
চট্টগ্রামে মোটরসাইকেলসহ চোর চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ২৪টি চোরাই মোটরসাইকেল।
শনিবার (২৫ মার্চ) সন্দ্বীপ থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে কোতোয়ালি থানা পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার আমিরাবাদ এলাকার ধনঞ্জয় ধরের ছেলে মিঠুন ধর (২৯), একই এলাকার নুরুল আব্বাসের ছেলে মো. খোরশেদ আলম (২৯), সন্দ্বীপ উপজেলার কালাপানিয়া এলাকার নুরুল আলমের ছেলে মো. রিপন (৪০), একই এলাকার মোহাম্মদ শাহজাহানের ছেলে মো. শাহেদ (২৬), গাছুয়া গ্রামের আব্দুল বাতেনের ছেলে মো. বাবর ওরফে বাবুল (৩৫)।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবীর জানান, গত ১৬ মার্চ মধ্যরাতে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে ভবনের সামনে থেকে চুরি হয় চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শামসুল ইসলামের মোটরসাইকেল। এ ঘটনায় পরের দিন থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক। এর পর সিএমপির উপকমিশনার (দক্ষিণ) মোস্তাফিজুর রহমান এবং অতিরিক্ত উপকমিশনার নোবেল চাকমার নির্দেশনা ও তত্ত্বাবধানে চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধারে মাঠে নামে পুলিশের একাধিক টিম।
শনিবার (২৫ মার্চ) রাত সাড়ে আটটার দিকে চট্টগ্রাম মহানগরের পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন এলাকা থেকে মিঠুন ধর ও মো. বাবর ওরফে বাবুলকে একটি চোরাই মোটরসাইকেলসহ আটক করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ কর্মকর্তাদের তারা জানায়, তাদের সহযোগী মো. শাহেদ, মো. রিপন, মো. খোরশেদ আলম, মো. দিদার হোসেন, মো. নজরুল ইসলাম প্রকাশ তাদেরকে সহায়তায় চট্টগ্রাম শহর ও আশপাশ এলাকা থেকে মোটরসাইকেল চুরি করে সন্দ্বীপ ও কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বেচাকেনা করে আসছে। এ যাবত তারা শতাধিক মোটরসাইকেল চুরি করেছে।
এরপর মিঠুন ধর ও বাবরের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সন্দ্বীপ থানা এলাকায় শনিবার রাতে অভিযান চালিয়ে মো. শাহেদ ও মো. রিপনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে ২৩টি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার করে পুলিশ।অভিযান চলাকালে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় দিদার হোসেন ও নজরুল ইসলাম তাহের।
পরবর্তীতে মিঠুন ধরের তথ্যের ভিত্তিতে মো. খোরশেদ আলমকে নগরের ব্রিজঘাট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত সবার বিরুদ্ধে মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে চট্টগ্রামের নগরের কোতোয়ালিসহ জেলার বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি জাহিদুল কবীর।
মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত সাবেক বিএনপি নেতা ‘সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী যুদ্ধাপরাধী ছিলেন না’ এমন দাবি করে বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ড. রফিকুল হায়দারের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের হয়েছে।
আদালত অভিযোগ গ্রহণ করে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটকে তদন্ত করে ২৩ জুলাই প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১ জুন) চট্টগ্রামের সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জহিরুল কবিরের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন পাঁচলাইশ থানা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সোহরাব হোসেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী।
এজাহারে বাদীর অভিযোগ, ২০ মে ও ২৮ মার্চ দুটি পত্রিকায় রফিকুল হায়দারের বরাতে ‘সাকা কখনো যু্দ্ধাপরাধী ছিল না’ এমন বক্তব্য ছাপা হয়।এর আগে বন গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে নিরপরাধ বলে দাবি করেছেন তিনি। তার বক্তব্যের ৪৪ সেকেন্ডের একটি অডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। অডিওতে রফিকুলকে বলতে শোনা যায়, ‘সালাউদ্দিন কাদের যুদ্ধাপরাধী ছিল না। ভালো মানুষ ছিলেন। তার এলাকায় খবর নাও।’
‘নেতা, এমপি, মন্ত্রী দিয়ে তদবির করিয়ে কোন লাভ হবে না। কারোর কথায় আমি ধার ধারি না..'। ২২ মে রাত ৯টার দিকে ভাইয়ের বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা নেওয়ার অনুরোধ করতে গেলে চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও থানার ওসি খাইরুল ইসলাম এমন মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ করেছেন আমিনুল ইসলাম নামে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা।
আমিনুলের দাবি, ওসি খাইরুল এমন বক্তব্য দেওয়ার সময় ঘটনাস্থলে চান্দগাঁও থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জসিম উদ্দিনসহ আরও কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা উপস্থিত ছিলেন।
আজ সোমবার দেশ রূপান্তরকে আমিনুল ইসলাম বলেন, আমাদের পরিবারের মধ্যে সামান্য ঝামেলা হয়েছিল। পরে বড় ভাই থানায় প্রবাসী ছোট ভাইসহ কয়েকজনের নামে চাঁদাবাজির মামলা করেন। মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে ওসি খায়রুল আমাকে মামলার আসামি করেন।’
আমিনুল আরও অভিযোগ করেন, ২২ মে রাত ৯টার দিকে চান্দগাঁও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জসিম উদ্দিন এবং তার পরিবারের সদস্যরা বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করার জন্য থানায় যান। ওইদিন স্থানীয় সংসদ সদস্য নোমান আল মাহমুদও ফোন করে মামলা নেওয়ার জন্য ওসি খাইরুলকে বলেছিলেন। কিন্তু তিনি মামলা নেননি।
অভিযোগ অস্বীকার করে ওসি খায়রুল ইসলাম বলেন, ওসি পদের মতো একটা দায়িত্বশীল পদে এ ধরনের কথা কি কেউ বলতে পারেন। আমিনুল তার ভাইয়ের করা মামলার আসামি ছিলেন। তাদের মধ্যে পারিবারিক বিরোধ চলছে। ২২ মে রাত ৯টার দিকে বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা নেওয়ার অনুরোধ জানাতে থানায় এসেছিলেন। আমি তাদের আপ্যায়ন করেছি। ঘুষ নিয়ে আমিনুলকে মামলার আসামি বানানো এবং থানায় তার সঙ্গে অসৌজন্য আচরণ করিনি।
চট্টগ্রাম নগরে বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচি থেকে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন, মহানগর যুবদলের সভাপতি দিপ্তীসহ ৩৬ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত ৬০০ জনকে আসামি করে মামলা দিয়েছে পুলিশ। সোমবার (২৯ মে) ভোরে চান্দগাঁও থানায় পুলিশ বাদী হয়ে এ মামলা করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন চান্দগাঁও থানার ওসি খাইরুল ইসলাম।
বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত ১০ দফা দাবি বাস্তবায়নে চট্টগ্রাম মহানগর শাখার উদ্যোগে রোববার (২৮ মে) বিকেলে বাকলিয়া এক্সেস রোড থেকে পদযাত্রা শুরু হয়।
পুলিশের অভিযোগ, পদযাত্রাটি বহদ্দারহাট এলাকায় পৌঁছালে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।
এ সময় পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা সুত্রে জানা গেছে।
তবে পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ নাকচ করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন। তার দাবি, পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় বিএনপির কোনো নেতাকর্মী জড়িত নয়।
চট্টগ্রামে মধ্যরাতে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে ভোরে এক যুবককে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা রাজীবসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৭।
সোমবার (২৯ মে) ভোরে রাঙ্গামাটি এবং নগরের কদমতলী এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- আবু তাহের রাজীব (২৩), দেলোয়ার হোসেন জয় (২৭), মো. রায়হান সজীব (২২), আবুল হাসনাত রানা (৩০)।
গত ২৮ মে ভোরে নগরের পাহাড়তলী নয়াবাজার এলাকায় এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। মৃত্যুর আগে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে ছুরিকাঘাতকারী রাজিব ও ওসমান নামে দুজনের নাম বলে যান আজাদুর রহমান। তবে ওসামানকে এখনো গ্রেপ্তার হয়নি। নিহত আজাদ স্থানীয় মো. ইব্রাহিমের ছেলে।
র্যাব-৭ এর মিডিয়া কর্মকর্তা নুরুল আবছার জানান, ২৮ মে মধ্যরাতে নয়াবাজার এলাকার একটি কারখানার গেটের সামনে প্রস্রাব করা নিয়ে নৈশপ্রহরী মফিজের (ভিকটিমের বড়ভাই) সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় এক যুবকের। এ সময় ঘটনাস্থলে আসে আবু তাহের রাজীব, ওসমান, আবুল হাসান। তারাও মফিজের সঙ্গে তর্ক জুড়ে দেয়। কথা কাটাকাটির শব্দ শুনে ঘটনাস্থলে যান ভিকটিম আজাদুর রহমান। উভয়পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে ধাক্কাধাক্কি হয়। পরবর্তীতে আজাদুরকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যায় রাজীব, ওসমানসহ অন্যরা।
২৮ মে ভোর সাড়ে চারটার দিকে আজাদুর রহমান দোকান থেকে নাস্তা আনতে বাসা থেকে বের হন। নয়াবাজার পৌঁছালে সেখানে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা দুর্বৃত্তরা আজাদুরকে একা পেয়ে তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। আজাদুরের চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহত আজাদের স্ত্রী পাহাড়তলী থানায় হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা রাজীব, ওসমানসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। গ্রেপ্তার এড়াতে এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যায় আসামিরা। গোপন খবর পেয়ে আজাদুর খুন হওয়ার ১৫ ঘণ্টার মধ্যে আজ সোমবার ভোরে রাঙ্গামাটি ও চট্টগ্রাম শহরের কদমতলী থেকে রাজীবসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় র্যাব-৭। গ্রেপ্তার চারজনকে নগরের পাহাড়তলী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
অর্থ আত্মসাতের মামলায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের সাবেক ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। তার বিরুদ্ধে ভুয়া মালিকানা সাজিয়ে জমির ক্ষতিপূরণের ১ কোটি ১৩ লাখ ১৪ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এ মামলা দায়ের করে দুদক।
আজ রোববার (২৮ মে) চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মুনশি আবদুল মজিদ শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
বিষয়টি দেশ রূপান্তরকে নিশ্চিত করেন দুদকের পিপি মাহমুদুল হক। তিনি জানান, উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহণ করা জমির ক্ষতিপূরণের টাকা আত্মসাতের মামলায় আসামি শাহাদাত হোসেন আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আদালত সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম আউটার রিং রোড প্রকল্পে ভুয়া মালিকানা সাজিয়ে ভূমি অধিগ্রহণের ১ কোটি ১৩ লাখ ১৪ হাজার টাকা পরস্পর যোগসাজশে আত্মসাতের অভিযোগে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের সাবেক ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন, অতিরিক্ত ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা দেবতোষ চক্রবর্তী, সার্ভেয়ার নুর চৌধুরী, শহীদুল ইসলাম মুরাদ, আমানাতুল মওলা, আশীষ চৌধুরী, সুশীল বিকাশ চাকমা, কানুনগোসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি মামলা দায়ের করে দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক জাফর আহমেদ।
তদন্ত শেষে ২০২২ সালের ৩১ জুলাই আসামিদের মামলা থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেন দুদক, ঢাকা কার্যালয়ের উপ পরিচালক আবুল কালাম আজাদ। কিন্তু চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ দুদকের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ না করে ১৫ আসামির বিরুদ্ধে অপরাধ আমলে নেন আদালত। চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এরপর আসামি শাহাদাত রোববার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন।
রিয়াল মাদ্রিদের সংগে ১৪ বছরের সম্পর্ক চুকিয়ে ফেলছেন। ৪০ কোটি ইউরো চুক্তিতে সৌদি প্রো লিগের ক্লাব আলো ইত্তিহাদে যোগ দিচ্ছেন।
ক'দিন ধরে এমন কথা শোনা যাচ্ছিল করিম বেনজেমাকে নিয়ে। বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন -এমন কথাও চাউর হয় স্পেনের সংবাদ মাধ্যমে।
কিন্তু সব কিছুতে জল ঢাললেন ব্যালন ডি অর জয়ী। স্পেনের গণমাধ্যম মার্কার দেয়া মার্কা লিজেন্ড এওয়ার্ড নিতে গিয়ে বললেন, 'আমি যখন রিয়ালেই আছি তখন ভবিষ্যৎ নিয়ে কেনো বলবো। ইন্টারনেটে যা প্রচার হচ্ছে তা ঠিক না। আমি এখানে ভালো আছি। শনিবার রিয়ালের ম্যাচ আছে, সব ফোকাস আমার সেই ম্যাচকে নিয়ে।'
ক্লাব প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজকে তাকে রিয়ালে আনার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বেনজেমা বলেন, '২১ বছরের আমি এই ক্লাবে যোগ দিয়েছিলাম। এই ক্লাবে খেলার মতো আর কিছু হয় না, সান্তিয়াগো বার্নাবু দারুন এক জায়গা।'
রিয়ালের সংগে চুক্তির মেয়াদ এ মাসেই শেষ হচ্ছে বেনজেমার।
পাকিস্তানের প্রস্তাবিত হাইব্রিড মডেলে নয়, এশিয়া কাপ হবে একটি দেশে। আর সেটা শ্রীলংকা। পাকিস্তান তাতে অংশ না নিতে চাইলে তাদেরকে ছাড়াই হবে এশিয়া কাপ।
ভারতের তরফ থেকে পাকিস্তানকে এমন বার্তা দেয়া হয়েছে বলে খবর প্রকাশ করেছে কলকাতাভিত্তিক ইংরেজি দৈনিক দা টেলিগ্রাফ।
বিসিসিআই সেক্রেটারি জয় শাহ যিনি এসিসিরও প্রেসিডেন্ট পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে বলেছেন, শ্রীলংকায় এশিয়া কাপ খেলতে রাজি আছে ভারতসহ চার পূর্ণ সদস্য। বিষয়টি নিয়ে এসিসির নির্বাহী সভায় আলোচনা করা হবে। পাকিস্তান রাজি না হলে ৫ দল নিয়েই হবে এশিয়া কাপ।
বিশ্বকাপে পাকিস্তানের ম্যাচ অন্য কোনো দেশে আয়োজনে পিসিবি চেয়ারম্যান নাজমা শেঠির দাবিও নাকচ করে দিয়েছেন জয় শাহ। টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, পাকিস্তানকে ভারতেই খেলতে হবে, না হলে না খেলবে। এ বার্তা পিসিবি এবং আইসিসির দুই কর্মকর্তা যারা সম্প্রতি পাকিস্তান সফর করেন তাদেরকে জানিয়ে দিয়েছে বিসিসিআই।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন জায়েদা খাতুন।
তিনি ঘড়ি প্রতীকে মোট ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় এ সিটির ৪৮০টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) রাতে রির্টানিং কর্মকর্তা স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
নির্বাচনের অন্য মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন ১৬ হাজার ৩৬২ ভোট, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ ৭ হাজার ২০৬ ভোট, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ১৬ হাজার ৯৭৪ ভোট, স্বতন্ত্রপ্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের মো. হারুন-অর-রশীদ ২ হাজার ৪২৬ ভোট এবং হাতি প্রতীকের সরকার শাহনূর ইসলাম ২৩ হাজার ২৬৫ ভোট পেয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ, ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী ও ১৮ জন হিজড়া। এই সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি, মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।