকুল ইসলামকে (২৬) গ্রেপ্তার করা হয় এবং তাদের হেফাজত হতে অপরাধে ব্যবহৃত দুটি রিকশা উদ্ধার করা হয়। আসামিরা ভিকটিকে জোরপূর্বক ধর্ষণের কথা স্বীকার করে এবং পলাতক দুইজন সহযোগীর নাম-ঠিকানা প্রকাশ করে। পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।
এজাহারে ওই নারী উল্লেখ করেন, সম্প্রতি স্বামীর সঙ্গে তার বিচ্ছেদ হয়েছে। পরে তিনি গ্রামের বাড়ি যশোরে চলে যান। তার সাবেক স্বামী সন্তানদের নিয়ে রাজধানীতে থাকতেন। তিনি (নারী) গত ২৫ জানুয়ারি সন্তানদের দেখতে ঢাকায় আসেন। কিন্তু এসে দেখেন, তার সাবেক স্বামী বাসা ছেড়ে দিয়েছেন। সন্তানদের না পেয়ে রাত ৯টার দিকে তিনি গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে যাওয়ার জন্য একটি অটোরিকশায় ওঠেন। অটোরিকশাচালকের সঙ্গে কথায় কথায় তিনি সন্তানদের কথা বলেন। অটোরিকশাচালক তাকে সন্তানদের খুঁজতে সহায়তা করার আশ্বাস দিয়ে কয়েক ঘণ্টা বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাতে থাকেন। অটোরিকশাচালক তাকে নিয়ে ঘোরানোর সময় মোবাইল ফোনে কথা বলতে থাকেন। কিছুক্ষণ পর ওই অটোরিকশায় জোর করে দুই ব্যক্তি উঠে পড়ে। নেমে যেতে বলা হলেও তারা নামেনি। একপর্যায়ে অটোরিকশাটি নির্জন একাটি জায়গায় গিয়ে থামে। তখন প্রায় মধ্যরাত। সেখানে দুজন আগে থেকেই অবস্থান করছিল। পরে একটি অস্থায়ী টিনের ঘরে নিয়ে অটোরিকশাচালকসহ চারজন তাকে ধর্ষণ করে। অন্য একজন পাহারায় ছিল। ওই নারীর চিৎকারে আশপাশের লোক জড়ো হলে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা পালিয়ে যায়।
জাতীয় হিন্দু সম্মেলনে অনলাইনে যুক্ত হয়ে ভারতে ক্ষমতাসীন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি ও সংসদ সদস্য দিলীপ ঘোষ বলেন, দুটি আলাদা শরীর হলেও আমাদের মন কিন্তু এক। তাই এপাশে কোনো সমস্যা হলে আপনাদের কষ্ট হয়, ওপাশে কোনো সমস্যা হলে আমাদেরও কষ্ট হয়। ওপারে যখন কিছু দুর্বৃত্তের কারণে সমস্যা হয়, তাতে বাংলাদেশের ইমেজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির অটুট বন্ধন হয়েছে। এ জন্য শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই। এই ঐক্যে চিড় ধরাতে দেব না।
এদিকে, জাতীয় সংসদে সমানুপাতিক সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রতিনিধিত্ব না থাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের চিত্র উঠে আসে না। হামলা-মামলার বিচার হয় না। তাই আগামী দিনে দেশের হিন্দু সম্প্রদায় ভোট দিতে গেলে ১০০ বার চিন্তাভাবনা করবে বলে সম্মেলনে অংশ নেওয়া হিন্দু নেতারা জানিয়েছেন।
শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর গুলিস্তানে মহানগর নাট্যমঞ্চ মিলনায়তনে জাতীয় হিন্দু সম্মেলন আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট।
এ সময় জাতীয় সংসদে হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য সংরক্ষিত আসন এবং পৃথক নির্বাচনের ব্যবস্থা করার দাবি জানানো হয়।
সম্মেলনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু, জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান সালমা ইসলাম, জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সভাপতি বিধান বিহারী গোস্বামী, জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, দৈনিক আজকালের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক তরুণ চক্রবর্তী।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের শীর্ষে থাকা আর্সেনালের সঙ্গে পয়েন্ট ব্যবধান কমিয়ে আনার সুযোগ ছিল ম্যানচেস্টার সিটির। আজ বড় সেই সুযোগটা তারা হাতছাড়া করেছে। হ্যারি কেইনের রেকর্ড গড়া গোলে টটেনহামের বিপক্ষে ১-০ গোলে হেরে গেছে পেপ গার্দিওলার শিষ্যরা।
বল দখলে সিটি শুরু থেকে একচেটিয়া আধিপত্য দেখিয়ে আসছিল। তবে ম্যাচের ১৫ মিনিটে সিটির রক্ষণের ভুলে বল পেয়ে টটেনহামকে এগিয়ে দেন কেইন। সিটির ডিফেন্ডার মানুয়েল আকনজির দুর্বল পাসে বল পেয়ে বক্সে ঢুকে পিয়া-এমিল হয়বিয়া বাড়ান কেইনকে। প্রথম স্পর্শে ডান পায়ের শটে গোলটি করেন ইংলিশ ফরোয়ার্ড।
এই গোলে তিনি টটেনহামের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলের মালিক হয়ে গেছেন। ২৬৭ গোল করে তিনি পেছনে ফেলেছেন টটেনহাম কিংবদন্তি জিমি গ্রিভসকে। ১৯৭০ সাল থেকে এই রেকর্ড নিজের করে রেখেছিলেন গ্রিভস।
ছন্দে থাকা সিটির তরুণ ফরোয়ার্ড আর্লিং হলান্ড এ দিন পুরোটা সময় নিজের ছায়া হয়ে ছিলেন। তার দিনটা আজ ভালো কাটেনি। গোল করার তেমন কোনো সুযোগই পাননি সিটির এই নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকার।
এই হারে যদিও লিগ টেবিলে সিটির অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি। তবে আজ জিতে গেলে আর্সেনালের সঙ্গে পয়েন্টের ব্যবধানটা কমিয়ে আনতে পারত তারা। ২১ ম্যাচ খেলে ম্যানচেস্টার সিটির পয়েন্ট ৪৫। একটি ম্যাচ কম খেলে আর্সেনালের পয়েন্ট ৫০। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি লন্ডনে ম্যানচেস্টার সিটির মুখোমুখি হবে আর্সেনাল। ২২ ম্যাচে ৩৯ পয়েন্ট নিয়ে টটেনহামের অবস্থান পঞ্চম। তৃতীয় স্থানে আছে নিউক্যাসল ইউনাইটেড (৪০ পয়েন্ট)।
অপেক্ষার অবসান হলো। হ্যারি কেইনের হাত ধরে যেন জিমি গ্রিভস সাম্রাজ্যের সাম্রাজ্যের পতন হলো। ৫৩ বছর ধরে যে রেকর্ড তিনি দখল করে রেখেছিলেন। সেটাই আজ ভাঙলেন হ্যারি কেইন। প্রিমিয়ার লিগের ইংলিশ ক্লাব টটেনহামের সর্বোচ্চ গোলের মালিক এখন হ্যারি।
রাতে ম্যানচেস্টার সিটিকে ১-০ গোলে হারিয়েছে টটেনহাম। জয়সূচক একমাত্র গোলটি করেছেন ইংলিশ অধিনায়ক কেইন। ম্যাচের ১৫ মিনিটে সিটির ডিফেন্ডার মানুয়েল আকনজির দুর্বল পাসে বল পেয়ে বক্সে ঢুকে পিয়া-এমিল হয়বিয়া বাড়ান কেইনকে। প্রথম স্পর্শে ডান পায়ের শটে গোলটি করেন ইংলিশ ফরোয়ার্ড।
আর এই গোলে তিনি টটেনহামের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলের মালিক হয়ে গেছেন। ২৬৭ গোল করে তিনি পেছনে ফেলেছেন টটেনহাম কিংবদন্তি জিমি গ্রিভসকে। ১৯৭০ সাল থেকে এই রেকর্ড নিজের করে রেখেছিলেন গ্রিভস।
লন্ডনের ক্লাব টটেনহাম হটস্পার দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে কোনো শিরোপা জেতে না। তবুও ইংলিশ লিগে তারাই সেরা দল। দলটির অন্যতম ভরসার নাম হ্যারি কেইন। ইংলিশ এই স্ট্রাইকার ২০০৯ সালে যোগ দেওয়া ক্লাবটির হয়ে গড়ে চলেছেন একের পর এক রেকর্ড।
গত বছরের আগস্টে সার্জিও আগুয়েরোকে টপকে প্রিমিয়ার লিগে এক ক্লাবের হয়ে সর্বোচ্চ গোলের কীর্তি গড়েন কেইন। গত ২৩ জানুয়ারি তিনি স্পর্শ করেছিলেন জিমি গ্রিভসকে। আজ ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে গোল করে তাকে ছাঁড়িয়ে যান তিনি। ভেঙে ফেলেন পাঁচ দশকের রেকর্ড।
রেকর্ডগড়া গোলে ম্যানসিটির বিপক্ষে টটেনহামকে জিতিয়ে ক্লাবটির ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতা বনে যান কেইন। তিনি ছাড়িয়ে যান জিমি গ্রিভসকে। কেইনের বর্তমান গোল সংখ্যা ২৬৭। সঙ্গে লন্ডন ডার্বিতে সবচেয়ে বেশি গোলের (৪৮) রেকর্ডও তার দখলে।
এই ম্যাচে প্রিমিয়ার লিগে ৩০০ ম্যাচ খেলার রেকর্ডও ছুঁয়ে ফেলেছেন তিনি। সিটির বিপক্ষে গোল করে এই লিগে তৃতীয় খেলোয়াড় হিসেবে ২০০ গোল করার মাইলফলক স্পর্শ করেছেন কেইন। তার ওপরে আছেন শুধু অ্যালান শিয়ারার (২৬০) ও ওয়েন রুনি (২০৮)।
টটেনহাম ইতিহাসের শীর্ষ ৭ গোলদাতা
খেলোয়াড় |
গোল |
সময়কাল |
হ্যারি কেইন |
২৬৭ |
২০০৯-বর্তমান |
জিমি গ্রিভস |
২৬৬ |
১৯৬১-১৯৭০ |
ববি স্মিথ |
২০৮ |
১৯৫৫-১৯৬৪ |
মার্টিন গিভারস |
১৭৪ |
১৯৬৮-১৯৭৬ |
ক্লিফ জোন্স |
১৫৪ |
১৯৫৮-১৯৬৮ |
জারমেইন ডিফো |
১৪৩ |
২০০৩-২০০৮ |
সন হিউং-মিন |
১৩৯ |
২০১৫-বর্তমান |
আসন্ন এশিয়া কাপ খেলতে পাকিস্তানে রোহিত শর্মাদের পাঠাতে চায় না ভারত। টুর্নামেন্ট সরিয়ে নেওয়া হতে পারে সেখান থেকে। এমন ইঙ্গিত দিয়েছে বিসিসিআই ও এসিসি। যদিও সিদ্ধান্ত এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে জয় শাহরা সিদ্ধান্তে অনড় থাকলে ভারতে অনুষ্ঠিতব্য ওয়ানডে বিশ্বকাপ পাকিস্তান বয়কট করবে বলে হুমকি দিয়েছে পিসিবি।
ভারত যদি এশিয়া কাপ খেলতে না আসে তা হলে তারাও বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে যাবে না। এমন ঘোষণা গত বছরই দিয়েছিলেন পিসিবির তৎকালিন চেয়ারম্যান রমিজ রাজা। এবার একই সুরে হুমকি দিলেন নাজাম শেঠিও।
প্রাক্তন প্রধানের সুরে বর্তমান চেয়ারম্যানের কণ্ঠে পুরনো হুমকি নতুন আসার খবর নিশ্চিত করেছে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমগুলো।
বাহরাইনে এসিসির বৈঠক-সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রের বরাতে দ্য নিউজ জানায়, পাকিস্তানের মাটিতে এশিয়া কাপ আয়োজনে সভায় কঠোর অবস্থান নেন পিসিবিপ্রধান। নাজাম শেঠি জয় শাহকে বলেন, ভারত ক্রিকেট দল পাকিস্তানে খেলতে না গেলে পাকিস্তানও ভারতে যাবে না। পিসিবি চেয়ারম্যানের এমন মন্তব্যে বিস্মিত হন বিসিসিআই সচিব, ‘শেঠির এমন অবস্থান জয় শাহর প্রত্যাশার বাইরে ছিল।’
প্রাথমিকভাবে সবকিছু ঠিকই ছিল। সূচি অনুযায়ী এ বছরের সেপ্টেম্বরে পাকিস্তানে হবে এশিয়া কাপ। তবে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের চেয়ারম্যান জয় শাহ গত অক্টোবরে ঘোষণা করেন, এশিয়া কাপ খেলতে পাকিস্তানে যাবে না ভারত। নিরপেক্ষ ভেন্যুতে এশিয়া কাপ অনুষ্ঠিত হবে। তার পর থেকেই শুরু হয় বাকযুদ্ধ। সেটার সমাধান খুঁজতেই নাজাম শেঠির অনুরোধে বাহরাইনে এসিসির জরুরি সভা ডাকা হয়।
জয় শাহ ও নাজাম শেঠির এই বৈঠকের দিকে অনেকের চোখ ছিল। সেখানেই এশিয়া কাপে ভারত পাকিস্তানে না গেলে, পাকিস্তানও ভারতে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপ বয়কটের হুমকি দেয়।
পিসিবি ভাবছে, পাকিস্তানের মাটিতে বহুপক্ষীয় টুর্নামেন্ট আয়োজনের জটিলতা এখনই সমাধা করে ফেলা উচিত। নয়তো ভবিষ্যতের জন্য বিপরীত দৃষ্টান্ত তৈরি হয়ে থাকবে।
ক্রিকেটপাকিস্তান জানিয়েছে, শনিবারের বৈঠকে কয়েকটি বিকল্প নিয়েও কথা বলেছে সদস্য দেশগুলো। এর মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ভেন্যু বানানোর কথা আগেই বলে রেখেছে বিসিসিআই। নতুন করে এসেছে পার্শ্ববর্তী কাতারের নামও। আবার মধ্যপ্রাচ্য বিপুল ব্যয়ের কথা চিন্তা করে এশিয়া কাপ শ্রীলঙ্কায় সরিয়ে নেওয়ার কথাও বিবেচনায় আছে।
তবে টুর্নামেন্ট সরিয়ে নিতে হলে আগে পাকিস্তান সরকারের অনুমতি লাগবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন পিসিবিপ্রধান। আগামী এক মাসের মধ্যে এসিসির অন্য সদস্যদেশগুলোও নিজ নিজ সরকারের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলবে বলে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পিসিবিপ্রধান নাজাম শেঠি।
আগামী ১ মার্চ থেকে শুরু হচ্ছে ইংল্যান্ড সিরিজ। তার আগেই চূড়ান্ত হয়ে গেছে টাইগারদের প্রধান কোচ। এবার চন্ডিকা হাথুরুসিংহের সহকারী নির্বাচনের পালা। জোর চেষ্টা চালাচ্ছে বিসিবিও। সেই তালিকায় বিদেশি কোচ যেমন আছেন তেমনি দেশি কোচরাও বাদ যাননি। দুই তালিকাতেই একাধিক কোচকে রেখে এগোচ্ছে বোর্ড। তবে বিদেশিদের শেষ পর্যন্ত না পাওয়া গেলে সহকারী হিসেবে দেশি কোচই দীর্ঘমেয়াদে বিসিবির ডাক পাবেন।
টানা খেলার চাপ থেকে একটু বিরতি নিতে হাথুরু ছুটিতে গেলে সহকারী কোচ জাতীয় দলকে সামলাবেন। এমন গুরু দায়িত্ব কোনো সিরিজে পড়ে গেলে তা স্থানীয় কোচদের পক্ষে সামলানো কঠিন। এজন্য বিদেশিতে নজর বিসিবির।
হাথুরুসিংহের নিয়োগের ঘোষণার দিনেই এই আভাস দিয়েছিলেন বোর্ড প্রধান নাজমুল হাসান পাপন, ‘আমরা এমন একজনকে খুঁজছি যাকে হেড কোচ পছন্দ করবে। আমাদের সূচিতে এত খেলা যে, একজন কোচের পক্ষে সব দায়িত্ব পালন সম্ভব নয়। আমরা একজন সহকারী কোচ নিয়োগ দেব, তালিকায় ৫ জন আছে। এর মাঝে উপমহাদেশের তিনজন। তারা দেশে এসে সাক্ষাৎকার দেবে।’
বিসিবির চিন্তা জুড়েই শ্রীধরন শ্রীরাম আছেন এখনো। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ক্রিকেটারদের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে এই কোচের। তাকেই ছোট ফরম্যাটের দায়িত্ব দিতে চেয়েছিল বিসিবি। কিন্তু আইপিএল ছুটি নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় এখনো দুপক্ষের আলোচনা ‘আলোনাধীন’ রয়েছে। তাই বারবার, ‘আমি এখনো কিছু জানি না’ বলে যাওয়া শ্রীরাম কালও একই কথা জানালেন দেশ রূপান্তরকে।
বাংলাদেশ দলে দেশি কোচদের সহকারী হিসেবে থাকা নতুন কিছু নয়। মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন ২০০৬ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত জাতীয় দলের সহকারী কোচ ছিলেন। এরপর ২০০৯-১০ মেয়াদে খালেদ মাহমুদ সুজন সহকারী কোচ ছিলেন। এ ছাড়া সবচেয়ে বেশিবার জাতীয় দলের সঙ্গে ছিলেন সোহেল ইসলাম। ২০১৪ সালে প্রথমবার ফিল্ডিং কোচ হিসেবে যুক্ত হওয়া এই স্পিন বোলিং কোচ পরে স্পিন কোচ হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। সবশেষ ২০২১ সালে পাকিস্তান সিরিজে স্পিন কোচ রঙ্গনা হেরাথের বদলি হিসেবে খন্ডকালীন দায়িত্ব পালন করেন।
জাতীয় দলের সহকারী হিসেবে তাই পূর্ব অভিজ্ঞতার বিচারে সোহেল ইসলাম-ই সবচেয়ে এগিয়ে। দীর্ঘমেয়াদে জাতীয় দলের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেলে কোচ হিসেবে অনেকটা এগিয়ে যাবেন বলে দেশ রূপান্তরকে জানিয়েছেন রংপুর রাইডার্সের এই কোচ, ‘লম্বা সময়ের জন্য রাখলে, সুযোগ পেলে তো অবশ্যই ভালো হয়। এভাবেই তো দেশি কোচরা এগিয়ে যাবে, মানে শুরুতে সহকারী কোচ থাকবে এরপর মূল কোচ হবে। এই দায়িত্ব পেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ক্রিকেটারদের কীভাবে সামলাতে হয়, কী কাজ করতে হয়, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপার থাকে এগুলো শেখা হবে। সবসময় তো বিদেশি কোচের ওপর নির্ভর করার বিষয়... মানে নিজেদের কোচদেরও তো উন্নত করা বা তৈরি করতে হবে। সহকারী কোচ হিসেবে দেশিদের যে অভিজ্ঞতা হবে, সেটা তারা নিজেরা যখন দেশের দলগুলোর কোচ হবে সেখানে আন্তর্জাতিকের অভিজ্ঞতা কিন্তু কাজে লাগাতে পারবে।’
শ্রম পরিদর্শক পদে যোগ দেওয়ার ৩৪ বছর পর পদোন্নতি পেলেন মাহমুদুল হক। স্বপ্ন দেখতেন পদোন্নতির সিঁড়ি বেয়ে একসময় প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ পদে যাবেন। সেই স্বপ্ন আট বছরেই লুটিয়ে পড়ল জ্যেষ্ঠতার তালিকায়।
১৯৮৮ সালে যোগ দেওয়ায় ’৯৫ সালেই পদোন্নতি পাওয়ার কথা ছিল মাহমুদুল হকের। কর্তৃপক্ষের অবহেলা আর প্রতিষ্ঠানপ্রধানের অদূরদর্শিতা সে স্বপ্ন শুরুতেই বাধা পেল। এন্ট্রি পোস্টে যোগ দেওয়ার পর তার মতো অন্য কর্মচারীরা যখন পদোন্নতির স্বপ্নে বিভোর, তখন তাতে গা-ই করলেন না সেই সময়ের প্রতিষ্ঠানপ্রধান।
মাহমুদুল অপেক্ষায় রইলেন পরিবর্তিত পরিস্থিতির জন্য। সেই পরিবর্তন আসতে আসতে চাকরিতে কেটে গেল আঠারো বছর। আঠারোতে মানুষ প্রাপ্তবয়স্ক হয়। তিনিও ভাবলেন আঠারোতে তিনি না হয় ‘জব ম্যাচিউরিটি’তে পৌঁছালেন। চাকরির আঠারো বছরে পদোন্নতি পেলেও মন্দ হয় না।
কিন্তু অবাক ব্যাপার, কর্তৃপক্ষ পদোন্নতি দিল, তবে মাহমুদুলকে ছাড়া। পদোন্নতির প্রজ্ঞাপনে কোথাও তার নাম নেই। হতাশায় মুষড়ে পড়লেন তিনি। জুনিয়র কর্মকর্তারদের নাম আছে, অথচ তার নাম নেই। প্রতিষ্ঠানের নীতি-নির্ধারকদের দরজায় দরজায় ঘুরলেন ন্যায়বিচারের আশায়। কিন্তু তারা পাত্তাই দিলেন না বিষয়টি।
তারা আমলে না নিলেও মাহমুদুলের স্বপ্ন তো সেখানেই থেমে যাওয়ার নয়। সেই স্বপ্ন পুঁজি করে তিনি গেলেন আদালতে। সেই ভিন্ন জগৎটাও কম চ্যালেঞ্জিং ছিল না। প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল তার পক্ষে রায় দিল। মাহমুদুল আনন্দে আত্মহারা হলেন। কিন্তু সেই আনন্দ বেশি দিন স্থায়ী হলো না। সরকার আপিল করল প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালে। মামলার ফল উল্টে গেল। হতাশায় ভেঙে না পড়ে তিনি গেলেন উচ্চ আদালতে। আপিল বিভাগে সিভিল আপিল মামলা করলে প্রশাসনিক আপিল আদালতের রায় বাতিল হয়। প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের রায় বহাল থাকে।
জলে নেমে কুমিরের সঙ্গে লড়াই করার মতো মাহমুদুল হকও যেন সরকারের সঙ্গে লড়াই করতে নামলেন। আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ পিটিশন করল সরকারপক্ষ। একপর্যায়ে সরকার বুঝতে পারল কোনোভাবেই তারা এ মামলায় জিততে পারবে না। সরকারপক্ষে রিভিউ পিটিশন প্রত্যাহার করা হলো। আদালত সরকারের পদোন্নতির প্রজ্ঞাপনকে আইনের কর্তৃত্ববহির্ভূত বলে ঘোষণা করল। জুনিয়র কর্মকর্তাকে যেদিন থেকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে এবং যতবার পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে, একইভাবে মাহমুদুল হককে পদোন্নতি দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। বকেয়া বেতন-ভাতাসহ সব পাওনা কড়ায়-গ-ায় পরিশোধের নির্দেশনা আসে।
আদালতের এই নির্দেশনা দেওয়া হয় ২০১৮ সালে। এরপর আদেশ বাস্তবায়ন করতে সরকারের লেগে যায় প্রায় চার বছর। ২০২২ সালের ১১ মে তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়। ৩৪ বছর পর পদোন্নতির প্রজ্ঞাপন পেয়ে স্তম্ভিত হয়ে গেলেন মাহমুদুল হক। আবারও তাকে ঠকিয়েছে সরকার। জুনিয়র কর্মকর্তা যুগ্ম মহাপরিদর্শক হলেও তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয় তার দুই ধাপ নিচের সহকারী মহাপরিদর্শক পদে। উপমহাপরিদর্শক ও যুগ্ম মহাপরিদর্শক আরও ওপরের পদ। আদালতের নির্দেশনার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
কখনোই প্রজ্ঞাপন মাহমুদুল হকের জন্য ভালো বার্তা বয়ে আনেনি। পুরো চাকরিজীবন আদালতের বারান্দায় ঘুরে তিনি পৌঁছেছেন অবসরের প্রান্তসীমায়। আর তিন মাস পরে তিনি অবসরে যাবেন। যৌবন ও মধ্য বয়সের দিনগুলোতে আদালতে ঘুরে বেড়ানোর শক্তি ও সাহস থাকলেও মাহমুদুল হক এখন সেই সাহস দেখাতে দ্বিতীয়বার চিন্তা করছেন। পারবেন তো শেষ সময়ে এসে সরকারের অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপসহীন মনোভাব দেখিয়ে শেষ পর্যন্ত লড়ে যেতে?
মাহমুদুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে দেশ রূপান্তরকে জানিয়েছেন, তিনি আদালতের কাছেই জানতে চাইবেন, আদালতের বিচার না মানার শাস্তি কী।
পুরো ঘটনা শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা শুনিয়ে জানতে চাইলেন, কতজনের পক্ষে মাহমুদুল হকের মতো লড়াকু মনোভাব দেখানো সম্ভব?
সীমাহীন আনন্দ নিয়ে মানুষ সরকারি চাকরিতে যোগ দেয়। এরপরই তার মধ্যে যে স্বপ্নটি দানা বাঁধে তা হচ্ছে পদোন্নতি। কার কীভাবে পদোন্নতি হবে তা আইনকানুন, নিয়ম-নীতি দিয়ে পোক্ত করা। পুরো বিষয়টি কাচের মতো স্বচ্ছ। এরপরও পদোন্নতি হয় না। দিন, মাস, বছর পার হয়ে যায়, কাক্সিক্ষত পদোন্নতির দেখা মেলে না।
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) ২৬টি ক্যাডারের মধ্যে হাতে গোনা কয়েকটি ক্যাডারে নিয়মিত পদোন্নতি হয়। বাকি ক্যাডারে হতাশা। তার চেয়েও কঠিন পরিস্থিতি নন-ক্যাডারে। ক্যাডার কর্মকর্তারা নিজের পদোন্নতির ষোলো আনা বুঝে নিয়ে ঠেকিয়ে দেন নন-ক্যাডার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতি। সংখ্যায় বেশি হওয়ায় নন-ক্যাডাররা একজন আরেকজনকে নানা ইস্যুতে আটকাতে গিয়ে পুরো প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করেন। সরকারের মোট কর্মকর্তা-কর্মচারীর প্রায় তিন-চতুর্থাংশ কর্মচারী। সেই হিসেবে সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনবলের পদোন্নতি হয় না। পে-কমিশন হলেই কর্মচারীদের পদোন্নতির জন্য করুণা উথলে ওঠে। এমনকি ব্লকপোস্টে যারা আছেন, তাদের জন্যও পদোন্নতির বিকল্প সুবিধা বাতলে দেওয়া হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কর্মচারীদের পদোন্নতি উপেক্ষিতই থাকে।
যখন সময়মতো পদোন্নতি হয় না, তখন নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে থাকে। এসব সমস্যা সংশ্লিষ্ট দপ্তর-অধিদপ্তরের চৌহদ্দি পেরিয়ে আমজনতাকেও প্রভাবিত করে। নন-ক্যাডার কর্মকর্তা আর সঙ্গে কর্মচারীরা যখন বুঝতে পারেন পদোন্নতির আশা তাদের নেই, তখন তারা দুহাতে টাকা কামানোর ধান্দায় মেতে ওঠেন। এতে করে ঘুষের সংস্কৃতি সমাজে ছড়িয়ে পড়ে। অকার্যকর পথে হাঁটে রাষ্ট্র। সাধারণ মানুষ টাকা ছাড়া তাদের কাছ থেকে কোনো সেবা পায় না, ব্যবসায়ীরা নতুন কোনো আইডিয়া নিয়ে ব্যবসায় আসেন না, ব্যবসাবান্ধব পরিস্থিতি না থাকায় মুখ ফিরিয়ে নেন দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। প্রধানমন্ত্রীর বারবার আহ্বানেও বিনিয়োগকারীরা সাড়া দেন না। সাধারণ মানুষকে নিঃস্বার্থভাবে সেবা দেওয়ার বাণীতেও উদ্বুদ্ধ হন না সংশ্লিষ্টরা।
এই পরিস্থিতিতে অনিয়ম আটকে রাখার সব কৌশলই ব্যর্থ হচ্ছে। যথাযথ তদারকি না থাকায় বিভাগীয় ব্যবস্থা অকার্যকর হয়ে গেছে। ৩ লাখ ৫৩ হাজার ৩৫০টি অডিট আপত্তি ঝুলে থাকায় অডিট প্রতিষ্ঠানগুলোও আগ্রহ হারিয়ে নিজেরাই জড়িয়ে পড়ছে অনিয়মে। দন্তহীন বাঘে পরিণত হওয়ার তথ্য সাংবাদিকদের জানান দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান নিজেই।
নন-ক্যাডার কর্মকর্তা ও কর্মচারীর পদোন্নতির বড় একটা অংশ আটকে রাখে মন্ত্রণালয়গুলো। এই আটকে রাখার কারণ হচ্ছে মন্ত্রণালয়ের নীতিনির্ধারকদের স্বার্থ। বিভিন্ন দপ্তর, অধিদপ্তরে নন-ক্যাডার কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দিলে নিয়ম অনুযায়ী পদোন্নতিপ্রাপ্তদের ওপরের পদে বসাতে হবে। এতে মন্ত্রণালয়ের নীতিনির্ধারকদের এককালীন লাভ; অর্থাৎ টাকার বিনিময়ে একবার পদোন্নতি দেওয়া যাবে। কিন্তু পদোন্নতি না দিয়ে সংশ্লিষ্টদের চলতি দায়িত্ব দিলে বছরজুড়ে টাকা আয় করতে পারেন নীতিনির্ধারকরা। দপ্তর, অধিদপ্তরে বড় অঙ্কের টাকার বিনিময়ে চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়। চলতি দায়িত্বপ্রাপ্তদের আয় অনুসারে নীতিনির্ধারকদের মাসোহারা দিতে হয়। নন-ক্যাডারদের পদোন্নতি দেওয়া হলে মন্ত্রণালয়ের নীতিনির্ধারকদের নিয়মিত আয়ের উৎস বন্ধ হয়ে যায়। এ কারণে আইন বা বিধি-বিধানের ফাঁকফোকর গলিয়ে নন-ক্যাডার এবং কর্মচারীদের পদোন্নতি আটকে রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়।
সরকারি কর্মচারী সংহতি পরিষদের সভাপতি নিজামুল ইসলাম ভূঁইয়া মিলন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সচিবালয় এবং সারা দেশের সরকারি কর্মচারীদের পদোন্নতির মধ্যে একটু পার্থক্য আছে। নন-ক্যাডারের কিছু বিষয় ছাড়া সচিবালয়ের কর্মচারীরা সময়মতো পদোন্নতি পায়। কিন্তু সচিবালয়ের বাইরে পদোন্নতি হয় না বললেই চলে। সচিবালয়ে মাত্র ১০ হাজার কর্মচারী আছেন। সচিবালয়ের বাইরে আছেন ১০ লাখের বেশি। এসব কর্মচারীর পদোন্নতি নিয়ে বহু বছর ধরে চেষ্টা করছি। কিন্তু কোনো ফল পাইনি। সর্বশেষ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ সমস্যা নিয়ে কাজ করার জন্য একটি কমিটি করে দিয়েছে। কমিটি কিছু সুপারিশ করেছে। ব্যস, ওই পর্যন্তই। এরপর এর কোনো অগ্রগতি নেই। যেখানে সরকারপ্রধান বলেন, চাকরিজীবনে সবাই যেন কমপক্ষে একটি পদোন্নতি পায়। সেখানে বহু কর্মচারী কোনো পদোন্নতি ছাড়াই অবসরে যাচ্ছেন। সরকারপ্রধানের নির্দেশনা উপেক্ষা করেন আমলারা। তাদের আগ্রহ কেনা-কাটায়, বিদেশ ভ্রমণে, নতুন জনবল নিয়োগে। এসব করলে তাদের লাভ। কর্মচারী পদোন্নতি দিতে তাদের কোনো আগ্রহ নেই। এর নিশ্চয়ই একটা শেষ আছে। বৈষম্যের পরিণতি কী হয়, তা অনেক দাম দিয়ে বিডিআর বিদ্রোহে আমরা দেখেছি।’
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের নন-ক্যাডারদের পদোন্নতি ঝুলছে বছরের পর বছর। এই অধিদপ্তরের কয়েক শ কর্মকর্তা পাঁচ বছর আগেই পদোন্নতির যোগ্য হয়েছেন। নানা কায়দা-কানুন করে তাদের পদোন্নতি ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক সংশ্লিষ্টদের জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ করে তাদের পদোন্নতির প্রক্রিয়া এগিয়ে নিলেও শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় নতুন করে জ্যেষ্ঠতার তালিকা করার নামে সময়ক্ষেপণ করছে। জ্যেষ্ঠতার তালিকা করার পর এখন তাদের পারিবারিক সদস্যদের তথ্য যাচাই-বাছাই করার জন্য একটি সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ওই সংস্থা নন-ক্যাডার কর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্যদেরও তথ্য তালাশ করছে। তাদের আত্মীয়দের মধ্যে কে কোন দলের সমর্থক তার তথ্য নিচ্ছেন সংস্থার কর্মকর্তারা।
গত মাসে শেষ হওয়া জেলা প্রশাসক সম্মেলনে দায়িত্ব পালন করছিলেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা। ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনের সুরম্য ভবনে দায়িত্ব পালন করলেও ওই নন-ক্যাডার কর্মকর্তার মনের অবস্থাটা মনোহর ছিল না। কেমন আছেন জানতে চাইলে ওই নন-ক্যাডার কর্মকর্তা বলেন, ‘ভালো নেই। চাকরি করছি, পদোন্নতি নেই। ২০১৫ সালের আগে পদোন্নতি না পেলেও টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড ছিল। তাও তুলে দেওয়া হয়েছে। তুলে দেওয়ার সময় বলা হয়েছিল সময়মতো পদোন্নতি হবে, ব্লকপোস্টধারীদের দেওয়া হবে বিশেষ আর্থিক সুবিধা। এসবের কোনোটাই হয়নি।’
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসে একটি প্রশাসনিক আদেশ খুবই পরিচিত। সেই প্রশাসনিক আদেশ ১৬/২০১৮ অনুযায়ী ৭০ ভাগ কর্মকর্তা সরাসরি নিয়োগ হবে। আর ৩০ ভাগ পদোন্নতির মাধ্যমে পূরণ করা হয়। ৭০ ভাগ কর্মকর্তা সরাসরি নিয়োগের ফলে বিমানে বর্তমানে প্রয়োজনের তুলনায় কর্মকর্তা বেশি। নীতিনির্ধারকদের নতুন জনবল নিয়োগে আগ্রহ বেশি। পুরনোদের পদোন্নতি দিয়ে ওপরের পদ পূরণের চেয়ে তারা নতুন নিয়োগে যান। ফলে কারও চাকরিজীবনে একবারও পদোন্নতি হয় না। নামমাত্র যে পদোন্নতি হয় তা অনিয়মে ভরপুর।
নন-ক্যাডার ছাড়াও ১৩তম গ্রেড থেকে ২০তম গ্রেড পর্যন্ত পদোন্নতি হয় না বললেই চলে। প্রতিটি দপ্তরে এসব গ্রেডের পদোন্নতি আটকে আছে। অথচ এসব গ্রেডেই বেশি লোক চাকরি করছেন। সরকারের মোট জনবল প্রায় ১৫ লাখ ৫৪ হাজার ৯২৭ জন। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ২৩ শতাংশ পদের মধ্যেও নন-ক্যাডার রয়েছেন। এ ছাড়া তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ৭৭ শতাংশ পদই ১৩তম থেকে তার পরের গ্রেডের। এতে করে সহজেই বোঝা যায় সরকারের জনবলের বড় অংশই পদোন্নতির চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে। সরকারের জনবলের এই বিশাল অংশ যখন পদোন্নতি নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভোগেন, তখন তারা নানা অনিয়মে ঝুঁকে পড়েন।
বেশির ভাগ দপ্তর, অধিদপ্তর পরিচালনা করেন বিভিন্ন ক্যাডারের কর্মকর্তারা। তারা তাদের প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় থেকে প্রেষণে ক্যাডার কর্মকর্তাদের দপ্তর, অধিদপ্তরে পাঠান। প্রেষণে গিয়ে অনেক কর্মকর্তা শুধু রুটিন কাজটুকুই করতে চান। শূন্যপদে জনবল নিয়োগ বা পদোন্নতি রুটিন কাজ না হওয়ায় তা উপেক্ষিত থাকে। তা ছাড়া পদোন্নতি দিতে গিয়ে নানা জটিলতার সৃষ্টি হয়; বিশেষ করে মন্ত্রণালয় থেকে মন্ত্রী বা সচিব তাদের পছন্দের লোককে পদোন্নতি দেওয়ার জন্য সংস্থার প্রধানকে চাপ দেন। এই চাপ উপেক্ষা করার কোনো সুযোগ না থাকায় অযোগ্য লোককে পদোন্নতি দিতে হয় সংস্থার প্রধানকে। এই জটিলতা থেকে দূরে থাকার জন্য সংশ্লিষ্টদের পদোন্নতি দেওয়া থেকেও দূরে থাকেন সংস্থার প্রধানরা।
নন-ক্যাডার কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের পদোন্নতি না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে খাদ্য অধিদপ্তরের ১৪ গ্রেডের একজন কর্মচারী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘বাইরের লোকের ইচ্ছাটাই জাগে না আমাদের পদোন্নতি দিতে। আমাদের দপ্তরপ্রধান মহাপরিচালক প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা। অতিরিক্ত মহাপরিচালকও অনেক সময় প্রশাসন ক্যাডার থেকে প্রেষণে আসেন। তাদের কেন ইচ্ছা জাগবে আমাদের পদোন্নতি নিয়ে। যদি এসব পদে ফুড ক্যাডারের কর্মকর্তা থাকতেন, তাহলে তারা খাদ্য বিভাগের সমস্যা বুঝতেন। তা ছাড়া নিয়োগ বিধি সংশোধনের নামে আমরা দীর্ঘদিন একই পদে আটকে আছি।’
গত বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি সচিবালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং ব্যক্তিগত কর্মকর্তারা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের কাছে এক আবেদনে জানান, ‘বর্তমানে সচিবালয়ে প্রায় দুই হাজারের বেশি প্রশাসনিক ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তা কর্মরত। এর বিপরীতে ক্যাডারবহির্ভূত সংরক্ষিত পদের সংখ্যা ২৬৭টি, যা খুবই নগণ্য। ফলে একই পদে ২০-২২ বছরের বেশি সময় কর্মরত থাকার পরও অনেকে পদোন্নতি পাচ্ছেন না। পদোন্নতি না পাওয়ায় সৃষ্ট হতাশার ফলে কর্মস্পৃহা নষ্ট হচ্ছে।’
সরকার এ সমস্যা থেকে কীভাবে বের হতে পারে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ফিরোজ মিয়া দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘এসব সমস্যা সমাধানে সরকার সব সময়ই কাজ করে। কিন্তু এ চেষ্টা জটিলতার তুলনায় কম। এ বিষয়ে আরও এফোর্ট দিতে হবে।
বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের উপনির্বাচনে বেসরকারিভাবে ১১২ কেন্দ্রের ফলাফলে ৯৫১ ভোটের ব্যবধানে হেরে গেছেন বহুল আলোচিত স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম। একতারা প্রতীক নিয়ে তিনি পেয়েছেন ১৯ হাজার ৪৮৬ ভোট। এ আসনে জয় পেয়েছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ (ইনু) সমর্থিত প্রার্থী অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম তানসেন। মশাল প্রতীক নিয়ে তিনি পেয়েছেন ২০ হাজার ৪৩৭ ভোট।
বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে বগুড়ার দুইটিসহ মোট ৬ আসনে উপনির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হয়। ২০২২ সালের ১০ ডিসেম্বর বিএনপির এমপিরা পদত্যাগের ঘোষণা দিলে এ আসনগুলো শূন্য হয়।
তখন, বগুড়া-৬ (সদর) এবং বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দেন হিরো আলম। নির্বাচন কমিশন একদফা তার প্রার্থিতা বাতিল করলেও পরে আদালতে গিয়ে প্রার্থিতা ফিরে পান তিনি।
বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) ও বগুড়া-৬ (সদর) আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আশরাফুল হোসেন হিরো আলম বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর পর্যন্ত ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, ‘সদরের কেন্দ্র সব দখল হয়্যা গ্যাছে। ডিসি-এসপিক কয়্যাও কোনো কাম হচ্চে না। সদরের আশা সব শ্যাষ। কাহালু-নন্দীগামের অনেক কেন্দ্র ঘুরে ঘুরে দেকছি। ভোট খুব সুষ্ঠু হচ্চে। মাঠের অবস্থা ভালো। কাহালু-নন্দীগ্রামে নিশ্চিত এমপি হচ্চি।’
এর আগে, সকালে সদর উপজেলার এরুলিয়া উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে যান তিনি। ভোট দেওয়ার পর হিরো আলম বলেন, ‘বগুড়া-৬ আসনে আগে থেকেই গোলযোগের আশঙ্কা করেছিলাম, সেটাই সত্যি হয়েছে। নির্বাচনি এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। তবে বগুড়া-৪ আসনে ভোট সুষ্ঠু হচ্ছে। এভাবে সুষ্ঠু ভোট হলে এই আসনে আমিই বিজয়ী হবো।’
এদিকে বগুড়া-৬ আসনের উপনির্বাচনে কয়েকটি কেন্দ্রে নৌকা প্রার্থীর এজেন্ট বাদে অন্য এজেন্টদের ভোটকক্ষ থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ সকালে হিরো আলমসহ তিনজন প্রার্থী এ অভিযোগ করেন। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা তাদের এজেন্টদের বের করে দিয়েছেন বলে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করা হয়।
আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৭ লাখ ৫০ হাজার ১৯৪ কোটি টাকা খরচের হিসাব ধরে বাজেট প্রস্তাব প্রণয়নের কাজ শুরু করেছে সরকার। যা চলতি অর্থবছরের তুলনায় ৭২ হাজার ১৩০ কোটি টাকা বেশি। অভ্যন্তরীণ সম্পদ থেকে খরচের বেশিরভাগ অর্থ জোগাড়ের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এ লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ১৯ শতাংশ বাড়ানো হবে। আসছে জুনের প্রথমভাগে জাতীয় সংসদে আগামী অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
আগামী বাজেট হবে জাতীয় নির্বাচনের আগে বর্তমান সরকারের চলতি মেয়াদের শেষ বাজেট। তাই এখানে নেওয়া কোনো পদক্ষেপে যেন আওয়ামী লীগ সরকার সমালোচনার মুখে না পড়ে এ জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্টদের থাকছে বিশেষ নজর। এ ছাড়া রয়েছে অর্থনৈতিক সংকট। তাই সংকট ও নির্বাচন দুটোই মাথায় রাখতে হচ্ছে সরকারের নীতিনির্ধারকদের।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী অর্থবছরের বাজেট নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এরই মধ্যে মন্ত্রণালয়ে মোটাদাগে একটি রূপরেখা পাঠানো হয়েছে। নতুন পরিকল্পনার পাশাপাশি গত তিন মেয়াদে সরকার কী কী উন্নয়ন করেছে আগামী বাজেট প্রস্তাবে তা মনে করিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। গত ডিসেম্বরের শেষের দিকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি এবং উচ্চপর্যায়ের সরকারি নীতিনির্ধারকদের উপস্থিতিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ‘বাজেট মনিটরিং ও সম্পদ কমিটির বৈঠকে’ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পাঠানো আগামী বাজেটের রূপরেখা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আর গত সপ্তাহে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) চিঠি পাঠিয়ে অভ্যন্তরীণ সম্পদ থেকে রাজস্ব আদায়ের কৌশল নির্ধারণে কাজ শুরু করতে বলা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেন, যে হিসাব ধরে অর্থ মন্ত্রণালয় বাজেট প্রস্তাব প্রস্তুতির কাজ শুরু করেছে তা কয়েক দফা খতিয়ে দেখা হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে চূড়ান্ত করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে। তিনি প্রয়োজনীয় সংশোধন, যোগ-বিয়োগ করে আবারও অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠাবেন। বাজেট প্রস্তাব চূড়ান্ত হওয়ার আগেও অনেক কিছু পরিবর্তন হয়ে থাকে।
ডলার সংকটে পণ্য আমদানির জন্য ঋণপত্র বা এলসি খুলতে পারছেন না সাধারণ ব্যবসায়ীরা। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় পণ্যের দাম বাড়ছে। কাঁচামাল সংকটে বিপাকে শিল্প খাত। ব্যাংক খাতে অস্থিরতা। নতুন চাকরির সুসংবাদ নেই বললেই চলে। দফায় দফায় জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি। খুব শিগগিরই এসব সংকট কেটে যাবে বলে মনে করছেন না অর্থনীতিবিদরা। অর্থ সংগ্রহ করতে গিয়ে ঋণদাতা সংস্থার কঠিন শর্তের বেড়াজালে আছে সরকার। এমন পরিস্থিতিতেই আগামী অর্থবছরের বাজেট তৈরির কাজ শুরু হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় ও এনবিআর সূত্র জানিয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট বৈশি^ক অস্থিরতা মোকাবিলায় সরকার কী কী পদক্ষেপ নেবে তা আগামী বাজেটে স্পষ্ট করা হবে। দেশের চলমান অর্থনৈতিক সংকট দূর করতে একগুচ্ছ পরিকল্পনার কথাও বলা হবে। তবে শত সংকটের মধ্যেও আগামী বাজেটে ব্যবসায়ীদের দাবি অনুযায়ী যতটা সুবিধা দেওয়া সম্ভব তা দিতে সরকারের ঊর্ধ্বতন পর্যায় থেকে বাজেট প্রস্তুত কমিটির কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিশেষভাবে কাঁচামাল আমদানিতে রাজস্ব ছাড় দিতে হিসাব কষা হচ্ছে।
দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ডলার সংকটে আমদানি রপ্তানি প্রায় বন্ধ। ব্যবসা-বাণিজ্যে সংকটকাল চলছে। এমন পরিস্থিতিতে আগামী বাজেটে আমাদের দাবি অনুযায়ী নগদ সহায়তা দিতে হবে। রাজস্ব ছাড় দিতে হবে। কর অবকাশ ও কর অব্যাহতি বাড়াতে দিতে হবে।’
ঋণদাতা সংস্থা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দেওয়া সংস্কারের শর্ত মানার অঙ্গীকার করে সরকার ঋণ পেয়েছে। শর্ত পালনে ব্যর্থ হলে ঋণের যেকোনো কিস্তি আটকে দিতে পারে প্রতিষ্ঠানটি। পর্যায়ক্রমে প্রতি অর্থবছরের বাজেটে এসব সংস্কার প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করে বাস্তবায়ন করা হবে। আসছে বাজেটে শর্ত মানার চেষ্টা থাকবে। বিশেষভাবে অতীতের মতো ঢালাওভাবে কর অব্যাহতি দেওয়া হবে না। আর্থিক খাতের সংস্কারের কিছু ঘোষণা থাকবে। বিশেষভাবে ব্যাংক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় জোর দেওয়া হবে। আইএমএফের সুপারিশে এরই মধ্যে ভ্যাট আইন চূড়ান্ত হয়েছে। আয়কর আইন মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদন হয়েছে। শুল্ক আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ে আছে। এ তিন আইন অনুযায়ী রাজস্ব আদায়ের কৌশল নির্ধারণ করা হবে। আসছে বাজেটে টেকসই অর্থনৈতিক সংস্কারের অংশ হিসেবে সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী করার কথা বলা হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কিছু উদ্যোগের কথা শোনানো হবে।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ঋণদাতা সংস্থার শর্ত মানার কথা বলা হলেও সব আগামী বাজেটে একবারে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করতে হবে। না হলে অর্থনীতির গতি কমে যাবে।’
আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে এনবিআর-বহির্ভূত খাত এবং এনবিআর খাতের জন্য মোট আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হতে পারে ৪ লাখ ৮৬ হাজার কোটি টাকা। এনবিআরের রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা চলতি অর্থবছরের চেয়ে ১৯ শতাংশ বাড়িয়ে ধরা হতে পারে। এতে লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা হবে। এনবিআর এ লক্ষ্যমাত্রা কমানোর জোরালো আবেদন করেছে। কিন্তু তা আমলে আনেননি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। নতুন অর্থবছরে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে প্রায় ৩৫ শতাংশ বা ১ লাখ ৫৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ভ্যাট বা মূল্য সংযোজন কর (মূসক) হিসেবে, ৩৪ শতাংশ বা ১ লাখ ৫৩ হাজার কোটি টাকা আয়কর হিসেবে এবং ৩১ শতাংশ বা বাকি ১ লাখ ৩৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা শুল্ক হিসেবে সংগ্রহ করার কথা বলা হতে পারে বলে জানা গেছে।
এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রার কথা শুধু বললেই হবে না। কীভাবে অর্জিত হবে, সেটি নিয়ে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা না থাকলে প্রতিবারের মতো ঘাটতি থাকবে। রাজস্ব ঘাটতি হলে অর্থনীতিতে আয় ব্যয়ের ভারসাম্য নষ্ট হয়। তাই এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবসম্মত হওয়া উচিত।’
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, আগামী অর্থবছরের জন্য নির্ধারিত এ লক্ষ্যমাত্রা পূরণে এনবিআর উৎসে করের আওতা বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে। সম্পদশালীদের ওপর নজর বাড়ানো হবে। শুধু বেশি সম্পদ থাকার কারণে অতিরিক্ত কর গুনতে হবে। সারচার্জ বহাল রাখা হবে। সুপারট্যাক্স গ্রুপকে উচ্চহারে গুনতে হবে কর। আগামী অর্থবছরেও অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুবিধা থাকবে। অর্থ পাচারোধে আইনের শাসন কঠোর করা হবে। অর্থ পাচার আটকাতে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো হবে। করপোরেট কর কমানোর দাবি থাকলেও তা মানা হবে না। অন্যদিকে নির্বাচনের আগের বাজেট হওয়ায় করমুক্ত আয় সীমা বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করতে খোদ অর্থমন্ত্রী বললেও রাজস্ব আদায় কমে যাবে এমন যুক্তি দেখিয়ে এনবিআর রাজি নয় বলে জানিয়ে দিয়েছে। কমানো হবে শিল্পের অধিকাংশ কাঁচামাল আমদানি শুল্ক। ডলারের ওপর চাপ কমাতে বেশি ব্যবহৃত পণ্য আমদানিতে রাজস্ব ছাড় দেওয়া হবে। বিলাসবহুল পণ্য আমদানি কমাতে সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হবে। তৈরি পোশাক খাতের সব সুবিধা বহাল রাখা হবে। শিল্পের অন্যান্য খাতেও কতটা সুবিধা বাড়ানো যায় তা নিয়ে এনবিআর হিসাব করছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া বাজেট প্রস্তুতিবিষয়ক প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে, আগামী অর্থবছরের বাজেটে উন্নয়ন প্রকল্পে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি এবং ঘাটতি ২ লাখ ৬৪ হাজার ১৯৪ কোটি টাকা বরাদ্দ ধরা হতে পারে। আগামী অর্থবছরে জিডিপির ৬ শতাংশ ঘাটতি ধরে ২ লাখ ৬৪ হাজার ১৯৪ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হতে পারে। মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৫ শতাংশ ধরা হতে পারে বলে জানা যায়। ঋণদাতা সংস্থার কাছ থেকে ভর্তুকি কমানোর চাপ থাকলেও আগামীবার এ খাতে বেশি ব্যয় ধরা হতে পারে। এ খাতে ১ লাখ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হতে পারে। চলতি অর্থবছরে ভর্তুকি ব্যয় আছে ৮৬ হাজার কোটি টাকা।
উল্লেখ্য, গত সোমবার রাতে আইএমএফ বাংলাদেশকে ঋণ অনুমোদন করে। ঋণদাতা সংস্থাটির কাছ থেকে বাংলাদেশ ছয় কিস্তিতে তিন বছরে ৪৭০ কোটি ডলার পাচ্ছে। ঋণ প্রস্তাব অনুমোদনের দিন আইএমএফ ২০২৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের অর্থনীতির বিভিন্ন সূচক নিয়ে পূর্বাভাস দেয়। সংস্থাটি বলছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭ দশমিক ২ শতাংশ। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। এরপর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি বেড়ে হতে পারে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ এবং ২০২৪-২৫ অর্থবছরে তা হতে পারে ৭ দশমিক ১ শতাংশ।
এতে রিজার্ভ সম্পর্কে বলা হয়, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছর শেষে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ কমে দাঁড়াবে ৩ হাজার কোটি ডলার। তবে ২০২৩-২৪ অর্থবছর থেকে তা ধারাবাহিকভাবে বাড়বে এবং ২০২৬-২৭ অর্থবছর শেষে প্রথমবারের মতো রিজার্ভ ৫ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।