চোখের জলে নির্মাতা আমজাদকে বিদায়
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০
সহকর্মী, শুভানুধ্যায়ী ও নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ চোখের জলে শেষবিদায় জানিয়েছেন চলচ্চিত্র নির্মাতা আমজাদ হোসেনকে। সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য গতকাল শনিবার তার মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) ও বেসরকারি টেলিভিশন এটিএন বাংলা ও চ্যানেল আইয়ের প্রাঙ্গণে নেওয়া হয়। বিকেলে মরদেহ নেওয়া হয় তার গ্রামের বাড়ি জামালপুরে। সেখানেই আজ রোববার কবরস্থ হবেন তিনি।
‘আমার বাবা গান লিখেছেন-গাছের একটা পাতা পড়লে/কাছের একজন মানুষ মরলে/কে তার খবর রাখে? আমি বাবাকে বলব-আজকে সারা বাংলাদেশ তোমার খবর রাখছে, সারা বাংলাদেশ তোমার জন্য কাঁদছে।’ -কথাগুলো বলছিলেন আমজাদ হোসেনের বড় ছেলে সাজ্জাদ হোসেন দোদুল। গতকাল শনিবার বেলা সোয়া ১১টায় আমজাদ হোসেনের মরদেহ নেওয়া হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের ব্যবস্থাপনায় সেখানে সর্বস্তরের মানুষ শ্রদ্ধা জানায় গুণী এই নির্মাতাকে। সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাসান ইমাম, রামেন্দু মজুমদার, মামুনুর রশীদ, মসিহউদ্দিন শাকের, গাজী মাজহারুল আনোয়ার, মোরশেদুল ইসলাম, ম. হামিদ থেকে শুরু করে পরবর্তী প্রজন্মের আজাদ আবুল কালাম, সালাউদ্দিন লাভলু, এস এ হক অলিকসহ অনেকেই ছুটে এসেছিলেন শহীদ মিনারে।
পঞ্চাশোর্ধ্ব সালেহা বেগম ফুল হাতে দাঁড়িয়ে আছেন লাইনে। তার চোখ অশ্রুতে টলমল। দেশ রূপান্তরকে তিনি বলেন, “গোলাপী এখন ট্রেনে সিনেমাটি দেখেছি। ‘ভাত দে’ সিনেমাটি দেখে কত কেঁদেছি। প্রতি ঈদেই টিভিতে তার নাটক ‘জব্বর আলী’ দেখতাম। আমার ছেলের কাছ থেকে শুনেছি পরিচালক আমজাদ হোসেন মারা গেছেন। তাই তাকে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছি।” এমন অনেকেই ছুটে এসেছিলেন চলচ্চিত্রকার আমজাদ হোসেনকে শ্রদ্ধা জানাতে। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকেও শ্রদ্ধা জানানো হয়। এর মধ্যে রয়েছে- বাংলা একাডেমি, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, দেশ নাটক, প্রাচ্যনাট, অভিনয় শিল্পী সংঘ, ডিরেক্টরস গিল্ড, টেলিভিশন নাট্যকার সংঘ, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দল (জাসাস), বাংলাদেশ শুটিং হাউস অ্যাসোসিয়েশন, যাত্রাশিল্প উন্নয়ন পরিষদ, গণসংগীতশিল্পী সমন্বয় পরিষদ। এছাড়া বিএনপি, বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও শ্রদ্ধা জানানো হয়।
শহীদ মিনার থেকে মরদেহ নেওয়া হয় এটিএন বাংলায়। সেখান থেকে তার দীর্ঘদিনের কর্মস্থল এফডিসিতে নেওয়া হলে শ্রদ্ধা জানান চলচ্চিত্র অঙ্গনের অনেকে। অনুষ্ঠিত হয় জানাজা। ফারুক, এ টি এম শামসুজ্জামান, আলমগীর, আনোয়ারা, ইলিয়াস কাঞ্চন, তারানা হালিম, ওমর সানি, অমিত হাসান, ফেরদৌস, রিয়াজ, জায়েদ খান, সাইমন সাদিক থেকে শুরু করে চলচ্চিত্র তারকাদের ভিড় জমেছিল। এসেছিলেন ববিতা, চম্পা, সুচন্দাও। তারা শেষবার আমজাদ হোসেনকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন। ববিতা বলেন, ‘আমার জীবনের মাইলস্টোন হয়ে থাকা ছবিগুলোর পরিচালক ছিলেন আমজাদ ভাই। তার সঙ্গে আর দেখা হবে না, ভাবতেই ভীষণ কষ্ট হচ্ছে।’ এফডিসি থেকে মরদেহ নেওয়া হয় চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে। সেখানে তার দীর্ঘদিনের সহকর্মী, বন্ধু, ভক্তরা শ্রদ্ধা জানান। এরপর বিকেল ৪টার দিকে মরদেহবাহী গাড়ি রওনা হয় জামালপুরের উদ্দেশে।
শেয়ার করুন
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০

সহকর্মী, শুভানুধ্যায়ী ও নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ চোখের জলে শেষবিদায় জানিয়েছেন চলচ্চিত্র নির্মাতা আমজাদ হোসেনকে। সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য গতকাল শনিবার তার মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) ও বেসরকারি টেলিভিশন এটিএন বাংলা ও চ্যানেল আইয়ের প্রাঙ্গণে নেওয়া হয়। বিকেলে মরদেহ নেওয়া হয় তার গ্রামের বাড়ি জামালপুরে। সেখানেই আজ রোববার কবরস্থ হবেন তিনি।
‘আমার বাবা গান লিখেছেন-গাছের একটা পাতা পড়লে/কাছের একজন মানুষ মরলে/কে তার খবর রাখে? আমি বাবাকে বলব-আজকে সারা বাংলাদেশ তোমার খবর রাখছে, সারা বাংলাদেশ তোমার জন্য কাঁদছে।’ -কথাগুলো বলছিলেন আমজাদ হোসেনের বড় ছেলে সাজ্জাদ হোসেন দোদুল। গতকাল শনিবার বেলা সোয়া ১১টায় আমজাদ হোসেনের মরদেহ নেওয়া হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের ব্যবস্থাপনায় সেখানে সর্বস্তরের মানুষ শ্রদ্ধা জানায় গুণী এই নির্মাতাকে। সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাসান ইমাম, রামেন্দু মজুমদার, মামুনুর রশীদ, মসিহউদ্দিন শাকের, গাজী মাজহারুল আনোয়ার, মোরশেদুল ইসলাম, ম. হামিদ থেকে শুরু করে পরবর্তী প্রজন্মের আজাদ আবুল কালাম, সালাউদ্দিন লাভলু, এস এ হক অলিকসহ অনেকেই ছুটে এসেছিলেন শহীদ মিনারে।
পঞ্চাশোর্ধ্ব সালেহা বেগম ফুল হাতে দাঁড়িয়ে আছেন লাইনে। তার চোখ অশ্রুতে টলমল। দেশ রূপান্তরকে তিনি বলেন, “গোলাপী এখন ট্রেনে সিনেমাটি দেখেছি। ‘ভাত দে’ সিনেমাটি দেখে কত কেঁদেছি। প্রতি ঈদেই টিভিতে তার নাটক ‘জব্বর আলী’ দেখতাম। আমার ছেলের কাছ থেকে শুনেছি পরিচালক আমজাদ হোসেন মারা গেছেন। তাই তাকে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছি।” এমন অনেকেই ছুটে এসেছিলেন চলচ্চিত্রকার আমজাদ হোসেনকে শ্রদ্ধা জানাতে। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকেও শ্রদ্ধা জানানো হয়। এর মধ্যে রয়েছে- বাংলা একাডেমি, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, দেশ নাটক, প্রাচ্যনাট, অভিনয় শিল্পী সংঘ, ডিরেক্টরস গিল্ড, টেলিভিশন নাট্যকার সংঘ, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দল (জাসাস), বাংলাদেশ শুটিং হাউস অ্যাসোসিয়েশন, যাত্রাশিল্প উন্নয়ন পরিষদ, গণসংগীতশিল্পী সমন্বয় পরিষদ। এছাড়া বিএনপি, বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও শ্রদ্ধা জানানো হয়।
শহীদ মিনার থেকে মরদেহ নেওয়া হয় এটিএন বাংলায়। সেখান থেকে তার দীর্ঘদিনের কর্মস্থল এফডিসিতে নেওয়া হলে শ্রদ্ধা জানান চলচ্চিত্র অঙ্গনের অনেকে। অনুষ্ঠিত হয় জানাজা। ফারুক, এ টি এম শামসুজ্জামান, আলমগীর, আনোয়ারা, ইলিয়াস কাঞ্চন, তারানা হালিম, ওমর সানি, অমিত হাসান, ফেরদৌস, রিয়াজ, জায়েদ খান, সাইমন সাদিক থেকে শুরু করে চলচ্চিত্র তারকাদের ভিড় জমেছিল। এসেছিলেন ববিতা, চম্পা, সুচন্দাও। তারা শেষবার আমজাদ হোসেনকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন। ববিতা বলেন, ‘আমার জীবনের মাইলস্টোন হয়ে থাকা ছবিগুলোর পরিচালক ছিলেন আমজাদ ভাই। তার সঙ্গে আর দেখা হবে না, ভাবতেই ভীষণ কষ্ট হচ্ছে।’ এফডিসি থেকে মরদেহ নেওয়া হয় চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে। সেখানে তার দীর্ঘদিনের সহকর্মী, বন্ধু, ভক্তরা শ্রদ্ধা জানান। এরপর বিকেল ৪টার দিকে মরদেহবাহী গাড়ি রওনা হয় জামালপুরের উদ্দেশে।