মহাজোটে অস্বস্তি নির্ভার ঐক্যফ্রন্ট
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১২ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০
বরিশালের ছয় আসনের পাঁচটিতেই একাধিক প্রার্থী ভোটের মাঠে থাকায় বেকায়দায় পড়েছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট। দুটি আসনে জোটভুক্ত দলের প্রার্থী থাকলেও তুলনামূলক নির্ভার বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।
গত ৯ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও প্রার্থিতা তুলে নেননি জোটের অনেক দলের প্রার্থী। ফলে জোটভুক্ত নির্বাচন হলেও একাধিক শরিক দল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকায় দ্বিধা-বিভক্তিতে পড়েছেন নেতাকর্মী ও ভোটাররা।
এখানে পাঁচ আসনেই মহাজোটের আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টির সঙ্গে ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ-ইনু, বিকল্পধারা বা বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির-জেপির প্রার্থী রয়েছে। ফলে ভোট ভাগাভাগি হয়ে নির্বাচনে প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করেন নেতাকর্মীরা। অন্যদিকে দুটি আসনে বিএনপি জোটের সঙ্গে খেলাফত মজলিস ও জেএসডির প্রার্থী থাকলেও জ্যেষ্ঠ নেতারা তেমন প্রভাব পড়বে না মনে করেন।
বরিশাল-১ (গৌরনদী-আগৈলঝাড়া) আসনে মহাজোটের প্রার্থী আওয়ামী লীগের আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ। এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন ১৪ দলভুক্ত জাকের পার্টির প্রার্থী মো. বাদশা মিয়া। এখানে বিএনপি তথা ঐক্যফ্রন্টের একক প্রার্থী এম জহিরউদ্দিন স্বপন।
বরিশাল-২ (উজিরপুর-বাবুগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. শাহে আলম ছাড়াও প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন মহাজোটভুক্ত জাতীয় পার্টির মো. মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা এবং ১৪ দলের ওয়ার্কার্স পার্টির মো. জহুরুল ইসলাম। এখানে বিএনপির একক প্রার্থী সরদার সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টু। বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনে মহাজোটের ব্যানারে নৌকা প্রতীক পেয়েছেন ওয়ার্কার্স পার্টির টিপু সুলতান। অপরদিকে লাঙল প্রতীক নিয়ে মহাজোটের অন্যতম শরিক জাতীয় পার্টির গোলাম কিবরিয়া টিপু এবং কুলা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন মহাজোটের নয়া শরিক বিকল্পধারার মো. এনায়েত কবির। এখানে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে একক প্রার্থী অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন ধানের শীষ নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
বরিশাল-৪ (হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী পংকজ নাথ। ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী নাগরিক ঐক্যের জে এম নুরুর রহমান জাহাঙ্গীর। এ ছাড়া ২০ দলের শরিক খেলাফত মজলিসের রুহুল আমীন দেয়াল ঘড়ি নিয়ে আছেন প্রতিদ্বন্দ্বিতায়।
বরিশাল-৫ (সদর ও সিটি করপোরেশন) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীম ছাড়াও মাঠে রয়েছেন মহাজোটভুক্ত জাতীয় পার্টির এ কে এম মুর্তজা আবেদীন এবং মহাজোটের নয়া শরিক যুক্তফ্রন্টভুক্ত বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (মতিন) এইচ এম মাসুম বিল্লাহ। এ আসনে বিএনপির একক প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ার।
বরিশাল-৬ (বাকেরগঞ্জ) আসনে মহাজোটের প্রার্থী জাতীয় পার্টির নাসরিন জাহান রতœা। তিনি ছাড়াও মহাজোটভুক্ত জাসদের (ইনু) মো. মোহসীন মশাল এবং জাতীয় পার্টিও (জেপি) খন্দকার মাহতাবউদ্দিন বাইসাইকেল নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এই আসনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী বিএনপির আবুল হোসেন খান পেয়েছেন। এ ছাড়া ঐক্যফ্রন্টের শরিক জেমসডির (রব) এ কে এম নুরুল ইসলাম তারা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। একই আসনে একই জোটভুক্ত একাধিক দল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকায় বিপাকে পড়েছেন ওই সব দলের কর্মী-সমর্থকরা। তবে উভয় জোটের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আলোচনা করে একক প্রার্থীর বিজয়ের লক্ষ্যে উদ্যোগ নেওয়া হবে।
মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল বলেন, মহাজোটের মধ্যে যাদের যেখানে অবস্থান ভালো তাদেরকেই সেখানে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এরপরও যদি জোটভুক্ত কোনো দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তা পুরোপুরি নিজ দায়িত্বে। এতে ভোটের মাঠে কোনো প্রভাব পড়বে না। বরিশাল জেলা (দক্ষিণ) বিএনপির সভাপতি এবায়দুল হক চান বলেন, অনেকগুলো দল নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট হয়েছে। এসব কারণে সব দিক খেয়াল করা সম্ভব হয়নি। যারা ঐক্যফ্রন্টের মনোনয়ন পাননি, তারা গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবেন।
সাইফুর রহমান মিরণ, বরিশাল
শেয়ার করুন
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১২ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০

বরিশালের ছয় আসনের পাঁচটিতেই একাধিক প্রার্থী ভোটের মাঠে থাকায় বেকায়দায় পড়েছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট। দুটি আসনে জোটভুক্ত দলের প্রার্থী থাকলেও তুলনামূলক নির্ভার বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।
গত ৯ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও প্রার্থিতা তুলে নেননি জোটের অনেক দলের প্রার্থী। ফলে জোটভুক্ত নির্বাচন হলেও একাধিক শরিক দল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকায় দ্বিধা-বিভক্তিতে পড়েছেন নেতাকর্মী ও ভোটাররা।
এখানে পাঁচ আসনেই মহাজোটের আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টির সঙ্গে ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ-ইনু, বিকল্পধারা বা বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির-জেপির প্রার্থী রয়েছে। ফলে ভোট ভাগাভাগি হয়ে নির্বাচনে প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করেন নেতাকর্মীরা। অন্যদিকে দুটি আসনে বিএনপি জোটের সঙ্গে খেলাফত মজলিস ও জেএসডির প্রার্থী থাকলেও জ্যেষ্ঠ নেতারা তেমন প্রভাব পড়বে না মনে করেন।
বরিশাল-১ (গৌরনদী-আগৈলঝাড়া) আসনে মহাজোটের প্রার্থী আওয়ামী লীগের আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ। এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন ১৪ দলভুক্ত জাকের পার্টির প্রার্থী মো. বাদশা মিয়া। এখানে বিএনপি তথা ঐক্যফ্রন্টের একক প্রার্থী এম জহিরউদ্দিন স্বপন।
বরিশাল-২ (উজিরপুর-বাবুগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. শাহে আলম ছাড়াও প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন মহাজোটভুক্ত জাতীয় পার্টির মো. মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা এবং ১৪ দলের ওয়ার্কার্স পার্টির মো. জহুরুল ইসলাম। এখানে বিএনপির একক প্রার্থী সরদার সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টু। বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনে মহাজোটের ব্যানারে নৌকা প্রতীক পেয়েছেন ওয়ার্কার্স পার্টির টিপু সুলতান। অপরদিকে লাঙল প্রতীক নিয়ে মহাজোটের অন্যতম শরিক জাতীয় পার্টির গোলাম কিবরিয়া টিপু এবং কুলা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন মহাজোটের নয়া শরিক বিকল্পধারার মো. এনায়েত কবির। এখানে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে একক প্রার্থী অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন ধানের শীষ নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
বরিশাল-৪ (হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী পংকজ নাথ। ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী নাগরিক ঐক্যের জে এম নুরুর রহমান জাহাঙ্গীর। এ ছাড়া ২০ দলের শরিক খেলাফত মজলিসের রুহুল আমীন দেয়াল ঘড়ি নিয়ে আছেন প্রতিদ্বন্দ্বিতায়।
বরিশাল-৫ (সদর ও সিটি করপোরেশন) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীম ছাড়াও মাঠে রয়েছেন মহাজোটভুক্ত জাতীয় পার্টির এ কে এম মুর্তজা আবেদীন এবং মহাজোটের নয়া শরিক যুক্তফ্রন্টভুক্ত বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (মতিন) এইচ এম মাসুম বিল্লাহ। এ আসনে বিএনপির একক প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ার।
বরিশাল-৬ (বাকেরগঞ্জ) আসনে মহাজোটের প্রার্থী জাতীয় পার্টির নাসরিন জাহান রতœা। তিনি ছাড়াও মহাজোটভুক্ত জাসদের (ইনু) মো. মোহসীন মশাল এবং জাতীয় পার্টিও (জেপি) খন্দকার মাহতাবউদ্দিন বাইসাইকেল নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এই আসনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী বিএনপির আবুল হোসেন খান পেয়েছেন। এ ছাড়া ঐক্যফ্রন্টের শরিক জেমসডির (রব) এ কে এম নুরুল ইসলাম তারা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। একই আসনে একই জোটভুক্ত একাধিক দল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকায় বিপাকে পড়েছেন ওই সব দলের কর্মী-সমর্থকরা। তবে উভয় জোটের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আলোচনা করে একক প্রার্থীর বিজয়ের লক্ষ্যে উদ্যোগ নেওয়া হবে।
মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল বলেন, মহাজোটের মধ্যে যাদের যেখানে অবস্থান ভালো তাদেরকেই সেখানে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এরপরও যদি জোটভুক্ত কোনো দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তা পুরোপুরি নিজ দায়িত্বে। এতে ভোটের মাঠে কোনো প্রভাব পড়বে না। বরিশাল জেলা (দক্ষিণ) বিএনপির সভাপতি এবায়দুল হক চান বলেন, অনেকগুলো দল নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট হয়েছে। এসব কারণে সব দিক খেয়াল করা সম্ভব হয়নি। যারা ঐক্যফ্রন্টের মনোনয়ন পাননি, তারা গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবেন।
সাইফুর রহমান মিরণ, বরিশাল